সোনায় ‘প্রবলেম’ দেখছেন না অর্থমন্ত্রী

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের রক্ষিত সোনা বদলে যাওয়ার অভিযোগের কোনো ভিত্তি আছে বলে মনে করছেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2018, 02:02 PM
Updated : 1 August 2018, 04:28 PM

মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুরো বিষয়টিকে তিনি ‘অ্যাবসলিউটলি ইউসলেস’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

সোনা নিয়ে রাষ্ট্রের দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পাল্টাপাল্টির বিষয়টি গত সপ্তাহে যখন আলোচনায় আসে অর্থমন্ত্রী তখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে পারেননি সাংবাদিকরা। 

সোমবার রাতে দেশে ফিরে মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের এক কর্মসূচিতে যোগ দেন অর্থমন্ত্রী। ওই অনুষ্ঠান শেষে প্রশ্ন নিয়ে তার সামনে হাজির হন সাংবাদিকরা।

উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো সমস্যা নাই, স্বর্ণের বিষয় ইজ অ্যাবসলিউটলি ইউসলেস। ৯৬৩ কেজি স্বর্ণ আছে আমাদের, দূষিত স্বর্ণ হল তিন কেজি, ইট্স নট এ প্রবলেম।”

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক অনুসন্ধানের তথ্যের ভিত্তিতে দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক সংবাদ প্রতিবেদনে ভল্টের সোনা নিয়ে অভিযোগটি সামনে আসে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের ৯৬৩ কেজি সোনা পরীক্ষা করে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পড়েছে। ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের সোনার চাকতি ও আংটি জমা দেওয়ার সময় যা ৮০ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা হিসেবে গ্রহণ করে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, দুই বছর পর তা পরীক্ষা করে ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ সোনা পাওয়া গেছে। আর ২২ ক্যারেটের সোনা হয়ে গেছে ১৮ ক্যারেট।

ওই ৯৬৩ কেজি সোনার মধ্যে তিন কেজি ‘দূষিত’ বলতে অর্থমন্ত্রী কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট হয়নি সাংবাদিকদের কাছে।   

বিষয়টি বুঝতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের জমা দেওয়া একটি সোনার চাকতির ওজন ছিল তিন কেজির মত। অর্থমন্ত্রী হয়ত সেটাই বুঝিয়েছেন।

গত সপ্তাহে বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়, ভল্টে রক্ষিত সোনায় কোনো ধরনের হেরফের হয়নি; শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ যেভাবে রেখেছিল, সেভাবেই আছে।

শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের দেওয়া সোনা জমা রাখার সময় খাঁটি সোনা ৪০ শতাংশই ছিল দাবি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, ইংরেজি বাংলার হেরফেরে ‘ভুলবশত’ সেটা ৮০ শতাংশ লিখে নথিভুক্ত করা হয়েছিল।

সোনায় হেরফেরের অভিযোগ নিয়ে নানামুখি সমালোচনার মধ্যে গত ১৮ জুলাই গভর্নর ফজলে কবির এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শহিদুল ইসলামকে নিয়ে বৈঠক করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

ওই বৈঠকের পর তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনা ‘ঠিক আছে এবং ঘরেই আছে’। তবে যে অভিযোগ উঠেছে, তা অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে ‘আইনানুগভাবে’ খতিয়ে দেখা হবে, যাতে ‘সামান্যতম সংশয় বা সন্দেহও’দূরীভূত হয়।