১১ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে বিদ্যুতের নতুন রেকর্ড

অস্বস্তিকর গরমে বিদ্যুতের চাহিদা যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠল, তখন উৎপাদনেও নতুন  রেকর্ড হল।

ফয়সাল আতিক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2018, 12:59 PM
Updated : 8 July 2018, 01:01 PM

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, শনিবার রাতে দেশে ১১ হাজার ৫৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার সমপরিমাণ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ উৎপাদন।

পিডিবির জনসংযোগ শাখার পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ” রাত ৯টার দিকে বিদ্যুতের উৎপাদন বেড়ে ১১ হাজার ৫৯ মেগাওয়াটে পৌঁছে। এদিন বিকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদাও এই পরিমাণ ছিল।”

এ দিন লোডশেডিং শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল বলে জানান তিনি।

পিডিবি কর্মকর্তা সাইফুল বলেন, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকার আশপাশে নতুন কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হয়েছে। চাহিদার আলোকে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র সক্রিয় হয়ে উঠায় উৎপাদনও বেড়েছে।

চলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকেও বিদ্যুতের উৎপাদন ১০ হাজার আটশ মেগাওয়াটের ঘর স্পর্শ করে তৎকালীন চাহিদার পূর্ণ জোগান দেওয়া হয়েছিল।

ওই মাসে নতুন কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদনে যায় এবং আরও কয়েকটি শুরুর প্রক্রিয়ায় থাকায় অচিরেই সর্বোচ্চ উৎপাদন ১১ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করবে বলে আভাস দিয়েছিল পিডিবি।

এর বাইরে গত ১৬ জুন ময়মনসিংহে একটি ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ৩০ জুন কেরানীগঞ্জে একটি একশ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে এসেছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড উদযাপনে আলোর উৎসব (ফাইল ছবি)

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে ৩০ জুন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রথমবারের মতো নয় হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়।

দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৬১ শতাংশই অর্জিত হয়েছে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে, গত বছর জুনে সংসদ অধিবেশনে এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

ভিশন ২০২১ অর্জনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে আরও ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। 

বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নেওয়া পরিকল্পনায় সরকারি খাতে ছয় হাজার ৭০৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৬টি এবং বেসরকারি খাতে চার হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৮টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ মোট ১১ হাজার ৩৬৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩৪টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।

এক নজরে দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ উৎপাদন রেকর্ড

সাল

দিন

বিদ্যুৎ উৎপাদন

২০১৮

রবিবার ২৭ মে

১০ হাজার ৮২৫ মেগাওয়াট

২০১৮

শনিবার ২৬ মে

১০ হাজার ৬৯৯ মেগাওয়াট

২০১৮

মঙ্গলবার ২২ মে

১০ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট

২০১৮

মঙ্গলবার ২৪ এপ্রিল

১০ হাজার ১৩৭ মেগাওয়াট 

২০১৮

সোমবার  ১৯ মার্চ

১০ হাজার ৮৪ মেগাওয়াট 

২০১৭

শনিবার ২৮ মে

৯ হাজার ৪৭১ মেগাওয়াট

২০১৬

বৃহস্পতিবার ৩০ জুন 

৯ হাজার ৩৬ মেগাওয়াট 

২০১৬

বুধবার ১৫ জুন

৮ হাজার ৭৭৬ মেগাওয়াট

২০১৬

শনিবার ৯ এপ্রিল

৮ হাজার ৩৪৮ মেগাওয়াট

২০১৫

রবিবার ৫ জুলাই

৮ হাজার ৩২ মেগাওয়াট

২০১৫

বুধবার ১ জুলাই

৭ হাজার ৯২৩ মেগাওয়াট

২০১৪

বুধবার ১৬ জুলাই

৭ হাজার ৪০৩ মেগাওয়াট

২০১৪

মঙ্গলবার ১৫ জুলাই

৭ হাজার ৩৭১ মেগাওয়াট

২০১৪

শনিবার ৩০ মার্চ

৭ হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট


আগে যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল, এখন তা বেড়ে ৮০ শতাংশ হয়েছে বলে গত মার্চে জানিয়েছিল পিডিবি।

সংস্থার ৭ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের আটটি অঞ্চলে সক্রিয় আছে মোট ১২১টি উৎপাদন ইউনিট।

তবে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৪১০ মেগাওয়াট হলেও যান্ত্রিক ত্রুটি ও জ্বালানি সঙ্কটের কারণে বন্ধ রয়েছে অন্তত ২২টি ইউনিট।