রেমিটেন্সে সুখবর নিয়ে শুরু অর্থবছর

গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহে ‘সুখবর’ নিয়ে শুরু হলো নতুন অর্থবছর।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2018, 01:27 PM
Updated : 2 August 2018, 02:29 PM

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৩১ কোটি ৭০ লাখ (১.৩১ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

এই অংক গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি, গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ১১১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল।

২০১৫-১৬ অর্থবছরের খরা কাটিয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে গত অর্থবছর শেষ করে বাংলাদেশ।

নতুন অর্থবছরের প্রথম মাসেও সেই ধারা বজায় থাকাকে সুখবর বলছেন অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সের নিম্নগতি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল। রেমিটেন্স বাড়াতে মাশুল না নেওয়াসহ নানা ঘোষণাও দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

কিন্তু এখন পর‌্যন্ত মাশুল কমানোর অর্থমন্ত্রীর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই মাসে এসেছিল ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাসে এসেছিল ১০০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার।

গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ১৩৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা চলতি অগাস্ট মাসে আরও বেশি রেমিটেন্স পাঠাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অর্থবছরের প্রথম মাসে রেমিটেন্সের ভালো প্রবৃদ্ধি সুখবর।

“তবে আমার বিশ্লেষণ হচ্ছে, কিছুদিন হয়তো এই ইতিবাচক ধারা থাকবে, তারপর নাও থাকতে পারে। সে কারণে রেমিটেন্স বৃদ্ধির ধারা ধরে রাখতে হলে যেসব ভাই-বোনদের আমরা বিভিন্ন দেশে পাঠাচ্ছি তাদের অবশ্যই দক্ষ করে পাঠাতে হবে।

“আর আরেকটি হচ্ছে, তারা যাতে কোনো ঝামেলা ছাড়া কম খরচে দ্রুত টাকা দেশে পাঠাতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি, স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে রেমিটেন্স বেড়েছে।

ছবি: আরব নিউজ

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে বাংলাদেশে অর্থনীতিতে।

বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো এই বিদেশি মুদ্রা। 

বর্তমানে এক কোটির বেশি প্রবাসী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন।

দেশের রেমিটেন্সের অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ছয় দেশ- সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে।

রেমিটেন্স বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও রয়েছে সন্তোষজনক অবস্থায়। বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভে ছিল ৩২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।

আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারে প্রতি ডলার এখন ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। এক বছর আগে এই দর ছিল ৮০ টাকা ৫৯ পয়সা। এ হিসাবে এক বছরে ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ।