যা যা আছে মুহিতের বাজেট প্রস্তাবে

বাংলাদেশকে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথে’ এগিয়ে নিতে সরকার নতুন অর্থবছরে কত টাকা খরচ করতে চায়, সেই অর্থ কোথা থেকে আসবে, জনগণকে কোন কোন খাতে কর বা শুল্ক গুনতে হবে, সেই খতিয়ান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন। তার পূর্ণাঙ্গ বাজেট বক্তৃতা অবিকৃতভাবে পাঠকের জন্য প্রকাশ করা হল।

>>বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2018, 08:28 AM
Updated : 11 Nov 2018, 02:03 PM

পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালার নামে

সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায়

বাংলাদেশ

মাননীয় স্পীকার

১।    আমি আপনার সানুগ্রহ অনুমতিক্রমে ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট এই মহান সংসদে পেশ করতে দাঁড়িয়েছি।

প্রথম অধ্যায়: সূচনা ও প্রেক্ষাপট

২।    প্রথমেই মহান আল্লাহতায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি যে, তিনি আমাকে আমার দ্বাদশ বাজেট এই মহান সংসদে পেশ করার সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহর রহমত সীমাহীন এবং সেই রহমত আমার উপরে তিনি দু’হাতে বর্ষণ করেছেন। আমি আমার ৮৫ বছর বয়সে বাজেট প্রণয়নের মত একটি কঠিন কাজ এবারেও করতে পেরেছি। আমি শুরু করছি আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। তিনি এই দেশটি প্রতিষ্ঠা করে আমার মত একজনকে দ্বাদশবারের মত দেশের বাজেট প্রণয়নের সুযোগ করে দিয়েছেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করছি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সহকর্মী জাতীয় চার নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং শহীদ এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামানকে। স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নির্যাতিত কিন্তু নির্ভীক মুক্তিযোদ্ধা ও মা-বোনদের। আরও স্মরণ করছি পঁচাত্তর এর ১৫ আগস্টে শাহাদাত বরণকারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধুর স্বজন ও অন্যান্য শহীদদের। স্মরণ করছি ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, ‘৬৯-র গণআন্দোলন এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ জনগণের অধিকার আদায়ের দাবিতে জীবন উৎসর্গকারী শত-সহস্র শহীদদের।

৩।        বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি এবারের বাজেট উপস্থাপন করছি, যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর্যুপরি দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বশেষ বাজেট। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ স্বপ্ন ছিল মানুষের জন্য অফুরান ভালবাসা, বাঙালীদের জন্য মমত্ববোধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার অনুপম বোধ থেকে উৎসারিত। ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী রক্তাক্ত এক মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে ১৬ ডিসেম্বরে আমাদের নবযাত্রা শুরু হয়; বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে এসে ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি এই যুদ্ধবিধ্বস্ত এবং অর্থনীতিতে পশ্চাৎপদ দেশটির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। অত্যন্ত অল্প সময়ে তিনি দেশটিকে উপহার দেন আধুনিক ও অগ্রসর একটি সংবিধান এবং মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশটির পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করেন।

৪।        আমরা আমাদের বিধ্বস্ত দেশে পুনর্বাসন এবং পুনর্গঠন কাজ যখন সম্পন্ন করে এনেছি, সে সময়েই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশশত্রু কতিপয় কুচক্রী জাতির পিতাকে হত্যা করে আমাদের অগ্রগতি রুদ্ধ করার ঘৃণ্য পদক্ষেপ নেয়। এই কুচক্রীদের দেশবিরোধী কার্যকলাপ আমাদের ১৬টি বছরের জন্য জিম্মি করে রাখে। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য এই জাতি প্রায় বিনা রক্তে বিপ্লব সাধন করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। এই গণতন্ত্রকে সুসংহত ও সুসংগঠিত করতে ২১ বছর পরে যাদের নেতৃত্বে দেশটি স্বাধীন হয়, সে আওয়ামী লীগ সরকার এবং বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের নেতৃত্বের দায়িত্ব নেন। দেশটির বাধাপ্রাপ্ত অগ্রযাত্রা আবার শুরু হয়। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই এই অগ্রযাত্রা সামান্য ব্যাহত হয়। তবে, সেটা ছিল সাময়িক বিচ্যুতি। অতঃপর ২০০৯ সাল থেকে আমাদের অগ্রযাত্রা বিগত ১০টি বছর ধরে অব্যাহত রয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সামনে লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করলেন যে, ২০২১ সালে এই দেশটি মধ্যম আয়ের দেশে উত্তীর্ণ হবে। আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা ২০১৫ সালেই সেই উত্তরণটি করতে সক্ষম হই। অতঃপর ২০১৮ সালের মার্চ মাসে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আমরা আশা করছি যে, অচিরেই আমরা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হব।

৫।   মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের পরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছেন। আমাদের টার্গেট হলো ২০৪১‌সালে আমরা হব সুখী, সমৃদ্ধ একটি উন্নত দেশ। ২০১১ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বিস্তৃত আমাদের দু’টি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ছকমত আমরা ঈপ্সিত পথে অগ্রসর হচ্ছি। একবিংশ শতাব্দীতে এ যাবৎ আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৬ শতাংশ এবং বিগত ২ বছর ধরে এ প্রবৃদ্ধির হার হয়েছে ৭ শতাংশের ঊর্ধ্বে। চলতি ২০১৭‑১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাবমতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৬৫ শতাংশ। আমরা এখন এই মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি। এছাড়াও একটি সমন্বিত দীর্ঘমেয়াদি ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, ২১০০’ এর খসড়াও আমরা প্রণয়ন করছি। সারা পৃথিবী আমাদের সফল উন্নয়ন কৌশল ও কার্যক্রমের স্বীকৃতি ইতোমধ্যেই দিয়েছে।

৬।        নবজাতক ও শিশুমৃত্যু হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘Millennium Development Goals’ পুরস্কারে ভূষিত হন। স্বাস্থ্যখাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা প্রদানের জন্য তিনি ‘South-South Award 2011’ অর্জন করেন। দারিদ্র্য বিমোচনে অভাবনীয় সাফল্যের জন্য ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘Achievement in Fighting Poverty’ পুরস্কারে ভূষিত হন। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দূরদর্শী নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫ সালে তিনি জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘Champion of the Earth’ পুরস্কার লাভ করেন। ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ তারিখে UN Women মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ‘Planet 50-50 Champion’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। একই অনুষ্ঠানে ‘Global Partnership Forum’ তাঁকে ‘Agent of Change’ পুরস্কারে ভূষিত করে। নারীর অধিকার সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে ভূমিকা পালনের জন্য ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ‌বিশ্ব নারী সম্মেলন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিষিক্ত করেছে ‘Global Women’s Leadership’ পুরস্কারে। অতি সম্প্রতি, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে এবং গণতন্ত্র, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা রাখার জন্য পশ্চিমবঙ্গের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি.লিট) উপাধিতে ভূষিত করেছে।

৭।        আঞ্চলিক পর্যায়ে যোগসূত্র স্থাপন এবং অভিবাসন সংকট মোকাবেলায়ও বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিশ্বব্যাপী অভিবাসন বিরোধী রক্ষণশীল মনোভাবের বিপরীতে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা জনগণকে আশ্রয় প্রদান এবং তাদের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের জনগণের অকৃত্রিম মমত্ববোধ ও সহযোগিতা বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম চ্যানেল ফোর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ‘Mother of Humanity’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এসব সম্মাননা ও স্বীকৃতি আমাদের দেশকে করেছে সম্মানিত – দেশের ভাবমুর্তিকে করেছে সমুজ্জ্বল।

মাননীয় স্পীকার

৮।        দ্রুততম সময়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়নে আমাদের সরকারের ঈর্ষণীয় সক্ষমতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধু আমাদের দাবি নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সত্য। ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে একদিন যে দেশকে অবজ্ঞা করা হয়েছে, সে দেশ বিশ্ববাসীর কাছে এখন এক ‘উন্নয়ন-বিস্ময়’; বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রা এখন বিশ্বের রোল মডেল। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পরিসংখ্যানমতে নামিক জিডিপি’র ভিত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৪৩তম বৃহৎ অর্থনীতি আর ক্রয়ক্ষমতা সমতার (purchasing power parity) ভিত্তিতে আমাদের অবস্থান ৩২তম। ২০১৭ সালে দ্রুততর প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী শীর্ষ দশটি দেশের তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। PriceWaterhouseCoopers-এর প্রক্ষেপণমতে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৮তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০৫০ সালে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ২৩তম। ব্যক্তিগতভাবে আমার গর্বের বিষয় হলো যে বিগত শতাব্দীর ৭০ ও ৮০’র দশকে আমি ‘বিশ্ব ভিক্ষুক’ বলে অবহেলিত হয়ে আজকে সফল একজন অর্থমন্ত্রীর সম্মান পাচ্ছি।

৯।        বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ Cornell University’র স্বনামধন্য বাঙ্গালী অধ্যাপক কৌশিক বসু তাঁর সাম্প্রতিক ‘Why is Bangladesh Booming’ লেখাতে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্জনকে ‘One of Asia’s most remarkable and unexpected success stories’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর লেখায় বাংলাদেশের এরূপ অর্থনৈতিক অগ্রগতির অন্যতম নির্ধারক হিসেবে নারীর ক্ষমতায়নকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

১০।      আমাদের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা এবং দেশের জনগণের সার্বিক মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্ব এবং উন্নয়ন পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা। আমাদের সৌভাগ্য যে, সে নেতৃত্ব আমাদের আছে। আমি নিশ্চিত যে, সেই নেতৃত্ব জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামীতেও আমাদের দেবেন। আল্লাহ্তায়ালার কাছে প্রার্থনা করছি যে, তিনি তার সীমাহীন রহমত এ ক্ষেত্রেও বর্ষণ করবেন। দারিদ্র্যমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের পুরোপুরি বাস্তবায়নে আমাদের পাড়ি দিতে হবে আরও খানিকটা পথ। বিপুল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমে আরও গতি সঞ্চার করতে হবে। চলমান রাখতে হবে উচ্চ প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি যোগাযোগ-বিদ্যুৎ-জ্বালানি অবকাঠামো বিনির্মাণ ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ সৃজনের জন্য আমাদের আয়োজন ও প্রচেষ্টা। আপনি জানেন, এটি একটি ধারাবাহিক ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। ‘রূপকল্প ২০২১’-এর ধারাবাহিকতায় ‘রূপকল্প ২০৪১’ এ আমরা তার রূপরেখাই তুলে ধরছি। আমার বিশ্বাস ‘রূপকল্প ২০২১’ এর মত ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের সুযোগ দিয়ে দেশের সর্বস্তরের জনগণ আমাদের পাশে থাকবেন।

১১।      প্রত্যেকবারেই বাজেট প্রণয়নকালে আমি বিভিন্ন সংগঠিত গোষ্ঠীর সঙ্গে লম্বা আলোচনা করি। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয় নি। এবারে প্রক্রিয়াটি শুরু হয় বেশ আগে এবং সেটি হয় সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের উদ্যোগে। তারা ২৯ জানুয়ারিতে তাদের সুচিন্তিত অভিমত লিখিত আকারে উপস্থাপন করেন। এই রকম মোট ষোলটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ১৮ মে পর্যন্ত। সংসদীয় প্রতিটি কমিটি ছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, অর্থনীতি সমিতি, ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের প্রত্যেক বিভাগীয় সচিববৃন্দ, এনজিও নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে তিনটি টেলিভিশনে এবং ইকনমিক রিপোটার্স ফোরামের সঙ্গে আলোচনায় আমি মিলিত হই। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত টেলিভিশন উপস্থাপক চ্যানেল আই-এর শাইখ সিরাজের উদ্যোগে দক্ষিণ সিলেটে কৃষকদের আসরেই শুধু নয়, তাঁর ‘কৃষি বাজেট, কৃষকের বাজেট’ প্রোগ্রাম থেকে প্রদত্ত লিখিত সুপারিশমালা আমার জনমত জানার উদ্দেশ্যকে সমৃদ্ধ করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং চেম্বার অব কমার্সদের ফেডারেশন (FBCCI) এই উপলক্ষে বিশেষ আলোচনার জন্য সম্মেলন করে। এদের সকলের কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।

১২।      আমার এ বক্তৃতার পরবর্তী অধ্যায় অর্থাৎ দ্বিতীয় অধ্যায়ে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দশকের একটি বিবরণ তুলে ধরেছি। এছাড়া, আমার বক্তব্যকে একটি ছক (পরিশিষ্ট ক: সারণি ১) এর সাহায্যে মাত্র ছয়টি ক্ষেত্রেই যে উন্নয়ন হয়েছে সে তথ্য তুলে ধরেছি। তৃতীয় অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে চলতি ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট। আমি স্বীকার করি যে, আমাদের দায়বদ্ধতা প্রমাণের জন্য সম্পূরক বাজেট আলোচনা আরো অর্থবহ ও বিস্তৃত হওয়া দরকার। কিন্তু বাস্তবেই আমি দুঃখিত যে, সে সুযোগ আমি সৃষ্টি করতে পারিনি। আমার উত্তরসূরী কেউ হয়তো এদিকে সুদৃষ্টি দেবেন বলে আমার প্রত্যাশা রইলো। চতুর্থ অধ্যায়ে আমি ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট কাঠামো উপস্থাপন করছি। পঞ্চম অধ্যায়ে বর্ণনা করেছি ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রা’, যেখানে আছে খাতভিত্তিক নীতি-কৌশল, কর্মপরিকল্পনা ও সম্পদ সঞ্চালনের বিস্তৃত বিবরণ। এক কথায় সেখানে দিয়েছি আগামী বছরের বাজেটের কার্যক্রম। ষষ্ঠ অধ্যায়ে প্রস্তাবিত সংস্কার ও সুশাসনের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ে আছে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম। অষ্টম অধ্যায়ে বিভিন্ন উৎস থেকে (আয়কর, মূসক ও আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক) রাজস্ব আদায়ের কলাকৌশল বলা আছে। সবশেষে নবম অধ্যায়ে আছে উপসংহার যেখানে বিবৃত হয়েছে বাজেট বাস্তবায়নে আমার আশাবাদ এবং সকলের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের জন্য আবেদন।

দ্বিতীয় অধ্যায়

অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এক দশক

(১) ২০০৯ সালে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণ

মাননীয় স্পীকার

১৩।   ২০০৮ সালের ঐতিহাসিক অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে এবং দ্ব্যর্থহীন নির্বাচনী অঙ্গীকার ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ মহাজোটের নেতা দেশরত্ন শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তখন থেকেই আমি তাঁর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছি। ২০১২ সালে প্রথমবারের মত আমি আমার বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম ঠিক করি “আগামীর পথে অগ্রযাত্রা: সমৃদ্ধ ও কল্যাণময়ী দেশগড়ার লক্ষ্যে”। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম রেখেছি ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’।

১৪।     ২০০৯ থেকে শুরু করে বিগত দশ বছরে আমাদের অগ্রযাত্রা কেবল শক্তিশালী নয় জনকল্যাণকরও বটে। এই দশ বছরে -

  • উন্নয়নশীল অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি যখন ৫.১ শতাংশ তখন আমাদের প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ৬.৬ শতাংশ;

  • সরকারি বিনিয়োগ বেড়েছে ৪.৩ শতাংশ থেকে ৮.২ শতাংশে;

  • মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৭৫৯ মার্কিন ডলার থেকে ১ হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলারে;

  • দেশে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১২.৩ শতাংশ থেকে ৫.৮ শতাংশে;

  • রাজস্ব জিডিপি’র অনুপাত বেড়েছে ৯.২ শতাংশ থেকে ১০.৩ শতাংশে;

  • বাজেটের আয়তন বেড়েছে ৮৯ হাজার কোটি টাকা থেকে ৪ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকায়;

  • বার্ষিক রপ্তানি ১৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে;

  • বার্ষিক আমদানি ২২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে;

  • বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে;

  • দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার নেমেছে ৩১.৫ শতাংশ থেকে ২৪.৩ শতাংশে এবং হতদরিদ্রের হার কমেছে ১৭.৬ শতাংশ থেকে ১২.৯ শতাংশে।

(২) মানব সম্পদ উন্নয়ন

মাননীয় স্পীকার

১৫।      মানব সম্পদ উন্নয়নে প্রতিবেশী দেশসমূহের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক দ্রুত অগ্রসর হয়েছে। ২০০৯ সালে আমাদের মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচকের মান ছিল ০.৫৩৫। ইউএনডিপি’র ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী এই সূচকের মান দাঁড়িয়েছে ০.৫৭৯। তদুপরি, বাংলাদেশ বর্তমানে ‘medium human development country’ শ্রেণিভুক্ত একটি দেশ। বস্তুত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মদক্ষতার বিকাশসহ মানবসম্পদ উন্নয়নের নিয়ামক খাতসমূহে অধিক সম্পদ সঞ্চালন এবং উপযুক্ত নীতি-কৌশল গ্রহণের ফলে এক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।

শিক্ষা

১৬।      সার্বজনীন ও মানসম্মত শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে আমরা শুরুতেই ‘জাতীয় শিক্ষা নীতি, ২০১০’ প্রণয়ন করি এবং তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হই। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিবছর বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে স্নাতক ও সমপর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল-ফিডিং কার্যক্রম পরিচালনা, শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা, বিভিন্ন ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার পুস্তক মুদ্রণ, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, সৃজনশীল মেধার মূল্যায়ন ও প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট গঠন, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শিক্ষার্থী-শিক্ষকের অনুপাত কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান, তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রমে উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ইত্যাদি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।

১৭।      আমাদের প্রচেষ্টায় ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে নিট ভর্তির হার ৯৪.৮ শতাংশ থেকে প্রায় ৯৮.০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে; ঝরে-পড়ার হার ৩৯.৮ শতাংশ থেকে ১৮.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এছাড়া, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ৪৬: ১ থেকে ৩৯: ১ এ নামিয়ে আনা এবং উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৭৯ লক্ষ হতে ১ কোটি ৩০ লক্ষে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ১ হাজার ৪৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে এবং ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে; পিটিআইবিহীন ১১টি জেলা সদরে পিটিআই (Primary Teachers’ Training Institute) নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময়ে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ১ লক্ষ ৮ হাজার ২০০ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং ১ লক্ষ ৩ হাজার শিক্ষকের চাকুরি জাতীয়করণ করা হয়েছে। মূল ধারার বাইরে ১১ হাজার ১৬২টি আনন্দ স্কুলে ৩ লক্ষ ১০ হাজার ৯৮৭ জন বিদ্যালয়-বহির্ভূত ও ঝরে-পড়া শিশু শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে।

১৮।      প্রাথমিক পর্যায়ে সার্বজনীন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি মাধ্যমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি সৃজনশীল-কর্মমুখী-বিজ্ঞানভিত্তিক-উৎপাদন সহায়ক শিক্ষার প্রসারের ওপর। ই-বুক প্রচলন করা হয়েছে, ১২৫টি উপজেলায় ‘উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং আরো ১৬০টি উপজেলায় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান আছে, ৩১৫টি উপজেলায় ১টি করে বেসরকারি বিদ্যালয়কে মডেল বিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়েছে, ২৬ হাজার ৬৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৯০ হাজার শিক্ষক এবং ১ হাজার ৫০০ মাস্টার ট্রেনারকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। টিচার্স পোর্টালে ৬২ হাজার কনটেন্ট তৈরি করা হয়েছে, যা ব্যবহার করে শিক্ষকগণ নিজেরাই কনটেন্টের মানোন্নয়ন করতে পারছেন। মোট ৮ লক্ষ শিক্ষককে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে।

১৯।      দেশি ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে আমরা বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে পাঠ্যক্রমে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি পৃথক ‘কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

২০।      দেশের জনসাধারণের জন্য সুলভে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামীণ দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে ১৩ হাজার ৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে এবং এ ক্লিনিকগুলোতে ১৩ হাজার ৮২২ জন হেল্‌থ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গরীব-দুঃস্থ গর্ভবতী মায়েদের জন্য ৫৩টি উপজেলায় মাতৃভাউচার কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি’ চালু করা হয়েছে। এর আওতায় পাইলট ভিত্তিতে টাঙ্গাইলের ৩টি উপজেলায় ৬৮ হাজার ৫৫৭টি পরিবারকে নিবন্ধিত করা হয়েছে যারা কার্ড ব্যবহার করে আন্তঃবিভাগীয় ও বহিঃবিভাগীয় সেবা গ্রহণ করছেন। ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন’ নামে একটি কল সেন্টারের মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা বিনামূল্যে চিকিৎসকের পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে।

২১।      আমাদের জনমুখী স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের প্রভাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মাতৃমৃত্যুর হার ১.৭৬ জনে (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে) নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে এ হার ছিল ২.৫৯। বর্তমানে এক বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে পূর্ণ টিকা গ্রহণের হার ৮২.৩ শতাংশ, ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর হার ৯২ শতাংশ। টিকাদান কর্মসূচির ব্যাপ্তির ফলে কমে এসেছে শিশুমৃত্যুর হার। বর্তমানে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজার জীবিত জন্মে ২৮ জন, ২০০৯ সালে যা ছিল ৩৯ জন।

২২।      বিগত দশবছরে দেশে বেশ কয়েকটি নতুন হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে;একইসাথে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ও অন্যান্য চিকিৎসা অবকাঠামোর ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে। এছাড়া, অটিজম, স্নায়ু বিকাশজনিত রোগ, এপিলেপসি প্রভৃতি চিকিৎসার জন্য আমরা ১৫টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি, ১৯টি হাসপাতালকে নারীবান্ধব হিসেবে ঘোষণা করেছি।

২৩।      স্বাস্থ্যসেবার অপরিহার্য অনুষঙ্গ হিসেবে দক্ষ নার্স গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৩ বছরের ডিপ্লোমা নার্সিং ও ৪ বছরের বি.এস.সি-ইন-নার্সিং কোর্স চালু করা হয়েছে। একই সাথে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফ তৈরির জন্য দেশের ৩৮টি নার্সিং ইন্সটিটিউটে ৩ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা-ইন-মিডওয়াইফারি কোর্স চালু করা হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রায় ১০ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ করা হয়েছে এবং নার্সিং সেবা পরিদপ্তরকে ‘নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে’ উন্নীত করা হয়েছে।

২৪।      ঔষধ উৎপাদনেও আমাদের অর্জন গর্ব করার মত। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ মেটানোর পর বাংলাদেশে উৎপাদিত ঔষধ এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে ৩ হাজার ১৯৬ কোটি টাকার ঔষধ রপ্তানি করা হয়েছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশে উৎপাদিত ঔষধের বিশেষ সুনাম রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ‘ঔষধ নীতি ২০১৬’ জারি করেছি। বাংলাদেশের ঔষধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটি অভিজ্ঞতা, সেখানে কোন ঔষধের গন্ধ নেই বা ঔষধের বর্জ্য দেখা যায় না।

কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়ন

মাননীয় স্পীকার

২৫।      আমাদের শ্রমবাজারে প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষ শ্রমশক্তি যুক্ত হয়। কর্মক্ষম এই জনশক্তির জন্য দেশের অভ্যন্তরে এবং প্রবাসে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, তাঁদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং মানসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যে শুরুতেই আমরা ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ২০১১’ প্রণয়ন করি। এই নীতিমালার আলোকে সরকারের ২৩টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থার দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে ৩৭ সদস্যবিশিষ্ট National Skill Development Council (NSDC) গঠন করা হয়েছে। দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমে নিরবচ্ছিন্ন অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে National Human Resource Development Fund (NHRDF) গঠন করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত সকল দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয় এবং মানসম্মত প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ‘National Skill Development Authority (NSDA)’ গঠনের কাজ বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

২৬।      তিনধাপে মোট ১৫ লক্ষ লোকের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে আমরা ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে ১০ বছর মেয়াদি ‘Skills for Employment Investment Program (SEIP)’ বাস্তবায়ন করছি। এ প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১ লক্ষ ৮২ হাজার ৭৫৬ জনকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মধ্যে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৯০০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া পরিবহন খাতে দক্ষ ও পেশাদার গাড়িচালক তৈরির বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমাদের গৃহীত উল্লেখযোগ্য দক্ষতা উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মধ্যে আরও আছে- জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের পরিবর্তনশীল চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রক্ষার নিমিত্ত ‘জাতীয় ও বৃত্তিমূলক যোগ্যতা কাঠামো’ অনুমোদন, দক্ষতা ও যোগ্যতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন, স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি সার্টিফিকেট কোর্স ও ডিপ্লোমা কোর্সের পাঠ্যক্রম যুগোপযোগীকরণ, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। পাশাপাশি, শ্রমবাজার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ১২টি সেক্টরভিত্তিক শিল্প দক্ষতা পরিষদ (Industry Skills Council (ISCs) গঠন করেছি, আরও ৩টি গঠনের কাজ চলছে।

২৭।      বিগত দশ বছরে আমরা বৃত্তিমূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ অবকাঠামোর ব্যাপক সম্প্রসারণ করেছি। এ সময়ে সরকারি অর্থায়নে ৩০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ৫টি ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের সকল জেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকায় প্রশিক্ষণ সুবিধার বিকেন্দ্রীকরণ সম্ভব হয়েছে। ২০০৯-২০১৭ সময়ে এ সকল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১৭.৫ লক্ষ বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

২৮।      প্রবাসে কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং প্রবাসী কল্যাণের জন্য আমরা আরও যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করেছি তার মধ্যে আছে- ফিঙ্গারপ্রিন্ট-ভিসা প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন অভিবাসন সেবা বিকেন্দ্রায়ন ও সহজীকরণ; প্রি-ডিপার্চার ট্রেনিং এর আয়োজন; কতিপয় দেশে বিনা অথবা স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী প্রেরণ; দেশভিত্তিক অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ ও ব্যাপক প্রচার; ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড হতে অসুস্থ ও দুর্ঘটনায় আহত কর্মীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান ও প্রবাসী কর্মীদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান, সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারীকে Commercially Important Person (CIP) এর মর্যাদা প্রদান ইত্যাদি।

২৯।      আমাদের সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ইরাকে মোট ১০ লক্ষ ৭৭ হাজার undocumented কর্মী বৈধতা পেয়েছে। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনয়ন এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা আইনি কাঠামোতেও সংস্কার এনেছি। ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ আইন ২০১৩’, ‘প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি ২০১৬’ এবং ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০১৭’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া বৈধ চ্যানেলে প্রবাস আয় প্রেরণে সহায়তা প্রদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে তফসিলি ব্যাংকে রূপান্তর করা হয়েছে।

মাননীয় স্পীকার

৩০।     দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প কারখানায় বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্পে উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, শ্রম মন্ত্রণালয় এবং কারখানা মালিকদের সমন্বয়ে প্রণীত ত্রিপক্ষীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় মোট ৩ হাজার ৭৮০টি পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা মূল্যায়ন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, ৩ হাজার ৭৪৩টি রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের তথ্য সন্নিবেশিত করে Publicly Accessible Database তৈরি করা হয়েছে। আরো ২৭ হাজার কারখানার ডাটাবেইজ তৈরির কাজ চলছে। এর ফলে, তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান সুদৃঢ় হয়েছে।

৩১।      আমাদের জনবান্ধব সরকার শ্রমিকের সার্বিক কল্যাণের জন্যও কাজ করে যাচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণের জন্য ‘বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল’ গঠন করা হয়েছে। শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প, বিশেষত পোশাক শিল্পের কর্মীদের কল্যাণার্থেও একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরি ২০০৯ সালের ১ হাজার ৬৬২ টাকা থেকে দুই দফায় বৃদ্ধি করে ৫ হাজার ৩০০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের পশ্চাৎপদ ৫টি জেলার (লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী এবং গাইবান্ধা) মোট ১০ হাজার ৮০০ জন দরিদ্র মহিলাকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে। ‘শ্রম বিধিমালা ২০১৫’ এর আলোকে বিভিন্ন কারখানায় মোট ৯৭০টি ‘সেইফটি কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। আমাদের শ্রমশক্তির একটা বড় অংশ আনুষ্ঠানিক কাঠামোর বাইরে আছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ হল গৃহকর্মী। তাঁদের সুরক্ষার জন্য ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’ নামে একটি নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।

৩২।      আমাদের গৃহীত এসকল পদক্ষেপের ফলে ২০১০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে মোট ৬৩ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং ৫১ লক্ষ কর্মী বিদেশে গমন করেছেন।

(৩) ভৌত অবকাঠামো

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

মাননীয় স্পীকার

৩৩।     বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমাদের সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার খাত। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট। এ প্রেক্ষাপটে আমরা উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থার সমন্বিত উন্নয়ন কৌশল সংবলিত ‘Power Sector Master Plan’ প্রণয়ন করি এবং পরিকল্পনামাফিক বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করে সবার জন্য যৌক্তিক মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা।

৩৪।     আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নয় বছরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ২৭টি থেকে ১১৮টিতে উন্নীত হয়েছে; বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তিন গুণ বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াটে। সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ২০০৯ সালের ৩ হাজার ২৬৮ মেগাওয়াট থেকে বর্তমানে ১০ হাজার ৯৫৮ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। বিগত ৯ বছরে ২ হাজার ৬২২ সার্কিট কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন এবং ১ লক্ষ ৭৪ হাজার কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে মোট সঞ্চালন ও মোট বিতরণ লাইনের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ১০ হাজার ৬৮০ সার্কিট কিলোমিটার এবং ৪ লক্ষ ৫০ হাজার কিলোমিটার। এ সময়ে বিদ্যুতের সিস্টেম লস ১৬.৯ শতাংশ থেকে ১১.০ শতাংশে নেমে এসেছে। সার্বিকভাবে, বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীর হার ৪৭ শতাংশ হতে ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

৩৫।     জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা নতুন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র অনুসন্ধানের ওপর জোর দিয়েছি। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে অর্থায়নের অভাবে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান এবং উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হয়। এর বিপরীতে গ্যাস অনুসন্ধান ও ভূকম্পন জরিপ কাজে বাপেক্সকে সহায়তা করার লক্ষ্যে আমরা ২০০৯ সালে ‘গ্যাস উন্নয়ন তহবিল’ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২০১৫ সালে ‘জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল’ গঠন করেছি। আমাদের প্রচেষ্টায় জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা ২০০৯ সালের ৮.৯ লক্ষ মেট্রিক টন হতে বর্তমানে ১২.২১ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। সদ্য আবিষ্কৃত ভোলা গ্যাসক্ষেত্রসহ মোট প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা বর্তমানে ২৭টি। এর মধ্যে ২০টি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসের ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২ হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।

৩৬।      বিদ্যুৎসহ অন্যান্য শিল্পকারখানার চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিরও উদ্যোগ নিয়েছি। দৈনিক প্রায় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট হিসেবে এলএনজি গ্যাস আমদানির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের মহেশখালিতে দুটি ভাসমান সংরক্ষণাগার ও পুনঃগ্যাসায়ন ইউনিট (Floating Storage and Regasification Unit) স্থাপন করা হয়েছে।

যোগাযোগ অবকাঠামো ও বন্দর উন্নয়ন

মাননীয় স্পীকার

৩৭।     যোগাযোগ খাতে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি সড়ক, রেল ও নৌপথের সমন্বিত উন্নয়ন, যানজট নিরসন ও নিরাপদ পরিবহন নিশ্চিত করার ওপর। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ২০০৮-০৯ হতে ২০১৬‑১৭ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক, নবীনগর ডিইপিজেড-চন্দ্রা মহাসড়ক, যাত্রাবাড়ি-কাঁচপুর মহাসড়কসহ মোট ৪৬৫ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ককে চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে, ৩ হাজার ৯৩১ কিলোমিটার মহাসড়ক মজবুতীকরণ ও ৪ হাজার ৫৯২ কিলোমিটার মহাসড়ককে প্রশস্ত করা হয়েছে; ৮৪২টি সেতু ও ৩ হাজার ৫৪৬টি কালভার্ট নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫৯৪ কিলোমিটার জেলা মহাসড়ক সংস্কার ও মেরামত ছাড়াও যানজট নিরসনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফ্লাইওভার ও রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময়ে আমরা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার, বিশ্বরোড-বিমানবন্দর সংযোগস্থল ফ্লাইওভার, মিরপুর হতে বিমানবন্দর সড়ক ফ্লাইওভার, বহদ্দারহাট উড়ালসেতু, হাতিরঝিল প্রকল্পসহ বেশ কিছু মাইলফলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে ‘পদ্মা সেতু’র মত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। ইতোমধ্যে সেতুর চারটি স্প্যান সফলভাবে স্থাপন করা হয়েছে এবং অর্ধেকের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

৩৮।     রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে বিআরটিসি বহরে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বিআরটিসি বাসে আরোহন ও অবতরণ সুবিধা প্রদানের জন্য আমরা কয়েকটি বাস স্টপেজে পোর্টেবল র‍্যাম্প চালু করেছি। এ পরিবহনে যুদ্ধাহত খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। একই ‘ই-স্মার্ট কার্ড’ ব্যবহার করে বিভিন্ন পরিবহনে নিরবচ্ছিন্ন ও স্বচ্ছন্দ যাতায়াত সুবিধা প্রদানের জন্য পাইলট ভিত্তিতে Rapid Pass প্রবর্তন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।

৩৯।      বাংলাদেশের জন্য পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে রেল ও নৌপথের ভূমিকা অনেক বেশি। আমাদের সরকার অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় এ দু’টি খাতের উন্নয়নে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। রেলপথ বিভাগকে আমরা একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ে রূপান্তর করেছি। ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৯৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথ, ২৭৬টি রেলসেতু ও ৮২টি স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে; ২৪৯ কিলোমিটার রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর ও ৬২টি বন্ধ রেল স্টেশন চালু করা হয়েছে। এ সময়ে আমরা ১১৬টি নতুন ট্রেন চালু করেছি ও ৩৬টি ট্রেনের সার্ভিস সম্প্রসারণ করেছি। বিশেষ করে, দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের ৩২১ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ২৪৯ কিলোমিটার ডাবললাইনে উন্নীত করার ফলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশ রেলওয়ের সক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ই-টিকেটিং কার্যক্রমের আওতায় বর্তমানে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকেট প্রাপ্তি ও ট্রেনের অবস্থানের তথ্য জানা যাচ্ছে সহজেই।

৪০।     রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে আমরা সমুদ্র-নৌ-স্থল বন্দরসমূহের উন্নয়ন করছি। নৌপথের নাব্যতা বৃদ্ধি ও নদী বন্দরসমূহের উন্নয়নের জন্য পশুর নদী ও পোতাশ্রয় এলাকা এবং মোংলা বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন নদী ও নদীবন্দরে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মোংলা সমুদ্র-বন্দর এবং বেনাপোল, ভোমরা ও নাকুগাঁও স্থল-বন্দরের আধুনিকায়ন করা হয়েছে, পশুর নদীর পোতাশ্রয় এলাকায় খনন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ঢাকার অদূরে পানগাঁও-এ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার বন্দর নির্মাণ করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মেগাপ্রকল্প

