তৈরি পোশাক বাণিজ্যে বাংলাদেশ অন্যায্যতার শিকার: সিপিডি

ইউরোপ কিংবা আমেরিকার বাজারে যে দরে তৈরি পোশাক বিক্রি হয়, সেই অনুপাতে অর্থ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশের শ্রমিকদের না পাওয়াকে অন্যায্যতা বলেছে সিপিডি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2018, 05:37 PM
Updated : 30 August 2018, 05:37 PM

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, “বাংলাদেশে থেকে ৫ মার্কিন ডলারে তৈরি করা একটি পোশাক নিউ ইয়র্কে বিক্রি হয় ৩৫ ডলারে। কিন্তু ওই পোশাক কর্মীর সামাজিক অগ্রগতির কমপ্লায়েন্স ৫ ডলার পাওয়া উদ্যোক্তার উপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায্য।”

এই পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পে কমপ্লায়েন্স পূরণে বৈশ্বিক বাণিজ্য কাঠামোর মধ্যেই সমস্যা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রেহমান সোবহান এই সমস্যা সমাধানের উপর জোর দিয়ে বলেন, “এটা দরকার যাতে ফেয়ার অ্যান্ড শেয়ারের ভিত্তিতে ব্যবসা পরিচালিত হয়।”

বৃহস্পতিবার ‘পোশাক শিল্পে রানা প্লাজা পরবর্তী সময়ে আধুনিকায়ন নিয়ে সিপিডির জরিপ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় একথা বলেন তিনি।

রেহমান সোবহান বলেন, “রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর এ খাতের দেশীয় ব্যবসায়ীদের উপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। ক্রেতারা দর কমানোর জন্য চাপ দিয়ে আসছে। কিন্তু রানা প্লাজা দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন করা উচিৎ।

“ওই দুর্ঘটনার পর এ খাতে সংস্কারের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু মুনাফা বণ্টনের ক্ষেত্রে শ্রমিক কতটুকু পাচ্ছে, সেটা ভেবে দেখা দরকার। তারা পশু নয়, মানুষ হিসেবে দেখে তাদের জীবনমান উন্নয়ন করতে হবে।”

পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে বিদেশি সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানো নিয়েও আপত্তি জানান রেহমান সোবহান।

তিনি বলেন, “আমার দেশের শিল্পের কমপ্লায়েন্স তদারকি বিদেশি এজেন্ট দিয়ে করানো সম্মানজনক নয়। এই পর্যবেক্ষণ দেশীয় এজেন্টকে দিয়ে হওয়া উচিৎ।”

ঢাকার গুলশানের খাজানা হোটেলে এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।

তিনি বলেন, “পোশাক খাত আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য। আগামী তিন বছরের মধ্যে এ খাতের রপ্তানিকে ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু এ জন্য এখনও কোনো কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়নি।”

অনুষ্ঠানে সিপিডির জরিপ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

তিনি বলেন, “জপিপে উঠে এসেছে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর পণ্যের মান উন্নয়ন হয়েছে। কারখানার অবকাঠামো ও কাজের পরিবেশের উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়নি।”