লুটেরাদের পক্ষ নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী: ফিরোজ রশীদ

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, অর্থমন্ত্রী জনগণের পক্ষ না নিয়ে ব্যাংক লুটেরা ও ধনিক শ্রেণির পক্ষ নিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2018, 05:36 PM
Updated : 19 June 2018, 06:24 PM

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

কাজী ফিরোজ রশিদ

ফিরোজ রশীদ বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো রাজনৈতিক দর্শন নেই। দর্শন না থাকলে তাকে বাজেট বলা যায় না।

“কী বাজেট দিয়েছেন?”

এই বাজেট আওয়মী লীগের নীতি-আদর্শ দর্শনের ‘সম্পূর্ণ বিরোধী’ বলে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির এই সদস্য বলেন, “অর্থমন্ত্রী বিষ আর মধু একসঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন। এদেশের মানুষ একসঙ্গে বিষ আর মধু খায় না। মানুষ এত বোকা না।”

ব্যাংকের করপোরেট কর কমানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ব্যাংক ডাকাতদের সুবিধা দেওয়া হবে-এটা মানা যায় না। করপোরেট কর আগের অবস্থায় রাখতে হবে। জনগণের করের টাকায় ব্যাংকের ভর্তুকি দেওয়া যাবে না।”

জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফিরোজ রশীদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু কোনো দিন ২২ পরিবারের কাছে মাথা নত করেননি। আপনি কেন ব্যাংক লুটেরাদের কাছে মাথানত করলেন?”

প্রশাসন থেকে শুরু করে সবখানে ‘কে কত বড় আওয়ামী লীগ’ তা প্রমাণের প্রতিযোগিতা চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ রফিকুল ইসলাম বলেন, এত সমালোচনার মধ্যেও অর্থমন্ত্রীর নীরবতায় তারা কিছুটা হতাশ। তিনি আশা করেন, অর্থমন্ত্রী কিছু বলবেন।

তিনি বলেন, “অনেক জায়গায় রাস্তা মেরামত বা নির্মাণের এক বছরের মধ্যে ভেঙে যায়। এটা মানুষ ভালোভাবে নেয় না। হাসপাতালে সেবা না পেলে, ডাক্তার না থাকলে মানুষ ভালোভাবে নেয় না।”

বাজেটে আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে বলে দাবি করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।  

গত ১০ বছরের বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “পৃথিবীর অনেক দেশ এখন বাংলাদেশকে দেখে শিখছে, অনুসরণ করছে।”

বাজেটের সমালোচকদের উদ্দেশে মতিয়া চৌধুরী বলেন, “বাজেট বাস্তবায়ন না হলে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে কীভাবে? এর জবাব দিয়েই সমালোচনা করা উচিত।”

বাজেটে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর প্রস্তাব না করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান মতিয়া চৌধুরী।

তিনি বলেন, “আশা করি, বাজেটের পরও অর্থমন্ত্রী সঞ্চয়পত্রের ওপর হাত দেবেন না।”

মাদকবিরোধী অভিযানের সমালোচনা করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, “মাদক যুবসমজকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। অনেকে পরোক্ষভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানের সমালোচনা করছে। এরা জ্ঞানপাপী। যুব সমাজকে মাদকাসক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে না পারলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে।”

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত ‘ষড়যন্ত্র শুরু’ করেছে মন্তব্য করে সরকারি দলের সদস্য ফারুক খান বলেন, “নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে হলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে করতে হবে।”