মাননীয় স্পীকার

৪১।      দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো বর্ধিত বিনিয়োগ। আমরা সরকারি খাতে বিনিয়োগ ক্রমান্বয়ে বাড়াচ্ছি। তবে, এ বিনিয়োগের মূল উদ্দেশ্য হলো বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির সংযোগ প্রাপ্তি, বিনিয়োগ প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ, নিষ্কন্টক জমির প্রাপ্যতা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ামক ভূমিকা পালন করে থাকে। এ সকল সেবা সহজলভ্য করে বৃহৎ ও রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে সম্ভাবনাময় এলাকাসমূহে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ২০১০ সালে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন’ প্রণয়ন করি। এর আওতায় ২০১১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (Bangladesh Economic Zone Authority (BEZA) প্রতিষ্ঠা করা হয়। এছাড়াও ‘বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল নীতি ২০১৫’ জারি করা হয়। বর্তমানে বেজায় ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় বিনিয়োগকারীদের প্রজেক্ট ক্লিয়ারেন্স, ভিসা রিকমেন্ডেশন ও অ্যাসিসটেন্স, ওয়ার্ক পারমিট, ইম্পোর্ট/এক্সপোর্ট পারমিট অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা।

৪২।      সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট ৭৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ১০টি অঞ্চলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এসব অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন। আরও ২৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশমত সবুজ বনায়ন, জলাধার ও উত্তম বর্জ্য-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে পরিবেশবান্ধব করা হচ্ছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠবে পরিকল্পিত নগর ও আবাসন, সৃষ্টি হবে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য। আশা করছি, অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ হলে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় বাড়বে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে প্রায় ১ কোটি মানুষের।

৪৩।     দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক ১০টি বৃহৎ প্রকল্পকে মেগাপ্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজরদারিতে আনা হয়েছে। প্রকল্পগুলো হল-(১) পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প, (২) পদ্মা রেলসেতু সংযোগ প্রকল্প, (৩) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, (৪) রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, (৫) চট্টগ্রাম-দোহাজারী থেকে রামু-কক্সবাজার এবং রামু-গুনদুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প, (৬) ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প, (৭) পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ (১ম পর্যায়) প্রকল্প, (৮) সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, (৯) মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প ও (১০) মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পরিবীক্ষণের জন্য ২০১৩ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে ‘ফাস্ট ট্র্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটি’ নামে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিবকে সভাপতি করে গঠন করা হয়েছে ‘ফাস্ট ট্র্যাক টাস্কফোর্স’।

(৪) সামাজিক খাতে অগ্রগতি

মাননীয় স্পীকার

৪৪।     সার্বজনীন শিক্ষা, জনমুখী স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ কার্যক্রম, লক্ষ্যাভিমুখী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি; কর্মসংস্থান-দক্ষতা উন্নয়ন-প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রায়নসহ সার্বিক অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কৌশল অনুসরণের ফলে সামাজিক খাতে বিগত দশ বছরে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০১০ সালের ৩১.৫ শতাংশ থেকে বর্তমানে ২৪.৩ শতাংশে এবং অতি-দারিদ্র্যের হার ১৭.৬ শতাংশ থেকে ১২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল ২০০৯ সালের ৬৯.৮ বছর থেকে বর্তমানে ৭২.৫ বছর হয়েছে। শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে) ২০০৯ সালে ছিল যথাক্রমে ৩৯ ও ২.৫৯। ২০১৬ সালে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার যথাক্রমে ২৮ ও ১.৭৮ এ নেমে এসেছে।

নারী ও শিশু উন্নয়ন

৪৫।     নারী শিক্ষার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান, প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সহজ শর্তের ক্ষুদ্রঋণের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা ছাড়াও অসহায়-অবহেলিত-প্রতিবন্ধী নারী ও দরিদ্র কর্মজীবী মায়েদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আইনি কাঠামো প্রণয়ন এবং জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট ও উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সরকার নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। নারীরা ধীরে ধীরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমের সক্রিয় ও আনুষ্ঠানিক অংশীদার হয়ে উঠছে। কর্মরত নারীর সংখ্যা ২০১০ সালের ১৬.২ মিলিয়ন হতে ২০১৬‑১৭ সালে ১৮.৬ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। ‘The Global Gender Gap Report’ অনুসারে ২০১৭ সালে ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হয়েছে ৪৭তম, যেখানে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তানের অবস্থান যথাক্রমে ১০৮, ১০৯, ১১১, ১২৪ ও ১৪৩। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে এ সূচকে ১৩৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮২তম। জেন্ডার বৈষম্য হ্রাসে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ বর্তমানে শীর্ষ অবস্থানে আছে। বিশেষ করে, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর সম্পৃক্তির বিচারে বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমশ উন্নতি লাভ করছে।

৪৬।      আজকের শিশুরাই হবে আমাদের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি স্বপ্নের রূপকার। তাই শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ সৃজনে আমরা নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি। আমাদের বাস্তবায়িত উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে আছে- শিশু বিকাশ কেন্দ্র পরিচালনা, শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের সুরক্ষা ও শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ, কর্মজীবীর সন্তানদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন ইত্যাদি। তদুপরি, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের উন্নয়নে ড্রপইন সেন্টার, জরুরি রাত্রিকালীন আশ্রয়, শিশুবান্ধব অঞ্চল, ওপেন এয়ার স্কুল, শুল্কবিহীন শিশু হেল্পলাইন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া জাতীয় শিশু নীতি এবং শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশে সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

৪৭।     ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের জন্য ১৮ মাসব্যাপীঁ উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও ৬ মাস মেয়াদি দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৯০ হাজার শিশু স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। চলতি বছরে আরও ৬০ হাজার শিশুকে এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। মালিক, শ্রমিক ও সুশীল সমাজের সাথে আলোচনা করে আমরা মোট ৩৮টি কাজকে শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে আমরা শিশু বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে শিশু উন্নয়নকে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেটের মূলধারায় নিয়ে এসেছি। শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের পরিমাণ প্রতিবছরই বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হল- ২০২০ সাল নাগাদ শিশুকেন্দ্রিক বাজেট বরাদ্দ মোট বাজেটের ২০ শতাংশে উন্নীত করা।

সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম

৪৮।     দারিদ্র্য নিরসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে আমরা সামাজিক সুরক্ষাভুক্ত বিভিন্ন ভাতার হার ও পরিধির যৌক্তিক সম্প্রসারণ করেছি। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৩৭৩.২ কোটি টাকা। ২০১৮‑১৯ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের পরিমাণ ৬৪ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা জিডিপি’র ২.৫৫ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১৩.৯২ শতাংশ। ২০০৫ সালে ১৩.০ শতাংশ পরিবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করত, ২০১৬ সালে এই হার ২৮.৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দ্বৈততা পরিহার ও স্বচ্ছতা আনয়ন ও লক্ষ্যাভিমুখী করার উদ্দেশ্যে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের সুবিধাভোগীদের তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার তৈরি করা হয়েছে। একই সাথে এ কার্যক্রমের আওতাধীন অর্ধকোটি সুবিধাভোগীকে জি-টু-পি (Government to Person) পদ্ধতিতে ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখন থেকে এই সুবিধাভোগীরা নিজেদের বাড়িতে বসে তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট সহায়তা বা ভাতা একটি পূর্বনির্দিষ্ট দিনে ভাতাভোগীর নিজস্ব পছন্দের ব্যাংক হিসাব/মোবাইল হিসাবে পাবেন।

(৫) সংস্কার ও সুশাসন

মাননীয় স্পীকার

৪৯।      অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার সাথে সাথে একে সুসংহত করা এবং উন্নয়নের সুফল সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন মৌলিক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও সুশাসন। আপনি জানেন, ছোট ভূখণ্ডের বিপুল জনসংখ্যার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা কতটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। তা সত্ত্বেও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রচেষ্টা কখনও থেমে থাকেনি। বিশেষ করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করার সুবাদে আর্থ-সামাজিক এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি। বিগত দশ বছরে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে আমরা ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি যার বিস্তারিত বিবরণ এখানে উপস্থাপনের সুযোগ নেই। তবে, অতি গুরুত্বপুর্ণ কিছু সংস্কারের সংক্ষিপ্ত তথ্য উপস্থাপন করাটা সমীচীন বলে মনে করছি। তাছাড়া, পরিশিষ্টে এ সময়ে গৃহীত আইন/বিধি/নীতিমালার একটা তালিকাও অবগতির জন্য অন্তর্ভুক্ত করেছি (পরিশিষ্ট ক: সারণি ২)।

সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার সংস্কার

৫০।     সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, সম্পদের খাতভিত্তিক বন্টনে দক্ষতা বাড়ানো এবং গ্রহীতার দোরগোড়ায় সহজে সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে আমরা সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার ধারাবাহিক সংস্কার করে চলেছি। ‘সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯’ এর যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে আমরা অব্যাহতভাবে বাজেট ঘাটতি জিডিপি’র ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রেখেছি এবং ঘাটতি অর্থায়নে সহজশর্তের বৈদেশিক উৎসের ব্যবহার বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ উৎসের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে পেরেছি। এর মাধ্যমে ঋণ ব্যবস্থাপনার উৎকর্ষ ছাড়াও সার্বিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় বাজেট প্রণয়ন এবং সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগে বাজেট অনুবিভাগ/শাখা খোলার ফলে বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় যেমন দক্ষতা এসেছে তেমনি মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের বাজেটকে দক্ষতা ও ফলাফলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে।

৫১।      সম্প্রতি সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় যোগ হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আরও কতিপয় সংস্কার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-পেনশনারদের ডাটাবেজ প্রণয়ন এবং ইএফটি’র মাধ্যমে পেনশন প্রদান, ঘরে বসে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দেয়া ও অনলাইনে তা যাচাই-এর জন্য ই-চালান বাতায়ন চালু; সরকারি কর্মচারীদের ডাটাবেজ প্রণয়ন এবং অনলাইনে বেতন বিল দাখিল কার্যক্রম চালু; ৫৬ কোড সংবলিত নতুন বাজেট ও হিসাবরক্ষণ শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি প্রবর্তন এবং iBAS++ নামক ইন্টারনেটভিত্তিক কেন্দ্রীভূত-অত্যাধুনিক বাজেট ও হিসাব পদ্ধতি চালুকরণ। iBAS++ এর মাধ্যমে সরকারের লেনদেন ও নগদ অবস্থার তাৎক্ষণিক চিত্র পাওয়া যাবে, যা সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়াবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ

৫২।      ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠন আমাদের সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রান্তিক মানুষসহ দেশের সব মানুষের দোরগোড়ায় সহজে সেবা প্রদানের লক্ষ্য নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং এর ব্যাপক সম্প্রসারণ করেছি। ৬৪টি জেলায় ১১৪টি উপজেলা হতে ১ হাজার ১০৪টি ইউনিয়নে প্রায় ৮ হাজার কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা সম্প্রসারিত হয়েছে। সম্প্রতি কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে ১ হাজার ৫০০ জিবিপিএস ব্র্যান্ডউইথ পাবে। দেশে বর্তমানে (এপ্রিল, ২০১৮) মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা যথাক্রমে ১৫.০৩ ও ৮.৬ কোটি এবং টেলিডেনসিটি ও ইন্টারনেট ডেনসিটির হার যথাক্রমে ৯১ ও ৫০.১ শতাংশ। ইতোমধ্যে দেশের ৬৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী এবং ৪৮ শতাংশ ভৌগলিক এলাকা 3-G নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। বাংলা ডোমেইন চালুর ফলে দেশে ও বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষী মানুষ ইন্টারনেটে বাংলা ব্যবহার করতে পারছেন।

৫৩।     ইউনিয়ন পর্যায়ের ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ই-সেবাকেন্দ্র, ১৪৭টি উপজেলা ও গ্রামীণ ডাকঘরের ই-সেন্টার, ২৫৪টি এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন সেন্টার ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য-পুষ্টি, কৃষি, জন্ম-নিবন্ধন, সামাজিক নিরাপত্তা ভাতাসহ প্রায় সকল সেবা সহজে ও সুলভে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। আমাদের প্রচেষ্টায় ৩টি দুর্গম পার্বত্য জেলার সব উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করা সম্ভব হয়েছে, যা পার্বত্য অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্র এক মহাউল্লম্ফন।

৫৪।     দেশের ৫৮টি মন্ত্রণালয়, ২৪০টি সরকারি দপ্তর ও ৬৪টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ১৮ হাজার ৪৩৪টি সরকারি অফিসকে একটি একীভূত নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করা হয়েছে। সরাসরি কথোপকথনের জন্য এবং একসাথে একাধিক উপজেলায় বার্তা/তথ্য প্রেরণ ও সভা অনুষ্ঠানের জন্য ৮৮৩টি ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া, সরকারি দপ্তরে ই-নথির প্রচলন, সরকারি ক্রয়ে ই-জিপি’র প্রয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্যে ই-কমার্সের ব্যবহার সব মিলিয়ে কাজে যেমন গতিশীলতা বেড়েছে তেমনি জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। সর্বোপরি, ১১ মে, ২০১৮ তারিখে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১) মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পৌঁছে গেছে তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের এক অনন্য উচ্চতায়।

যুদ্ধাপরাধের বিচার

৫৫।     আমি মনে করি আমাদের সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী কার্যক্রম ও গণহত্যা সংগঠনকারী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা ও প্রধান অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করা। যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে এ পর্যন্ত মোট ৫৩টি মামলা বিচারের জন্য গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ৩১টি মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে, বাকিগুলি বিচারাধীন আছে। আপীল বিভাগ কর্তৃক চূড়ান্তকৃত ৭টি মামলার মধ্যে ৬টি মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া, ২৫ মার্চকে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

৫৬।      রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার হয়ে এই ঘৃণ্য অপরাধীরা যখন আমার স্বাধীন দেশের পতাকাশোভিত গাড়িতে বিচরণ করেছে, তখন আমরা ভীষণ বিচলিত হয়েছি, জাতি হয়েছে কলঙ্কিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অথবা জাতীয় কোন হুমকির কাছেই নতি স্বীকার করেননি। তাঁর অনন্য সাহসী পদক্ষেপ জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি আমাদের অপরিমেয় ঋণ কিছুটা লাঘব হয়েছে।

(৬) অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর

মাননীয় স্পীকার

৫৭।     অর্থনৈতিক বিকাশের সাথে সাথে একটি দেশের কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের কাঠামোগত রূপান্তর ঘটে। এই বিকাশকালে জিডিপি’তে ক্রমান্বয়ে শিল্পখাত এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে সেবাখাতের অবদান বাড়তে থাকলে বিকশিত অর্থনীতি সুসংহত হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে খাদ্য উৎপাদন ও কর্মসংস্থানে কৃষিখাতের সুদৃঢ় অবস্থান বজায় থাকার পাশাপাশি ধীরে ধীরে অনুকূল কাঠামোগত রূপান্তরের লক্ষণ ক্রমশ পরিস্ফুট হয়ে উঠছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে জিডিপি’তে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের অবদান ছিল যথাক্রমে ১৯.০, ২৫.০ ও ৫৫.৬ শতাংশ। সাময়িক হিসাবমতে ২০১৭‑১৮ অর্থবছরে কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের অবদান দাঁড়াবে যথাক্রমে ১৪.১০, ৩৩.৭১ ও ৫২.১৮ শতাংশে। লক্ষ্য করার বিষয় হলো টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমাদের এখন শিল্পখাত বিশেষ করে, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের উন্নয়নের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিল্পখাতের বর্তমান প্রবৃদ্ধি মূলত উৎপাদনের উপকরণসঞ্জাত, এ প্রবৃদ্ধিকে টেকসই করার জন্য আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। শিল্পখাতের উন্নয়ন কৌশল বিষয়ে আমাদের ভাবনা পঞ্চম অধ্যায়ে তুলে ধরবো।

(৭) সাম্প্রতিক বিশ্ব ও আমাদের অর্থনীতি

বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারা

মাননীয় স্পীকার

৫৮।  অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ধারায় ২০১৭ সালের শেষ পর্যায়ে বিশ্ব অর্থনীতি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে ফিরে এসেছে। বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩.৮ শতাংশে, যা ২০১১ সালের পর সর্বাধিক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রক্ষেপণমতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির এ ধারা মধ্যমেয়াদেও অব্যাহত থাকবে এবং ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৯ শতাংশ। উন্নত-উদীয়মান-উন্নয়নশীল এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশসমূহসহ প্রায় সব দেশেই প্রবৃদ্ধির চাকা সচল থাকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো অঞ্চলে ২০১৭ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি উভয় ক্ষেত্রে ২.৩ শতাংশ হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরে যথাক্রমে ১.৫ ও ১.৮ শতাংশ ছিল। এ দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি কমে আসার সম্ভাবনা থাকলেও মধ্যমেয়াদে প্রবৃদ্ধি বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে প্রক্ষেপণ করা হচ্ছে। প্রতিবেশী ভারত, বন্ধুপ্রতিম চীন-জাপানসহ বাণিজ্য সহযোগী অন্যান্য দেশেও সামনের দিনগুলিতে প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা বজায় থাকবে। সুসংবাদ হলো যে, বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গত দুই বছরের হতাশা কাটিয়ে ২০১৭ সালে ৪.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা ২০১৮ সালে ৫.১ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৫৯।  স্বস্তির সাথে কিছুটা শঙ্কাও যুক্ত হয়েছে। প্রবৃদ্ধির সাথে চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ বাড়েনি তাল মিলিয়ে। ফলে, ২০১৮ সালের প্রথম তিনমাসে বৈশ্বিক পণ্যমূল্য সার্বিকভাবে বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০১৮ সালে অপরিশোধিত তেলের মূল্য গড়ে ব্যারেল প্রতি ৬৫ মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে, ২০১৭ সালে যা ছিল গড়ে ব্যারেল প্রতি ৫৩ মার্কিন ডলার। তদুপরি, ৩ বছর ক্রমাগত স্থির থাকার পর কৃষিপণ্যের মূল্য ২০১৮ সালে ২ শতাংশ এবং ধাতব পণ্যের মূল্য ৯ শতাংশ বাড়বে মর্মে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এছাড়া, ভারত ও চীনসহ প্রতিবেশী দেশসমূহেও মূল্যস্ফীতির গতিধারা ঊর্ধ্বমুখী।

অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি

৬০।  চলতি বছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম ৭.৪ শতাংশ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ৭.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ করেছে। মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প সূচক জানুয়ারি ২০১৭ এর তুলনায় জানুয়ারি ২০১৮ সময়ে প্রায় ১৪.০ শতাংশ বেড়েছে। বন্যার কারণে অর্থবছরের প্রথম দিকে কৃষিখাতে উৎপাদন ব্যাহত হলেও ভর্তুকি, কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও অন্যান্য সহায়ক কার্যক্রমের প্রভাবে আমন ও বোরোর উৎপাদন সন্তোষজনক হয়েছে। সার্বিকভাবে, চলতি অর্থবছরে ৪০৭ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে। অন্যদিকে, ব্যক্তিগত ভোগ ও সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা শক্তিশালী হয়েছে যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে প্রবৃদ্ধির উপর। তদুপরি, বৈশ্বিক পরিমন্ডলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্যে প্রাণসঞ্চারের ফলে আমাদের রপ্তানি, প্রবাস আয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের প্রবৃদ্ধির উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কৃষিপণ্যের উচ্চ ফলন ও স্বাভাবিক সরবরাহ পরিস্থিতির সুবাদে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী হলেও বিশ্ব পণ্য বাজার পরিস্থিতির প্রভাবে দেশে খাদ্য-বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এপ্রিল ২০১৮ সময়ে বারো মাসের গড় হিসাবে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫.৮ শতাংশ, যার মধ্যে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৭.৩ ও ৩.৫ শতাংশ।

৬১।   চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ১০৯ কোটি টাকার মোট রাজস্ব আহরিত হয়েছে, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৬২.৪৮ শতাংশ। এ সময়ে এনবিআর কর রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫.৪ শতাংশ। এটি বিগত ৬ বছরের (২০১১-১২ থেকে ২০১৬‑১৭) গড় প্রবৃদ্ধির (১৪.৬ শতাংশ) তুলনায় বেশি। আশা করছি, বরাবরের মত বছরের শেষ সময়ের চাঙ্গাভাব রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। এছাড়া শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রভাবে সামনের দিনগুলিতে কর রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা বাড়বে। আমি দেখতে পাচ্ছি যে দেশে করদান প্রবণতা উর্ধ্বমুখী, বিশেষ করে যুব সম্প্রদায় স্বতস্ফুর্তভাবে আয়কর প্রদান করছে। এছাড়া বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর আইনের আওতায় অটোমেশন এর মাধ্যমে এই করের আদায় বাড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

৬২।   ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে সরকারি ব্যয় হয়েছে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৪৫.০ শতাংশ। উল্লেখ্য, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এ বছর গতিশীলতা বেড়েছে। প্রথম ১০ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় হয়েছে মোট বরাদ্দের ৫২.৪ শতাংশ। বিশেষ করে, এ বছর প্রথমবারের মত প্রকল্প সাহায্য ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে। প্রকল্প সাহায্য ব্যবহার বিগত অর্থবছরের একই সময়ের ৪৭.৭ শতাংশের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে হয়েছে ৬১.১ শতাংশ। মেগাপ্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন পূর্ণগতিতে চলছে। কাজেই সরকারি ব্যয়, বিশেষ করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে গতিশীলতা বজায় থাকবে বলে ধরে নেয়া যায়। সার্বিকভাবে, বাজেট ঘাটতি কিন্তু জিডিপি’র ৫ শতাংশের মধ্যেই সীমিত থাকবে।

৬৩।  সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রাবাজারে তারল্যের ভারসাম্যহীনতা এবং দু’একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি সাময়িক উদ্বেগ তৈরি করলেও আমাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তাছাড়া, আমানত ও ঋণের সুদের হার বৃদ্ধির সাম্প্রতিক প্রবণতাও শীঘ্রই হ্রাস পাবে বলে আশা করছি। সার্বিকভাবে, এপ্রিল ২০১৮ শেষে ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ ও অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৯.১ ও ১৪.৪ শতাংশ, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি বিবৃতির লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই রয়েছে। এসময়ে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭.৭ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার (১৬.৮ শতাংশ) চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে, বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা নির্দেশ করে।

৬৪।  বহিঃখাতে রপ্তানি ও প্রবাস আয়ে চলতি অর্থবছরে প্রথম ১০ মাসে পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ৬.৪ ও ১৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমদানির ক্ষেত্রে মার্চ, ২০১৮ পর্যন্ত সময়ে পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এপ্রিল, ২০১৭ এর পর থেকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারে অবিচিতি ঘটছে, যা রপ্তানি ও প্রবাস আয়ের জন্য অনুকূল। সাত মাসের আমদানি ব্যয়ের সমতূল্য ৩২.২ বিলিয়ন ডলার (৩০ মে, ২০১৮) বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সার্বিকভাবে সন্তোষজনক। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্যের ইতিবাচক ধারা এবং দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তথা তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মপরিবেশ উন্নয়নের ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যায়। পাশাপাশি চলমান মেগাপ্রকল্পসমূহের প্রয়োজনে আমদানি বাড়ার ধারা আরো কিছু সময় বজায় থাকবে। চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হার বেশ বেড়েছে, যা প্রবাস আয়ের অবস্থান সুদৃঢ় করবে।

তৃতীয় অধ্যায়

চলতি ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট

মাননীয় স্পীকার

৬৫।  ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ এর বাস্তবায়ন জুলাই, ২০১৭ হতে কার্যকর করা হবে ধরে নিয়ে চলতি ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণ ও ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে উক্ত আইনের বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এ বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের মার্চ, ২০১৮ পর্যন্ত আহরিত রাজস্বের পরিমাণ ছিল মূল বাজেটের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৫৬.৩ শতাংশ। একই সময়ে সরকারি ব্যয় হয় বার্ষিক বরাদ্দের ৪১.৮ শতাংশ। বাজেট বাস্তবায়নের এই পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের বাজেটে যে সংশোধন ও সমন্বয় করতে হয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ (পরিশিষ্ট ক: সারণি ৩) এখন তুলে ধরছি।

৬৬।   সংশোধিত রাজস্ব আয়: ২০১৭‑১৮ অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয় ২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২৮ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা হ্রাস করে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১১.৬ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে। এনবিআর রাজস্বের ক্ষেত্রে আয়-মুনাফার ওপর কর ও মূল্য সংযোজন কর হতে অর্জন আশানুরূপ না হওয়ায় এই সংশোধন আনা হয়েছে।

৬৭।  সংশোধিত ব্যয়: চলতি অর্থবছরের বাজেটে সর্বমোট সরকারি ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয় ৪ লক্ষ ২৬৬ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এ ব্যয় ২৮ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা হ্রাস করে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১৬.৬ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা হতে কিছুটা হ্রাস করে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩৮১ কোটি টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে (জিডিপি’র ৬.৬ শতাংশ)। অন্যদিকে, পরিচালনসহ অন্যান্য ব্যয়ের প্রাক্কলন হ্রাস করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮২১ কোটি টাকা।

৬৮।  সংশোধিত বাজেট ঘাটতি ও অর্থায়ন: চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১ লক্ষ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা (জিডিপি’র ৫.০ শতাংশ)। সংশোধিত বাজেটে ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪১ কোটি টাকা (জিডিপি’র ৫.০ শতাংশ)। মূল বাজেটে ঘাটতির বিপরীতে বৈদেশিক সূত্র হতে অর্থায়নের প্রাক্কলন ছিল ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে কিছুটা হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ২৪ কোটি টাকায় (জিডিপি’র ২.১ শতাংশ)। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য সূত্র হতে অর্থায়নের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

৬৯।   একটি খুশির বিষয় হলো যে, পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহার ব্যাপক হারে বাড়ায় চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত প্রকল্প সাহায্যের ব্যবহার হয়েছে বার্ষিক বরাদ্দের প্রায় ৬১.১ শতাংশ, বিগত অর্থবছরের একই সময়ে এ হার ছিল বার্ষিক বরাদ্দের ৪৭.৭ শতাংশ।

চতুর্থ অধ্যা‌য়

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট কাঠামো

মাননীয় স্পীকার

৭০।  এ পর্যায়ে আমি আগামী ২০১৮‑১৯ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট কাঠামোর উপর আলোকপাত করব।

আগামী ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের বাজেট কাঠামো

৭১।   এবার আমি আগামী ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত আয় ও ব্যয়ের একটি চিত্র (পরিশিষ্ট ক: সারণি ৪) তুলে ধরছি।

৭২।  ২০১৮‑১৯ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ১৩.৪ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উৎস হতে ২ লক্ষ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১১.৭ শতাংশ) সংগ্রহ করা হবে। আমি বিশ্বাস করি, রাজস্ব আদায়ের এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত। কারণ, ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনবল ও কর্মপদ্ধতিতে ব্যাপক সংস্কার সাধন করা হয়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক অবস্থানে রয়েছে। কর পরিপালনের প্রবণতা দেশে বর্তমানে বেশ উচ্চমানের এবং এ প্রবণতা অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার মাধ্যমে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। এনবিআর বহির্ভূত সূত্র হতে কর রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা (জিডিপি’র ০.৪ শতাংশ)। এছাড়া, কর-বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আহরিত হবে ৩৩ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১.৩ শতাংশ)।

৭৩।  ২০১৮‑১৯ অর্থবছরে বাজেটে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১৮.৩ শতাংশ)। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসমূহের প্রায় ৭ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ বিবেচনায় নিলে বাজেটের আকার দাঁড়াবে প্রায় ৪ লক্ষ ৭২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১৮.৬ শতাংশ)। অনুন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লক্ষ ৯১ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১১.৫ শতাংশ) এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।

৭৪।  বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সমতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং গুণগত ব্যয়ের বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির খাতওয়ারি বরাদ্দ পরিশিষ্ট ‘ক’ এর সারণি ৫ এ তুলে ধরা হয়েছে। ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মানবসম্পদ (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য) খাতে ২৬.৯ শতাংশ, সার্বিক কৃষি খাতে (কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান, পানিসম্পদ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য) ২১.৮ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৪.৩ শতাংশ, যোগাযোগ (সড়ক, রেল, সেতু এবং যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য) খাতে ২৬.৩ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ১০.৮ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

৭৫।  সার্বিকভাবে, বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৪.৯ শতাংশ। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা (জিডিপি’র ২.১ শতাংশ) এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র হতে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা (জিডিপি’র ২.৮ শতাংশ) সংগ্রহ করা হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা হতে সংগৃহীত হবে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১.৭ শতাংশ) এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক-বহির্ভূত খাত থেকে আসবে ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা (জিডিপি’র ১.২ শতাংশ)। বৈদেশিক সহায়তার যে বিশাল পাইপলাইন গড়ে তোলা হয়েছে তার ব্যবহার বাড়াতে পারলে অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা যথেষ্ট কমানো সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস এবং সে প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাবো, যাতে ক্রমাগত বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের হার বৃদ্ধি পেতে পারে।

৭৬।  সামগ্রিক ব্যয় কাঠামো: এ পর্যায়ে আমি প্রস্তাবিত বাজেটের সামগ্রিক ব্যয় কাঠামো (উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন) সম্পর্কে বলব। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সম্পাদিত কাজের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী কাজগুলোকে আমরা তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করেছি। এগুলো হলো সামাজিক অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো ও সাধারণ সেবা খাত।

৭৭।  প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে মোট বরাদ্দের ২৭.৩৪ শতাংশ, যার মধ্যে মানবসম্পদ খাতে (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত) বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২৪.৩৭ শতাংশ। ভৌত অবকাঠামো খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে মোট বরাদ্দের ৩০.৯৯ শতাংশ, যার মধ্যে সার্বিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১২.৬৮ শতাংশ; বৃহত্তর যোগাযোগ খাতে ১১.৪৩ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৫.৩৬ শতাংশ। সাধারণ সেবা খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে মোট বরাদ্দের ২৫.৩০ শতাংশ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (PPP), বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি, রাষ্ট্রায়ত্ত, বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ৪.৭৮ শতাংশ; সুদ পরিশোধ বাবদ প্রস্তাব করা হয়েছে ১১.০৫ শতাংশ; নিট ঋণদান (Net lending) ও অন্যান্য ব্যয় খাতে প্রস্তাব করা হয়েছে অবশিষ্ট ০.৫৪ শতাংশ। এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য পরিশিষ্ট ‘ক’ এর সারণি ৬ এ উপস্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়/বিভাগভিত্তিক বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাবও পরিশিষ্ট ‘ক’ এর সারণি ৭ এ সংযুক্ত করা হলো।

পঞ্চম অধ্যায়

সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রা

খাতভিত্তিক নীতি-কৌশল, কর্মপরিকল্পনা ও সম্পদ সঞ্চালন

মাননীয় স্পীকার

৭৮।  এ পর্যায়ে আমি আগামী অর্থবছরসহ সামনের দিনগুলোতে বিভিন্ন খাতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নীতি-কৌশল, কর্মপরিকল্পনা ও বাজেট বরাদ্দের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ আপনার মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে চাই। এবারের নীতি-কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে গিয়ে আমাদের বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে বেশ কিছু প্রেক্ষাপট- প্রথমত: সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন, দ্বিতীয়ত: স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে করণীয় নির্ধারণ, তৃতীয়ত: টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, শিল্পায়ন, উৎপাদনশীল শোভন কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা-জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপদ জনবসতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের যথাযথ প্রতিফলন; চতুর্থত: অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর; পঞ্চমত: ‘রূপকল্প-২০২১’ এর ধারাবাহিকতায় ‘রূপকল্প-২০৪১’ এর প্রস্তুতি। সর্বোপরি, ক্রমপরিবর্তনশীল বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ বাস্তবতায় জনমানুষের চাহিদা ও প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতটিও আমরা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করেছি। এখানে চারটি সারণিতে (সারণি ৮ থেকে সারণি ১১ পর্যন্ত) ২০০৬ থেকে ২০১৮ সালে চারটি খাতের (আর্থ-সামাজিক, রাজস্ব আহরণ, আর্থিক ও বহিঃখাত) চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

মধ্যমেয়াদি নীতি-কৌশল

৭৯।  বাজেট প্রণয়নে আমাদের মূল লক্ষ্য হলো দারিদ্র্য বিমোচন ও অসমতা হ্রাস এবং জনগণের জীবনমানে মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তন আনা। এই লক্ষ্যমাত্রা থেকেই যে ফল আমরা পাই তা হলো টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধি। সম্পদ আহরণ ও তা খাতভিত্তিক সঞ্চালনে যথার্থতা এবং নীতিকাঠামোর উৎকর্ষতা এ লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে থাকে। প্রতি বছরের মত এবারও বাজেট বক্তৃতার সাথে ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি-বিবৃতি’ পেশ করা হয়েছে। এ পুস্তকে আমাদের মধ্যমেয়াদি নীতি-কৌশলের বিস্তারিত বিবরণ অন্তর্ভুক্ত আছে। তবুও, শুরুতে আমাদের লক্ষ্য ও নীতি-কৌশল বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা দিতে চাই।

টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধি

৮০।  অভ্যন্তরীণ চাহিদা: উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রক্ষায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা তথা ভোগ ও বিনিয়োগ এবং বহিঃস্থ চাহিদা তথা রপ্তানি হবে আমাদের মনোযোগের ক্ষেত্র। বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুবাদে প্রবাস আয় প্রবাহের বেগবান ধারা মধ্যমেয়াদেও বজায় থাকবে বলে প্রত্যাশা করা যায়। অধিক জনসংখ্যা ও প্রবাস আয়ের প্রবাহ ব্যক্তিখাতের ভোগজনিত অভ্যন্তরীণ চাহিদার চলমান ধারাকে অব্যাহত রাখবে। এছাড়াও মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে সরকারের বর্ধিত ভোগ ও বিনিয়োগ পরিকল্পনার প্রতিফলন আছে। আমাদের অর্থনীতির প্রায় তিন চতুর্থাংশই বেসরকারি বিনিয়োগকেন্দ্রিক। কর্মসংস্থানের বড় অংশ (৮৫.১ শতাংশ) অনানুষ্ঠানিক খাতে। ফলে, বাজেট প্রক্রিয়ায় আমাদের গুরুত্ব থাকবে বেসরকারি খাত ও ব্যক্তিউদ্যোগের বিকাশোপযোগী পরিবেশ সৃজনের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির গতিধারাকে ত্বরান্বিত করা।

