ই-পাসপোর্ট: জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি

নাগরিকদের জন্য ই-পাসপোর্ট তৈরিতে জার্মান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2018, 12:45 PM
Updated : 19 July 2018, 12:45 PM

এই বছরের শেষ নাগাদ ই-পাসপোর্ট দেওয়া শুরুর আশা প্রকাশের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিয়েলস আনেন বলেন, এর মধ্য দিয়ে নতুন যুগে পা রাখল বাংলাদেশ।

ই-পাসপোর্টের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হ্যান্স ভোলফগ্যাং কুনস।

সোয়া তিন হাজার কোটি টাকায় বাংলাদেশকে ই-পাসপোর্ট ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহের কাজটি পেয়েছে ভেরিডোস।

ওই টাকায় প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশকে ২০ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট, ২ কোটি ৮০ লাখ পাসপোর্ট তৈরির সরঞ্জাম, আনুষঙ্গিক হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং ১০ বছর রক্ষণাবেক্ষণ সেবা দেবে।

‘বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট অটোমেটেড বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা’ প্রকল্পের আওতায় এসব পণ্য ও সেবা জিটুজি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে জার্মানির থেকে কেনা হবে।

বাংলাদেশে হাতে লেখা পাসপোর্ট থেকে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট বা এমআরপি প্রবর্তনের পর এক দশকও পার হয়নি। কিন্তু এমআরপির ডেটাবেইজে ১০ আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় একাধিক পাসপোর্ট করার প্রবণতা দেখে সরকার ই-পাসপোর্ট প্রবর্তনের উদ্যোগ নেয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জার্মানি সফরের সময় ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভেরিডোসের সঙ্গে সমঝোতা স্বারক সই হয়। গত ২১ জুন প্রকল্পটি একনেকের সায় পাওয়ার পর গত বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতেও অনুমোদিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার হল চুক্তি সই।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “ই-পাসপোর্টের ফলে বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি পাবে। আজ যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হল এর মধ্য বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।”

জার্মান প্রতিমন্ত্রী নিয়েলস আনেন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় তার দেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, কাজের মাধ্যমে পারস্পারিক আস্থা আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে ভেরিডোস সিইও কুনস বলেন, বিশ্বের কমপক্ষে ৫০টি দেশে ইলেক্ট্রনিক বা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার হচ্ছে। আরও অন্তত ৯০টি দেশ এর আওতায় আসছে, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।

ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান অনুষ্ঠানে বলেন, “পাসপোর্ট অধিদপ্তর আজ এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে। ই-পাসপোর্ট একজন নাগরিকের ভ্রমণ কতটা সহজ করবে, তা ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবে। এই পাসপোর্ট দিয়ে ইমিগ্রেশন অনেক সহজ ও ঝামেলামুক্ত হবে।”

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া শুরু করতে চান তারা। এজন্য অধিদপ্তরের ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জার্মানিতে নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।