‘অপ্রতুল বরাদ্দে কৃষির সঙ্কট উত্তরণ সম্ভব নয়’

প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে ‘উপেক্ষা’ করে মোট বাজেটের মাত্র ৩.৭ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করায় তাকে ‘অপ্রতুল’ বলছে কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2018, 01:37 PM
Updated : 10 June 2018, 01:37 PM

তারা বলছে, এই অপ্রতুল বরাদ্দ দিয়ে কৃষি খাতের বিদ্যমান সঙ্কট নিরসন কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

এবার বাজেটে কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে ৫৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে কৃষি ভর্তুকি, সার, বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ প্রণোদনা ও সহায়তা কার্ড, সেচ সুবিধা ও খামার যান্ত্রিকীকরণ, শষ্য বহুমুখীকরণ ও বিপণন, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান। এর মধ্যে ভর্তুকি রয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগ্রাম পরিষদ কৃষিখাতে বাজেট নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার বলেন, “সরকার নিজেদের কৃষিবান্ধব বলে দাবি করলেও বাজেটে বরাদ্দে তার প্রতিফলন ঘটেনি। দেশের প্রধান উৎপাদনশীল খাত কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি এবারও উপেক্ষিত হয়েছে। এই বরাদ্দ খুব অপ্রতুল, যা দিয়ে কোনোভাবেই কৃষির বিদ্যমান সঙ্কট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।”

কৃষিতে অর্থায়নের সুবিধা সিন্ডিকেট ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ভোগ করছে এমন অভিযোগ এনে আব্দুস সাত্তার বলেন, “বরাদ্দের অধিকাংশ খোদ উৎপাদক চাষী পায় না।  কৃষি খাতের যে ভর্তুকি খোদ চাষী তার মুখ দেখে না। ভর্তুকির টাকায় প্রকৃত কৃষি পণ্যে তেমন কোনো মূল্য সহায়তা পায় না।  এই ভর্তুকির অধিকাংশ টাকা চলে যায় ফড়িয়া, মধ্যস্বত্ত্বভোগী ও সরকারি দলের প্রভাবশালীদের হাতে।”

সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ধান-চাল না কেনায়  এবং কৃষি বরাদ্দের দ্বারা হাওর অঞ্চলের কৃষক, পাট ও আখ চাষীসহ গ্রামীণ উৎপাদকেরা কিভাবে নিজেদের জন্য টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিৎ করবে, তারও কোনো প্রস্তাব বাজেট বক্তৃতায় আসেনি বলে হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, “যে বাজার ব্যবস্থায় কৃষির উদ্বৃত্ত মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা আত্মসাৎ করে এবং যে উদ্বৃত্ত কৃষি খাতে পুনর্বিনিয়োগ না হয়ে অকৃষিখাতে চলে যায়, তা সংস্কারেরও কোনো পদক্ষেপ এবারের বাজেটে দেখা যায়নি।”

ইতোমধ্যে চাল আমদানি সম্পন্ন হওয়া এবং এলসি খোলার পর আমদানির ওপর শুল্ক আারোপ করার সিদ্ধান্তে কৃষকরা বাস্তবে কতটা লাভবান হবে, তা নিশ্চিৎ নয় বলেও মন্তব্য করেন ক্ষেতমজুর সমিতির এই নেতা।

ক্ষেতমজুর, গ্রামীণ শ্রমজীবী ও প্রান্তিক জনগণের জন্য স্বল্প দামে পল্লী রেশনিংয়ের ব্যবস্থা চালু করার কোনো উদ্যোগ বাজেট প্রস্তাবে না থাকায় ক্ষোভ আসে সংবাদ সম্মেলন থেকে।

সভায় ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি সাইফুল হক, কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির, ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি সোহেল আহাম্মেদসহ দুটি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।