৮১।      বাণিজ্য সম্প্রসারণ: স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে ২০২৭ পরবর্তী সময়ে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা না থাকার বাস্তবতাকে মাথায় রেখে নিজেদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে চাই। রপ্তানি বৈচিত্রায়ণে তৈরি পোশাকের বাইরে সম্ভাবনাময় পণ্য হিসেবে পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কাপড় ও পলিথিনের স্পোর্টস্ সু, হিমায়িত মাছ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ঔষধ এবং অপ্রচলিত বিভিন্ন পণ্য, যেমন- বাইসাইকেল ইত্যাদির দিকে নজর দেয়ার প্রচেষ্টা থাকবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্ষেত্রে মুক্ত বাণিজ্য এলাকা গঠন ও সম্প্রসারণ এবং শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধার সময় বর্ধিতকরণে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করবো।

৮২।  কৃষিখাতে অব্যাহত প্রবৃদ্ধি: সরবরাহের দিক থেকে কৃষিখাতে আমাদের চলমান নীতি-কৌশলের কার্যকারিতা পরীক্ষিত। জনসংখ্যার ঘনত্ব, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিগত ১০ বছরে কৃষিখাতে গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ৩.৮ শতাংশ। হেক্টর প্রতি শস্য উৎপাদন বিগত ৯ বছরে ৩ হাজার ৭৬১ কেজি হতে বৃদ্ধি পেয়ে ৪ হাজার ৬২৯ কেজিতে উন্নীত হয়েছে। মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ৩৪৭.১ লক্ষ মেট্রিক টন হতে ২০১৬‑১৭ অর্থবছরে ৩৮৬.৩৪ লক্ষ মেট্রিক টনে বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত সাময়িক অসুবিধা ছাড়া কৃষিখাত অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে। চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগ সহিষ্ণু জাতের ধান ও অন্যান্য শস্যের জাত উদ্ভাবনে গবেষণার সুযোগ ও পরিধি সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হবে।

৮৩।  শিল্পখাতের বিকাশ: আমি আগেই উল্লেখ করেছি, জিডিপি ও কর্মসংস্থানে শিল্পখাত বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অবদান বাড়লে অর্থনেতিক বিকাশের ধারা সুসংহত হয়। আমাদের জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ধীরে হলেও বাড়ছে। তবে, কর্মসংস্থানে শিল্পখাতের অবদান আশানুরূপ নয়। ২০১০ সালে শিল্পখাতে মোট কর্মসংস্থানের অংশ ছিল ২২.৩ শতাংশ, ২০১৬‑১৭ অর্থবছরে তা ২০.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। শ্রমবাজারে পর্যাপ্ত কর্মক্ষম জনশক্তির উপস্থিতি থাকলেও নতুন শিল্পে অটোমেশন এবং উন্নত প্রযুক্তি প্রবর্তনের ফলে প্রত্যাশানুযায়ী শিল্পখাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। অন্যদিকে দক্ষতার ঘাটতিজনিত কারণে আমাদের শিল্পখাতে ব্যবস্থাপনার মধ্যম ও উচ্চ পর্যায়ের পদে কাজ করছে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের কর্মীরা। দেশীয় জনশক্তির প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা সৃজনের মাধ্যমে এদের প্রতিস্থাপন করা হলে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে তেমন আমাদের নিজস্ব জনশক্তির জন্য উৎপাদনশীল শোভন কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। শিল্পখাত সম্প্রসারণে স্বল্প-পুজিঁনির্ভর-শ্রমঘন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রসার আমাদের জন্য বিশেষ উপযোগী হবে। পাশাপাশি, শিল্পখাতে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হবে আমাদের উদ্দেশ্য। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গঠন, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার হবে আমাদের কৌশল।

দারিদ্র্য ও অসমতা হ্রাস

মাননীয় স্পীকার

৮৪।  সাধারণভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়লে দারিদ্র্য হ্রাস পায়। তবে অর্থনীতির কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে প্রবৃদ্ধির সুফল সমানভাবে সকলের কাছে পৌঁছায় না। দারিদ্র্য ও অসমতা হ্রাসের ক্ষেত্রে আমরা করকাঠামো সংস্কার, অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্রঋণ ও দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে আয় হস্তান্তর ইত্যাদি কৌশল প্রয়োগ করে আসছি। বিগত বছরগুলিতে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে এসব নীতি-কৌশলের প্রয়োগ ফলপ্রসূ হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে আমাদের বিশেষ লক্ষ্য থাকবে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ ও সব ধরণের সেবার প্রতি সকলের সহজ সুযোগ ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং কর্মসংস্থান, আয় পুনঃবন্টন ও হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় দারিদ্র্য ও অসমতা হ্রাসের দিকে।

৮৫।  সার্বিক এ নীতি-কৌশলের বাইরে পরবর্তী অংশে খাতভিত্তিক সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরছি।

কর্মপরিকল্পনা ও সম্পদ সঞ্চালন

(১) মানব সম্পদ উন্নয়ন

৮৬।  টেকসই প্রবৃদ্ধির অন্যতম উপাদান দক্ষ মানবসম্পদ। আমরা দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের শক্ত ভিত রচনা ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার প্রসারের ওপর জোর দিয়েছি।

শিক্ষা

৮৭।  মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা: প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার প্রসারে আমরা ইতোমধ্যে অনেকখানি অগ্রসর হয়েছি। এখন আমরা মনোযোগ দিতে চাই জীবনমানে মৌলিক পরিবর্তন আনার উপযোগী শিক্ষা প্রদান এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার উন্নত পরিবেশ গঠনের দিকে। আমরা মনে করি জীবনের শুরুতে একটি শিশু যদি ব্যক্তিগত ও পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছন্নতা, নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ, কর্মনৈপুন্য ও পারস্পরিক সহমর্মিতার বোধ নিয়ে বেড়ে উঠে সে শিশু হয়ে উঠতে পারে উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনের রূপকার। শিশুদের উপযোগী করে এসব মৌলিক শিক্ষা প্রদানের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমের উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন।

৮৮।  বর্ধিত চাহিদার নিরিখে আমরা আমাদের চলমান কার্যক্রম-যেমন উপবৃত্তি, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম ইত্যাদির পরিধি বাড়াবো। পাশাপাশি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক ওয়াশব্লকসহ ৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ; ৬৫ হাজার শ্রেণিকক্ষ, ১০ হাজার ৫০০ শিক্ষক কক্ষ, ৫ হাজার বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও ৩০ হাজার খেলার সামগ্রী বিতরণ করা হবে। পূর্বের ধারাবাহিকতায় বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় আরো ১ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করবো। প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সকল ইউনিয়ন ও কয়েকটি শহরে আইসিটি বেইজ্‌ড কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ৬৪টি জেলায় ৬৪টি জীবিকায়ন ও জীবনব্যাপী শিখনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আছে আমাদের। আমরা শিক্ষকদের জন্য চলমান প্রশিক্ষণের বাইরে ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ এবং ছাত্রদের জন্য গণিত অলিম্পিয়াডের কৌশল প্রয়োগ করে গণিতভীতি দূর করার উদ্যোগ নিয়েছি।

মানসম্মত মাধ্যমিক শিক্ষা

৮৯।  মাধ্যমিক পর্যায়ে মেধা-মূল্যায়ন, শিক্ষা কার্যক্রমে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ প্রসার এবং শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের বিষয়টি বর্তমানে প্রাধান্য পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও পেতে থাকবে। ‘সরকারি কলেজে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ২০০ সরকারি কলেজে প্রায় ২ লক্ষ শিক্ষার্থী ও ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় ৩২৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লক্ষ ২৯ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পের আওতায় মাল্টিমিডিয়াসহ শ্রেণিকক্ষ, ল্যাংগুয়েজ-কাম-আইসিটি ল্যাব, হোস্টেল নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় আসবাব ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হবে। তদুপরি, মহাবিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসহ ২৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৪৬ হাজার ৩৪০টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ এবং ২ হাজার ১২০টি স্মার্ট শ্রেণিকক্ষ তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। স্বল্প সময়-ব্যয়-যাতায়াতের (time-cost-visit) মাধ্যমে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানের জন্য ২৩টি উদ্ভাবনমূলক ধারণার পাইলটিং করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়নে গোপনীয়তা নিশ্চিত করার জন্য সকল বোর্ডের সমন্বিত উদ্যোগে প্রশ্নব্যাংক তৈরির চেষ্টা করছি আমরা।

কর্মসংস্থানবান্ধব কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা

৯০।  আমি আগেই উল্লেখ করেছি, দেশে প্রতিবছর আনুমানিক ২০ লক্ষ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। তবে, শ্রমবাজারে আসা সকল কর্মী দক্ষ নয়। ফলে, দেশে বিপুল শ্রমশক্তি থাকা সত্ত্বেও দেশিয় শিল্পে দক্ষ শ্রমিকের জন্য আমাদের প্রতিবেশী দেশের কর্মীদের ওপর নির্ভর করতে হয়। অন্যদিকে, দক্ষতার ঘাটতির কারণে প্রবাসে বাংলাদেশী কর্মীরা যথাযথ মজুরি পায়না। অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যানুপাতে বাংলাদেশে প্রবাস আয় প্রবাহ তুলনামূলকভাবে কম। বস্তুত, আধুনিক ও বস্তুনিষ্ঠ মাদ্রাসা শিক্ষাও দীর্ঘমেয়াদে মধ্যপ্রাচ্যসহ আরবদেশগুলোতে মানসম্মত কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভের ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। এসব দিকে লক্ষ্য রেখে কর্মসংস্থানবান্ধব কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো, এধরনের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ তৈরি করা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।

৯১।   সারাদেশে ১০০টি উপজেলায় ১টি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণ এবং অবশিষ্ট ৩৮৯টি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সাথে, বিদ্যমান প্রশিক্ষণকেন্দ্রসমূহে অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের আয়োজন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে জনপ্রিয় করা হচ্ছে। এছাড়া, ৪টি বিভাগীয় শহরে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে গার্লস টেকনিক্যাল স্কুল, ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং সকল বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নে ৩৫টি মডেল মাদ্রাসা স্থাপন ও ৫২টি মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করেছি এবং দেশের ৬৫৩টি মাদ্রাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি।

৯২।   সবার জন্য গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে আমি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বিপরীতে মোট ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। এটি হচ্ছে কোন খাতে আগামী বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ

মাননীয় স্পীকার

৯৩।  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেবা: স্বাস্থ্যখাতে আমাদের লক্ষ্য হলো সবার জন্য সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সেবা নিশ্চিত করা। মোট ২৯টি অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় ২০১৭-২০২২ মেয়াদে সেক্টরওয়াইড কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে মা ও শিশুর জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য ও স্বাস্থ্য সেবা, সবার জন্য মানসম্মত সাধারণ ও বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নতুন রোগ নিয়ন্ত্রণ, উন্নত ও দক্ষ ঔষধ খাত এবং দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন করা হবে। চলমান মাতৃভাউচার কার্যক্রমকে আরো ২০টি উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালের অবকাঠামো সম্প্রসারণ, শয্যাসংখ্যা বাড়ানো, চিকিৎসা উপকরণের সংস্থান এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের কাজ অব্যাহত আছে।

৯৪।  অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য দুই পর্যায়ে মোট ৯ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। হাসপাতালে ডাক্তার এবং নার্সের অনুপাত ২:১ -এ নিয়ে আসার লক্ষ্যে আরও ৪ হাজার সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, ২০২১ সালের মধ্যে প্রসবকালীন শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ৬০০ মিডওয়াইফ নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সর্বোপরি, চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে প্রতিটি বিভাগে পর্যায়ক্রমে একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের পরিকল্পনা আমাদের আছে ।

৯৫।  বিকল্প চিকিৎসা: সাধারণ স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে হোমিওপ্যাথিক, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক নিয়োগ, ঔষধি বৃক্ষ রোপন ও ভেষজ বাগান সৃজনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

৯৬।   আইনি কাঠামো: রোগীদের জন্য মানসম্মত সেবা এবং চিকিৎসকদের পেশাগত সুরক্ষা উভয় বিষয়ের যৌক্তিকতা অনুধাবন করে আমরা আইনি কাঠামোতে সংস্কার আনছি। ‘The Medical Practice and Private Clinics and Laboratories (Regulation) Ordinance, 1982’ বাতিল করে ‘চিকিৎসা সেবা আইন’ প্রণয়ন করছি। এছাড়া, দেশের জনগণের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ‘The Lunacy Act 2012’ রহিত করে ‘মানসিক স্বাস্থ্য আইন’ প্রণয়ন করা হচ্ছে।

৯৭।  স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য ২০১৮‑১৯ অর্থবছরে ২৩ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

মাননীয় স্পীকার

৯৮।  বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণাধর্মী কার্যক্রমকে উৎসাহিত করছি। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহ বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে চলমান বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার কলেবর বৃদ্ধি করে উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ করেছি। খুলনা, বরিশাল, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের শাখা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আয়োজনের কলেবর বৃদ্ধি ও বিষয়ভিত্তিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আয়োজন করা হচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এসকল আয়োজনে সহযোগিতা করছি।

৯৯।   বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)-কে একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স ও সেন্টার ফর টেকনোলজি ট্রান্সফার এন্ড ইনোভেশন হিসেবে রূপান্তর করা হচ্ছে। এছাড়া, পারমাণবিক নিরাপত্তার পাশাপাশি পারমানবিক বিকিরণ হতে সুরক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অবকাঠামো শক্তিশালীকরার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

১০০। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ১২  হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখছি।

(২) ভৌত অবকাঠামো

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

মাননীয় স্পীকার

১০১।  বিদ্যুৎ উৎপাদন: আমরা এখন দেশের প্রায় ৯২ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করি এবং ৯০ শতাংশ পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ পায়। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগের পরিধি আরো সম্প্রসারণ করতে চাই। আমাদের আশু লক্ষ্য হল ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখনকার ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াট হতে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার প্রত্যাশা আছে। লক্ষ্য অনুযায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে বর্তমানে ১৫ হাজার ২০৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া, ৪ হাজার ৪৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। নিকট ভবিষ্যতে ২২ হাজার ৫২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও ২০টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আছে আমাদের। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সংরক্ষণ, মেরামত ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

১০২।  কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন: দেশবাসী অবহিত আছেন যে, আমরা ক্ষমতায় আসার শুরু থেকেই কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেই। সেই উদ্যোগের ফসল হলো, প্রথম: রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, দ্বিতীয়: মাতারবাড়িতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং তৃতীয়: পটুয়াখালীর পায়রায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে। এছাড়া, মহেশখালীতে ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যক্তিমালিকানা খাতে দেশি ও বিদেশি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়াকে পরিবেশবান্ধব করার উদ্দেশ্যে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনকালে বনায়নসহ ঠান্ডা পানির সরবরাহ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূষণীয় বর্জ্য নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের সর্বাধুনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

১০৩। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও রাশিয়ার সহায়তায় রূপপুরে বাস্তবায়নাধীন ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রথম পর্যায়ের কাজ চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ সমাপ্ত হবে।

১০৪। নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন: পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন কৌশলের অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন মোট উৎপাদনের ২০ শতাংশে উন্নীত করতে চাই। আমাদের সাফল্য হচ্ছে বিপুল সংখ্যক সোলার হোম স্থাপন। এগুলোকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ, নতুন ভবনে সোলার প্যানেলের বাধ্যতামূলক সংস্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদে সৌর-বিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

১০৫। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতায় বিদ্যুৎ আমদানি: প্রতিবেশী ভারত থেকে পূর্বেই আমরা বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করেছি। বর্তমানে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে ভেড়ামারা-বহরমপুর লাইন এবং উপকেন্দ্রের ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। ভুটান হতে জলবিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে ত্রি-দেশীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা বিনিয়োগ পরিকল্পনা করেছি। এছাড়া, নেপাল, মায়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে আলোচনা চলমান আছে।

১০৬।  সঞ্চালন লাইন: ইতোমধ্যে স্থাপিত ৪ লক্ষ ৩৪ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি ৮২ লক্ষ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। সঞ্চালন লাইনের অপর্যাপ্ততা দূরীকরণের জন্য ২০২১ সালের মধ্যে আরও ২১ হাজার কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন স্থাপন এবং বিতরণ লাইনের পরিমাণ মোট ৪ লক্ষ ৭৮ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

১০৭। তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: দেশের অনাবিষ্কৃত গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এর জনবল এবং কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে ১০৮ টি কূপ খননের পরিকল্পনা সামনে রেখে বাপেক্স সার্বিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি, দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদার সাথে সামঞ্জস‍্য রেখে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড এর দৈনিক পরিশোধন ক্ষমতা ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন হতে ৪৫ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত করার কার্যক্রম চলছে।

১০৮। এলএনজি আমদানি: অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমশ বাড়ছে জ্বালানির চাহিদা। দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। ফলে, বিক্ল্প জ্বালানির উৎস সন্ধান করতে হচ্ছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা এলপিজি দ্বারা প্রতিস্থাপন করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে ২৪ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৬৬টি এলপিজি সিলিন্ডার আমদানি ও মজুদের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে মহেশখালীতে একটি ভাসমান সংরক্ষণাগার ও পুনঃগ্যাসায়ন ইউনিট (Floating Storage and Regasification Unit) স্থাপন করা হয়েছে। অপর একটি ইউনিট শীঘ্রই স্থাপন করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের জুন মাস হতে ৫০০ এমএমসিএফডি (Million Cubic Feet per Day) এবং অক্টোবর ২০১৮ নাগাদ আরো ৫০০ এমএমসিএফডি সমতূল্য এলএনজি পাইপলাইনে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। পর্যায়ক্রমে কক্সবাজারের মহেশখালী এবং পটুয়াখালীর পায়রাতে দুটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা আছে আমাদের।

১০৯।  জ্বালানি দক্ষতা: গ্যাসের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে আবাসিক খাতে প্রি-পেইড মিটার ও শিল্প খাতে Electronic Volume Corrector (EVC) মিটার স্থাপন করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিদ্যুতের সিস্টেম লস হ্রাস, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায় ও লোড ম্যানেজমেন্ট এর জন্য ২০২১ সালের মধ্যে ২ কোটি প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একইসাথে, বিল পরিশোধ, অভিযোগ নিষ্পত্তি এবং সংযোগ আবেদন প্রক্রিয়াকরণকে অটোমেশনের আওতায় আনার ফলে গ্রাহকরা সহজে এসব সেবা পাচ্ছেন। আমাদের লক্ষ্য হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানির ব্যবহার ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ হ্রাস করা।

১১০।  বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের বিপরীতে  ২৪ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

যোগাযোগ অবকাঠামো

মাননীয় স্পীকার

১১১।  যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে চলমান কার্যক্রমসমূহের সময়ানুগ ও দক্ষ বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়নোত্তর মানোন্নয়ন এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।

১১২।  সড়ক-মহাসড়ক: দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১ হাজার ১৪০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ককে যথাযথ মানসম্পন্ন ও প্রশস্ত করার জন্য আমরা ১০টি সড়ক জোনভিত্তিক ১০টি গুচ্ছ প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এর আওতায় পর্যায়ক্রমে সারাদেশের ৩ হাজার ৮১৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ককে চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হবে। ইতোমধ্যে ৪৬৫ কিলোমিটার সড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত হয়েছে। আরো ৪৩৬ কিলোমিটার সড়ককে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি চলাচলের সুযোগ তৈরির জন্য আমরা ঢাকা ইস্টওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি এশিয়ান হাইওয়ের সাথে যুক্ত থাকবে। সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ততা রোধ করার ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই। সে লক্ষ্যে, ২০২১ সালের মধ্যে দেশের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ২৮টি স্হানে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্হাপন করা হবে।

১১৩।  সেতু-টানেল: দেশের পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার জন্য ৬১টি সেতু নির্মাণ/পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ অর্ধেকের বেশি শেষ হয়েছে; চলমান আছে ২য় কাঁচপুর, ২য় মেঘনা ও ২য় গোমতী সেতু নির্মাণের কাজ; গলাচিপা, পায়রা ও কচা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ অবস্থানে ভবিষ্যতে ২য় পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। এছাড়া, নবম (বগা সেতু), দশম (মোংলা সেতু) ও একাদশ (ঝপঝপিয়া) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের জন্য চীন সরকারের সাথে সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। তদুপরি, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি ২০২২ সাল নাগাদ এর কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।

১১৪।  নগর পরিবহন: ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, প্রবেশ ও নির্গমন মহাসড়কের যানজট নিরসন এবং ঢাকা ও পাশ্ববর্তী এলাকার জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (Strategic Transport Plan) গ্রহণ করা হয়েছিল। আমরা ২০১৬ সালে এটিকে হালনাগাদ করেছি। সংশোধিত পরিকল্পনায় ৫টি Mass Rapid Transit (MRT), ২টি Bus Rapid Transit (BRT), ৩ স্তর বিশিষ্ট রিং রোড, ৮টি রেডিয়াল সড়ক, ৬টি এক্সপ্রেসওয়ে, ২১টি ট্রান্সপোর্টেশান হাব নির্মাণ এবং ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট-ট্রাফিক সেফটি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বাস পরিবহন সেক্টর পুনর্গঠনের সংস্হান রয়েছে।

১১৫।  নগর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমানে বেশ কয়েকটি কার্যক্রম চলমান আছে। গাজীপুর ও ঢাকা মহানগরীর জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে গাজীপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও উভয়দিকে ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম Bus Rapid Transit Corridor এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। উত্তরা তৃতীয় ফেইজ হতে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত নির্মাণাধীন এলিভেটেড MRT Line-6 তথা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ পূর্ণ উদ্যমে চলছে। আশা করছি, ২০২০ সালের মধ্যে মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারবো। এছাড়া আগামী অর্থবছরে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু করবো। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, বৃহত্তর ঢাকার জন্য নিউইয়র্কের আদলে একটি মেট্রো যোগাযোগ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাপূর্বক সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সমন্বিত করে একটি একক পরিচালনা সংগঠন স্থাপন করা যথাযথ হবে।

১১৬।  নিরাপদ সড়ক: আধুনিক, নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সড়ক পরিবহন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য United Nations Decade of Action for Road Safety 2011-20 এবং SDGs এর অনুসমর্থনকারী হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের সংখ্যা বর্তমানের অর্ধেকে নামিয়ে আনতে চায়। এ লক্ষ্যে 3E (Engineering, Education & Enforcement) বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্হা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘Safety Rapid Strategic Transport Plan 2015-2035’ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এই পরিকল্পনার আওতায় সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এক লক্ষ দক্ষ গাড়িচালক তৈরি করার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

১১৭।  রেলখাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ: পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলওয়ে একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব মাধ্যম। রেলখাতের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ইতোঃপূর্বে প্রণীত ২০ বছর মেয়াদি রেলওয়ে মহাপরিকল্পনা হালনাগাদ করা হয়েছে। উক্ত পরিকল্পনার আওতায় ২০৪৫ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য ২৩০টি প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে। রেলপথ সম্প্রসারণ, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কার, রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরকরণ, নতুন ও বন্ধ রেল স্টেশন চালু করা, নতুন ট্রেন চালু ও ট্রেনের সার্ভিস বৃদ্ধি করা, ট্রেনের কোচ সংগ্রহ ইত্যাদি কাজ অব্যাহত আছে। আগামী অর্থবছরে ১২০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ২২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন, ২ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ, ৫৫টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ১৬টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, ৫০টি বিজি ও এমজি যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ ও ৪০টি ক্যারেজ পুনর্বাসন করতে চাই। কয়েক বছরের মধ্যে আরও ৩৯৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন, ৭৬ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন ও ১৭৩টি নতুন রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে আমাদের। বর্তমানে, যমুনা নদীর ওপর বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসম্পন্ন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু’ নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরিপের কাজ চলছে।

১১৮।  রেলওয়ের অব্যবহৃত ভূমি ব্যবহার: বাংলাদেশ রেলওয়ের অনেক অব্যবহৃত ভূমি রয়েছে। এসব অব্যবহৃত ভূমির উপর পিপিপি’র আওতায় শপিং মল, ফাইভ স্টার হোটেল, মেডিকেল কলেজ নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

১১৯।  নৌপথ ও বন্দর উন্নয়ন: স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের প্রেক্ষাপটে বৈদেশিক বাণিজ্যে আমাদের এখন প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান তৈরি করতে হবে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমুদ্র-নদী-স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট উপযুক্ত অবকাঠামো ও দক্ষ পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ামক ভূমিকা রাখে। এদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা সকল ধরনের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছি। নৌ-রুটের নাব্যতা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে ড্রেজারসহ সহায়ক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জামাদি সংগ্রহ এবং ড্রেজিং করা হচ্ছে।

১২০।  দেশে মোট আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের প্রায় ১০ শতাংশ মোংলা বন্দরের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। অথচ, ব্যবহারের অভাবে বিগত সরকারের আমলে বন্দরটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। বন্দরটিকে আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের জন্য আমরা ক্যাপিটাল ড্রেজিং, কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। ফলে বন্দরের ব্যবহার ও আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজে গতিশীলতা আনতে ইতোমধ্যে একে Fast Track প্রকল্পভুক্ত করা হয়েছে।

১২১।  নৌপরিবহন সেক্টরে দক্ষ জনবল সৃষ্টির জন্য আমরা ৪টি মেরিন একাডেমি স্থাপন করছি। যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সহজীকরণের জন্য জাহাজ নির্মাণ ও সংগ্রহ, কার্গো সার্ভিস সম্প্রসারণ, ফেরি সার্ভিসের উন্নয়ন ইত্যাদি কাজ চলমান আছে।

১২২।  বিমানবন্দর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ: নিরাপদ বেসামরিক বিমান চলাচল, যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আঞ্চলিক বিমানবন্দরসমূহের সক্ষমতা ও সেবা সুবিধা বৃদ্ধির কাজ অব্যাহত রেখেছি। পিপিপি’র আওতায় খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া, ২০১৯ সালের মধ্যে ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮ উড়োজাহাজ সংগ্রহ ও ২টি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ ক্রয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বিমানে আমরা যথেষ্ট বিনিয়োগ করে চলেছি, কিন্তু বিমান এখনো তেমন ভালো সেবাদান করতে সক্ষম হয়ে উঠতে পারেনি। বিমানকে সরকারি সংস্থার পরিবর্তে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার উদ্যোগটি আমার মনে হয় এ প্রেক্ষাপটে অপরিহার্য।

১২৩।  যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে আমি মোট ৫৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

পানি সম্পদ

১২৪।  বন্যা-খরা-নদী ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণ ও ভূমি পুনরুদ্ধার: নদীর নাব্যতা বাড়ানো, ভাঙ্গন হ্রাস ও শুষ্ক মৌসুমে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে ৪৭০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং; সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য ৫৩০ কিলোমিটার সেচ খাল খনন ও পুনঃখনন এবং ৮৬০টি সেচ স্ট্রাকচার নির্মাণ ও মেরামত, ৩টি ব্যারেজ ও রাবার ড্যাম নির্মাণ; বন্যা-লবণাক্ততা-জলাবদ্ধতা হ্রাসের জন্য ২৪০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও উপকুলীয় বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত, ৭১০টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামত, ১ হাজার ৫২৫ কিলোমিটার নিষ্কাশন খাল খনন ও পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন করবো। এছাড়া ৬টি আঁড়ি বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সমুদ্র হতে ১১০ একর ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা আছে।

১২৫।  হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন: রামসার গাইড অনুসরণ করে বাংলাদেশের সব জলাভূমির তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এছাড়া জলাভূমিসমূহের ব্যবস্থাপনা কাঠামো উদ্ভাবনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হাওর এলাকায় বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের প্রভাব মূল্যায়নের জন্য আমরা একটি সমীক্ষা শেষ করেছি। এতে পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।

(৩) ডিজিটাল বাংলাদেশ

মাননীয় স্পীকার

১২৬।  ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ও বহুমুখী ব্যবহার আমাদের অভীষ্ট প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য হ্রাস ও সামাজিক গতিশীলতা বাড়াতে সহায়তা করছে। সামনের দিনগুলোতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা সুসংহত ও টেকসই করার জন্য জিডিপিতে শিল্পখাতের তুলনামূলক অবদান বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর দিকে নজর দিতে চাই। ফলে সামনের দিনগুলোতে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভরতা আরো বাড়বে।

১২৭।  অবকাঠামো, ইন্টারনেট সেবা ও নিরাপত্তা: ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোর শক্ত ভিত রচিত হয়েছে। তারপরও চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও ইন্টারনেট সেবা সম্প্রসারণের কাজ চলমান রেখেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ৬টি বিভাগ হতে ঢাকা পর্যন্ত ৪.৪০৮ জিবিপিএস এবং জেলা হতে বিভাগ পর্যন্ত মোট ৫.৯২৮ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ প্রদান এবং ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক (4G, LTE) স্থাপনের উদ্যোগ। দেশব্যাপী বিস্তৃত তথ্যপ্রযুক্তি কাঠামোর নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়ানোর জন্য Cyber space এবং Internet ভিত্তিক সাইবার ক্রাইম পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিহত করাসহ সকল প্রকার তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

১২৮।  উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন: যুগের চাহিদার সাথে সংগতি রেখে তরুণদের নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত করা, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও উদ্ভাবিত সামগ্রী ব্র্যান্ডিং ও বাণিজ্যিকীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির লক্ষ্যে আমরা ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি। উদ্ভাবনভিত্তিক ব্যক্তি উদ্যোগের বিকাশ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলা ও কর্মসংস্থানে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

১২৯।  জনসেবায় প্রযুক্তি: সরকারি সেবা সহজীকরণে Utility Payment Platform (UPP) স্থাপন করা হচ্ছে; উপবৃত্তির টাকা পৌঁছানোর জন্য ২০ লক্ষ ‘মা’ কে দেয়া হচ্ছে টেলিটকের সিম। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী দ্বীপ মহেশখালীকে ডিজিটাল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার কাজ চলছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বীপের অধিবাসীদের জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন হবে। ফলে, শহর ও দ্বীপাঞ্চলের অধিবাসীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবধান কমে আসবে।

১৩০। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের বিপরীতে আমাদের প্রস্তাবিত বরাদ্দের পরিমাণ মোট ৬ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

(৪) জনকল্যাণ

১৩১।  খাদ্য নিরাপত্তা: আমাদের লক্ষ্য হল দেশের সকল মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং আপৎকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রাখা। দেশে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্যের ধারণ ক্ষমতা বর্তমানে ২১.২ লক্ষ মেট্রিক টন। ২০২০ সালের মধ্যে ধারণক্ষমতা ২৭.০ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত করার জন্য আরো ৬.৪ লক্ষ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার আধুনিক খাদ্য গুদাম/সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে আমরা দেশের ৮টি কৌশলগত স্থানে মোট ৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধারণ-ক্ষমতার ৮টি আধুনিক স্টীল সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। খাদ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’কে শক্তিশালী করার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং তাদের জন্য টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবীক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানো ও তথ্য-উপাত্ত ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।

১৩২।  দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্পমূল্যে খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের পরিবারকে শুভেচ্ছা মূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদানের নিয়মিত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তদুপরি, ভিজিডি কর্মসূচির মাধ্যমে চলমান পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল বিতরণ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সকল উপজেলায় সম্প্রসারণ করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার বিবেচনায় ও এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য ‘খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি ২০১৮‑১৯’ প্রণয়ন করা হচ্ছে। সিলেট ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে মা, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য চলমান পুষ্টি উন্নয়ন কার্যক্রম সফল হলে তা সারাদেশে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে আমাদের।

১৩৩। সামাজিক সুরক্ষা: দারিদ্র্য ও অসমতা হ্রাসের ক্ষেত্রে নিয়মিত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বাইরে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম হলো আমাদের অন্যতম হাতিয়ার। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে হতদরিদ্র/অতিদরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও সমাজের সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্ত অংশের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিবছর মূল কর্মসূচিগুলোর আওতা ও পরিধি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা দুর্যোগপ্রবণ এলাকা, অতিদরিদ্র এলাকা এবং জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনা করছি।

মাননীয় স্পীকার

১৩৪। আগামী অর্থবছরের জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতা বাড়ানোর প্রস্তাবসমূহ আপনার এবং দেশবাসীর অবগতির জন্য তুলে ধরছি:

  • অস্বচ্ছল যুদ্ধাহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যা অথবা নাতি-নাতনীদের সহায়তা দেবার জন্য একটি ব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রস্তুত করছে। এজন্য আগামী বাজেটে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে;

  • বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৩৫ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ জনে বৃদ্ধি;

  • বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যা ১২ লক্ষ ৬৫ হাজার থেকে ১৪ লক্ষে বৃদ্ধি;

  • বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানী ভাতা ও উৎসব ভাতার পাশাপাশি বার্ষিক ২ হাজার টাকা হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা চালুকরণ। এছাড়াও, জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে বিশেষ সম্মানী ভাতা চালুকরণ;

  • অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ২৫ হাজার হতে ১০ লক্ষে বৃদ্ধি;

  • প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তির হার বাড়িয়ে প্রাথমিক স্তরে ৫০০ টাকা হতে ৭০০ টাকায়, মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা হতে ৭৫০ টাকায় এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৭০০ টাকা হতে ৮৫০ টাকায় বৃদ্ধি; এবং ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮০ হাজার হতে ৯০ হাজার জনে বৃদ্ধি;

  • হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকা হতে ৭০০ টাকায়, মাধ্যমিক স্তরে ৪৫০ টাকা হতে ৮০০ টাকায়, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা হতে ১ হাজার টাকায় এবং উচ্চতর স্তরে ১ হাজার টাকা হতে ১ হাজার ২০০ টাকায় বৃদ্ধি;

  • বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীর সংখ্যা ৩৬ হাজার থেকে ৬৪ হাজারে উন্নীত;এবং এদের মধ্যে বিশেষ ভাতা ভোগীর সংখ্যা ২৩ হাজার হতে ৪০ হাজারে এবং শিক্ষা উপবৃত্তির সংখ্যা ১১ হাজার হতে ১৯ হাজারে উন্নীত;

  • ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজ্‌ড ও জন্মগত হৃদরোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজারে বৃদ্ধি;

  • চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ৩০ হাজার হতে ৪০ হাজারে বৃদ্ধি;

  • দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা মাসিক ৫০০ টাকা হতে ৮০০ টাকায় বৃদ্ধি এবং ভাতার মেয়াদ ২ বছরের স্থলে ৩ বছর নির্ধারণ। পাশাপাশি, ভাতাভোগীর সংখ্যা ৬ লক্ষ হতে ৭ লক্ষে বৃদ্ধি;

  • কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তার আওতায় মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা হতে ৮০০ টাকায় বৃদ্ধি এবং ভাতা প্রদানের মেয়াদ ২ বছরের স্থলে ৩ বছর নির্ধারণ। পাশাপাশি, ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ হতে ২ লক্ষ ৫০ হাজারে বৃদ্ধি;

  • কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার প্রতিটিতে ২০ হাজার হিসেবে মোট ৪০ হাজার বৃদ্ধি করে ভিজিডি কার্যক্রমের উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৪০ হাজারে বৃদ্ধি।

১৩৫। ভাতার হার ও ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে লক্ষ্যভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য আমরা তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সংস্কার কার্যক্রম তথা জি-টু-পি (Government to Person) পদ্ধতির প্রবর্তন করেছি। এর আওতায় প্রত্যেক উপকারভোগী সরকারি কোষাগার হতে ইলেকট্রণিক ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে নিজ নিজ পছন্দের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল হিসাবে মাসের নির্দিষ্ট তারিখে ভাতা পাবেন। পাশাপাশি, জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে সংযোগ রেখে প্রত্যেক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির জন্য ডিজিটাল তথ্য-ভান্ডার প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা উপকারভোগী নির্বাচনে দ্বৈততা পরিহারে সহায়তা করবে। পাশাপাশি, নতুন ভাতার আবেদন, অভিযোগ ব্যবস্থাপনা, অর্থবরাদ্দ, অর্থছাড় ইত্যাদি বিষয়ও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। ফলে, সরকারি সম্পদ ও সেবায় সাধারণ জনগণের সহজ অভিগম্যতা ও অধিকার নিশ্চিত হবে। পাইলটভিত্তিতে মাতৃত্বকাল ভাতা কর্মসূচির সাতটি উপজেলায় জি-টু-পি’র মাধ্যমে ভাতা বিতরণ পদ্ধতির সূচনা করা হয়েছে। বয়স্কভাতা বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা ১১টি জেলায় জি-টু-পি পদ্ধতিতে বিতরণের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, আগামী অর্থবছরে সারাদেশে এটি সম্প্রসারণ করতে পারব। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে আমরা যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করবো।

১৩৬।  দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণ ও অন্যান্য কার্যক্রম: দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে সর্বপ্রথম পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম শুরু করেন। বর্তমানে পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম, পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রম, দগ্ধ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রম ও শহর সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম এর আওতায় পরিবার প্রতি ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা হারে গ্রামের অতি-দরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠান বিভিন্নমুখী ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার ফলে আত্ম-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

১৩৭। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন: দেশব্যাপী প্রতিবন্ধিতা জরিপ শেষে শনাক্তকৃত সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তির তথ্য Disability Information System (DIS) নামক তথ্য ভান্ডারে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। আমাদের ধারনামত যত প্রতিবন্ধী দেশে আছে, জরিপে সে সংখ্যা অনেক কমেছে বলে আমরা আনন্দিত। কিন্তু এতে আমাদের দায়িত্বও বেড়েছে। তাদের জীবনকে সহনীয় করে তোলার দায় আমাদের। এ তথ্যভান্ডার ব্যবহার করে পর্যায়ক্রমে সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। প্রতিবন্ধিতার মাত্রা ও ধরণ অনুযায়ী চিকিৎসা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে উন্নয়ন কার্যক্রমের পুনর্বিন্যাস এবং নতুন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।

১৩৮। অর্থনেতিক কর্মকান্ডে নারী: আমাদের প্রচেষ্টায় বিগত এক দশকে নারী শিক্ষার হার অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ এখনও যথেষ্ট নয়। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ২০০৯ সালে ছিল ৫৪.৩ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা ৬৯.৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ ২০১০ সালের পরে তেমন বাড়েনি; ২০১০ সালের ৩৬.০ শতাংশের তুলনায় সাত বছরে বেড়েছে নগণ্য ০.৩ শতাংশ; গ্রামাঞ্চলে অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধি পেলেও শহরাঞ্চলে অংশগ্রহণের হার কিছুটা কমেছে। যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং আবাসন, সন্তানদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র, নারী-বান্ধব গণপরিবহন ইত্যাদি সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর উৎপাদন সম্ভাবনার পূর্ণ ব্যবহার করতে আমরা বদ্ধপরিকর। গণপরিবহনে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট হারে আসন সংরক্ষণ ২০২০ সালে কার্যকর করার জন্য এবারে এক বছর সময় দেওয়া হচ্ছে।

১৩৯।  প্রশিক্ষণ, কর্মপরিবেশ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ: মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য ঘূর্ণায়মান আকারে ৬৪টি জেলার ৪৮৮টি উপজেলায় মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থায়িত ২৫টি কর্মসূচির মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। ৮টি বিভাগীয় শহরে এবং ৬৪টি জেলা শহরে ও ৪২৬টি উপজেলায় তৃণমূল পর্যায়ের ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৪৪০জন নারীকে আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন/সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র নির্মাণ, মিরপুর ও খিলগাঁও কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, ঢাকার নীলক্ষেতে ১০তলা কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের নতুন ভবন নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, যশোরে ৪টি হোস্টেলের অবকাঠামো উন্নয়ন।

১৪০। সচেতনতা সৃষ্টি: কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিধানের মাধ্যমে আমরা নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রান্তিক ও অসহায় কিশোর-কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জেন্ডার বেইজ্‌ড ভায়োলেন্স প্রতিরোধে সক্ষম করার জন্য ৬৪টি জেলার ৪৮৯টি উপজেলায় ৫ হাজার ২৯২টি ক্লাবের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন এবং সহিংসতা রোধকল্পে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া, ৬৪টি জেলার ৪৯০টি উপজেলায় ১ কোটি গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

১৪১।  জেন্ডার রেসপনসিভ বাজেট: বাজেটে নারীর হিস্যা তুলে ধরে ২০০৯-১০ অর্থবছর হতে প্রতিবছর জেন্ডার বাজেট প্রকাশ করা হচ্ছে। দশ বছর ধরে পরিচালিত জেন্ডার বাজেট প্রণয়ন উদ্যোগকে মূল্যায়নের লক্ষ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য এবার একটি কমিটি গঠন করা হবে। তারা এ উদ্যোগের বিশ্লেষণ করে একে উন্নীত করা অথবা নতুন ধাঁচে সংস্কার করার উদ্দেশ্যে সুপারিশ প্রদান করবেন।

১৪২।  শিশু উন্নয়ন: সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, পটুয়াখালী ও সাতক্ষীরা জেলায় অনগ্রসর শিশুদের জন্য ২ হাজার ১০৯ টি কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এর আওতায় ২০ টি ডে-কেয়ার সেন্টার, ৫১৫ টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং ৭৪০টি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে শিশু বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে, যা থেকে জাতীয় বাজেটে শিশুদের উন্নয়নে বরাদ্দ, গৃহীত কার্যক্রম ও নীতিকৌশল বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। আগামী অর্থবছরের জন্য শিশু বাজেটের পরিধি সম্প্রসারণ করে আরও ১৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিশুদের কল্যাণে বরাদ্দকৃত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও রিপোর্টিং-এর ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ ও শিশুখাত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

১৪৩। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ: মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য দেশের সকল জেলা/উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ৫৭টি জেলায় ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে ও ১৬টি বিশেষায়িত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা খরচে চিকিৎসাসেবা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছি। ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৮৫২টি ইউনিট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে; আরও ১১৯টি ইউনিট নির্মাণাধীন আছে। এছাড়াও ৮ হাজার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে আবাসন সুবিধা প্রদানের জন্য জেলা/উপজেলা পর্যায়ে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সকল বে-সামরিক, সামরিক, শহীদ, খেতাবপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে, যা বর্তমানে জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী অর্থবছর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বৈশাখী ভাতা ও বিজয় দিবস ভাতা চালু করা হচ্ছে।

১৪৪। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংরক্ষণ: আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং স্মৃতি সংরক্ষণে মুক্তিযুদ্ধকালে মিত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্থাপনাসমূহ মেরামত ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সঠিকভাবে তুলে ধরা ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে সকল জেলা-উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর-কাম-লাইব্রেরি নির্মাণ করা হচ্ছে।

১৪৫। বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়ন: বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অভিবাসন ব্যয় হ্রাস এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ ও নিরাপদ করার জন্য আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। পূর্ব ইউরোপসহ ৫২টি দেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে গবেষণাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিদ্যমান ৬টি ইন্সটিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি ও ৬৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের ৪৮টি ট্রেডে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে অভিবাসনে পিছিয়ে পড়া জেলাসমূহ হতে কর্মী প্রেরণের হার বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ সংস্থা City and Guilds (C&G) এর পাঠ্যক্রম ও মান অনুযায়ী বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ৩ থেকে ৬ মাস মেয়াদি স্থানীয় প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে এবং প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের C&G কর্তৃক সনদ প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সনদ প্রাপ্তির ফলে দক্ষ কর্মী হিসেবে অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের পাশাপাশি উচ্চ বেতনে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে।

১৪৬।  প্রবাসী কল্যাণ: প্রবাসী কল্যাণ আইন সংশোধন করে পরিচালনা বোর্ডে দু’জন প্রবাস প্রত্যাগত কর্মীকে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে, অভিবাসী কল্যাণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে প্রবাসী কল্যাণে আমরা আরো যেসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে চাই তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বিদেশ হতে প্রত্যাগত শ্রমিকদের তথ্যভান্ডার তৈরি ও দেশে তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা প্রদান, যে সব দেশে অভিবাসীর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি সেসব দেশে শ্রম উইং স্থাপনের মাধ্যমে কল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা; বিদেশি ভাষা শিক্ষাদান কার্যক্রম জোরদারকরণ ইত্যাদি।

(৫) কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন

মাননীয় স্পীকার

১৪৭। কৃষি উন্নয়ন: আবাদযোগ্য জমি ক্রমশ কমতে থাকা সত্ত্বেও আমাদের কৃষিবান্ধব নীতিকৌশল ও কর্মসূচি গ্রহণের ফলে কৃষিখাতের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়েছে। কৃষি ভর্তুকি, সার-বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ প্রণোদনা ও সহায়তা কার্ড, সেচ সুবিধা ও খামার যান্ত্রিকীকরণ, শস্য বহুমুখীকরণ ও বিপণন, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা ইত্যাদি সফল কার্যক্রমসমূহ আমরা প্রয়োজনীয় মাত্রায় অব্যাহত রাখবো। তবে, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এক্ষেত্রে দক্ষতা আরো বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নগদ আর্থিক সহায়তা সরাসরি কৃষকের নিকট পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ডধারী কৃষকগণের তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে।

১৪৮। কৃষিখাতের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমানে আমরা পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর উপযোগী কার্যক্রমের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। গবেষণার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রযুক্তি ও ফসলের জাত উদ্ভাবন এবং হস্তান্তরের কাজ চলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণতার প্রভাব মোকাবেলার জন্য শস্যনিবিড়তা বৃদ্ধিসহ স্বল্প-জীবনকাল-সম্পন্ন (short duration) ফসল উৎপাদনের দিকে নজর দেয়া হচ্ছে। খরা-লবণাক্ততা-তাপ-সহিষ্ণু ধান, তাপ-সহিষ্ণু গম এর জাত উদ্ভাবন এবং তা জনপ্রিয় ও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে ফসলের ২২টি নতুন জাত ও ২১টি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে। এছাড়া পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরী ফসল পাটের বিভিন্ন প্রতিকূলতা-সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন এবং বহুমুখী পাটপণ্য উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা কার্যক্রমে গতিশীলতা এসেছে। ইউরিয়া সারের ব্যবহার হ্রাস, জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধি ও সুষম সার ব্যবহারের মাধ্যমে জমির স্বাস্থ্য রক্ষা ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি আমরা। সারের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য সার পরীক্ষাগার ও গবেষণাকেন্দ্র নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।

১৪৯।  সেচ কাজে ভূ-গর্ভস্থ পানির পরিবর্তে ভূ-উপরিস্থ পানি এবং উন্নত প্রযুক্তির (Drip irrigation, sprinkler irrigation প্রভৃতি) ব্যবহার বাড়ছে। এছাড়াও মূল্য শৃঙ্খল (Value Chain) ও বিপণন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, কৃষিভিত্তিক শিল্পের সম্প্রসারণ, কৃষিখাতে নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত আমদানি নিশ্চিতকরণে Quarantine Centre স্থাপন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

১৫০। মৎস্যখাত উন্নয়ন: কৃষিখাতের ন্যায় মৎস্যখাতের উন্নয়নেও বাংলাদেশ অনেক অগ্রসর হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০১৬ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ ৪র্থ স্থান অধিকার করেছে এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ৫ম। মৎস্য উৎপাদনের বর্তমান ধারা অব্যাহত রেখে ২০২১ সাল নাগাদ মৎস্য উৎপাদন ৪৫.৫২ লক্ষ মেট্রিক টনে উন্নীত করতে চাই। মৎস্যখাতের উন্নয়নে আমাদের চলমান কার্যক্রম যেমন- উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ, বিপন্নপ্রায় মৎস্য প্রজাতির সংরক্ষণ, মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির জন্য অভয়াশ্রম সৃষ্টি, জাটকা সংরক্ষণ, পরিবেশ-বান্ধব চিংড়ি চাষ ইত্যাদি অব্যাহত আছে। পাশাপাশি, মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির বাজার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য মান-নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করছি। আন্তর্জাতিক বাজারে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ খাদ্য রপ্তানি নিশ্চিত করতে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় তিনটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মৎস্য মান-নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার পরিচালনা করা হচ্ছে। গ্রামীণ মৎস্যচাষি, জেলে ও মৎস্যজীবীদের তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে দেশব্যাপী জেলে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান এবং ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে।

১৫১।  সম্ভাবনাময় সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ: বঙ্গোপসাগরের ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে অন্যান্য সমুদ্রসম্পদের পাশাপাশি মৎস্যখাতে বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অর্জিত সমুদ্রসীমায় ‘আরভি মীন সন্ধানী’ নামক গবেষণা ও জরিপ জাহাজের মাধ্যমে অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আশা করছি এ জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে শীঘ্রই ভাসমান মৎস্যসম্পদের পূর্ণাঙ্গ জরিপ সম্পন্ন করতে পারবো। সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোচ্চ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা স্বল্প, মধ্যম এবং দীর্ঘমেয়াদি সামুদ্রিক উন্নয়নের কর্মপন্থা প্রণয়ন করেছি।

১৫২।  পল্লী উন্নয়ন: পল্লী এলাকার দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলে আমরা গুণগত পরিবর্তন এনেছি। ক্ষুদ্রঋণের স্থলে ক্ষুদ্রসঞ্চয়কে উৎসাহিত করার জন্য দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটি দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি স্থায়ী প্রক্রিয়া এবং এর মাধ্যমে পল্লী এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্থায়ী অর্থায়ন, বিনিয়োগ ও আয়ের সংস্থান হচ্ছে। ফলে, তারা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। আশা করছি, এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ৬০ লক্ষ পরিবার তথা ৩ কোটি মানুষ স্থায়ীভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হবে। আমরা বিভিন্ন সামাজিক ও প্রায়োগিক গবেষণার কাজও করছি। এরূপ একটি উদ্ভাবনী প্রায়োগিক গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে বর্তমানে সাতটি বিভাগের সাতটি জেলায় ‘পল্লী জনপদ’ নামে আধুনিক আবাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এদিকে বেসরকারি উদ্যোগকে জোরদার করার জন্য আমাদের কিছু চিন্তাভাবনা রয়েছে।

১৫৩। গ্রাম ও শহরাঞ্চলের উন্নয়ন: সারাদেশে গ্রাম ও শহরাঞ্চল এবং পৌর এলাকাসমূহে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য অভ্যন্তরীণ চাহিদার গতি সচল রাখে, যা আমাদের প্রবৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক শক্তি। রাস্তা, ব্রিজ-কালভার্ট, গ্রোথ সেন্টার, হাটবাজার, সাইক্লোন সেন্টার, বিল উন্নয়ন, নিরাপদ পানির উৎস ও ড্রেন নির্মাণ, পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা সম্প্রসারণ ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা এ কর্মচাঞ্চল্য ধরে রাখছি। আগামী অর্থবছরে আমরা গ্রামাঞ্চলে সড়ক নেটওয়ার্ক কভারেজ ৩৫.২ শতাংশ হতে ৩৬.৯ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। শহরাঞ্চলে যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসন, স্যানিটেশন, পয়ঃনিষ্কাশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সবুজায়ন ইত্যাদি কাজ চলমান থাকবে।

১৫৪। ঢাকা শহরে যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর জন্য আমরা যেসব উদ্যোগ নিয়েছি তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারসহ তিনটি কিচেন মার্কেট স্থানান্তর, ভূউপরিস্থ পানির ৩টি শোধনাগার ও ১ হাজার ২৯১ কিলোমিটার পানির লাইন নির্মাণ, ১৮৪টি গভীর নলকূপ স্থাপন, সড়ক-নর্দমা-ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন, সবুজায়ন এবং উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন। আমরা ঢাকা নগরবাসীর পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা এখনকার ২০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ৬০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশে উন্নীত করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য ঢাকা ওয়াসা বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে আছে ২৫ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন এবং ২৯০ কিলোমিটার ড্রেনের আবর্জনা অপসারণ কার্যক্রম।

১৫৫। আগামী অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৫৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। এটি হচ্ছে আগামী বছরে কোন খাতের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ।

(৬) শিল্পায়ন ও বাণিজ্য

মাননীয় স্পীকার

১৫৬।  শিল্পখাতে উন্নয়ন কৌশল: জিডিপি ও কর্মসংস্থানে শিল্পখাতের অবদান শক্তিশালী হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন টেকসই হয় এবং ঝুঁকির আশঙ্কা কম থাকে। আমরা জাতীয় আয়ে শিল্পখাতের অবদান বর্তমান ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে চাই। একই সাথে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোও আমাদের লক্ষ্য। তবে, শিল্পখাতের বিকাশে আমরা আমাদের নিজস্ব বাস্তবতাকে বিবেচনায় রাখবো। বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, অপরিণত মূলধন বাজার সব মিলিয়ে আমাদের জন্য শ্রমঘন-স্বল্পপুঁজিনির্ভর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসার অধিক উপযোগী হবে বলে মনে করি। এ প্রক্রিয়া দারিদ্র্য বিমোচন ও অসমতা হ্রাসের ক্ষেত্রেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

১৫৭। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প: রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার মাধ্যমে সার, চিনি, কাগজ উৎপাদন, মোটরযান সংযোজন, ক্ষুদ্র-মাঝারি-কুটির শিল্পের উন্নয়ন ও উৎপাদিত পণ্যের মান সুরক্ষা ও মেধাসম্পদ সংরক্ষণের কাজ চলমান আছে। পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন জেলায় ও অঞ্চলে বিসিক এবং অন্যান্য শিল্পপার্ক ও শিল্প নগরী স্থাপন, সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য বাফার গুদাম নির্মাণ, জাহাজভাঙ্গা শিল্প স্থাপন এবং শিপইয়ার্ড নির্মাণ; বন্ধঘোষিত কলকারখানা পুনরায় চালুকরণ; পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

১৫৮। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়নে ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। Better Work and Standards Programme (BEST) এর মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত পণ্য, শিল্পে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং গ্রাহক সেবার মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলছে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত যেমন: নারী উদ্যোক্তাকেন্দ্রিক শিল্প, কৃষিভিত্তিক শিল্প, নতুন উদ্যোক্তা ও উৎপাদনশীল খাতে স্বল্প খরচে ব্যাংক ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু রাখা হয়েছে। শিল্পজাত পণ্যের মান-নিয়ন্ত্রণ সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে বিএসটিআই-তে পূর্ণাঙ্গ ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করা হয়েছে এবং এর কার্যক্রম জেলাপর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।

১৫৯।  রপ্তানিমুখী বৃহৎ শিল্প স্থাপনের উপযোগী বিনিয়োগ পরিবেশ সৃজনের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা আগেই জানিয়েছি। সম্ভাবনাময় জাহাজ শিল্পের উন্নয়নে আমরা বন্ডেড ওয়্যার হাউজ সুবিধাসহ অন্যান্য নীতিসহায়তা প্রদান করছি। এছাড়াও ‘বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন ২০১৫’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলের শুরুতে আমাদের জাহাজ ৫টি মহাদেশে বাণিজ্যে লিপ্ত ছিল। সে গৌরব পুনরুদ্ধারে আমাদের বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে আহবান জানাচ্ছি।

১৬০।  পর্যটন শিল্প: পর্যটন সুবিধা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কক্সবাজারে মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র, নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ি ও বিরিশিরিতে পর্যটন কেন্দ্র, টেকেরঘাট ও কুয়াকাটায় ওয়াচ টাওয়ারসহ বিভিন্ন জেলায় আধুনিক বিশ্রামাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। পর্যটন শিল্পে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজম ও ব্যাকওয়াটার ট্যুরিজম এর কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আনন্দের বিষয় হল- ২০১৮‑১৯ মেয়াদে বাংলাদেশ Islamic Conference of Tourism Ministers (ICTM)-এর চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছে এবং ঢাকা শহরকে ২০১৯ সালের জন্য OIC City of Tourism ঘোষণা করা হয়েছে। এ সুযোগে আমাদের পর্যটন শিল্প সুসংহত ও সম্প্রসারিত হতে ব্রতী হতে পারবে।

১৬১।  পুনরুজ্জীবিত পাট শিল্প: পরিবেশবান্ধব হওয়ার কারণে বর্তমানে পাট ও পাটজাত পণ্যের কদর বাড়ছে। বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট পাট উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে আমরা এ সুযোগকে কাজে লাগাতে চাই। উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণের পাশাপাশি বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনকে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে মিলগুলির বিএমআরই (Balancing, Modernization, Rehabilitation and Expansion) করা হচ্ছে। পাট হতে কম্পোজিট জুট টেক্সটাইল, পাটপাতার কোমল পানীয়, নদীভাঙ্গন রোধে ব্যবহার উপযোগী জুট জিও টেক্সটাইল ব্যাগ, পাটের শপিং ব্যাগসহ নতুন ও বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া, পাটের উপজাত পাটখড়ি হতে চারকোল উৎপাদন ও রপ্তানির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকারিখাতে পাটশিল্পের কেন্দ্রায়িত ব্যবস্থাপনা এ শিল্পের জন্য যথাযথ নয়। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পাট মিলগুলিকে সরকারি-বেসরকারি-অংশীদারিত্ব (Public Private Partnership) এর মাধ্যমে পরিচালনা করা দরকার।

১৬২।  বস্ত্র শিল্প: আর্ন্তজাতিক প্রতিযোগিতায় সক্ষম শক্তিশালী বস্ত্র ও পোশাকখাত তৈরিতে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকার অদূরে ‘তাঁতপল্লী’ স্থাপনের পদক্ষেপ নিয়েছি ও মসলিনের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছি। বস্ত্র ও পোশাকখাতে দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট এবং টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া, ফ্যাশন ডিজাইন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও ট্রেনিং সাব-সেন্টারগুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।

১৬৩।  বাণিজ্য সম্প্রসারণ: ২০২১ সালে দেশের রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। একই সাথে, সম্প্রতি স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় উত্তরণ-পরবর্তী বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে বাণিজ্য কৌশলের পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্রায়ন, বিদ্যমান বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বাজার অন্বেষণ প্রচেষ্টা জোরদার করা, মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি (Free Trade Agreement (FTA) এবং শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধার সময় বাড়ানোর জন্য কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান তৈরি করবো। বর্তমানে মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, চীন ও তুরস্কের সাথে মুক্ত বা প্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফ বাধা দূরীকরণের জন্য ইতোমধ্যে ৪৪টি দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আরও কয়েকটি দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। অন্যদিকে, SAPTA, SAFTA, APTA, BIMSTEC ইত্যাদি আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক চুক্তির আওতায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

(৭) আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা

মাননীয় স্পীকার

১৬৪।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রভাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন সংকট মোকাবেলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করে চলেছে। একই সাথে, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। ভারত থেকে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে, পর্যায়ক্রমে আরো বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে ভারত সরকারের সমর্থন পাওয়া গিয়েছে। BBIN (Bangladesh, Bhutan, India, Nepal) Framework এর আওতায় ভুটানে অবস্থিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত-ভুটানের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। জ্বালানি খাতে, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সৌরশক্তি ও পারমাণবিক শক্তি বিষয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান এর মধ্যে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুৎ সহযোগিতা ও যোগাযোগখাতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করতে ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ ও ‘যৌথ এক্সপার্ট গ্রুপ’ কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ‘বিবিআইএন মোটরযান চালনা চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা এঅঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

১৬৫।  মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে আগত বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি তাদের নিজ দেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আমাদের সরকার সচেষ্ট রয়েছে। এবিষয়ে মিয়ানমারের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর ছাড়াও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় প্রায়োগিক দিকসমূহ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের নিমিত্ত একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করা হয়েছে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, অধিকার ও জীবিকার নিশ্চয়তাসহ তাদের নিজভূমিতে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে আমরা ‍মিয়ানামরের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি, মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সীমিত সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দে চাপ থাকা সত্ত্বেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা আগত রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্য বাসস্থান, সুরক্ষা, চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক মানবিক সহায়তা প্রদান করছি। তবে আমার মনে হয় যে, আন্তর্জাতিক তৎপরতা ছাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের পুনর্বাসন ও নিরাপদ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া মোটেও এগুবে না।

(৮) জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ

মাননীয় স্পীকার

১৬৬।  জলবায়ু পরিবর্তন: ‘Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan (BCCSAP)’ এর আলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য সামগ্রিকভাবে ৬টি থিমেটিক এরিয়ার ৪৪টি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। জলবায়ুকেন্দ্রিক ব্যয় নিরূপণের সুবিধার্থে সরকারের বাজেট শ্রেণিবিন্যাসের আওতায় এ কার্যক্রমগুলোকে আনা হয়েছে। এছাড়া, আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড’ এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। United Nations Framework Convention on Climate Change (UNFCCC) এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ Intended Nationally Determined Contributions (INDC) দাখিল করেছে, যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে নিজস্ব সক্ষমতায় ৫.০ শতাংশ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় ১৫ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা একটি ‘বাস্তবায়ন পথনকশা’ প্রণয়ন করেছি। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের র্দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবেলার জন্য National Adaptation Plan প্রণয়নের কাজ চলছে। উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আরও আছে-কৃষি, পানি, অবকাঠামো, নগরায়ন, জীববৈচিত্র্য, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি- বিপন্নতা-নিরূপন ও ঝুঁকিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান; ইট ভাটায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার; উন্নত দেশ হতে স্বল্প কার্বন নিঃসরণযোগ্য প্রযুক্তি আনয়ন ইত্যাদি।

১৬৭।  পরিবেশ দূষণ: সার্বক্ষণিক বায়ুমান পরিবীক্ষণ স্টেশনের মাধ্যমে বায়ুমান পরিবীক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া, সাতক্ষীরায় অবস্থিত মনিটরিং স্টেশনের মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় বায়ু দূষণ পরিবীক্ষণের কাজ চলছে। শিল্প দূষণ নিয়ন্ত্রণে বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ, তরল বর্জ্য রিসাইক্লিং ও জিরো ডিসচার্জ পরিকল্পনা গ্রহণ, কারখানায় Environmental Treatent Plant (ETP) প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অত্যধিক দূষণযুক্ত বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগ, হালদা নদীসমূহ ও নদীউপকূলবর্তী এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সংরক্ষণের জন্য কার্যব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া, সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা, হাইড্রোক্লোরোফ্লোরো কার্বন এর ব্যবহার ৩৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এর জন্য নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।

১৬৮।  বনভূমি সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ: চারা উৎপাদন, ব্লক-স্ট্রিপ বাগান সৃজন, উপকূলে চর বনায়ন, সামাজিক বনায়ন ইত্যাদি টেকসই বন ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে বনভূমি সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ করছি। ২০২১ সালের মধ্যে ৫১২ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা জুড়ে ২৮ হাজার ৫৬০ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজনের মাধ্যমে সবুজবেষ্টনী স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। এছাড়াও সুন্দরবনসহ ১৫টি সংরক্ষিত এলাকায় কার্বন মজুদ নির্ণয়ের কাজ চলছে। তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বনব্যবস্থাপনার স্বার্থে স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে ফরেস্ট কভার ম্যাপ প্রণয়ন এবং বনজ সম্পদের হাল নাগাদ তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়াও, ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ ব্যবহার করে ভূমি সনাক্তকরণ ও বনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু হয়েছে।

১৬৯।  জাতীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন খাতে ২০১৬-২০২১ মেয়াদি জাতীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এ খাতের মোট বিনিয়োগ চাহিদা, বিদ্যমান বিনিয়োগ ও বিনিয়োগ ঘাটতি নির্ণয় করা হয়েছে।‘জাতীয় পরিবেশ কাউন্সিল’ কর্তৃক অনুমোদিত এই পরিকল্পনায় ৬০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নযোগ্য অগ্রাধিকারভিত্তিক বিনিয়োগ কার্যক্রম চিহ্ণিত করা হয়েছে। হিসাবমতে চিহ্ণিত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬-২০২১ মেয়াদে মোট ১১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন, যার মধ্যে সরকারি তহবিল ও উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় ইতোমধ্যে ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং নিরূপিত বিনিয়োগ ঘাটতির পরিমাণ ৭.০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই পরিকল্পনার আওতায় ফলাফলভিত্তিক কাঠামোর মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিনিয়োগের ফলাফল পরিবীক্ষণের কাজ শুরু করা হয়েছে।

(৯) আবাসন ও পরিকল্পিত নগরায়ন

মাননীয় স্পীকার

১৭০। পরিকল্পিত নগরায়ন: যথাযথ গৃহায়ন ও নগরায়ন পরিকল্পনা ব্যতীত শহর এলাকায় ভূমির সুষ্ঠু ব্যবহার এবং অধিক জনগণের জন্য মানসম্মত বাসস্থানের সংস্থান করা সম্ভব নয়। তাই, শহর ও শহরতলীতে সরকারি কর্মচারীসহ অন্যান্যদের জন্য প্লট উন্নয়ন ও ফ্ল্যাট নির্মাণ এবং হস্তান্তর করা হচ্ছে। এছাড়া যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসন, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সৌন্দর্যবর্ধন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারাদেশে নগরসমূহের বাসোপযোগিতা বাড়াতে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

১৭১।  ঢাকা মহানগরীতে গুলশান-বনানী-বারিধারা এবং উত্তরা লেকের উন্নয়ন, হাতিরঝিল হতে শাহজাদপুর পর্যন্ত ২.৪ কিলোমিটার ড্রাইভওয়ে নির্মাণ, পানি সংরক্ষণ ও গ্রাউন্ড ওয়াটার রিচার্জিং এর ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কুড়িল হতে বালু নদী পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন কাজ চলছে। এছাড়াও আমরা বিদ্যমান ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান হালনাগাদ এবং ২০১৬-২০৩৫ মেয়াদি রিভাইজ্‌ড ঢাকা স্ট্রাকচারাল প্ল্যান প্রণয়ন করছি।

১৭২।  চট্টগ্রাম শহরের রোড নেটওয়ার্ক উন্নয়নের জন্য ১৫.২ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড, ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ লুপ রোড, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ্ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া, জলাবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন খাল পুন: খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন করা হচ্ছে।

১৭৩। সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আবাসন সুবিধা: কুমিল্লা, সিরাজগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ শহরে বস্তিবাসীদের অংশগ্রহণে গোষ্ঠীগত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন, তাদের একত্রীকরণ (Integration) ও বসতি স্থাপনের কাজ চলছে। শহরের মূল অবকাঠামোর সঙ্গে বস্তি এলাকার সংযোগ স্থাপন; পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিশ্চিতকরণ এবং কমিউনিটি সেবা উন্নয়নের মাধ্যমে বস্তিবাসীর জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে উল্লিখিত জেলাসমূহের ১৯টি কমিউনিটির ৫ হাজার ৭০০ পরিবার সরাসরি উপকৃত হবে।

১৭৪। দুর্যোগ প্রস্তুতি: ঢাকা মহানগর এলাকায় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা ভবনসমূহ চিহ্নিত করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। একই সাথে, ভূমিকম্প সহিষ্ণু ভবন নির্মাণ বিষয়ে প্রকৌশলী, নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি এমনকি নির্মাণ শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভূমিকম্প প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরীর ১ হাজার ৫২৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকার জন্য Microzonation Map তৈরি, ব্যাংকের মাধ্যমে পোশাক কারখানাগুলোর নির্মাণ ও Retrofitting এর জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরের কারিগরি সহায়তাসহ ৬ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান, ঢাকার মিরপুরে Fire Service and Civil Defense Department এর জন্য ভূমিকম্প নিরোধী এবং শক্তিসাশ্রয়ী গ্রীন বিল্ডিং নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

(১০) তথ্য, সংস্কৃতি, ধর্ম এবং ক্রীড়া

মাননীয় স্পীকার

১৭৫। তথ্য ও প্রচারণা: বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচিত ১০টি বিশেষ উদ্যোগ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রেস ও মিডিয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক জেলায় ‘তথ্য কমপ্লেক্স’ নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। এছাড়া, বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে ৯টি নতুন প্রেস উইং খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ ও জনগণের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা শিশু ও নারী উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম, ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জে ২টি ১০ কিলোওয়াট এফএম বেতার কেন্দ্র স্থাপন এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৬টি পূর্ণাঙ্গ টিভি কেন্দ্র নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি।

১৭৬।  ধর্ম: সকল ধর্মের মানুষের ধর্মীয় মান-মর্যাদা সুরক্ষা, নির্বিঘ্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন, ভ্রাতৃত্ববোধ ও ধর্মীয় সম্প্রীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চলমান নানামুখী কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবো। ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে ও প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, ৬৮ হাজার পুরোহিত ও সেবাইতদের জন্য দক্ষতামূলক প্রশিক্ষণ, মসজিদ পাঠাগার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ, মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম এবং প্যাগোডাভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া, সারাদেশের মন্দির মেরামত, পুনঃনির্মাণ ও সংরক্ষণের জন্য ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

১৭৭। সংস্কৃতি: মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখা, সমকালীন শিল্প-সাহিত্যের গবেষণা ও উন্নয়ন এবং অসাম্প্রদায়িক ও ইহজাগতিক চেতনার বিকাশে আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি। বাঙ্গালীর চিরন্তন ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় নবান্ন উৎসব, পৌষ উৎসব, বসন্ত উৎসব, বর্ষা উৎসব ইত্যাদি উদযাপন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মেলা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ধারা অব্যাহত আছে। এছাড়াও, পুরাকীর্তি সংরক্ষণ এবং ঐতিহাসিক এলাকা ও নিদর্শনের রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম চলমান আছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চা এবং আঞ্চলিক ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির প্রসার ও সংরক্ষণের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

