কিছু আমলা শুধু প্রতিবন্ধকতাই সৃষ্টি করেন: এফবিসিসিআই সভাপতি

ব্যবসায়িক প্রয়োজনে কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তার কাছে গেলে সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অসন্তোষ ঝরেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের কণ্ঠে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2018, 04:29 PM
Updated : 3 Sept 2018, 04:29 PM

সোমবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাজের সমালোচনাও করেন তিনি।

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ১৭৫ ব্যক্তিকে সিআইপি কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় হোটেল র‌্যাডিসনে, যেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও ছিলেন। 

এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, কাঁচামালের দেশীয় জোগান না থাকা সত্ত্বেও পোশাক রপ্তানি করে বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।

“দেশে এখন বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণে। সরকারের কার্যকর উদ্যোগের ফলে শিল্প-বাণিজ্য ও রপ্তানি খাত আরও সক্রিয় হবে।”

এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর কাজের সমালোচনা শোনা যায় এই ব্যবসায়ী নেতার মুখে।

তিনি বলেন, “ব্যুরোক্রেসিতে অনেকেই আছে যারা দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। কিছু ব্যুরোক্রেট আছেন যারা শুধু প্রতিবন্ধকতাই সৃষ্টি করেন। এই প্রতিবন্ধকতা থেকে আমরা বের হতে চাই। আমরা দেখতে চাই বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস, সত্যিকারের ওয়ান স্টপ সার্ভিস। ইজি অব ডুয়িং বিজনেসে ভারত আমাদের ওপরে আছে, শ্রীলংকা ১১০তম। এসব জায়গায় আমাদের উন্নতি করতে হবে।

“রপ্তানি বহুমুখীকরণে আমাদের কাজ করতে হবে। আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যাল ও অন্যান্য খাতের জন্য শুধু ট্যাক্স ডিডাকশনই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন একটি সম্মিলিত উদ্যোগের। সেই ক্ষেত্রে যখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাওয়া হয়, তারা মনে করে সরকারি কোষাগারের টাকা তাদের টাকা। ব্যবসায়ীরা বাজেটের পয়সার যোগান দেন, তাদেরকে অস্বীকার করা হয়।”

ব্যবসায়ী এই নেতা বলেন, “আমরা যখন সিলেট মহিলা চেম্বারে যাই, টিনের চাল বেয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। তাদের উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। দিস ইজ আওয়ার মানি। এই পয়সা আমাদের দিতে হবে। আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। তবেই বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ক্ষুধামুক্ত করা যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির উদ্দেশে তিনি বলেন, “রপ্তানিতে প্রোডাক্ট ডাইভার্সিফিকেশনের জন্য আমরা বিদেশে মেলা করে থাকি। আমি ইপিবি চেয়ারম্যানকে বলব আমাদের মেলার সংখ্যা কমিয়ে দিন, উন্নতমানের মেলা করুন, যে মেলা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হবে, যে মেলার ফলে বাংলাদেশকে চিনবে।

“এই কবুতরের খোপের মতো দোকান খোলার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা। যদি পয়সা শেয়ার করতে হয়, আমরা শেয়ার করব। শুধু যাওয়ার জন্য আমরা যেন না যাই।”

তিনি আরও বলেন, “যারা কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসাবে নিয়োগ পান তাদেরকে টার্গেট ঠিক করে দিতে হবে। শুধু তারা সেখানে যাবেন আর কাজ করে চলে আসবেন তা হবে না।

“তাদের অনেকেই আছেন যাদের কোনো অ্যাকাউন্টিবিলিটি নাই। তাদেরকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। তাদেরকে টার্গেট বেইজড জবাবদিহিতা করতে হবে। সেটি না করলে আমাদের ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়া বাধাগ্রস্ত হবে।”

বাণিজ্য সচিব সুভাশীষ বসু, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, মুনতাকিম আশরাফ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।