মিরসরাইয়ে দেড় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ চীনাদের

মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৯৮৮ একর জমিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে এসেছে চীনের একদল বিনিয়োগকারী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2018, 01:28 PM
Updated : 29 July 2018, 01:28 PM

চীনের সিচুয়ান সিল্করোড ইকনোমিক বেল্ট ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড করপোরেশন চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা রোববার এ বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করেন। 

বেজার পক্ষে এর নির্বাহী সদস্য হরুনুর রশীদ এবং সিচুয়ান সিল্করোড চেম্বারের চেয়ারম্যনান লু চ্যাংওয়েন এই সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সিচুয়ান চেম্বার অব কমার্স মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে ১ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।

তাদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ৯৮৮ দশমিক ৫০ একর জমির একটি অংশে শিল্প উৎপাদন অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। সেখানে অটোমোবাইল ও মোটরসাইকেল, কৃষি যন্ত্রপাতি ও গবাদি পশুর খাবার উৎপাদন করা হবে।

এছাড়া স্টিল, টেক্সটাইল ও খাদ্য উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে চান চীনা বিনিয়োগকারীরা। দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলারও পরিকল্পনা আছে তাদের।

বিস্তৃ এই শিল্প এলাকায় সিনো-বাংলা কালচারাল কমিউনিকেশন অঞ্চল নামে একটি বিশেষ এলাকা গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বলেন, “তারা দীর্ঘদিন আগে এই প্রস্তাবগুলো আমাদের কাছে রেখেছিলেন। আমরা তাদেরকে আমন্ত্রণ করি যাতে তারা নিজের চোখে প্রকল্প এলাকা দেখে গিয়ে চুক্তি করতে পারেন।”

চীন ছাড়াও জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ইকনোমিক জোনগুলোতে বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছেন বলে পবন চৌধুরী জানান।

তিনি বলেন, “প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব হাতে এসেছে। এর সঙ্গে চীনের সিচুয়ান সিল্করোড চেম্বারের বিনিয়োগ যোগ হল। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই প্রস্তাব বাস্তবের মুখ দেখবে।”

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বেজা।

এর মধ্যে দিয়ে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান এবং ৪০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে বলে বেজা কর্মকর্তারা আশা করছেন।

তারা জানান, ইতোমধ্যে ৮৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শেষ হয়েছে; আরও ১২টি অঞ্চল নির্মাণের পর্যায়ে রয়েছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাই ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ৩০ হাজার একর জমি নিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল। ইতোমধ্যে সেখানে তিন হাজার একর জমিতে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়েছে বলে পবন চৌধুরী জানান।

ভৌগলিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এই অর্থনৈতিক অঞ্চল ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ তৈরি করেছে।

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের চাহিদা মেটাতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরেই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে বেজা।