১৭৮। যুব ও ক্রীড়া: দেশের যুবসমাজকে সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী বাহিনীতে রূপান্তর করা এবং তাদের কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। একই সাথে, তৃণমূল পর্যায় থেকে ক্রীড়া প্রতিভা অন্বেষণ, নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ খেলোয়াড় তৈরি, প্রমীলা প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ক্রীড়া উন্নয়ন কার্যক্রম এবং যথাযথ ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণের কাজও চলমান রেখেছি। সরকারি উৎসাহ ও প্রণোদনায় ক্রিকেট ও ফুটবলে নারীরা ইতোমধ্যে প্রশংসনীয় সাফল্য এনেছে। ক্রিকেটের ক্ষেত্রে জাতীয় অর্জনের মত আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট খেলায় সাফল্য অর্জনের কৌশল ও কার্যক্রম প্রণয়নের চিন্তাভাবনা আমাদের আছে।

(১১) জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও প্রতিরক্ষা

১৭৯।  দেশে স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কাজটি দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আমরা পূর্বতন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ‘জননিরাপত্তা বিভাগ’ ও ‘সুরক্ষা সেবা বিভাগ’ নামে দুটি বিভাগে বিভক্ত করেছি। প্রয়োজনীয় জনবল, বিশেষায়িত সরঞ্জাম ও যানবাহন সরবরাহের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে যা, তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বাড়াতে সহায়তা করবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমকে জনমুখী করা হচ্ছে। ‘E-Traffic Prosecution & Fine Payment System’ ও ‘Service Friendly Traffic Management System’ চালুরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

১৮০। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর কার্যক্রম ও অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের আকাশসীমার উপর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সনাক্তকরণ এলাকা Air Defence Identification Zone (ADIZ) নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সিলেট জেলায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ০২টি পূর্ণাঙ্গ বিমান বাহিনী ঘাঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আরও যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- দেশের দশটি স্থানে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপন, উর্ধ্বস্তরে বায়ুর পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির আধুনিকায়ন এবং স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি এবং উইন্ড প্রোফাইলার স্থাপন, হালনাগাদ তথ্য -উপাত্ত সংবলিত ডিজিটাল মানচিত্র প্রণয়ন ও জিওডেটিক কন্ট্রোল নেটওয়ার্ক সংরক্ষণ, National Spatial Data Infrastructure (NSDI) স্থাপন, ২টি টাইডাল ষ্টেশন স্থাপন এবং সমগ্র বাংলাদেশের Lidar Survey এর কাজ করা।

ষষ্ঠ অধ্যায়

সংস্কার ও সুশাসন

মাননীয় স্পীকার

১৮১।  রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পৃথিবীর মোট ভূখন্ডের মাত্র ০.০০১ শতাংশের অধিকারী। এ ক্ষুদ্র ভূখন্ড বর্তমানে ধারণ করছে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২.৫ শতাংশ। সহজেই অনুমেয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠার কাজটি কতখানি দূরূহ। তাই বলে আমাদের প্রচেষ্টা থেমে নেই, আর আমাদের সফলতাও কম নয়। বস্তুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ সুশাসন প্রতিষ্ঠার কাজটি অনেকখানি সহজ করে দিয়েছে। চলমান সংস্কার ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর উন্নত বাংলাদেশ গঠন ও জনগণের জীবনমানে মৌলিক পরিবর্তন আনার জন্য তাঁর তীব্র আকাঙ্খা ও স্বপ্ন ধীরে ধীরে বাস্তব রূপলাভ করছে। এপর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের চলমান ও পরিকল্পিত সংস্কার কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত ফিরিস্তি আপনার মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরছি।

(১) বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন

মাননীয় স্পীকার

১৮২।  বিনিয়োগ সহায়ক অবকাঠামো সৃজন, জ্বালানি খাতের ব্যাপক উন্নয়ন, শিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও সহায়তা প্রদান এবং বিধিবিধান ও আইনকানুন সহজীকরণ সত্ত্বেও বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বেসরকারি বিনিয়োগের হার আশানুরূপ হারে না বাড়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করছি; প্রতিবন্ধকতা চিহ্ণিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, ২০১৫ সালের পরে যে স্থিতিশীল ও আগুসার অর্থনীতির সূচনা আমরা করেছি তার সুফল হিসেবে বিনিয়োগ প্রসার ও বৈদেশিক বিনিয়োগ অনতিবিলম্বে এদেশের প্রতি আকৃষ্ট হতে যাচ্ছে।

১৮৩। ওয়ান স্টপ সার্ভিস: সদ্য প্রণীত ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন, ২০১৮ বাস্তবায়নের জন্য একইস্থান হতে অনলাইনভিত্তিক ১৫০টি সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে সিঙ্গাপুরের আদলে সফট্ওয়্যার তৈরি করার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছি। আশা করছি, এর মাধ্যমে শীঘ্রই যে কোন বিনিয়োগ প্রস্তাব বিষয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক স্থান হতে সকল প্রাসঙ্গিক সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।

১৮৪। Ease of Doing Business সূচক: আগামী ৫ বছরের মধ্যে Ease of Doing Business সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ২ ডিজিটে তথা ১০০ এর নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রতিটি উপ-সূচক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ‘National Committee for Monitoring and Implementation’ এর মাধ্যমে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ছোট বড় উৎপাদনমুখী উদ্যোগে অর্থায়ন পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করার দিকে সব সময়ই আমরা জোরালো নীতিসমর্থন দিয়ে আসছি।

১৮৫। অর্থনৈতিক অঞ্চল: অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহকে ঘিরেও আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এ অঞ্চলগুলির উন্নয়ন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করার অভিপ্রায় আছে আমাদের। এছাড়া, অঞ্চলগুলোর ভেতরে ও বাইরে পশ্চাদসংযোগ শিল্পকারখানা তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই। মহানগরীসহ বিভ্ন্নি এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা শিল্পকারখানাকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানান্তরের বিষয়ে ব্যবসায়ী সংগঠনকে উৎসাহিত করতে আমরা সচেষ্ট আছি।

(২) সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা

মাননীয় স্পীকার

১৮৬।  সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সেবা গ্রহীতার নিকট নির্বিঘ্নে সকল ধরনের আর্থিক সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে আমরা সাম্প্রতিক কালে বেশ কিছু পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এনেছি। আনন্দের বিষয় হলো সংস্কারের এই বিশাল কর্মযজ্ঞটি সম্পন্ন হচ্ছে সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোগ, জনবল ও অর্থায়নের মাধ্যমে।

১৮৭। অনলাইনে বেতন বিল: বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধা বিনাক্লেশে সরকারি কর্মচারীদের নিকট পৌঁছানোর জন্য কর্মচারী ডাটাবেজ তৈরি এবং তা ব্যবহার করে অনলাইনে বেতন বিল দাখিলের কার্যক্রম ইতোমধ্যে পাইলট ভিত্তিতে চালু করেছি। বেতন বিল দাখিল ছাড়াও কর্মচারীদের ভবিষ্য তহবিল ও ঋণ অগ্রিমের হিসাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ হচ্ছে, যে তথ্য কর্মচারীরা অনলাইনে যে কোন সময়ে দেখতে পাচ্ছেন। আশা করছি, সকল সরকারি কর্মচারীকে শীঘ্রই এ সুবিধার আওতায় আনতে পারবো।

১৮৮। ই-চালান: ঘরে বসে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা দেয়া এবং ঘরে বসেই তা যাচাই করার সুবিধাসহ একটি ই-চালান বাতায়ন চালু করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন জমাকারীর যাতায়াতের ঝামেলা হ্রাস ও সময় সাশ্রয় হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি সরকারি অর্থের তাৎক্ষণিক জমা নিশ্চিত হচ্ছে।

১৮৯।  সরকারি তহবিল হতে সুবিধাভোগীর হিসাবে সরাসরি ভাতা প্রদান: সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতাধীন প্রায় অর্ধ কোটি সেবা গ্রহীতাকে জি-টু-পি পদ্ধতিতে ইএফটির মাধ্যমে ভাতা প্রদানের জন্য আমাদের উদ্যোগের কথা আগেই জানিয়েছি। গত ৭ মে, ২০১৮ তারিখে ৮ হাজার ৪৯৯ জনকে ভাতা প্রদানের মাধ্যমে আমি এর পাইলট কার্যক্রম শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে সকল ভাতাভোগীকে এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।

১৯০।  উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় পদ্ধতির সংস্কার: উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া, বর্তমান সময়ে এডিপির আওতায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৃহৎ ও মেগা প্রকল্প। আমাদের বিভিন্ন আর্থিক সংস্কারের প্রভাবে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের বাজেট বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়ন কর্মসূচির সঠিক ও সময়মত বাস্তবায়নে আরো উৎকর্ষ আনার জন্য আমরা এখন এডিপি’র অর্থ ছাড় প্রক্রিয়ায় আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। এর অংশ হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের জিওবি অংশের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের কোন প্রয়োজন হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে, এখন থেকে বাজেট অনুমোদনের পর প্রকল্প পরিচালকগণ জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকেই প্রকল্পের অর্থ ব্যবহার করতে পারবেন।

১৯১।  বাজেট ও হিসাবরক্ষণ শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি: গত বছরের প্রতিশ্রুতি মত আমরা বাজেট ও হিসাবরক্ষণ শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি’র (Budget and Accounting Classification System - BACS) আওতায় নতুন শ্রেণিবিন্যাস কোড চালু করেছি। ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের বাজেট নতুন কোড ব্যবহার করেই প্রণয়ন করেছি। এই শ্রেণিবিন্যাস কোড চালুর ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেন এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদানসহ সরকারের সকল ধরনের আয় ও ব্যয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ ধারনা পাওয়া যাবে। আশা করছি, এ শ্রেণিবিন্যাস কোড ব্যবহারের ফলে জেন্ডার বাজেট রিপোর্ট ও শিশু বাজেটসহ বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক প্রতিবেদনসমূহ অনেক বস্তুনিষ্ঠ ও মানসম্পন্ন হবে।

১৯২।  বাজেট তথ্য ভান্ডার: সরকারি বাজেট ব্যবস্থাপনায় Integrated Budget and Accounting System (iBAS++) নামক ইন্টারনেটভিত্তিক, কেন্দ্রীভূত ও অত্যাধুনিক সিস্টেম চালু করেছি। এ সিস্টেম ব্যবহার করে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অধিদপ্তর/পরিদপ্তরসমূহ তাদের বাজেট প্রণয়ন, বরাদ্দ বিভাজন, অর্থ অবমুক্তকরণ ও পুনঃউপযোজনের কাজ শুরু করেছে। হিসাব মহানিয়ন্ত্রক ও সিজিডিএফ-এর অধিক্ষেত্রের সকল হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে সিস্টেমটি চালু হয়েছে এবং সকল লেনদেন বিস্তারিতভাবে এই সিস্টেমে সংরক্ষিত হচ্ছে। ফলে, বিল পাশের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বরাদ্দ যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে। সারাদেশে সরকারের সকল লেনদেন বিস্তারিতভাবে আইবাস++ এ সংরক্ষিত হওয়ায় সরকারের লেনদেন এবং নগদ অবস্থার (cash position) তাৎক্ষণিক চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।

(৩) পেনশন সংস্কার

মাননীয় স্পীকার

১৯৩।  ব্যবস্থাপনাগত উৎকর্ষ: পেনশন ব্যবস্থাপনা, পেনশন প্রদান প্রক্রিয়া ও পেনশনের আওতার ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে আমরা বেশ কিছু সংস্কার করছি। অবসরকালে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন আয় প্রবাহ নিশ্চিত করতে বিদ্যমান শতভাগ নগদায়ন প্রথা রহিত করেছি। একইভাবে এ আয়কে মূল্যস্ফীতির প্রভাবমুক্ত রাখার জন্য পেনশনের ক্ষেত্রেও ইনক্রিমেন্ট প্রদানের প্রথা চালু করেছি। শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের মৃত্যুর পর তাদের বিধবা স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী সন্তানকে আজীবন এবং বিপত্নীক স্বামীকে সর্বাধিক ১৫ (পনের) বছর মাসিক চিকিৎসা ভাতা ও বছরে ২টি উৎসব ভাতা প্রদানের বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। পেনশনারদের হয়রানি লাঘবের জন্য পেনশন প্রদান প্রক্রিয়াও সহজ করা হচ্ছে। ইএফটি’র মাধ্যমে সরাসরি পেনশনারের পছন্দ অনুযায়ী তাঁর হিসাবে পেনশন প্রদানের কার্যক্রম পাইলট আকারে চালু করা হয়েছে, যার পরিধি শীঘ্রই সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগে বিস্তৃত করা হবে। এর ফলে পেনশনারদের নিজ নিজ পেনশন উত্তোলনের জন্য আর হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে বা ব্যাংকে যেতে হবে না। প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট তারিখে পেনশনারের পছন্দ অনুযায়ী তার ব্যাংক হিসাবে সরাসরি পেনশনের অর্থ স্থানান্তর করা হবে এবং একটি ক্ষুদে বার্তার (sms) মাধ্যমে এ তথ্য পেনশনারকে জানিয়ে দেয়া হবে। সরকারের পেনশন বাবদ বাজেট ব্যবস্থাপনায়ও পরিবর্তন এসেছে। পূর্বে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ বিক্ষিপ্তভাবে পেনশন বাবদ বরাদ্দ সংরক্ষণ করতো। বর্তমানে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের পেনশন বাবদ বরাদ্দ অর্থ বিভাগের অনুকূলে রাখা হচ্ছে, যা এ তহবিল ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও ভবিষ্য তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পৃথক পেনশন অফিস স্থাপন করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় কাজ করবে। ফলে, পেনশনারদের ভোগান্তি স্থায়ীভাবে দূর হবে।

১৯৪।  সার্বজনীন পেনশন: দেশের মোট বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে পেনশন ভোগীর সংখ্যা অতি সামান্য। শুধু সরকারি কর্মচারী এবং কতিপয় বেসরকারি সংস্থার কর্মচারীরা সর্বমোট প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ পরিবার বর্তমানে নিয়মিত পেনশন পেয়ে থাকেন। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের বাইরে হতদরিদ্র ৩৫ লক্ষ লোক মাসিক ৪০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন, যা মোট বয়স্ক জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশ মাত্র। তাদের ভাতার পরিমাণও মানসম্মত জীবনধারণের পক্ষে যথেষ্ট নয়। লক্ষ্যণীয় যে, জনমিতির স্বাভাবিক ধারায় এক সময় উন্নত দেশের মত আমাদের দেশেও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর অনুপাত বাড়বে। তখন স্বাভাবিক বাজেট বরাদ্দের আওতায় তাদের সহায়তা প্রদান করা দুরূহ হয়ে পড়বে। অথচ আমরা অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধির সুফল সবার কাছে পৌঁছাতে চাই, কমাতে চাই বৈষম্য। তাই, বিদ্যমান সরকারি পেনশন কার্যক্রমের বাইরে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত সকল কর্মজীবী মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চাই। প্রস্তাবিত ব্যবস্থার আওতায় সরকার পরিচালিত স্কিমে নিবন্ধন করে একজন কর্মজীবী মাসিক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা জমা করবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষও একটা নির্দিষ্ট অঙ্ক সংশ্লিষ্ট কর্মজীবীর পেনশন হিসাবে জমা করবে। হতদরিদ্র শ্রমজীবীদের ক্ষেত্রে তাদের অংশের অতিরিক্ত হিসেবে সরকার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ঐ হিসাবে জমা করবে। এ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গঠিত তহবিল বিনিয়োগ হতে প্রাপ্ত আয় সার্বজনীন পেনশন তহবিলে জমা হতে থাকবে। ক্রমপুঞ্জিভূত চাঁদা ও আয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অবসরকালে মাসিক পেনশন প্রাপ্ত হবেন। তবে, সার্বজনীন পেনশন প্রবর্তনের জন্য মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন হবে, যা সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। সরকারি কর্মচারী ও জনগণের মধ্যে সুযোগের ন্যায্যতা (equity) ও সামঞ্জস্য বিধান করার জন্য উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা, ধারাবাহিক কৌশলগত পরিবর্তন, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সৃজন, কারিগরি সক্ষমতা ও যথাযথ নীতি-কৌশল প্রণয়ন করা প্রয়োজন। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত সকল কর্মজীবী মানুষের জন্য একটি টেকসই সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কাজ এ অর্থবছরেই শুরু করার আশা রাখি। অন্ততঃপক্ষে কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকায় পরীক্ষামূলক উদ্যোগ হিসেবে সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করার ইচ্ছা আছে।

(৪) জনসেবায় জনপ্রশাসন

মাননীয় স্পীকার

১৯৫।  সরকারি সেবায় অভিগম্যতা: বেসরকারি খাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রকৃত বেতন কাঠামোর কারণে বর্তমানে সরকারি চাকুরিতে মেধাবীদের প্রবেশ বাড়ছে। ফলে জনপ্রশাসনে দক্ষ কর্মকর্তার সংখ্যাও উৎসাহব্যঞ্জকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তদুপরি, চাকুরিকালীন অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ এবং মেধাভিত্তিক বৃত্তি ও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের দক্ষতা বাড়ছে। দক্ষতা ও মানসিকতার পরিবর্তনের সাথে সাথে সকল সরকারি দপ্তরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আরোপ এবং এ সংক্রান্ত অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে সরকারি সেবায় জনসাধারণের সহজ অভিগম্যতা নিশ্চিত হচ্ছে।

১৯৬।  দেশের সকল ইউনিয়ন ও পৌরসভায় প্রবর্তিত ৫ হাজার ২৭৮টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে নাগরিকগণ কম সময়ে ও কম খরচে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সেবা ও তথ্য পাচ্ছেন। আমরা তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে সব সরকারি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও আপিল কর্তৃপক্ষ নিয়োগ করেছি এবং তা ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। ৬৪টি জেলায় তথ্য অধিকার বিষয়ক জেলা উপদেষ্টা কমিটি (DAC) গঠন করা হয়েছে, যা জনগণের তথ্য অধিকার সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। অধিকন্তু, নারী নির্যাতন, ইভ টিজিং, বাল্য বিবাহ, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ে সরকারি প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।

১৯৭।  কর্মচারী কল্যাণ: ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন স্কেল চালু করা হয়েছে যা পূর্বতন বেতন স্কেলের দ্বিগুণ। এছাড়া, প্রজাতন্ত্রের চাকুরিতে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণে শিক্ষা অনুদান, চিকিৎসা অনুদান এবং দাফন/অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া বাবদ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে ৮ লক্ষ টাকা এবং গুরুতর আহত হয়ে স্থায়ীভাবে অঙ্গহানি হলে ২ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১৯৮।  গৃহনির্মাণ ঋণ: সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের গৃহ নির্মাণ ঋণকে বাস্তবসম্মত পর্যায়ে উন্নীত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারি কর্মচারিগণ বিশেষতঃ নবীন কর্মকর্তারা যেন একটি ফ্ল্যাট বা গৃহের মালিক হতে পারেন সে দিক লক্ষ রেখে আমরা ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদানের বিষয়ে একটি নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করেছি এবং আগামী অর্থবছরেই তা কার্যকর হবে বলে আশা রাখি। এ নীতিমালার আওতায় একজন সরকারি কর্মচারী দেশের যে কোন স্থানে গৃহ নির্মাণ বা ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ঋণ নিতে পারবেন। সহনীয় ও পরিশোধযোগ্য সুদে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ঋণ সরকারি কর্মচারিগণকে প্রদান করা হবে এবং ঋণের প্রকৃত সুদের অবশিষ্ট অর্থ সরকার ভতুর্কি বাবদ বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহকে পরিশোধ করবে। আশা করি, এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর সরকারি সেবা প্রদানে কর্মচারিগণ আরও উদ্যমী হবেন এবং সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবেন।

১৯৯।   বিশেষ বরাদ্দ: অন্যান্য বছরের মত এবারেও কয়েকটি বিশেষ উদ্দেশ্যে কিছু থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। নারীদের অগ্রগতির উদ্দেশ্যে ‘নারী উদ্যোক্তা তহবিলে’ ১০০ কোটি টাকা এবং ‘নারী উন্নয়ন বিশেষ তহবিলে’ ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে’ গত দু’বছরের মত এবারও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখছি। ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া, দারিদ্র্য দূরীকরণে সবিশেষ ভূমিকা রাখছে বিধায় ‘এনজিও ফাউন্ডেশনে’ ১০ কোটি, ‘পল্লী-কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে’ ২৫০ কোটি এবং ‘এসএমই ফাউন্ডেশনে’ ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে চাই।

(৫) মামলা ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তি

মাননীয় স্পীকার

২০০। সুপ্রীম কোর্ট ও দেশের অধঃস্তন আদালতসমূহের বিচার কার্যক্রম ও মামলা ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীদের দূর্ভোগ কমানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বর্তমানে সুপ্রীম কোর্টের ওয়েবসাইটে বিচারাধীন মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ, ধার্য তারিখ ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্য তাৎক্ষণিক ভাবে আপলোড করা হয়। এছাড়া, সুপ্রীম কোর্টের ৫টি স্থানে স্থাপিত ডিসপ্লে বোর্ড ও এসএমএস এর মাধ্যমে জনগণের কাছে মামলার সর্বশেষ তথ্য পৌঁছে যাচ্ছে। Bail Confirmation Online Manual এর মাধ্যমে সুপ্রীম কোর্ট হতে প্রদত্ত জামিন আদেশের তথ্য জানা যাচ্ছে। মামলা ব্যবস্থাপনায় আরো গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে ই-জুডিশিয়ারি কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের সকল আদালতকে আইসিটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের দ্রুত ও কার্যকর বিচার নিশ্চিত করার জন্য ৭টি বিভাগীয় শহরে ৭টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

(৬) দুর্নীতি দমন

মাননীয় স্পীকার

২০১।  দেশকে ক্রমান্বয়ে সব ধরনের দুর্নীতি থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাভাবিক আইনগত কার্যক্রম চলমান রাখার পাশাপাশি গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাবসম্পন্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে জবাবদিহিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।

২০২। সমাজের সৎ ও স্বচ্ছ ব্যক্তিদের নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ক্রিয়াশীল দুর্নীতি দমন কমিটিসমূহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারণামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে সারাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল ও মাদ্রাসাসহ সকল উপজেলার ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ‘সততা সংঘ’ গঠন করে শুদ্ধাচার চর্চার প্রসার ঘটানো হচ্ছে।

২০৩। দুর্নীতি প্রতিরোধ কার্যক্রমে দেশের সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে আমরা গণশুনানি শুরু করেছি। ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা অফিসের কর্মকর্তা, বিশেষ করে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথেও সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে হটলাইন (১০৬) চালু করা হয়েছে যার মাধ্যমে জনসাধারণ সরাসরি বিভিন্ন অভিযোগ করতে পারছেন।

২০৪। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হচ্ছে বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ব্যক্তির বিবেচনার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা। তাই যেখানেই সুযোগ আছে সেখানেই তথ্যপ্রযুক্তির (ICT) ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, নানারকম আর্থিক লেনদেনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দুর্নীতি ব্যাপকতাকে প্রতিরোধের সুযোগ করে দেয়।

২০৫। বাংলাদেশ United Nations Convention against Corruption (UNCAC)-এর রাষ্ট্রপক্ষ (State Party) হিসেবে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে দৃঢ়তার সাথে দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করছে। এর ফলে দুর্নীতি বা অর্থ পাচার সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র হতে Mutual Legal Assistance Request (MLAR)-এর মাধ্যমে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির অর্থপাচার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

(৭) ভূমি ব্যবস্থাপনা

মাননীয় স্পীকার

২০৬। ভূমির স্বল্পতা ও ভূমি ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের জটিলতা এক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় ভূমির প্রাপ্তব্যতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অন্তরায় হয়ে আছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে আমরা এ সমস্যার কার্যকর সমাধানের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

২০৭। টেকসই ভূমি ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য আমরা ডিজিটাল জরিপ কার্যক্রম সম্পাদন করছি। এছাড়া, Integrated Digital Land Recording System (IDLRS) সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইউনিয়ন ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ তিনটি অফিসের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়ন এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ইতোমধ্যে ৫৫টি জেলায় মোট ১ কোটি ৪৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৫২টি খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রি করা হয়েছে। ভূমি সংক্রান্ত সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে সারাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সেবা প্রদান পদ্ধতিকে অটোমেশনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

২০৮। গুণাগুণ ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভূমি চিহ্ণিতকরণ এবং ভূমির পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলের ১৯টি জেলা ও সমতলের ২টি জেলাসহ সর্বমোট ২১টি জেলার ১৫২টি উপজেলার ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং এর কাজ শেষ করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বাকি ৪৩টি জেলার ৩২৬টি উপজেলায় ডিজিটাল ল্যান্ড জোনিং এর কাজ শুরু করেছি। তাছাড়া, সারাদেশে আমরা মৌজা ও প্লটভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নিয়েছি।

(৮) আর্থিক খাতে সংস্কার

মাননীয় স্পীকার

২০৯। মুদ্রা ও দক্ষ ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং সুনিয়ন্ত্রিত মুলধন বাজার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। প্রাক-বাজেট আলোচনাসহ বিভিন্ন ফোরামে আর্থিক খাত নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া দেশে আর্থিক খাতে বরাবরই প্রশংসনীয় স্থিতিশীলতা বজায় ছিল, যা আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতে তারল্যের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে Cash Reserve Ratio (CRR) পুনঃনির্ধারণসহ কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে। এ ছাড়াও ফার্মার্স ব্যাংক পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে systemic failure বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে এবং এর ফলে গ্রাহকদের আস্থা ফিরে এসেছে।

২১০।  আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা রক্ষায় বিদ্যমান বিধিবিধান প্রয়োগের পাশাপাশি কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি ও কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

ক) ব্যাংকসমূহে আমানত ও ঋণের সুদ/মুনাফা হার মাসে শুধুমাত্র একবার পরিবর্তন এবং পরিবর্তিত সুদ হার তাৎক্ষণিকভাবে তাদের স্ব স্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা আরোপ;

খ) ঋণ এবং আমানতের গড় ভারিত সুদ হারের ব্যবধান ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা;

গ) কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তদের জন্য (CMSME) ঋণ আবেদন ফি ২০০ টাকায় সীমিত রাখা এবং মেয়াদ পূর্তিতে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোন চার্জ আদায় না করা;

ঘ) পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সহায়তা তহবিল পরিচালনা;

ঙ) বৃহৎ ঋণ খেলাপি মনিটরিং এর জন্য বিশেষায়িত সফট্ওয়্যার চালুকরণ;

চ) সুষ্ঠু এজেন্ট ব্যাংকিং এর নির্দেশনা সম্বলিত গাইডলাইন জারি;

ছ) MFS (Mobile Financial Service) এর ক্ষেত্রে একক ব্যক্তি মোবাইল হিসাবের স্থিতি সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকায় নির্ধারণ;

জ) বীমা কোম্পানী/কর্পোরেশনসমূহে Uniform KYC (Know Your Customer) Profile জারির নির্দেশনা;

ঝ) স্বল্প সুদে ও সহজশর্তে বিভিন্ন পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় বিভিন্ন ধরণের ঋণ সুবিধা প্রদান;

ঞ) ব্যাংকিং সেবা বিষয়ক অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে গ্রাহক সেবা সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন;

ট)    ব্যাংকের মাধ্যমে সন্ত্রাস অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতকর্তা অবলম্বনের জন্য নির্দেশনা প্রদান;

ঠ) বৃহৎ ঋণগুলোকে আরো নিবিড়ভাবে পরিবীক্ষণ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ মনিটরিং ব্যবস্থাকে জোরদার করার লক্ষ্যে Central Database For Large Credit (CDLC) গঠন;

ড) অনেকক্ষেত্রে একই সম্পদ বা জমি জামানত দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ অনিয়মিতভাবে নেয়া হয়। এই জালিয়াতি রোধের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে সব ঋণের বিপরীতে যে জামানত দেখানো হয় সে সম্বন্ধে একটি তথ্যভান্ডার সংরক্ষণ করা হবে। যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই তথ্য যাতে যাচাই করতে পারেন সে ব্যবস্থা আগামী বছরেই কার্যকরী হবে।

২১১।  বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিজ ব্যবহারের মাধ্যমে বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হয়। এ দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা Floating Rate Treasury Bond (FRTB) চালু করতে যাচ্ছি। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে গাইডলাইন ও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। লক্ষ্য করার বিষয় হলো ব্যাংকিং শিল্পে ইসলামী ব্যাংকিং এর হিস্যা প্রায় ২০ শতাংশ হলেও এখনও শরীয়াভিত্তিক কোন সিকিউরিটিজ এর প্রচলন করা হয়নি। বর্তমানে আমরা শরীয়াভিত্তিক সিকিউরিটিজ প্রচলনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি। এছাড়া, সঞ্চয়পত্র ক্রেতাদের তথ্যভান্ডার প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে এর সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে সঞ্চয়পত্র ব্যবস্থাপনায় অধিকতর শৃঙ্খলা আনয়ন সম্ভব হবে।

২১২।  মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে তথ্য বিনিময় ও আন্তঃসংস্থা সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে Bangladesh Financial Intelligence Unit (BFIU) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। উক্ত সমঝোতা স্মারকের আওতায় সংস্থা দুইটি নিজেদের ডাটাবেইজে রক্ষিত তথ্যাদি আদান-প্রদান এবং মানিলন্ডারিং অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারবে।

(৯) জলবায়ু অর্থায়ন

মাননীয় স্পীকার

২১৩।  সরকারি বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে জলবায়ু সংবেদনশীল করার লক্ষ্যে ২০১৮‑১৯ অর্থবছরে ২০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বাজেট কাঠামোতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব বাজেট কাঠামোর ভিত্তিতে এবার আমি ‘টেকসই উন্নয়নে জলবায়ু অর্থায়ন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন পেশ করছি। এই প্রতিবেদন থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের মোট ব্যয়ের কত অংশ জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় বিনিয়োগ করা হচ্ছে তা সহজে জানা যাবে। এছাড়া, জলবায়ু সংবেদনশীল বাজেট কাঠামো বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা প্রণয়ন করে অর্থবিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উক্ত নির্দেশিকার আলোকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। জলবায়ু অর্থায়নে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত প্রকল্পের মিতব্যয়িতা দক্ষতা ও ফলপ্রসূতা যাচাইয়ের জন্য ক্লাইমেট পারফরমেন্স অডিট গাইডলাইন প্রণয়ন ও সরকারি নিরীক্ষা কার্যক্রমের মূলধারায় এ ধরনের অডিটকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অডিটিং স্ট্যান্ডার্ড, অডিট কোড এবং পারফরমেন্স অডিট ম্যানুয়ালে প্রয়োজনীয় এডেন্ডা (addenda) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

(১০) স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সংস্কার

মাননীয় স্পীকার

২১৪।  সবশেষে আমার অতিপ্রিয় বিষয়- উচ্চতর প্রবৃদ্ধি নিয়ে কিছু কথা না বলে পারছি না। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বাংলাদেশে নিয়মিতভাবে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে নেওয়া যায়। কিন্তু সেজন্য প্রয়োজন ক্ষমতা ও দায়িত্বের প্রতিসংক্রমণ। সেজন্য স্থানীয় সরকারের ঢালাও সংস্কার প্রয়োজন। সে প্রয়োজনটি সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদে বিবৃত আছে। এ ধারামত শাসনতান্ত্রিক সংস্কার সাধন করতে হলে আমাদের ৬৪টি জেলা ও ৯টি মহানগরে স্বশাসিত ও সয়ম্ভর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সরকারগুলোর জন্য তাদের নিজস্ব আমলাতন্ত্র বহাল করতে হবে। তাদের দায়িত্ব ও কার্যাবলীর তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। যার একটি দায়িত্বের তালিকায় নির্দিষ্ট করতে হবে কতিপয় বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও জেলা সরকারের যৌথ দায়িত্ব এবং সেটি সমন্বয়ের প্রক্রিয়া। এ কাজটি করতে পারলে অতি সহজেই জেলা সরকারের গঠন প্রক্রিয়া স্থির করা যাবে। তারপর যে কাজটি হবে কঠিন ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হলো কেন্দ্রীয় ও জেলা সরকারের মধ্যে রাজস্ব আদায় ও বন্টন বিষয়ে নীতি নির্ধারণ। আমার বিবেচনায় রাজস্ব আদায়ের প্রধান দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারেই থাকবে। জেলা সরকার খানাভিত্তিক সম্পদ কর এবং নির্দিষ্ট সেবার জন্য সেস আদায় করবে। মোট জাতীয় বাজেটের মোটামুটি ষাটোর্ধ্ব শতাংশ ব্যয়ের দায়িত্ব হবে জেলা সরকারের। এ ব্যবস্থাটি আগামী নির্বাচনের পরে পরেই বাস্তবায়নের কাজ শুরু করতে হবে এবং নির্বাচনী ইশতেহারে বিভিন্ন দলকে এ বিষয়ে তাদের ধারনা ও কার্যক্রম প্রকাশ করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে যে, জনসংখ্যায় ও এলাকায় আমাদের এক একটি জেলা পৃথিবীর প্রায় ৬০ (ষাট)টি দেশের চেয়ে বড়। তাদের সেবা প্রদান ও উন্নয়ন উদ্যোগ সর্বোত্তম হতে হলে কোন মতেই সক্ষমতা ও দায়িত্বের প্রতিসংক্রমণ বা বিকেন্দ্রায়ন ছাড়া হতে পারবে না। আমি জানিনা কতদিনে আমার এ আশা বাস্তব রূপ লাভ করবে। কিন্তু প্রায় দুই দশক ধরে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেভাবে হচ্ছে সেক্ষেত্রে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা এখন প্রস্তুত। এবং সেটি করতে হলে শাসন কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবেই হবে।

সপ্তম অধ্যায়

রাজস্ব আহরণ কার্যক্রম

মাননীয় স্পীকার

২১৫।  আমাদের মোট রাজস্বের ৮৫ শতাংশের মতো আদায় করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। বিগত কয়েক বছর ধরে রাজস্ব আহরণের গতি বেশ ভাল। চলতি দশকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আদায়ে গড় প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশের বেশি ছিল, যা গত চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর ফলে আমাদের কর জিডিপি’র অনুপাত আশানুরূপ না হলেও ক্রমশ বাড়ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মূলত আয়কর, আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং সম্পূরক শুল্ক – এ চারটি খাত হতে রাজস্ব আদায় করে। চলতি বছরের সংশোধিত এবং আগামী বছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন বিভিন্ন খাত হতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিম্নে দেওয়া হল। আবগারি শুল্ক এবং টার্নওভার ট্যাক্স মূলত: মূল্য সংযোজন করের অংশবিশেষ।

(কোটি টাকায়)

খাত

২০১৭-১৮

২০১৮-১৯

প্রস্তাবিত

সংশোধিত

(প্রস্তাবিত)

আয়কর ও অন্যান্য প্রত্যক্ষ কর

৮৭,১৯০

৭৮,০০০

১,০২,২০১

আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক

২৭,১৩৯

২৪,৮৩০

৩২,৫৮৯

মূল্য সংযোজন কর

৯১,৭১৭

৮৩,৭০২

১,১০,৫৪৩

সম্পূরক শুল্ক

৪০,৪০৫

৩৬,৮৮২

৪৮,৭৬৬

আবগারি শুল্ক

১,৭২৯

১,৫৭৯

২,০৯১

টার্নওভার ট্যাক্স

১০

১১

সর্বমোট

২,৪৮,১৯০

২,২৫,০০০

২,৯৬,২০১

২১৬।  অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস হতে পর্যাপ্ত রাজস্ব আহরণ প্রয়োজন। আমরা করহার না বাড়িয়ে কর ব্যবস্থার সংস্কার করে কর ভিত্তি সম্প্রসারণ ও স্বেচ্ছা পরিপালনের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের উপর জোর দিয়েছি। আয়করের ক্ষেত্রে করসেবার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। সারাদেশ জুড়ে আয়কর মেলার আয়োজন হচ্ছে, যেখানে করদাতাগণ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশগ্রহণ করছেন। এ বছরের করমেলায় প্রায় ২ লাখ করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন; প্রায় ৯ লাখ মানুষ করসেবা নিয়েছেন। কর প্রশাসনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে কর ব্যবস্থাপনাকে সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন খুব ভালোভাবে কাজ করছে; অনলাইনে রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, যা আরো সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করবেন আশা করছি। কর আদায় এখন হয়রানিমূলক উপাখ্যান হিসেবে বিবেচিত হয় না। কর ভিত্তি এখন অনেক সম্প্রসারিত, নিবন্ধিত করদাতা ও রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হারে বেড়েছে। বর্তমানে মোট নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা ৩৫ লক্ষের অধিক। আগামী ৫ বছরের মধ্যে নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা এক কোটি এবং রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ৮০ লক্ষে উন্নীত করা যাবে বলে আমি আশা করি। আয়কর ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা, বিশেষ করে কর প্রদানে তরুণদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অত্যন্ত ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।

২১৭।  জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আহরিত রাজস্বের মধ্যে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও সম্পূরক শুল্ক হতে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়। রাজস্ব ভিত্তিকে সুদৃঢ় করতে সরকার ভ্যাট প্রশাসনকে ডিজিটাল করার অংশ হিসেবে ভ্যাট অনলাইন পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। আইনি ও পদ্ধতিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রমকে বেগবান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১,০৫,০০০ প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করেছে। ভ্যাট আদায়ে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে Electronic Fiscal Device (EFD) স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে ব্যবসার ব্যয় কমে বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব প্রশাসনের গতিশীলতা বাড়বে, ফাঁকি হ্রাস পাবে, রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং ভ্যাট আদায়ের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ইংরেজিতে প্রণীত বিদ্যমান কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ এর স্থলে কাস্টমস বিষয়ে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় অনুশাসনের আলোকে বাংলা ভাষায় কাস্টমস আইন প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ন কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে মনে হয় না যে নতুন আইনটি এই বছরে পাস করা যাবে। রাজস্ব নীতিতে যুগোপযোগী সংস্কার আনয়নের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ‘ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন টীম’ গঠন করা হয়েছে।

২১৮।  এ্যাসাইকুডা সিস্টেম প্রবর্তনের মাধ্যমে অনেক আগে থেকেই কাস্টমস বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবর্তন হয়েছে। চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উন্নত বিশ্বের ন্যায় পণ্য খালাসে সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে কাস্টমস সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত করতে National Single Window (NSW) প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি সকল আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সুবিধা প্রদান করবে। পণ্য খালাস এবং যাত্রীর দ্রুত গমনাগমন নিশ্চিত করতে Authorized Economic Operator (AEO), ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা (Risk Management) এবং Advance Passenger Information System (API) প্রচলন করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। এর ফলে যাত্রীসেবা ও বাণিজ্য সুবিধা বাড়বে এবং রাজস্ব ফাঁকি হ্রাস পাবে।

অষ্টম অধ্যায়

আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক

মাননীয় স্পীকার

২১৯।   এবারে কর এবং শুল্ক সূত্রে যে রাজস্ব আহরণের পরিকল্পনা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য আমরা প্রস্তাব করেছি সেইটি পেশ করছি। প্রত্যক্ষ কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক), সম্পূরক শুল্ক এবং আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক – চারটি সূত্রেই রাজস্ব আদায়ের নানা প্রস্তাব একের পর একটি তুলে ধরছি।

প্রত্যক্ষ কর: আয়কর

২২০। আয়কর একটি প্রগ্রেসিভ কর ব্যবস্থা যেখানে অধিকতর বিত্তশালীদের নিকট হতে রাজস্ব আহরণ করে কম আয়ের ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির প্রয়োজনে তা ব্যয় করা যায়। ফলে আয়করের মাধ্যমে একদিকে যেমন রাষ্ট্রের রাজস্ব চাহিদা পূরণ হয়, অন্যদিকে সমাজের আয় ও সম্পদ বৈষম্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। করনীতি সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি আদর্শ কর ব্যবস্থা বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমাদের সরকার মোট রাজস্বে আয়করের হিস্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট এনবিআর রাজস্বের ৫০ শতাংশ আয়কর খাতে আদায়ের একটি লক্ষ্য আমরা স্থির করেছিলাম, যা অর্জনের পথে আমরা দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। এক দশক আগেও আয়কর খাতে এনবিআর রাজস্বের মাত্র ২০ শতাংশ আদায় হতো। আমাদের সরকারের সময়ে এ হার ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

২২১।   করনীতির সংস্কার কার্যক্রম বিচ্ছিন্ন বা সাময়িক পদক্ষেপ না হয়ে যাতে সামগ্রিক, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমুখী, ধারাবাহিক ও স্থিতিশীল হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আমি ২০১৬ সালের বাজেটে প্রথমবারের মতো করনীতি সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট দর্শন ও নীতিকাঠামো ঘোষণা করেছিলাম। সেখানে প্রাধান্য দেওয়া হয় জনকল্যাণের উদ্দেশ্য, করবান্ধব সংস্কৃতি সৃষ্টি এবং বাণিজ্য সুবিধার ব্যবস্থা প্রবর্তন। আমাদের সকল কর সংস্কার সে নীতি কাঠামোর আওতায় নেয়া হচ্ছে। এতে আমরা ব্যাপক সাফল্যও পেয়েছি। আমাদের কর ব্যবস্থা ইতোমধ্যে দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কর ভিত্তির ব্যাপক সম্প্রসারণ হয়েছে। আমি এখন প্রত্যক্ষ করের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন করছি-

করমুক্ত আয়সীমা ও করহার

২২২।  এ বছরে করমুক্ত আয়ের সাধারণ সীমা ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। মহিলা করদাতাসহ বিভিন্ন শ্রেণির করদাতাদের জন্য এ সীমা কিছুটা বেশি ছিল। করমুক্ত আয়ের সীমা কি হবে তা নিয়ে প্রচুর আলোচনা হয়। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি যে উন্নত দেশগুলোতে করমুক্ত আয়সীমা সাধারণভাবে মাথাপিছু আয়ের ২৫ শতাংশের নীচে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে করমুক্ত আয়সীমা সাধারণত মাথাপিছু আয়ের সমান বা তার কম থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে করমুক্ত আয়ের সীমা মাথাপিছু আয়ের প্রায় দ্বিগুণের মতো। অর্থাৎ, আমাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের তুলনায় অনেক বেশি। করমুক্ত আয়ের সীমা বেশি হলে কর প্রদানে সক্ষম বিপুলসংখ্যক ব্যক্তি করজালের বাইরে থেকে যান। এতে করের ভিত্তি দুর্বল থাকে। সার্বিক বিবেচনায় আমি আগামি বছরে করমুক্ত আয়ের সাধারণ সীমা ও করহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করছি। তবে কোন ব্যক্তি-করদাতার প্রতিবন্ধী সন্তান বা পোষ্য থাকলে এরূপ প্রতি সন্তান বা পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা হবে। সারণি ১ এ কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্যান্য করদাতাদের জন্য করহার উল্লেখ করা হলো:

সারণি ১: কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্যান্য করদাতাদের জন্য করহার

 

বিদ্যমান

(টাকায়)

প্রস্তাবিত (টাকায়)

() করমুক্ত আয়ের সীমা

 

 

করদাতা

 

সাধারণ করদাতা

২ লাখ ৫০ হাজার

অপরিবর্তিত

মহিলা ও ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতা

৩ লাখ

প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতা

৪ লাখ

গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতা

৪ লাখ ২৫ হাজার

(খ) সাধারণ করহার

 

 

মোট আয়

 

করহার

প্রথম ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর -

শূন্য

অপরিবর্তিত

পরবর্তী ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর -

১০ শতাংশ

পরবর্তী ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর -

১৫ শতাংশ

পরবর্তী ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর -

২০ শতাংশ

পরবর্তী ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর-

২৫ শতাংশ

অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর -

৩০ শতাংশ

(গ) বিশেষ করহার

 

 

সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাতপণ্য প্রস্তুতকারী ব্যবসা হতে অর্জিত আয়

৪৫ শতাংশ

অপরিবর্তিত

বাংলাদেশে অনিবাসী (অনিবাসী বাংলাদেশী ব্যতীত) এরূপ ব্যক্তি শ্রেণিভুক্ত করদাতার অর্জিত আয়

৩০ শতাংশ

নিবন্ধিত সমবায় সমিতির অর্জিত আয়

১৫ শতাংশ

২২৩। বিদ্যমান আইনে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এবং ‌সিটি কর্পোরেশনের বাইরের অন্যান্য এলাকার কোম্পানি করদাতা ব্যতীত অন্য করদাতাদেরকে যথাক্রমে ৫ হাজার, ৪ হাজার ও ৩ হাজার টাকা ন্যূনতম কর পরিশোধ করতে হয়। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম করের এ হার বহাল রাখার প্রস্তাব করছি।

কোম্পানি করহার

২২৪। অনেকে বলে থাকেন আমাদের কর্পোরেট করহার খুব বেশি। কথাটি ঠিক নয়। পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির বিদ্যমান করহার ২৫ শতাংশ, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় যা বেশ কম। এছাড়া, আমাদের করহার বৈশ্বিক গড়হার (২৪.২৯ শতাংশ) এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তবে ব্যাংকিং খাতের করহার কিছুটা বেশি হওয়ায় আমি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করহার ২.৫ শতাংশ হ্রাস করার প্রস্তাব করছি। এতে এ খাত হতে রাজস্ব কিছুটা কমলেও বিনিয়োগকারীদের প্রতি ইতিবাচক বার্তা যাবে। অন্যান্য কোম্পানি করহার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করছি। মোটামুটিভাবে বর্তমান সর্বোচ্চ করহার হবে বাস্তবে ৪০ শতাংশ এবং দ্বিতীয় হারটি হবে ৩৭.৫ শতাংশ। একমাত্র তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী ও নন-পাবলিকলি ট্রেডেড মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিরা এর চেয়ে উচ্চহারে কর দেবেন। সারণি ২ এ কোম্পানি করদাতার জন্য প্রস্তাবিত করহার উল্লেখ করা হলো:

সারণি ২: কোম্পানি করহার

বিবরণ

বিদ্যমান হার

প্রস্তাবিত হার

পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি

২৫ শতাংশ

২৫ শতাংশ

নন-পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি

৩৫ শতাংশ

৩৫ শতাংশ

পাবলিকলি ট্রেডেড - ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও
সরকার কর্তৃক ২০১৩ সালে অনুমোদিত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

৪০ শতাংশ

৩৭.৫ শতাংশ

মার্চেন্ট ব্যাংক

৩৭.৫ শতাংশ

৩৭.৫ শতাংশ

নন-পাবলিকলি ট্রেডেড - ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

৪২.৫ শতাংশ

৪০ শতাংশ

সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি

৪৫ শতাংশ

৪৫ শতাংশ

মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি-

পাবলিকলি ট্রেডেড হলে

নন-পাবলিকলি ট্রেডেড হলে

 

৪০ শতাংশ

৪৫ শতাংশ

 

৪০ শতাংশ

৪৫ শতাংশ

লভ্যাংশ আয়

২০ শতাংশ

২০ শতাংশ

সমতা ও ন্যায্যতা

২২৫। সারচার্জ:  বাংলাদেশে বিত্তশালী ব্যক্তি-করদাতাগণের নিকট হতে নীট পরিসম্পদের ভিত্তিতে সারচার্জ আদায় করা হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে বিধানটি কার্যকর আছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে সমাজে আয় ও সম্পদ বৈষম্য বাড়ার যে ঝুঁকি রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তি-করদাতার সারচার্জ একটি কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এ বছর সারচার্জের ক্ষেত্রে কিছুটা সংস্কার করে নীট পরিসম্পদের ভিত্তিতে সারচার্জ আরোপের পাশাপাশি যাদের নিজ নামে দুটি করে গাড়ি রয়েছে বা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট ৮ হাজার বর্গফুট আয়তনের গৃহ-সম্পত্তি রয়েছে তাদেরকেও সারচার্জের আওতায় আনার প্রস্তাব করছি। নীট পরিসম্পদের প্রদর্শিত মূল্যের ভিত্তিতে আরোপিত সারচার্জের বিদ্যমান হার বহাল রাখার প্রস্তাব রাখছি:

সারণি ৩: ব্যক্তি করদাতার প্রদর্শিত সম্পদের ভিত্তিতে আরোপিত সারচার্জের হার

সম্পদ

সারচার্জের হার

 (আয়করের শতকরা হারে)

(১) নীট পরিসম্পদ ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত

শূন্য

(২) (ক) নীট পরিসম্পদ ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার অধিক কিন্তু ৫ কোটি টাকার অধিক নয়, বা

(খ) করদাতার নিজ নামে দুইটি মোটরগাড়ির মালিকানা, বা

(গ) কোন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় করদাতার নামে ৮,০০০ বর্গফুট বা তার অধিক গৃহ-সম্পত্তির মালিকানা 

১০ শতাংশ

নীট পরিসম্পদ ৫ কোটি টাকার অধিক, কিন্তু ১০ কোটি টাকার অধিক নয়

১৫ শতাংশ

নীট পরিসম্পদ ১০ কোটি টাকার অধিক, কিন্তু ১৫ কোটি টাকার অধিক নয়

২০ শতাংশ

নীট পরিসম্পদ ১৫ কোটি টাকার অধিক, কিন্তু ২০ কোটি টাকার অধিক নয়

২৫ শতাংশ

নীট পরিসম্পদ ২০ কোটি টাকার অধিক যে কোন অংকের জন্য

৩০ শতাংশ

২২৬।  নীট পরিসম্পদের মূল্যমান ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা অতিক্রম করলে ন্যূনতম সারচার্জের পরিমাণ ৩ হাজার টাকা এবং ১০ কোটি টাকা অতিক্রম করলে ন্যূনতম সারচার্জের পরিমাণ ৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী করদাতার উক্ত ব্যবসায় হতে অর্জিত আয়ের উপর বিদ্যমান ২.৫ শতাংশ হারে সারচার্জ বহাল থাকবে।

প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসায়ে সহায়তা এবং ব্যবসায় পরিচালনা সহজীকরণ

২২৭। তৈরি পোশাক শিল্প: দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তৈরি পোশাক খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে তৈরি পোশাক খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে এ খাতকে বিশেষ কর সুবিধা প্রদান করা হয়। তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিতে নিয়োজিত করদাতার করহার ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হলে করহার ১২.৫ শতাংশ এবং green building certification রয়েছে এরূপ সবুজ কারখানার ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।

সামাজিক কল্যাণ

২২৮। সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য প্রতি বছর আমরা অনেক কর ছাড় প্রদান করি। আগামী বছরের জন্য এক্ষেত্রে যেসব প্রস্তাব রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:

ক)   ডে কেয়ার হোমের আয়ের উপর কর অব্যাহতি;

খ)   প্রতিবন্ধী ব্যক্তির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য স্থাপিত প্রতিষ্ঠানের আয়ের উপর কর অব্যাহতি;

গ)   প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ যেন সেবা গ্রহণে সুবিধা পান তা নিশ্চিত করার জন্য, যে সকল চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যাতায়াত  ও সেবা গ্রহণে বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা রাখবে না তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে কর আরোপের বিধান রাখার প্রস্তাব করছি। তবে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যাতে সুবিধা স্থাপনের প্রয়োজনীয় সময় পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে ২০১৯-২০ কর বছর হতে এ বিধান কার্যকর হবে;

আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা

২২৯।  অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন এবং ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশের কারণে আন্তঃসীমান্ত লেনদেনের ধরন ও আকারে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক বেশি উন্মুক্ত। ফলে কর পরিহার (tax avoidance) এর ঝুঁকিও বেশ বেড়েছে। ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে প্রচুর আয় করছে, কিন্তু তাদের কাছ থেকে আমরা তেমন একটা কর পাচ্ছিনা। ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল লেনদেনের বিষয়টি তুলনামূলক নতুন বিধায় এসব লেনদেনকে করের আওতায় আনার মতো পর্যাপ্ত বিধান এতদিন আমাদের কর আইনে ছিল না। আমি ভার্চুয়াল ও ডিজিটাল খাত যেমন- ফেইসবুক, গুগল, ইউটিউব ইত্যাদির বাংলাদেশে অর্জিত আয়ের উপর করারোপণের জন্য আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে প্রয়োজনীয় আইনী বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করছি। এর ফলে আমাদের করের আওতা বাড়বে।

২৩০। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আমরা দেরিতে শুরু করলেও বর্তমানে বেশ এগিয়ে আছি। আমাদের কর ব্যবস্থাকে আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তি-ব্যবহারী করার অনেক উদ্যোগ আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। এর ধারাবাহিকতায় আমি এ বছর থেকে করদাতাকে ই-মেইলে নোটিশ প্রেরণের বিধান কর আইনে সংযোজন করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া, বিভিন্ন দপ্তর ও এজেন্সির নিকট করদাতার যে আর্থিক তথ্য থাকে তা কর বিভাগের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শেয়ার করার বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করছি। এর ফলে কর ফাঁকি মোকাবেলা করা অনেক সহজ হবে।       

কর পরিপালন ঐতিহ্য

২৩১।  আমরা অনেক বছর ধরেই করের হার আর বাড়াচ্ছি না। বরং করের হার ক্রমান্বয়ে কমছে। এ বছর ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের করহার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো, কর হার না বাড়িয়ে বরং কর প্রদান নিশ্চিত করে এবং কর ফাঁকি ও কর পরিহার রোধ করে রাজস্ব বাড়ানো। আমাদের বেশির ভাগ করদাতাই আয়করের বিধিবিধান মেনে ঠিক মতো কর দেন। তবে, যারা ফাঁকি দেন তাদের জন্য আমরা বেশ শক্ত পদক্ষেপ নেব। এ লক্ষ্যে আইনি সংস্কারের উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো:

ক) কর আইনের বিভিন্ন বিধান পরিপালনের ব্যর্থতায় আরোপযোগ্য জরিমানার আওতা সম্প্রসারণ ও জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি করে যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নীত করা;

খ) আয়কর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যক্তির নিকট তথ্য চাওয়ার পর ঐ ব্যক্তি তথ্য গোপন করলে বা ইচ্ছাকৃতভাবে আয়কর কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য দিলে তার জন্য শাস্তির বিধান সংযোজন;

গ) কোন করদাতা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উৎস করের রিটার্ন দাখিল না করলে অথবা  বেতনভোগী কর্মীদের বেতনভাতার তথ্য বা রিটার্ন দাখিল বিষয়ক তথ্য কর বিভাগের নিকট দাখিল না করলে সে করদাতার আয়কর রিটার্নকে অডিটের আওতায় আনা।

কর ব্যবস্থাপনার সংস্কার

২৩২। দুটি ঘটনা বিশ্ব কর ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দিচ্ছে। এর একটি হলো, অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন, অপরটি হলো তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব। অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন হচ্ছে; নতুন নতুন ব্যবসায়িক মডেলের জন্ম হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের কারণে সনাতনী পদ্ধতির ব্যবসা বাণিজ্যের জায়গা দখল নিচ্ছে ই-কমার্স আর ভার্চুয়াল অর্থনীতি। এ পরিবর্তনের সাথে তাল মিলাতে হলে আমাদেরকে কর ব্যবস্থাকেও আমূল বদলাতে হবে। আমি আশা করছি যে, একটি নতুন আয়কর আইন পাশ করতে পারব (এতে বিশ্বের সর্বাধুনিক কর ব্যবস্থার উপযোগী সকল বিধান সংযোজিত থাকবে) যা আগামী অর্থবছরের শুরুতে সংসদে পেশ করতে পারবো।

২৩৩।   আয়করের আইনি সংস্কারের সফল বাস্তবায়নের জন্য কর প্রশাসনেরও ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন হবে। আমি গত বছরের বাজেট ঘোষণায় আয়কর প্রশাসনের জন্য ইলেক্ট্রনিক উৎস কর ব্যবস্থা প্রবর্তন, আধুনিক কর তথ্য ইউনিট গঠন, আন্তর্জাতিক করের জন্য পৃথক প্রশাসনিক কাঠামো সৃজন এবং গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও সকল উপজেলায় কর অফিস স্থাপনের প্রস্তাব করেছিলাম। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তার আলোকে কর প্রশাসনের সংস্কার নিয়ে বেশ কিছু কাজ করেছে।

২৩৪। আমি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, আমাদের সরকারের আমলে ২০১১ সালে কর বিভাগের সর্বশেষ বড় সংস্কারটি হয়েছিল। ২০১১ সালের পরবর্তী কয়েক বছরে করদাতার সংখ্যা প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে; রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা ৯ লাখ হতে বেড়ে ১৬ লক্ষে উন্নীত হয়েছে। আমি আগেই বলেছি যে, কর প্রদানে বর্তমানে পরিলক্ষিত আগ্রহের উপর ভিত্তি করে আমার লক্ষ্যমাত্রা হলো যে, আগামী ৫ বছরে অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে করদাতার সংখ্যা হবে এক কোটি এবং রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা হবে ৮০ লাখ।

মূল্য সংযোজন কর

মাননীয় স্পীকার

২৩৫। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আহরিত রাজস্বের মধ্যে মূল্য সংযোজন কর বা মূসক খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও ভ্যাট খাতে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মূল্য সংযোজন কর বর্তমানে ৯টি সংকুচিত হারে আরোপ করা আছে। এবারে এই ৯টি হারকে হ্রাস করে আমরা ৫টিতে নামিয়েছি এবং এই হারগুলো হচ্ছে- ২, ৪.৫, ৫, ৭ এবং ১০ শতাংশ। কর-জিডিপি’র অনুপাত বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং একই সাথে ব্যবসায়ী স্বার্থ ও ভোক্তা চাহিদা নিশ্চিত করার মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণের জন্য মূল্য সংযোজন কর খাতে নিম্নরূপ সংস্কার প্রস্তাব মহান সংসদের সদয় বিবেচনার জন্য পেশ করছি:

অনলাইনে রিটার্ন দাখিল

২৩৬।   অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ ও মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা, ১৯৯১তে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (ভ্যাট) কার্যালয়ে তা চালু করা হবে। পাশাপাশি অনলাইনে কর পরিশোধের ব্যবস্থাও এ বছরে চালু করা হবে। অনলাইন রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া পর্যাপ্ত পরিমার্জন শেষে সকল করদাতাদের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হবে। করদাতাদের সুবিধার্থে অনলাইন রিটার্ন দাখিলের পাশাপাশি যারা অনলাইন সুবিধা ব্যবহারে সমর্থ নন, তাদের জন্য বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিলের সুযোগ অব্যাহত থাকবে।

ব্যবসায়ী পর্যায়ে অটোমেশন

২৩৭।   সারাদেশের বড় বড় রিসোর্ট হোটেল ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে Electronic Cash Register/Point of Sale (ECR/POS) ব্যবহারের পরিবর্তে Electronic Fiscal Device (EFD) স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে EFD ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনলাইন সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। ফলে আইনানুগ রাজস্ব আদায় বাড়বে।

মাননীয় স্পীকার

২৩৮। মূল্য সংযোজন কর একটি ভোক্তানির্ভর কর ব্যবস্থা। এ কর ব্যবস্থাকে অধিক জনসম্পৃক্ত করতে প্রতি বাজেটেই কিছু পরিবর্তন আনা হয়। মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ কে অধিকতর প্রয়োগানুগ করতে মহান জাতীয় সংসদে নিম্নরূপ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি- 

ক) কৃষি জমিসহ সকল প্রকার ভূমি রেজিষ্ট্রেশনের উপর মূল্য সংযোজন কর বহাল ছিলো। কিন্তু তা আদায় করা সম্ভব ছিলো না। সব দিক বিবেচনায় কৃষি জমির উপর মূসক অব্যাহতি প্রদান করে মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর দ্বিতীয় তফসিলে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করছি।

খ) বর্তমানে হেলিকপ্টার সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে। উচ্চবিত্তের লোকজনই এ সেবা গ্রহণ করে থাকে। ধীরে ধীরে এ সেবার প্রসার বাড়ছে। তাই হেলিকপ্টার সেবার উপর ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।

গ) আবাসন, খাদ্য বা পানীয় সরবরাহকালে যদি হোটেল বা রেস্তোরায় মদ জাতীয় পানীয় সরবরাহ করা হয় বা কোন ধরনের ফ্লোর শো এর আয়োজন করা হয় তাহলে কেবল ঐ বিলের উপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের স্থলে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করছি।

সিগারেট ও বিড়ির শুল্ক ও কর

২৩৯।   সিগারেট শিল্প যেভাবেই হোক একটি উত্তম লাভের খাত হিসেবে শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। অধুনা WHO Framework Convention on Tobacco Control (FCTC)-এর আওতায় এই শিল্পের মৃত্যুঘন্টা বেজে উঠেছে, কিন্তু তাও অন্তত: আমাদের দেশে আরো ২০ বছরের বিষয়। তাই আমার মনে হয় তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার উদ্যোগের সঙ্গে দেশীয় উচ্চমানের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম একসঙ্গে চলতে পারে। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমার কাজ ও কৌশল হচ্ছে (১) নিম্নমানের সিগারেট উৎপাদন দ্রুত বন্ধ করা (২) মূল্যসীমা নির্বিশেষে এক করহার নির্ধারণ (৩) একটি উন্নত দেশীয় ব্র্যান্ড অন্তত: বিশ বছরের জন্য প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যে নিম্নতম স্তরের সিগারেট মূল্য আগামী বছরে হবে ৩২ টাকা বা তদূর্ধ্ব এবং সেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৫৫ শতাংশ। মধ্যম স্তরে দশ শলাকার সিগারেটের মূল্য হবে ৪৮ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। উচ্চস্তরে দশ শলাকার সিগারেটের মূল্য হবে ৭৫ টাকা ও ১০১ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। একইসঙ্গে আগামী দিনের লক্ষ্যমাত্রা হবে নিম্নতম স্তর ৭৫ টাকায় উন্নীত করা যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ। তদুর্ধ্বে হয়তো তখন থাকবে একটি সুপিরিয়র স্তর যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে উচ্চতর।

২৪০।   বিড়ির ভয়াবহতা সিগারেটের চেয়ে বেশী। বর্তমান আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ফলে বিড়ির ব্যবহারকারী কমে যাচ্ছে। বর্তমানে এ খাতে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যাও পূর্বের তুলনায় কম। গত বছর আমরা ঠিক করেছিলাম যে, বিড়ি উৎপাদন ২/৩ বছরের মধ্যে নিঃশেষ করা হবে। আগেই বলেছি যে, এদেশ থেকে তামাক নিঃশেষ করার সীমানা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সাল নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিড়ির উৎপাদন ২০৩০ সালে এবং সিগারেটের উৎপাদন ২০৪০ সালে নি:শেষ করার সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। তাই এবার বিড়ির মূল্য  বাড়ানো হবে না তবে ফিল্টারযুক্ত বিড়ির ক্ষেত্রে ২০ শলাকার প্যাকেটের মূল্য  ১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকা করা হবে।

পণ্যের বিবরণ

শলাকা

(প্রতি প্যাকেট)

বিদ্যমান খুচরা মূল্যস্তর

প্রস্তাবিত খুচরা

মূল্যস্তর

যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে তৈরী বিড়ি (ফিল্টার বিযুক্ত)

৮ শলাকা

টাকা ৪.০০

অপরিবর্তিত

১২ শলাকা

টাকা ৬.০০

অপরিবর্তিত

২৫ শলাকা

টাকা ১২.৫০

অপরিবর্তিত

যন্ত্রের সাহায্য ব্যতীত হাতে তৈরী বিড়ি (ফিল্টার সংযুক্ত)

১০ শলাকা

টাকা ৬.০০

টাকা ৭.৫০

২০ শলাকা

টাকা ১২.০০

টাকা ১৫.০০

২৪১।   স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিড়ি-সিগারেটের মত ভয়াবহ আরেকটি পণ্য হলো জর্দা ও গুল। এগুলোর ব্যবহার সরাসরি হওয়ায় শরীরের উপর এর বিরূপ প্রভাবও বেশী। তাই শুল্ক করের আপাতন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে জর্দা ও গুলের ওজনভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ করার সুপারিশ করছি। এক্ষেত্রে প্রতি দশ গ্রাম জর্দা ও গুলের ন্যূনতম মূল্য  নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি ২৫ টাকা। যেখানে সম্পূরক শুল্ক হবে ৬৫ শতাংশ।

মূসক অব্যাহতি প্রদান

২৪২।   কৃষি, শিল্প, ভারী প্রকৌশল শিল্প, টেক্সটাইল এবং রপ্তানি খাতের ন্যায্য স্বার্থ সংরক্ষণ এবং দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও প্রতিরক্ষণের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত কতিপয় পণ্য ও সেবার বিভিন্ন পর্যায়ে নতুনভাবে অব্যাহতি প্রদান বা অব্যাহতির মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি-

ক. আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে

  • নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে ক্যান্সার ও কিডনী জাতীয় রোগের প্রতিষেধক হিসাবে Erythropoietin নামীয় ঔষধকে আমদানি পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করছি।

  • দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষেরা প্রতি কেজি ১০০ (একশত) টাকা মূল্যমান পর্যন্ত পাউরুটি ও বনরুটি, হাতে তৈরী বিস্কুট ও হাতে তৈরী কেক (পার্টিকেক ব্যতীত) খেয়ে থাকেন। তাই প্রতি কেজি ১০০ (একশত) টাকা মূল্যমান পর্যন্ত পাউরুটি, বনরুটি, হাতে তৈরী বিস্কুট এবং ১৫০ (একশত পঞ্চাশ) টাকা পর্যন্ত হাতে তৈরী কেক (পার্টিকেক ব্যতীত) এর উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব করছি।

  • দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ব্যবহার করেন। এ পণ্যটি দরিদ্র মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা ও প্লাস্টিক রিসাইক্লিং শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার উপর (১৫০ টাকা মূল্য পর্যন্ত অনপনীয় কালিতে মুদ্রিত/খোদাইকৃত থাকার শর্তে) এর উৎপাদন পর্যায়ে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব করছি।

  • কৃষিপণ্যের উপর শুল্ক-কর প্রণোদনা প্রদান আমরা সব সময়েই করে থাকি। কৃষিপণ্য হিসাবে Coriander seed এবং Melon seed কে বীজ হিসাবে রপ্তানিকারক দেশের প্রত্যয়ন প্রদানের শর্তে আমদানি পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করছি।

  • প্রাণিসম্পদ রক্ষা ও প্রাণিসম্পদের বৃদ্ধি দেশের জন্য অপরিহার্য বিবেচনা করে গবাদি পশুর গো-খাদ্য ফসলবীজ (Fodder Crop Seed) হিসাবে Millet seed কে বীজ হিসাবে রপ্তানিকারক দেশের প্রত্যয়ন প্রদানের শর্তে আমদানি পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করছি।

  • তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে মোবাইল ফোনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন কার্যক্রমকে প্রণোদনা প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘মোবাইল টেলিফোন সেট’কে উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করে একটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারীর প্রস্তাব করছি। এছাড়া স্থানীয় মোবাইল উৎপাদনের উপর সারচার্জ অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করে আমদানি পর্যায়ে ২ শতাংশ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করছি।

  • বিদেশী মোটর সাইকেলের উপর আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও আমদানি বিকল্প হিসেবে এ পণ্যকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং প্রতিযোগিতামূলক রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোটর সাইকেল উৎপাদনকে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব করছি।

খ. সেবা প্রদান পর্যায়ে

  • জাতিসংঘের আওতাধীন আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন সংস্থার রীতি-নীতি ও শিকাগো কনভেনশন অনুযায়ী ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো স্থানীয় পণ্য বা সেবা গ্রহণের নিমিত্তে প্রযোজ্য অভ্যন্তরীণ শুল্ক-কর অব্যাহতি সুবিধা ভোগ করে থাকে। সে বিবেচনায় দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্স অপারেটর কর্তৃক শুধুমাত্র ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে বন্দর সেবার বিপরীতে প্রযোজ্য ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করার প্রস্তাব করছি।  

  • বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্সুরেন্স পলিসির উপর ১৫ শতাংশ হারে মূসক প্রদান করে থাকে। এ পলিসির বিপরীতে প্রযোজ্য সেবা প্রদানের জন্য একজন বীমা এজেন্ট নিয়োজিত থাকেন। এ বীমা এজেন্টের কমিশন মোট পলিসি মূল্য থেকেই প্রদান করা হয়। তাই সর্বমোট পলিসিমূল্য থেকে পূর্বেই মূসক পরিশোধ করায় বীমা এজেন্ট কমিশন বাবদ প্রদেয় মূসক দ্বৈতকর হয়। এ দ্বৈতকর পরিহারের উদ্দেশ্যে বীমা এজেন্ট কমিশনের উপর প্রযোজ্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করছি।

সম্পূরক শুল্ক আরোপ ও হার বৃদ্ধি

২৪৩। সম্পূরক শুল্ক আরোপ করে দেশীয় শিল্পকে আন্তর্জাতিক শিল্পের প্রতিযোগিতা ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা হয়। তাছাড়া, পণ্যের অনভিপ্রেত ব্যবহার রোধ করাও সম্পূরক শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য। এ ‍দুটি হিতকর উদ্দেশ্য সাধনের মাধ্যমে এ খাত হতে এবং তৎসঙ্গে অধিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে সম্পূরক শুল্ক সংক্রান্ত নিম্নবর্ণিত প্রস্তাব করছি:  

  • স্বাস্থ্যঝুঁকি ও ব্যবহার হ্রাস করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এনার্জি ড্রিংকের উপর ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্কের স্থলে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করছি।

  • প্রসাধন সামগ্রী এবং ত্বক পরিচর্যার প্রসাধন সামগ্রী (ঔষধে ব্যবহৃত পদার্থ ব্যতীত), সানস্ক্রিন বা সান ট্যান সামগ্রী; হাত, নখ বা পায়ের প্রসাধন সামগ্রীর উপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপিত আছে। বাণিজ্যে সমতা বিধানের লক্ষ্যে সমজাতীয় অন্যান্য সামগ্রীর উপরও ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।

  • শেভের সময় বা শেভের আগে বা পরে ব্যবহার্য সামগ্রী, শরীরের দুর্গন্ধ এবং ঘাম দূরীকরণে ব্যবহৃত সামগ্রী (আতর ব্যতীত), সুগন্ধযুক্ত বাথ সল্ট এবং অন্যান্য গোসল সামগ্রী, কক্ষের দুর্গন্ধ দূরীকরণে ব্যবহৃত অন্যান্য সুগন্ধি সামগ্রী (আগরবাতি এবং সমজাতীয় পণ্য ব্যতীত) ও সমজাতীয় অন্যান্য পণ্যের ব্যবহার সীমিত করার লক্ষ্যে সম্পূরক শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

  • সিগারেট পেপার ও বিড়ি পেপার এর উপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

  • সিরামিকের বাথটাব ও জিকুজি, শাওয়ার, শাওয়ার ট্রে এর উপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

  • বিদ্যুতের ব্যবহার হ্রাস করার লক্ষ্যে আলট্রা ভায়োলেট/ইনফ্রা-রেড ল্যাম্প ব্যতীত অন্যান্য ফিলামেন্ট ল্যাম্পের ব্যবহার কমানোর জন্য ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।

  • পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি ও পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে পলিথিলিনের ব্যবহার কমানোর জন্য সকল ধরণের পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিক ব্যাগ (ওভেন প্লাস্টিক ব্যাগসহ) ও মোড়ক সামগ্রীর উপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।

সংকুচিত ভিত্তিমূল্য সংক্রান্ত

২৪৪। ইতিপূর্বে ২২টি সেবার ক্ষেত্রে সংকুচিত ভিত্তিমূল্য প্রচলিত ছিল। একটি প্রমিত মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের অংশ হিসেবে সংকুচিত ভিত্তিমূল্য হতে ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে আসতে হবে। বর্তমানে প্রযোজ্য ৯টি সংকুচিত ভিত্তিমূল্য কমিয়ে ৫টিতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত প্রস্তাব করছি-

  • ভবন নির্মাণ সংস্থা খাতে ১-১১০০ বর্গফুট পর্যন্ত ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ১.৫ শতাংশ হারে, ১১০১-১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত ২.৫ শতাংশ হারে, ১৬০১ বর্গফুট হতে তদুর্ধ্ব ৪.৫ শতাংশ মূসক আরোপিত আছে। আবাসন খাতের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১-১৬০০ বর্গফুট পর্যন্ত ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ হারে, ১৬০১ বর্গফুট হতে তদূর্ধ্ব পরিমাপের ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ৪.৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করছি। পুরাতন ফ্ল্যাট পুনঃরেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করছি।

  • আসবাবপত্র সেবার ক্ষেত্রে আসবাবপত্র উৎপাদন পর্যায়ে ৬ শতাংশের স্থলে ৭ শতাংশ এবং বিপণন পর্যায়ে ৪ শতাংশের স্থলে ৫ শতাংশ মূসক আরোপের প্রস্তাব করছি।

  • পরিবহন ঠিকাদার (পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে), নিলামকৃত পণ্যের ক্রেতা (ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে নিলামসহ), নিজস্ব ব্রান্ড সম্বলিত তৈরী পোশাক বিপণনের ক্ষেত্রে বর্তমানে আরোপিত ৪ শতাংশ এর স্থলে ৫ শতাংশ মূসক আরোপের প্রস্তাব করছি। এছাড়া স্থানীয় বাজারে বিক্রয়ের জন্য ব্রান্ডবিহীন পোশাক পণ্যের বিপণনের ক্ষেত্রেও সমহারে ভ্যাট প্রযোজ্য হবে।

  • তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার উপর ৪.৫ শতাংশ এর স্থলে ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করছি।

  • আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম মূসক ও ব্যবসায়ী পর্যায়ের মূসক ৪ শতাংশ এর স্থলে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।

  • বর্তমানে ইন্টারনেট বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয় যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পণ্য বা সেবার পরিসরকে আরো বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ভার্চুয়াল বিজনেস নামে একটি সেবার সংজ্ঞা সৃষ্টি করা হয়েছে। এর ফলে অনলাইনভিত্তিক যেকোন পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তরকে এ সেবার আওতাভুক্ত করা সম্ভব হবে। তাই ভার্চুয়াল বিজনেস সেবার উপর ৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।

ট্যারিফ মূল্য সংক্রান্ত

২৪৫। প্রকৃত বাজার মূল্য, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কয়েকটি পণ্য যেমন- টমেটো পেস্ট, কেচাপ, সস, বিভিন্ন ফলের পাল্প, ফলের জুস, ব্যবহার অযোগ্য ট্রান্সফর্মার অয়েল, লুবব্লেন্ডিং অয়েল, বিভিন্ন ধরনের পেপার ও পেপার প্রডাক্ট, কটন ইয়ার্ন বর্জ্য, ওয়েস্ট ডেনিম, স্ক্র্যাপ/শিপ স্ক্র্যাপ, সিআর কয়েল, জিপি শীট, সিআই শীট, রঙিন সিআই শীট, ব্লেড, চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাস ইত্যাদির ট্যারিফ মূল্য যৌক্তিকীকরণ করার প্রস্তাব করছি।

আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক

মাননীয় স্পীকার

২৪৬। দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, চলমান বিশ্বায়নের পরিপ্রেক্ষিতে দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ, শিল্প বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জনস্বাস্থ্য, রাজস্ব আহরণ ইত্যাদি বিবিধ বিষয় বিবেচনা ও বিগত সময়ে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের সাথে সঙ্গতি রেখে ব্যবসায়ী সমাজসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনদের নিকট থেকে প্রাপ্ত ১ হাজার ৫০০ এর বেশি প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি শুল্ক-কর বিষয়ক প্রস্তাব প্রণীত হয়েছে। আমদানি পর্যায়ের শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর আরোপের ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হলো অত্যাবশ্যকীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার অপরিবর্তিত রাখা, দেশীয় শিল্পখাতের সংরক্ষণ ও প্রসার সাধন করা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি, মূসক ও সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণে স্ববিবেচনার প্রয়োগ সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা, অবমূল্যায়ন (under invoicing) পরিহার এবং আমদানি দ্রব্যের দ্রুত শুল্কায়ন ও খালাস নিশ্চিত করা। এ সকল বিষয় বিবেচনায় আমদানি পর্যায়ে বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি হার (০%, ১%, ৫%, ১০%, ১৫% এবং ২৫%) অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করছি। আমরা আমাদের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে অনেক সময় রেগুলেটরি ডিউটি ও সম্পূরক শুল্কের সহায়তা নিই। আমাদের লক্ষ্য হলো ক্রমে ক্রমে এই পদ্ধতির ব্যবহার কমিয়ে আনা।

২৪৭। উপর্যুক্ত মৌলিক বিষয়সমূহকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা যে সমস্ত প্রস্তাব বিবেচনা করেছি সেগুলোর খাতভিত্তিক বিবরণ মহান জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করছি:

(ক) কৃষিখাত

২৪৮। কৃষি আমাদের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত এবং আমরা বাস্তবেই কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষি খাতের বিভিন্ন উপখাতের প্রণোদনা নিম্নে তুলে ধরছি (পরিশিষ্ট-খ এর সারণি-১ দ্রষ্টব্য):

১) কৃষি: কৃষিখাতের প্রধান উপকরণসমূহ, বিশেষ করে সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শুন্য শুল্কহার অব্যাহত রাখা হয়েছে। কৃষকের উৎপাদিত ধান চালের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে চাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ পুনঃআরোপ করা হয়েছে। কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গম, ভূট্টা, আলু ও কাসাভা থেকে উৎপাদিত স্টার্চের শুল্ক হার যৌক্তিকীকরণ করে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ১০ শতাংশ হারে নির্ধারণের প্রস্তাব করছি।

২) মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি: কৃষির অন্যতম উপখাত এবং দেশের মানুষের আমিষের প্রধান উৎস মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতের টেকসই উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে উক্ত খাতের খাদ্য সামগ্রী ও নানাবিধ উপকরণ আমদানিতে আমরা বিগত কয়েক বছর শুল্ক ও কর অব্যাহতি দিয়ে আসছি। এই খাতে প্রদত্ত প্রণোদনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পোল্ট্রি ফিডের প্রয়োজনীয় উপকরণ সয়াবিন অয়েল কেক/ফ্লাওয়ারে শুল্ক হ্রাস করে শূন্য শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৫ শতাংশ প্রস্তাব করছি।

৩) তামাক: তামাক একটি কৃষিপণ্য হলেও জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিধায় তামাকের উৎপাদনকে সরকার সবসময় নিরুৎসাহিত করে আসছে। তাই তামাক জাতীয় সকল পণ্যের আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রয়ে উচ্চহারে শুল্ক-কর আরোপিত আছে। তবে তামাক প্রক্রিয়াজাতপূর্বক রপ্তানি উৎসাহিত করতে তামাকজাত পণ্যের উপর আরোপিত ২৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি।

৪) খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প: স্থানীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভিন্ন শিল্প যেমন-মধু, চুইংগাম ও সুগার কনফেকশনারি, চকলেট ও কোকোয়া সমৃদ্ধ খাদ্য, বাদাম, সিরিয়াল, ওটস ইত্যাদির প্রতিরক্ষণের স্বার্থে এসমস্ত খাদ্য উপকরণ বাল্কে (Bulk) আমদানিতে হ্রাসকৃত শুল্কহার অব্যাহত রেখে খুচরা মোড়কে সরাসরি বিক্রয়ের জন্য আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশে বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

৫) সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ: সামুদ্রিক মৎস্য আহরণপূর্বক রপ্তানির মাধ্যমে আমরা উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করি। একাজে ব্যবহার্য বিশেষায়িত ফিশিং নেট আমদানিতে শুল্ক প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাব করছি।

(খ)  শিল্প খাত

২৪৯। আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমাগত বাড়ছে। কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ সৃষ্টিতে এ খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের বর্তমান উন্নয়ন কৌশল হচ্ছে- শিল্পখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, যথাযথ প্রতিরক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যমান শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার, রপ্তানিমুখি শিল্পের বহুমুখী প্রসারপূর্বক আরো অধিক প্রতিযোগীতাসক্ষম করা। শিল্পখাতের বিভিন্ন উপখাতের জন্য প্রস্তাবিত প্রণোদনা নিম্নরূপ (পরিশিষ্ট-খ এর সারণি-২ দ্রষ্টব্য):

১) ঔষধ শিল্প: বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প বর্তমানে বিশ্বমানে পৌঁছে গেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১৬০টি দেশে বাংলাদেশের ঔষধ রপ্তানি হচ্ছে। প্রচুর সম্ভাবনাময় এই খাতকে আরো বিকশিত করার জন্য এই শিল্পে ব্যবহৃত বেশ কিছু কাঁচামালে শুল্ক রেয়াত সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করছি। এখানে উল্লেখ্য, এ সমস্ত কাঁচামালের মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধক ঔষধের কাঁচামালও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ঔষধের বেশ কিছু সক্রিয় কাঁচামাল (Active Pharmaceutical Ingredient, API) বর্তমানে দেশে উৎপাদিত হচ্ছে। API উৎপাদনে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপকরণে শুল্ক রেয়াত সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করছি।

২) চামড়া শিল্প: চামড়া শিল্প বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি খাত এবং এই খাতে প্রবৃদ্ধির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। শুরু থেকেই চামড়া শিল্পে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করছে। চামড়া শিল্পে উপজাত হিসেবে প্রাপ্ত Split leather এর জন্য বাংলাদেশ কাস্টমস ট্যারিফে পৃথক কোন এইচ.এস.কোড না থাকায় Split leather রপ্তানিতে জটিলতার সৃষ্টি  হচ্ছে। তাই Split leather এর জন্য পৃথক এইচ.এস.কোড সৃজনের জন্য প্রস্তাব করছি।

৩) টেক্সটাইল: শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পকে প্রণোদনাসহ শুল্ক-কর সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে প্রজ্ঞাপন জারী করা হয়। উক্ত সুবিধা আরো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে টেক্সটাইল শিল্পের কাঁচামাল Flax fibre ও Flax tow and waste এর শুল্ক মওকুফের প্রস্তাব করছি।

৪) লৌহ ও ইস্পাত: লৌহ ও ইস্পাত শিল্পে বিগত বছরগুলোতে আমদানির পরিমাণ ও রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে। একই সাথে স্থানীয় বাজারে তৈরী রডের দামের ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। রডের উৎপাদন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে এর কাঁচামাল ফেরো এ্যালয়ের রেগুলেটরি ডিউটি ১৫% হতে হ্রাস করে ১০% এবং স্পঞ্জ আয়রন আমদানিতে স্পেসিফিক কাস্টমস ডিউটি প্রতি মেট্রিক টনে ১,০০০ টাকা হতে হ্রাস করে ৮০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

৫) গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ: পূর্ণ ননীযুক্ত গুঁড়াদুধের সমজাতীয় পুষ্টি উপাদানে তৈরি ফিল্ড মিল্ক পাউডার নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই বিবেচনায় পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন- মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় উক্ত পণ্য আমদানিতে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের কাঁচামাল ফিল্ড মিল্ক পাউডার বাল্ক আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি।

৬) রেফ্রিজারেটর এবং কম্প্রেসার শিল্প: দেশে বর্তমানে উন্নতমানের রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনার তৈরি হচ্ছে, যা দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। সম্প্রতি দেশে আধুনিক মানের কম্প্রেসার প্রস্তুতকারী কারখানা চালু হয়েছে। স্থানীয় এ সকল শিল্পকে প্রতিরক্ষণের লক্ষ্যে এ খাতে ব্যবহৃত কতিপয় উপকরণ যেমন-রেফ্রিজারেন্ট, প্রিন্টেড স্টীল শীট (০.৩ এমএম পুরুত্ব), কপার টিউব, ক্যাপাসিটর, কানেক্টর, টার্মিনাল ও ইলেক্ট্রিক এপারেটাসে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশে এবং ওয়েল্ডিং ওয়্যার, স্প্রিং ও গ্যাসকেটে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি।

৭) মুদ্রণ শিল্প: দেশীয় মুদ্রণ শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে Flexo ও Gravure in liquid form এর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি। অপরদিকে এ খাতের প্রতিরক্ষণের লক্ষ্যে মুদ্রিত লিফলেট, ব্রোসিয়ার, প্রিন্টেড পোস্ট কার্ড, প্রিন্টিংস কার্ড, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি আমদানিতে শুল্ক-কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি। এখন এইসব পণ্য ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক দেবে।

৮) রি-মেল্টেড লেড: লেড (Lead) এসিড ব্যাটারী উৎপাদনের প্রদান এবং অন্যতম কাঁচামাল লেড বা সীসা, যা পুরাতন ব্যাটারী অথবা লেড ওয়েস্ট থেকে রি-সাইক্লিং এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। দেশের কতিপয় মানসম্মত প্রতিষ্ঠান পরিবেশ সম্মত উপায়ে লেড রি-সাইকেল করে নিজস্ব ব্যাটারী উৎপাদনে ব্যবহার করে থাকে। আবার কতিপয় প্রতিষ্ঠান যত্রতত্র এসব ক্ষতিকারক লেড রি-সাইক্লিং করে বিদেশে রপ্তানি করছে। ফলে একদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অপরদিকে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ হতে লেড আমদানি করতে হচ্ছে। তাই পরিবেশ সুরক্ষাসহ স্থানীয় ব্যাটারী উৎপাদন শিল্পকে প্রণোদনা প্রদানের লক্ষ্যে Re-melted Lead রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ হারে রপ্তানি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করছি।

৯) ইলেকট্রিক্যাল পণ্য: দেশীয় ইলেকট্রিক শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের প্রতিরক্ষণের সুবিধার্থে মোবাইল ব্যাটারি চার্জার, ইউপিএস/আইপিএস ও ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারের শুল্ক ১৫ শতাংশে; অটোমেটিক সার্কিট ব্রেকারের শুল্ক ১০ শতাংশে বাড়ানো হয়েছে; এবং ল্যাম্প হোল্ডারের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ আরোপ করার প্রস্তাব করছি। একই সাথে এ সকল শিল্পের কতিপয় কাঁচামাল যেমন-কার্বন রড, ফর্মড কোর আমদানিতে শুল্ক বিভিন্ন হারে হ্রাসের প্রস্তাব করছি। 

(গ)  পরিবহন খাত

২৫০। পরিবহন খাতে আমাদের দেশে মোটরচালিত যানবাহন উৎপাদনের বিভিন্ন উদ্যোগ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে এবং আমরা সেজন্য শুল্ক-করাদির বিষয়ে পরিবর্তন এনেছি। আমার মনে হয় বাংলাদেশের বর্তমানে অটোমোবাইল শিল্পের জন্য একটি নীতিমালা ঘোষণার সময় এসেছে। বাজেট পাসের পর শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে অটোমোবাইল খাতে উন্নয়নের একটি পথনকশা ঘোষণা করা হবে। পরিবহন খাতের বিভিন্ন প্রণোদনা প্রস্তাব নিম্নে তুলে ধরছি (পরিশিষ্ট-খ এর সারণি-৩ দ্রষ্টব্য):

১) স্কুল বাস: ঢাকা শহরে স্কুলগুলোতে ছাত্র/ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য অধিকাংশ স্কুলেই কোন স্কুল বাস নেই। তাই অভিভাবকগণ নিজস্ব গাড়ী ব্যবহার করে তাদের সন্তানদের স্কুলে যাতায়াত নিশ্চিত করতে বাধ্য হচ্ছে, যা ঢাকা মহানগরীতে যানজট সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। উন্নত দেশের ন্যায় স্কুলের জন্য ডেডিকেটেড স্কুল বাস চালু করে যানজট এবং ছাত্রদের স্কুলে যাতায়াত সহজতর ও নিরাপদ করা যেতে পারে । এ লক্ষ্যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সী স্কুল বাস সার্ভিস চালুর আগ্রহ প্রকাশ করলে তা যথাযথ বিবেচনায় বিশেষ শুল্ক সুবিধায় আমদানির সুযোগ দেয়া হবে।

২) হাইব্রিড মোটর গাড়ি: গত অর্থবছরে হাইব্রিড মোটর গাড়ির উচ্চ মূল্য বিবেচনায় এর উপর শুল্ক হার হ্রাস করা হয়। ফলে হাইব্রিড মোটর গাড়ির আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবেশ দূষণ এবং জ্বালানি ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য হাইব্রিড মোটর গাড়ির আমদানি উৎসাহিত করার জন্য নিম্ন সিসির হাইব্রিড মোটর গাড়ি (১৬০০ হতে ১৮০০ সিসি পর্যন্ত) আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি। এ শুল্ক হার ইলেকট্রিক মোটর গাড়ির ক্ষেত্রে আগে থেকেই প্রযোজ্য আছে।

৩) পুরাতন গাড়ি: পুরাতন গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে গত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটে প্রদত্ত অবচয় সুবিধার পুনর্বিন্যাস করা হয়। পুরাতন গাড়ি আমদানি কিছুটা নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে বর্তমানে বিদ্যমান অবচয় সুবিধা বছরভিত্তিক ৫ শতাংশ হারে হ্রাস করার প্রস্তাব করছি।

৪) মোটরগাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে CKD এবং CBU কর হারে (রেগুলেটরি ডিউটি ও সম্পূরক শুল্ক) খানিকটা অসঙ্গতির কারণে নতুন গাড়ি আমদানিতে কর ফাঁকিতে সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তি অনেক কমে গেছে। এইটি যৌক্তিকীকরণ বাজেট বিবেচনাকালেই চূড়ান্ত করা হবে। ডাবল কেবিন পিকআপের ব্যবহার দেশে ব্যাপকভাবে বেড়েছে এবং এক্ষেত্রে রেগুলেটরি ডিউটি বিদ্যমান ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে হ্রাস করার প্রস্তাব করছি।

৫) মোটর সাইকেল: পরিবহন খাতের উদীয়মান একটি উপখাত হলো মোটরসাইকেল উৎপাদন। দেশে ইতোমধ্যেই ৩-৪ টি প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু করেছে। একটি প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরিসরে তাদের উৎপাদিত মোটরসাইকেল রপ্তানিও শুরু করেছে। মোটরসাইকেলের স্থানীয় উৎপাদন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ খাতের জন্য শর্তসাপেক্ষে রেয়াতি সুবিধা প্রদান করে বিগত অর্থবছরে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। মোটর সাইকেল উৎপাদন খাতে প্রদত্ত প্রণোদনা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি মোটর সাইকেল ও এর পার্টস উৎপাদনে কতিপয় পণ্যে শুল্ক সুবিধা যৌক্তিকীকরণের প্রস্তাব করছি। (পরিশিষ্ট-খ এর সারণি ৩ দ্রষ্টব্য)

৬) লিফ স্প্রিং: লিফ স্প্রিং পরিবহন খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ; যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের সাথে সাথে বিপুল পরিমাণে আমদানি হয়। দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণের পাশাপাশি বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখা, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ, প্রতিরক্ষণ সুবিধা যৌক্তিকীকরণ তথা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে লিফ স্প্রিং এর উপর আরোপিত সম্পূরক ১০ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি।

৭) টায়ার টিউব উৎপাদন: টায়ার টিউব উৎপাদন শিল্পের কাঁচামাল Paraffin wax এবং ফেনোলিক রেজিন। টায়ার টিউব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক Paraffin wax আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশে এবং ফেনোলিক রেজিন আমদানিতে শুল্ক ৫ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি।

৮) বাইসাইকেল শিল্প: স্থানীয় বাইসাইকেল উৎপাদনকারী/ সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিরক্ষণের স্বার্থে ব্রেকস, স্যাডল ইত্যাদির আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশে বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।

(ঘ) আইসিটি খাত

মাননীয় স্পীকার

২৫১।  ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সরকারের অন্যতম উন্নয়ন কৌশল। এ লক্ষ্যে ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে আইসিটি খাতের পণ্যে বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। ১৯৯৬ সন হতে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অধিকাংশ পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও কর রেয়াতি সুবিধা দিয়ে আসছি। ফলে এ প্রযুক্তি দেশে ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে এবং ইতোমধ্যে কিছু অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্প্রতি স্যাটেলাইট দুনিয়ায় প্রবেশ করেছে। সেলুলার ফোন আইসিটি খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।

২৫২। বিগত অর্থবছরে স্থানীয় পর্যায়ে সেলুলার ফোন উৎপাদন ও সংযোজনে রেয়াতি সুবিধা প্রদানের কারণে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান সেলুলার ফোন উৎপাদন ও সংযোজন শুরু করেছে। এ খাতে সেলুলার ফোন উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কতিপয় কাঁচামালে শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব করছি। একই সাথে দেশে তৈরি হয়না এমন সফটওয়্যার যেমন-ডাটাবেইজ, প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্ক সর্বক্ষেত্রে ৫ শতাংশে হ্রাসের প্রস্তাব করছি।

(ঙ)  ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ

২৫৩। দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণের স্বার্থে বিদ্যমান সম্পূরক শুল্ক হারসমূহ অনেকাংশে অপরিবর্তিত রেখে ক্ষেত্রবিশেষে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। এসব প্রস্তাব বিবেচনাকালে দেশের কৃষি ও শিল্পের ন্যায়সঙ্গত প্রতিরক্ষণের বিষয় বিবেচনা করা হয়েছে। এছাড়াও বর্তমান ট্যারিফ হেডিং, এইচএস কোড, শুল্ক-কর হার ও কাঠামো, বিদ্যমান বিভিন্ন প্রজ্ঞাপনে স্টেকহোল্ডার কর্তৃক চিহ্নিত ত্রুটি, অসংগতি, অযৌক্তিক শুল্ক-কর কাঠামোর প্রয়োজনীয় সংশোধন বা যৌক্তিকীকরণের কার্যক্রমও আমরা গ্রহণ করেছি। সে লক্ষ্যে ট্যারিফ হেডিং, এইচ.এস.কোড সৃজন বা বিলোপ ও শুল্ক-কর হারের অসঙ্গতি দূরীকরণ ও ক্ষেত্র বিশেষে যৌক্তিকীকরণের প্রস্তাব করছি (পরিশিষ্ট-খ  এর সারণি-৪ দ্রষ্টব্য)

(চ) কাস্টমস আইনের প্রথম তফসিলে সংশোধন

২৫৪। শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে World Customs Organization (WCO) কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি প্রতিষ্ঠানটির সকল সদস্য দেশ অনুসরণ করে থাকে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতির ফলে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পণ্যের সৃষ্টি হচ্ছে এবং এ সকল পণ্যের শ্রেণিবিন্যাস সংক্রান্ত নতুন ব্যাখ্যা WCO প্রতি ৫ (পাঁচ) বছর পর পর প্রকাশ করে থাকে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজীকরণের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর WCO হতে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়। সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে উক্ত পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে Bangladesh Customs Tariff (BCT) এবং বিভিন্ন প্রজ্ঞাপনসমূহে H.S. Code এর প্রয়োজনীয় সংশোধনের প্রস্তাব করছি।

মাননীয় স্পীকার

২৫৫। যথাযথ রাজস্ব আহরণ ও স্থানীয় শিল্পের ন্যায়সঙ্গত প্রতিরক্ষণের লক্ষ্যে শুল্ক-ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমদানিকৃত পণ্যের অবমূল্যায়ন (under invoicing) জনিত মিথ্যা ঘোষণা। এটি রোধ করার লক্ষ্যে আমরা ট্যারিফ সংস্কার, ডিজিটালাইজেশনসহ নানামুখি আধুনিকায়ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। এসব পদক্ষেপের পাশাপাশি শুল্কায়নের ভিত্তি হিসাবে যাচাই ও ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আমদানিয় বেশকিছু বাণিজ্যিক পণ্যের উপর ন্যূনতম মূল্য ধার্য করে বিগত অর্থবছরে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এতে ব্যাপক সুফল পাওয়া গেছে। এর ধারাবাহিকতায় কতিপয় ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের ন্যূনতম মূল্য সময়ে সময়ে নির্ধারণ করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে মূল্য নির্ধারণ সুপারিশ প্রণয়নকারী কমিটি গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের প্রতিরক্ষণ, বিলাস ও অপ্রয়োজনীয়, সামাজিকভাবে অনভিপ্রেত, উচ্চ শুল্ক-কর হার সম্পন্ন পণ্যের যৌক্তিক ন্যূনতম শুল্ক মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পণ্যের অবমূল্যায়ন রোধকল্পে এ্যাসাইকুডা ডাটাবেজ ব্যবহার করে যথাযথ মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট গঠন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ঝুঁকিসমূহ চিহ্নিত করে তা রোধকল্পে এই ইউনিট বিশেষায়িত সেবা প্রদান করবে।

২৫৬। শুল্ক ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে এ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড ব্যবস্থায় বন্ড মডিউল, ভ্যালুয়েশন মডিউল, অকশন মডিউল, কেস মডিউল, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা মডিউল ব্যবহার করে ব্যবস্থাটিকে আরো দক্ষ ও কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। শুল্ক ব্যবস্থায় আমরা বিশ্বের উত্তম চর্চা নীতি অনুসরণ করছি। বিচারাধীন বিপুলসংখ্যক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ADRকে কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমি আশা করছি গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর ও শুল্ক ব্যবস্থা আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী হবে, রাজস্ব ফাকি হ্রাস পাবে এবং কর বিভাগ ও ব্যবসায়ীদের অংশীদারীত্ব আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করবো।

নবম অধ্যায়

উপসংহার

মাননীয় স্পীকার

২৫৭। আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশ করতে গিয়ে দেশবাসীর কাছে বিগত দশ বছরে আমাদের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কিছু ভাবনা আর কিছু স্বপ্ন তুলে ধরলাম। বলা বাহুল্য, আমাদের বিশাল কর্মযজ্ঞের বিস্তৃত উপাখ্যান তুলে ধরার সুযোগ এখানে তেমন থাকেনা; কিছুটা আভাস দেয়া যায় মাত্র। আমার বিরূদ্ধে অভিযোগ হলো যে, আমি লম্বা ও বিস্তৃত বাজেট বক্তৃতা দেই। সেটা ঠিক বটে, তবে এ বক্তব্য দেয়ার উদ্দেশ্য হলো জনগণের দৃষ্টি বাজেটের প্রতি নিবদ্ধ করা। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য এসেছে বলে আমার মনে হয়। বাজেট বক্তৃতা জনগণ শুনেন অথবা সময়ে সময়ে পাঠ করেন। জটিল বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। বাজেট প্রস্তাব বুঝতে সক্ষম হন। বাজেটে আগ্রহ এখন সারা দেশব্যপী বিস্তৃত।

২৫৮। বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারও বাজেটের আকার বেড়েছে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি পেতে হলে এর কোন বিকল্পও নেই। তাছাড়া, দেশের জনগণের জীবনমানে মৌলিক পরিবর্তন আনার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধি। একই সাথে, বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে আর সবার মত আমাদেরও ভাবনা আছে। সেভাবে ব্যবস্থাও নিচ্ছি; পরিস্থিতির উন্নতিও হচ্ছে। আপনি জানেন, চলতি বছরে পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক সাহায্য ব্যবহারে আমরা বেশ সফলতা দেখিয়েছি। রাজস্ব আহরণ ও সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংস্কারের যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি তাতে রাজস্ব আহরণ যেমন বাড়বে, তেমনি দক্ষ ব্যয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রাজস্ব পরিসর বৃদ্ধি পাবে। এ বছরের সংশোধিত বাজেট বাস্তবায়নের হার আবার ৯২ শতাংশ হবে বলে আশা করছি। আমার বিশ্বাস, বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আগামীতে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে থাকবো ।

মাননীয় স্পীকার

২৫৯। প্রবৃদ্ধি নিয়েই এতক্ষণ কথা হলো। যতই সমালোচনা হোক না কেন অর্থনৈতিক অগ্রগতির সহজ ও বোধগম্য নির্দেশক হলো প্রবৃদ্ধির হার। ন্যায্যতা ও সমতা নিয়ে কিছু কথা এখানে যোগ করতে চাই। সঙ্গত কারণেই শুরুর দিকে আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিকে বেশি নজর দিয়েছি। যদিও নারী ও শিশু উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষার বিষয়গুলোও আমাদের প্রাধিকার তালিকায় ছিল। সামনের দিনগুলোতে আমরা প্রবৃদ্ধিকে সুসংহত ও টেকসই করবো। পাশাপাশি, সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে সম্পদ ও সেবায় আপামর জনসাধারণের সহজ সুযোগ গ্রহণ নিশ্চিত করে উন্নয়নের সুফল সকলের নিকট পৌঁছে দিবো। আমাদের লক্ষ্য যুগপৎ সমৃদ্ধি ও সাম্য।

মাননীয় স্পীকার

২৬০। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী আমি। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে ৪৭ বছর পূর্বে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলাম একটি ‘সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলা’ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে। বিগত ১০টি বছর অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার সুবাদে সে সপ্নের বাস্তব রূপায়ণের প্রয়াস নিয়েছি। আজ দেশে/বিদেশে সকলেই স্বীকার করে যে, এ দশ বছরে দেশ অনেকখানি এগিয়েছে। তবু স্বপ্নের সীমারেখা এখনও স্পর্শ করা যায়নি। এটি নিরন্তর বহমান একটি প্রক্রিয়া। বিগত দশ বছরে আমার প্রচেষ্টার সাথে ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা ও প্রাজ্ঞ দিকনির্দেশনা, মন্ত্রিপরিষদে ও জাতীয় সংসদে আমার সুযোগ্য সহকর্মীবৃন্দের সহযোগিতা এবং প্রাজ্ঞজনের গঠনমূলক সমালোচনা, সর্বোপরি দেশের সকলস্তরের জনসাধারণের আগ্রহ ও আশা। আমাদের নীতি-কৌশল সাদরে গ্রহণ করে তারা উন্নয়ন প্রচেষ্টায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছেন। সকলের প্রতি রইল আমার গভীর কৃতজ্ঞতা। সব মিলিয়ে দেশকে কতটা দিতে পেরেছি তার মূল্যায়ন দেশবাসী আর বিশ্ব করছে। তবে, এটুকু দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে পারি আমার মননে ও কর্মে আমি কেবল আমার দেশের অগ্রযাত্রাকেই বিবেচনায় রেখেছি।

মাননীয় স্পীকার

২৬১।  বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা আমাকে বিস্মিত ও স্বপ্নচারী করে। আমি অবাক বিস্ময়ে দেখি কতটা আঘাত সহ্য করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে এদেশের জনগণ, স্বল্প সম্পদ ও সীমাহীন সীমাবদ্ধতার মাঝে ‘বাসকেট কেস’ এর অপবাদ কাটিয়ে একটি দেশ কিভাবে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হয়ে উঠে। যে দেশের শ্রম বাজারে আছে ২ কোটিরও অধিক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী, যে দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো প্রত্যন্ত গ্রাম-পাড়া-মহল্লা এমনি দুর্গম পার্বত্য এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত, যেখানে এখনও অনাবিষ্কৃত রয়েছে অমিত সমুদ্র সম্পদ, প্রতিনিয়ত যেখানে উন্মোচিত হচ্ছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার এবং যে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি ১৬ কোটি স্বতঃস্ফূর্ত জনগণ সে দেশের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত বা প্রতিরোধ করার সাধ্য কারো নেই। এখন প্রয়োজন কেবল সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে এসব কিছুর সুসমন্বয় এবং সঠিক ও সুযোগ্য নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা। সমৃদ্ধ আগামীর পথে বাংলাদেশের অভিযাত্রার ‘রূপকল্প-২০৪১’ প্রণয়নে আমি বয়সের কারণেই হয়ত তেমন ভূমিকা রাখতে পারবো না; তবে, কাজ যে শুরু হয়েছে তাতে আমি খুবই তৃপ্ত ও নিশ্চিত। অবশ্যই সে উদ্যোগের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার চেষ্টা করবো। এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে এবং সমৃদ্ধ আগামীর পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় দৃঢ় বিশ্বাস ঘোষণা করে আমি ২০১৮‑১৯ অর্থবছরের বাজেট এ মহান সংসদে পেশ করছি। আমি নিশ্চিত এ বাজেট বাস্তবায়নে দেশের আপামর জনগণ তাদের উদ্যোগ, সৃজনশীলতা, কর্মদক্ষতা, অংশীদারিত্ব এবং সর্বতোভাবে স্বতস্ফূর্ততা নিয়ে অংশগ্রহণ করবে।

জয় বাংলা

জয় বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক॥

পরিশিষ্ট-ক

সারণিসমূহের তালিকা

সারণি

শিরোনাম

পৃষ্ঠা

 অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দশক

১১২

 দশ বছরে গৃহীত আইন, বিধি ও নীতিমালার তালিকা

১১২

 ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল ও সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ

১২৭

 ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত আয় ও ব্যয়ের প্রাক্কলন

১২৮

 ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির খাতওয়ারি বরাদ্দ

১২৯

 সমগ্র বাজেটের খাতভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ

১৩০

 মন্ত্রণালয়/বিভাগওয়ারি বাজেট বরাদ্দ

১৩১

 আর্থ-সামাজিক খাতে অগ্রগতির চিত্র

১৩৩

 রাজস্ব খাতের কতিপয় সূচকের অগ্রগতি

১৩৩

১০

 বহিঃখাতের কতিপয় সূচকের অগ্রগতি

১৩৪

১১

 আর্থিক খাতের কতিপয় সূচকের অগ্রগতি

১৩৪

সারণি ১: অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এক দশক

অর্থবছর

জিডিপি প্রবৃদ্ধি

বিনিয়োগ (% জিডিপি)

মাথাপিছু জাতীয় আয়

(মা.ড.)

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা

(মে.ওয়াট)

খাদ্যশস্য উৎপাদন

(লক্ষ মে.ট.)

মূল্যস্ফীতি

(বার্ষিক গড়)

সরকারি

ব্যক্তিখাত

মোট

২০০৫-০৬

৬.৬৭

৫.৫৬

২০.৫৮

২৬.১৪

৫৪৩

৫,২৪৫

২৭২.৭

-

২০০৬-০৭

৭.০৬

৫.০৯

২১.০৮

২৬.১৮

৫৯৮

৫,২০২

২৮০.৬

৯.৪

২০০৭-০৮

৬.০১

৪.৫০

২১.৭০

২৬.২০

৬৮৬

৫,৩০৫

৩৫২.৯

১২.৩

২০০৮-০৯

৫.০৫

৪.৩২

২১.৮৯

২৬.২১

৭৫৯

৫,৭১৯

৩৪৭.১

৭.৬

২০০৯-১০

৫.৫৭

৪.৬৭

২১.৫৭

২৬.২৫

৮৪৩

৫,৮২৩

৩৫৮.১

৬.৮

২০১০-১১

৬.৪৬

৫.২৬

২২.১৬

২৭.৪২

৯২৮

৭,২৬৪

৩৬০.৭

১০.৯

২০১১-১২

৬.৫২

৫.৭৬

২২.৫০

২৮.২৬

৯৫৫

৮,৭১৬

৩৬৮.৮

৮.৭

২০১২-১৩

৬.০১

৬.৬৪

২১.৭৫

২৮.৩৯

১,০৫৪

৯,১৫১

৩৭২.৭

৬.৮

২০১৩-১৪

৬.০৬

৬.৫৫

২২.০৩

২৮.৫৮

১,১৮৪

১০,৪১৬

৩৮১.৭

৭.৪

২০১৪-১৫

৬.৫৫

৬.৮২

২২.০৭

২৮.৮৯

১,৩১৬

১১,৫৩৪

৩৮৪.২

৬.৪

২০১৫-১৬

৭.১১

৬.৬৬

২২.৯৯

২৯.৬৫

১,৪৬৫

১৪,৪২৯

৩৮৮.২

৫.৯

২০১৬-১৭

৭.২৮

৭.৪১

২৩.১০

৩০.৫১

১,৬১০

১৫,৩৭৯

৩৮৬.৩

৫.৪

২০১৭-১৮

৭.৬৫

৮.২২

২৩.২৫

৩১.৪৭

১,৭৫২

১৮,৩৫৩

৩৯৭.৮

৫.৮

২০১৮-১৯

(প্রক্ষেপণ)

৭.৮০

৮.৩৯

২৫.১৫

৩৩.৫৪

১,৯৫৬

-

৪০৩.৩

৫.৬

উৎস: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও বিদ্যুৎ বিভাগ, সা= সাময়িক, ক= মে ২০১৮ পর্যন্ত

সারণি ২: দশ বছরে গৃহীত আইন, বিধি ও নীতিমালার তালিকা

খাদ্য মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩

২.     নিরাপদ খাদ্য (রাসায়নিক দূষক, টক্সিন ও ক্ষতিকর অবশিষ্টাংশ) প্রবিধিমালা, ২০১৭

৩.     নিরাপদ খাদ্য (নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা এবং বিশ্লেষণ) প্রবিধিমালা, ২০১৭

৪.     নিরাপদ খাদ্য (খাদ্য সংযোজন দ্রব্য ব্যবহার) প্রবিধিমালা, ২০১৭

৫.     নিরাপদ খাদ্য (মোড়কাবদ্ধ খাদ্য লেবেলিং) প্রবিধিমালা, ২০১৭

৬.     নিরাপদ খাদ্য (খাদ্যদ্রব্য জব্দকরণ ও প্রশাসনিক ব্যবস্হা গ্রহণ পদ্ধতি) বিধিমালা, ২০১৭

৭.     নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (কারিগরি কমিটি) বিধিমালা, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১০

২.     খাদ্যশস্য ও খাদ্যসামগ্রী ব্যবসার লাইসেন্স ও ফি নির্ধারণ, ২০১১

৩.     সরকারি আধুনিক ফ্লাওয়ার মিল পরিচালন নীতিমালা, ২০১৫

৪.     ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণ নীতিমালা, ২০১৬

৫.     খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নীতিমালা, ২০১৭

৬.     খাদ্য মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন খাদ্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর গণকর্মচারীদের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ নীতিমালা, ২০১৭

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯

২.     সাধারন ভবিষ্য তহবিল প্রবিধিমালা, ২০১১

৩.     প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২

৪.     মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩

৫.     মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০১৪

৬.     ২০১১ বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন (সংশোধনী) আইন, ২০১৪

৭.     রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আইন, ২০১৫

৮.     ফরমালিন (আমদানি, উৎপাদন, পরিবহণ, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার) নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০১৫

৯.     ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৫

১০.   চা আইন, ২০১৬

১১.   চা শ্রমিক কল্যাণ তহবিল আইন, ২০১৬

১২.   বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     সিআইপি (রপ্তানি) নীতিমালা, ২০১৩

২.     জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালা, ২০১৩

৩.     রপ্তানি নীতিমালা ২০১২-২০১৫ (বাংলা)

৪.     রপ্তানি নীতিমালা ২০১২-২০১৫ (ইংরেজি)

৫.     আমদানী নীতিমালা ২০১২-২০১৫ (বাংলা)

৬.     রপ্তানি নীতি ২০১৫-২০১৮ (ইংরেজী)

৭.     আমদানি নীতি আদেশ, ২০১৫-১৮ (ইংরেজি)

৮.     আমদানি নীতিমালা ২০১৫-২০১৮ (বাংলা) এর সংশোধনী (এসআরও-২৪৪)

৯.     আমদানি নীতিমালা ২০১৫-২০১৮ (বাংলা) এর সংশোধনী (এসআরও-২৩৪)

১০.   আমদানি নীতিমালা ২০১৫-২০১৮ (বাংলা) এর সংশোধনী (এসআরও-৩৬৬)

১১.   রপ্তানি নীতিমালা ২০১৫-২০১৮ (ইংরেজী)

১২.   রপ্তানি নীতিমালা ২০১৫-২০১৮ (বাংলা)

১৩.   আমদানী নীতিমালা ২০১৫-২০১৮ (বাংলা)

১৪.   দেশের অভ্যন্তরে বাণিজ্য মেলা আয়োজন সম্পর্কিত বিধানাবলী।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

আইন ও বিধিমালা

১.  মূল্য সংযোজন কর ও শুল্ক আইন, ২০১২

২.  বিকল্প নিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা, ২০১২

৩.  মূল্য সংযোজন কর ও শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড আইন, ২০১০

২.     বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন, ২০১০

৩.     বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন, ২০১০

৪.     বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল বিধিমালা, ২০১১

৫.     বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল বিধিমালা, ২০১১

৬.     বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল বিধিমালা, ২০১৩

৭.     বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি রেজিস্ট্রেশন ও কন্ট্রোল আইন, ২০১৩

৮.     বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরা আইন, ২০১৪

৯.     বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (রেজিস্ট্রেশন ও কন্ট্রোল) বিধিমালা, ২০১৪

১০.   বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরা বিধিমালা, ২০১৬

১১.   বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, ২০১৭

১২.   বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.  জাতীয় পর্যটন নীতিমালা, ২০১০

২.  পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে মানসম্পন্ন আবাসিক হোটেল নির্মাণে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে শুল্ক-কর সুবিধা (Tax Rebate) প্রদানের জন্য মানসম্পন্ন হোটেল চিহ্নিতকরণ ও প্রত্যয়ন প্রদান সম্পর্কিত নীতিমালা।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ

আইন ও বিধিমালা

১.     ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃকপক্ষ আইন, ২০১২

২.     সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ড আইন, ২০১৩

৩.     মেট্রোরেল আইন, ২০১৫

৪.     সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (নন-ক্যাডার গেজেটেড এবং নন-গেজেটেড কর্মকর্তা/ কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৫

৫.     বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃকপক্ষের কর্মকর্তা/কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৬

৬.     বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) আইন, ২০১৬

৭.     মেট্রোরেল বিধিমালা, ২০১৬

৮.     সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৭

৯.     বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন আইন, ২০১৭

১০.   বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     মোটরযানের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১২

২.     জাতীয় সমন্বিত বহুমাধ্যমভিত্তিক পরিবহণ নীতিমালা, ২০১৩

৩.     টোল নীতিমালা, ২০১৪

৪.     সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০১৫

৫.     সড়ক ও পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের তথ্য অবমুক্তকরণ নীতিমালা, ২০১৫

৬.     ফেরি পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৭

৭.     রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা, ২০১৭

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.  প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ (কতিপয় আইন সংশোধন) আইন, ২০১৬

২.  প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ (সর্বাধিনায়কতা) আইন, ২০১৬

৩.  প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধান পদে (নিয়োগ এবং বেতন ও ভাতাদি) আইন, ২০১৭

মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     মৎস্য খাদ্য ও পশু খাদ্য আইন, ২০১০

২.     মৎস্য হ্যাচারি আইন, ২০১০

৩.     মৎস্য খাদ্য বিধিমালা, ২০১১

৪.     মৎস্য হ্যাচারি বিধিমালা, ২০১১

৫.     পশুখাদ্য বিধিমালা, ২০১৩

৬.     সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০১৭ (খসড়া)

৭.     বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৭ (খসড়া)

৮.     বাংলাদেশ এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা কম্পেনসেশন স্ট্রাটেজি এ্যান্ড গাইডলাইনস্‌

নীতি কৌশল

১.     নিমগাছি সমাজভিত্তিক মৎস্যচাষ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০১১

২.     চিংড়ি প্লট ইজারা, ইজারা নবায়ন, ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন নীতিমালা, ২০১৩

৩.     জাতীয় চিংড়ি নীতিমালা, ২০১৪

৪.     প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ৯ম গ্রেড ও তদুর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তাগণের বদলি/পদায়ন নীতিমালা, ২০১৮

৫.     নিহত জেলে পরিবার বা স্থায়ীভাবে অক্ষম জেলেদের প্রণোদনা প্রদান নীতিমালা, ২০১৮

৬.     বাংলাদেশকে দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য ৫% হার সুদে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচি (Refinance Scheme) পরিচালনার নীতিমালা

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

আইন ও বিধিমালা

১.     দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০১৬ সংশোধন

২.     রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন, ২০১৬

৩.     দি প্রাইম মিনিস্টারস্ (রেমিউনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস) এ্যাক্ট, ১৯৭৫ (মে, ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত)

৪.     দি মিনিস্টারস্, মিনিস্টারস্ অব ষ্টেট এন্ড ডেপুটি মিনিস্টারস্ (রেমিউনারেশন এন্ড প্রিভিলেজেস) এ্যাক্ট, ১৯৭৩ (মে, ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত)

৫.     'রাষ্ট্রপতির অবসরভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইন, ২০১৬' সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন

৬.     রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ (এপ্রিল, ২০১৭ পর্যন্ত সংশোধিত)

৭.     এ্যালোকেশন অব বিজনেস এ্যামং দি ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিস এন্ড ডিভিশনস (এপ্রিল, ২০১৭ পর্যন্ত সংশোধিত)

৮.     জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) বিধিমালা, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     নাগরিকের মৌলিক উপাত্ত কাঠামো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন (২৭/০৯/২০১২)

২.     নাগরিকের মৌলিক উপাত্ত কাঠামো নির্দেশিকা (২৭/০৯/২০১২)

৩.     এক উপজেলা হইতে অন্য উপজেলায় ইউনিয়ন/ওয়ার্ড সংযোজন এবং বিদ্যমান/নবসৃষ্ট সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত এলাকা ব্যতীত অবশিষ্ট এলাকা লইয়া উপজেলা পুনর্গঠন সংক্রান্ত নীতিমালা (১০/০৬/২০১৪)

৪.     মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে কতিপয় অনুসরণীয় বিষয় (১৭/০৫/২০১৫)

৫.     উদ্ভাবন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও মূল্যায়ন নির্দেশিকা, ২০১৫

৬.     স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত নির্দেশাবলি (৩১/০৩/২০১৬)

৭.     সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০১৬ (১০/০৮/২০১৬)

৮.     শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান নীতিমালা, ২০১৭

৯.     জাতীয় পুরস্কার/পদক সংক্রান্ত নির্দেশাবলি (১৫/০৫/২০১৭)

১০.   আইনের খসড়া প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভাষাগত উৎকর্ষ, বিষয়গত যথার্থতা এবং সংশ্লিষ্ট অপরাপর আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য ও সংগতি বিধানের লক্ষ্যে অনুসরণীয় রূপরেখা

কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারের এর কার্যালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     অডিট আইন, ২০১০ পরিবর্তন

বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪

২.     বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের সভাপতি ও সদস্য (কর্মের শর্তাবলী ও বিশেষ অধিকার) আইন, ২০১৬

৩.     বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন আইন, ২০১৬

৪.     বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (পরামর্শ) প্রবিধিমালা, ২০১৬

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ হরিণ পালন নীতি, ২০০৯

২.     বাংলাদেশ রাবার নীতি, ২০১০

৩.     পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০

৪.     জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০

৫.     সামাজিক বন (সংশোধিত) বিধি, ২০১০ 

৬.     বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০

৭.     বাংলাদেশ ট্রানজিট রুল, ২০১১

৮.     স'মিল (লাইসেন্স) রুল, ২০১২

৯.     বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২

১০.   বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন,২০১২

১১.   ইটপ্রস্ত্তত ও ভাটা স্হাপন ( নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩

১২.   বাংলাদেশ রাবার বোর্ড আইন, ২০১৩

১৩.   ইট পোড়ানোর (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৩

১৪.   বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৭

১৫.   ওয়াইল্ডলাইফ দ্বারা সৃষ্ট হতাহতের জন্য ক্ষতিপূরণ নীতি

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (জননিরাপত্তা বিভাগ)

আইন ও বিধিমালা

১.     বর্ডার গার্ড বালাদেশ এর কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা, পদবীধারী, বর্ডার গার্ড সদস্য এবং তালিকাভুক্ত বর্ডার গার্ড সদস্য (বরখাস্ত, অপসারণ, অব্যাহতি ও অবসর) বিধিমালা, ২০১৫

২.     বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (পোশাকধারী কর্মকর্তা) নিয়োগ বিধিমালা , ২০১৬

৩.     বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (তত্ত্বাবধান, পরিচলনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০১৬

৪.     বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( গার্ড পুলিশ) বিধিমালা, ২০১৬

৫.     বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (প্রশিক্ষণ) বিধিমালা, ২০১৬

৬.     বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড আইন, ২০১৬

৭.     বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (জুনিয়র কর্মকর্তা, পদবীধারী ও তালিকাভুক্ত বর্ডার গার্ড সদস্য নিয়োগ ও পদোন্নতি) বিধিমালা, ২০১৭

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ

নীতি কৌশল

১.     দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা, ২০১১

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১০

২.     বাংলা একাডেমি আইন, ২০১৩

৩.     জাতীয় জাদুঘর আইন

নীতি কৌশল

১.     সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অনুদান মঞ্জুরি নীতিমালা, ২০০৯

২.     আর্থিকভাবে অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ভাতা মঞ্জুরি নীতিমালা, ২০০৯

৩.     বেসরকারি গ্রন্থাগারে অনুদান বরাদ্দ এবং বই নির্বাচন ও সরবরাহ সংত্রান্ত নীতিমালা, ২০১৪

সেতু বিভাগ

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৬

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় (স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ)

আইন ও বিধিমালা

১.     বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন, ২০১২

২.     নিপোর্ট নিয়োগবিধি, ২০১৫

৩.     চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৬

৪.     রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৬

শিল্প মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     জাহাজ ব্রেকিং এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিধি, ২০১১

২.     ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩

৩.     ভোজ্য তেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধকরণ আইন, ২০১৩ ও ট্রেডমার্কস বিধিমালা, ২০১৫

৪.     জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ আইন, ২০১৫ এর খসড়া প্রণয়ন

৫.     বাংলাদেশ শিল্প প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ আইন, ২০১৭ (খসড়া)

৬.  বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) আইন, ২০১৭

৭.     ভোজ্য তেলে ভিটামিন 'এ' সমৃদ্ধকরণ ও ভিটামিন 'এ' সমৃদ্ধ ভোজ্যতেল বিক্রয়, সংরক্ষণ, সরবরাহ ও বিপনণ বাধ্যতামূলককরণ সম্পর্কিত আইন ।

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় শিল্পনীতি, ২০১০

২.     জাতীয় লবণনীতি, ২০১১

৩.     সিআইপি (শিল্প) নির্বাচন নীতিমালা, ২০১৪ এবং সিআইপি (শিল্প) ফরম

৪.     জাতীয় হস্ত ও কারুশিল্প নীতিমালা, ২০১৫

৫.     জাতীয় শিল্পনীতি, ২০১৬

৬.     জাতীয় লবণনীতি, ২০১৬

৭.     বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন আইন, ২০১৬ (খসড়া)

৮.     জাতীয় এসএমই নীতি, ২০১৬ (খসড়া)

৯.     জাতীয় মোটর সাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতি, ২০১৭

১০.   ‘Better work and Standards Programme’ (BEST) এর আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিকল্পে ‘National Quality Policy’ প্রণয়ন

১১.   এসএমই ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট স্ট্রাটেজিক পলিসি প্রণয়ন

তথ্য মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও লাইসেন্সিং বিধিমালা, ২০১০

২.     ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা ও লাইসেন্সিং বিধিমালা, ২০১০   

৩.     তথ্য অধিকার (তথ্য প্রকাশ ও প্রচার) প্রবিধানমালা, ২০১০      

৪.     বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিঊট আইন, ২০১৮

৫.     সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিধিমালা

৬.     ছাপাখানা ও প্রকাশনা আইন

নীতি কৌশল

১.     ক্যাবল টিভি নীতিমালা, ২০১০

২.     স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নীতিমালা, ২০১২

৩.     জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা, ২০১৭        

৪.     জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৭       

৫.     যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মান নীতিমালা-২০১৭

৬.     কমিউনিটি রেডিও স্থাপন, সম্প্রচার ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১৭            

৭.     বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালা 

৮.     জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা

৯.     সাংবাদিক সহায়তা ভাতা/অনুদান নীতিমালা

পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০

২.     পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার (সংশোধন) আইন, ২০১৩

৩.     বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৩

৪.     বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড আইন, ২০১৩

৫.     বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কর্মচারী (অবসরভাতা, অবসরজণিত সুবিধাদি ও সাধারণ ভবিষ্য তহবেল) প্রবিধানমালা, ২০১৫

৬.     পাট আইন, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     পাট নীতি, ২০১১

২.     বস্ত্রনীতি, ২০১৭

শ্রম ও কর্মসংস্হান মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বিধিমালা, ২০১০

২.     ব্যক্তিমালিকানাধীন বেসরকারি সড়ক পরবিহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বিধিমালা, ২০১২

৩.     বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩

৪.     বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধন) আইন, ২০১৩

৫.     বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫

৬.     বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন (সংশোধিত) বিধিমালা, ২০১৫

নীতি কৌশল

১.     শিশুশ্রম নিরসন নীতিমালা, ২০১০

২.     জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, ২০১১

৩.     বাংলাদেশ শ্রম নীতি, ২০১২

৪.     জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা, ২০১৩

৫.     গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি, ২০১৫

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (সার্ভিস, গঠন, সার্ভিস পদে নিয়োগ এবং সাময়িক বরখাস্তকরণ, বরখাস্তকরণ ও অপসারণ) বিধিমালা, ২০০৭

২.     বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুর, নিয়ন্ত্রণ, শৃংখলা-বিধান এবং চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলী) বিধিমালা, ২০০৭

ভূমি মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০০৯

২.     বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১০

৩.     বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ প্রণয়ন

৪.     ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০১১

৫.     বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১১

নীতি কৌশল

১.     সরকারি জলমহাল নীতি, ২০০৯

২.     সরকারি জলমহাল নীতি, ২০০৯-এর সংশোধন

৩.     হোটেল/মোটেলের জন্য সরকারি খাসজমি বন্দোবস্তের সংশোধিত নীতিমালা

৪.     লবন মহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা

৫.     চিংড়ি মহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা

৬.     ভূমি সংশ্লিষ্ট আইনের প্রাসঙ্গিক ধারাসমূহের সংকলন

৭.     সিকস্তি ও পয়স্তি রেগুলেশন

স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     উপজেলা পরিষদ (রহিত আইন পুনঃপ্রচলন ও সংশোধন) আইন, ২০০৯

২.     উপজেলা পরিষদের (কার্যক্রম বাস্তবায়ন) বিধিমালা, ২০১০

৩.     উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (দায়িত্ব, কর্তব্য এবং আর্থিক সুবিধা) বিধিমালা, ২০১০

৪.     উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০১১

৫.     উপজেলা পরিষদ বাজেট (প্রণয়ন ও অনুমোদন) বিধিমালা, ২০১০

৬.     উপজেলা পরিষদ (চুক্তি সম্পাদন) বিধিমালা, ২০১০

৭.     ইউনিয়ন পরিষদ (পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ও চাকুরির শর্তাবলী) বিধিমালা, ২০১১

৮.     ইউনিয়ন পরিষদ (পরিষদের সম্পত্তির ব্যবস্হপনা, সংরক্ষণ ও হস্তান্তর) বিধিমালা, ২০১২

৯.     ইউনিয়ন পরিষদ (পরিষদের পক্ষে চুক্তি সম্পাদন) বিধিমালা, ২০১২।

১০.   সমবায় সমিতি আইন, ২০০১ (সংশোধিত ২০১৩ )

১১.   ইউনিয়ন পরিষদ (উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ণ, নিয়ন্ত্রণ ও বাস্তবায়ন) বিধিমালা, ২০১৩

১২.   স্হানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) গ্রাম পুলিশ বাহিনীর গঠন প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা ও চাকুরির শর্তাবলী সম্পর্কিত বিধিমালা, ২০১৫

১৩.   স্হানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯, ২০১৫ (সংশোধন)

১৪.   উপজেলা পরিষদ( সংশোধিন) আইন, ২০১৫

১৫.   জেলা পরিষদ (ওয়ার্ডের সীমা নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০১৬

১৬.   ইউনিয়ন পরিষদ (চেয়ারম্যানও সদস্যগণের ক্ষমতা ও কার্যাবলী) বিধিমালা, ২০১৬

১৭.   ইউনিয়ন পরিষদ (পরিষদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ পদ্ধতি) বিধিমালা, ২০১৬

১৮.   জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের দায়িত্ব ও কার্যাবলী বিধিমালা, ২০১৭

১৯.   জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যের ছুটি বিধিমালা, ২০১৭

২০.  জেলা পরিষদের বাজেট বিধিমালা, ২০১৭

২১.   জেলা পরিষদ (সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) বিধিমালা, ২০১৭

২২.  ইউনিয়ন পরিষদ (পরিষদ পরিদর্শনের পদ্ধতি এবং পরিদর্শকের ক্ষমতা) বিধিমালা

২৩.  ইউনিয়ন পরষিদ (সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের ক্ষমতা ও বিশেষ কার্যাবলী) বিধিমালা

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় সমবায় পুরস্কার নীতিমালা, ২০১১

২.     জাতীয় সমবায় নীতি, ২০১২

৩.     জাতীয় পল্লী উন্নয়ন পদক নীতিমালা, ২০১২

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     পরিসংখ্যান আইন, ২০১৩

২.     পরিসংখ্যান বিধিমালা, ২০১৪

৩.     পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সংশোধন আইন

নীতি কৌশল

১.     পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০১৬

২.     এসএসআরসি নীতিমালা এবং কর্মকৌশল, ২০১৭

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     ব্রডব্যাণ্ড নীতিমালা, ২০০৯

২.     তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯

৩.     তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত বিধিমালা, ২০০৯

৪.     আইএলডিটিএস নীতিমালা, ২০১০

৫.     তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা প্রবিধিমালা, ২০১০

৬.     তথ্য প্রকাশ ও প্রচার প্রবিধানমালা, ২০১০

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ নীতিমালা-২০১৫

২.     তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে গবেষণার জন্য ফেলোশিপ ও বৃত্তি প্রদান এবং উদ্ভাবনীমূলক কাজের জন্য অনুদান প্রদান সম্পর্কিত নীতিমালা-২০১৬

৩.     সাইবার সিকিউরিটি স্ট্রাটেজি গাইডলাইন -২০১৬

৪.     সাইবার সিকিউরিটি স্ট্রাটেজি

৫.     তথ্য নিরাপত্তা পলিসি গাইডলাইন

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     ওয়াক্‌ফ (সম্পত্তি হস্তান্তর ও উন্নয়ন) বিশেষ বিধান আইন, ২০১৩

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     অভ্যন্তরীণ জলপথ ও তীরভূমিতে স্থাপনাদি নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০১০

২.     বাংলাদেশ নৌ-বাণিজ্যিক জাহাজ অফিসার ও নাবিক প্রশিক্ষণ, সনদায়ন, নিয়োগ, কর্মঘন্টা এবং ওয়াচকিপিং বিধিমালা, ২০১১

৩.     Bangladesh Merchant Shipping Officers and Ratings Training, Certification, Recruitment, Work Hours and Watch keeping Rules, 2011

৪.     পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৩

৫.     জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন, ২০১৩

৬.     পায়রা বন্দর প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) আইন, ২০১৬

৭.     বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন আইন, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     নৌপরিবহন অধিদপ্তর হতে Seaman's Identity Card & Record Book প্রাপ্ত, নির্বাচিত/তালিকাভুক্ত দক্ষ সুপারনিউমারারী ওয়েল্ডার/ফিটার ও Hyundai Engineering & Construction Co. Ltd. এর জাহাজের নাবিকদের অনুকূলে সিডিসি প্রদানের নীতিমালা।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি(পুনর্বাসন) আইন, ২০১১

২.     প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩

৩.     নিউরোডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩

৪.     শিশু আইন, ২০১৩

৫.     সমাজসেবা অধিদপ্তর (গেজেটেড কর্মকর্তা ও নন-গেজেটেড কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৩

৬.     ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি(পুনর্বাসন) বিধিমালা, ২০১৫

৭.     নিউরোডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট বিধিমালা, ২০১৫

৮.     প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা বিধিমালা, ২০১৫

৯.     শিশু বিধি, ২০১৬

নীতি কৌশল

১.     বেসরকারি এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ ও বন্টন নীতিমালা, ২০০৯

২.     প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কীত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা, ২০০৯

৩.     বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ অনুদান বন্টন নীতিমালা, ২০১১

৪.     পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১১

৫.     চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

৬.     ক্যান্সার, কিডনী ও লিভার সিরোসিস রোগীর আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

৭.     হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

৮.     দলিত, হরিজন ও বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

৯.     প্র্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

১০.   অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

১১.   বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

১২.   বয়স্ক ভাতা কার্যক্রম বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০১৩

১৩.   জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা, ২০১৩

১৪.   এনডিডি (Neuro-Developmental Disabilities) সম্পর্কিত বিশেষ সমন্বিত শিক্ষা নীতিমালা, ২০১৮

১৫.   প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে ঋণ সহায়তা কার্যক্রম নীতিমালা

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০

২.     পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা বিধিমালা, ২০১৩

৩.     ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪

৪.     বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় শিশু নীতি, ২০১১

২.     জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, ২০১১

৩.     জাতীয় শিশু নীতি, ২০১১

৪.     শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশে সমন্বিত নীতি, ২০১৩

৫.     শিশুর প্রারম্ভিক যত্ন ও বিকাশের সমন্বিত নীতি, ২০১৩

৬.     বেগম রোকেয়া পদক নীতিমালা, ২০১৭

৭.     দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকাল ভাতা প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা

৮.     নির্যাতিত, দুঃস্থ মহিলা ও শিশু কল্যাণ তহবিল নীতিমালা

৯.     কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল নীতিমালা

১০.   সেলাই মেশিন বরাদ্দের নীতিমালা

১১.   ভিজিডি নীতিমালা

১২.   বেগম রোকেয়া পদক প্রদানের জন্য অনুসৃতব্য নীতিমালা

১৩.   ‘মহিলা ও শিশু ডায়াবেটিস, এন্ডোক্রিন ও মেটাবলিক হাসপাতাল, সেগুন বাগিচা’ শীর্ষক প্রকল্পের আউতায় সেবাগ্রহনকারী হতদরিদ্র নারী ও শিশুদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা

১৪.   ‘৫০ শয্যা বিশিষ্ট মহিলা ও শিশু ডায়াবেটিস, এন্ডোক্রিন ও মেটাবলিক হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকা’ শীর্ষক প্রকল্পের আউতায় সেবাগ্রহনকারী হতদরিদ্র নারী ও শিশুদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা

১৫.   জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতির বাস্তবায়ন এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ২টি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩

২.     অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৪

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় পানি নীতি, ২০১৩

২.     সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা, ২০১৭

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০১১

২.     যুব সংগঠন (নিবন্ধন এবং পরিচলনা) আইন, ২০১৫

৩.     শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইয়ুথ ডিভেলপমেন্ট আইন, ২০১৫

৪.     যুব কল্যাণ তহবিল আইন, ২০১৬

৫.     শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৭

৬.     যুব সংগঠন (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিধিমালা, ২০১৭

৭.     প্রস্তাবিত জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৭

৮.     শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮

৯.     জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন

১০.   বিকেএসপি আইন

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় যুব পুরস্কার নীতিমালা, ২০১০

২.     জাতীয় যুবনীতি, ২০১৭

৩.     জাতীয় ক্রীড়া নীতি

৪.     ন্যাশনাল সার্ভিস নীতি

৫.     কল্যাণ অনুদান নীতিমালা

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় (কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে দেশের সরকারি হাট-বাজারসমূহের ইজারালব্দ আয়ের ৪% অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৫

২.     বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানীভাতা বিতরণ নীতিমালা, ২০১৩

৩.     যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা,শহীদ ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং বীরশ্রেষ্ঠ ও তারামন বীরপ্রতীক পরিবারের সদস্যদের রেশন নীতিমালা, ২০০৯

৪.     বঙ্গবন্ধু ছাত্রবৃত্তি নীতিমালা, ২০১২

৫.     খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান নীতিমালা, ২০১৩

৬.     হাট-বাজার হতে আয়লব্দ ৪% অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১৬ এর কমিটি সংশোধন সংক্রান্ত পরিপত্র

৭.     খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বিতরণ নীতিমালা, ২০১৬

৮.     ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুতে সরকারিভাবে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত সমন্বিত নীতিমালা’।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন, ২০১৩

২.     বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (অনাবাসি বাংলাদেশি) নির্বাচন নীতিমালা, ২০১৫

২.     প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি, ২০১৬

৩.     বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইংসমূহে এ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদায়ন ও বদলী নীতিমালা, ২০১৬

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর আইন, ২০১০

২.     ন্যাশনাল ইনষ্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি আইন, ২০১০

৩.     বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার আইন, ২০১০

৪.     বাংলাদেশ ন্যাশনাল সায়েন্টিফিক এন্ড টেকনিক্যাল ডকুমেন্টেশন সেন্টার (ব্যান্সডক) আইন, ২০১০

৫.     বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়ন ট্রাস্ট আইন, ২০১১

৬.     বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২

৭.     বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ আইন, ২০১৩

৮.     বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৫

৯.     পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আইন, ২০১৫

১০.   বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট আইন, ২০১৬

১১.   বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মচারি চাকুরি প্রবিধানমালা, ২০১৭

১২.   ব্যান্সডক এর কর্মচারি চাকুরি প্রবিধানমালা, ২০১৭

নীতি কৌশল

১.     জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি, ২০১১

২.     জাতীয় জীবপ্রযুক্তি নীতি, ২০১২

৩.     জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ নীতিমালা, ২০১৩

৪.     তথ্য অবমুক্তকরণ নীতিমালা, ২০১৫

৫.     বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট কর্তৃক ফেলোশিপ প্রদান সম্পর্কিত নীতিমালা, ২০১৮

৬.     উপজেলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাব গঠন নীতিমালা

৭.     বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিজ্ঞান ক্লাবসমূহে আর্থিক অনুদানের সাধারণ নীতিমালা

৮.     প্রযুক্তি উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়নমূলক প্রকল্পে অনুদান সংক্রান্ত সংশোধিত সাধারণ নীতিমালা

৯.     বিজ্ঞানসেবী সংস্থা ও বিজ্ঞানভিত্তিক পেশাজীবিকে আর্থিক অনুদান প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা (সংশোধিত)

দূর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়

আইন ও বিধিমালা

১.     দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্থায়ী আদেশাবলী (SoD), ২০১০

২.     দূর্যোগ ব্যবস্হাপনা আইন, ২০১২

৩.     দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (কমিটি গঠন ও কার্যাবলী) বিধিমালা, ২০১৫

নীতি কৌশল

১.     মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর সংশোধনী

২.     ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, তদারকি এবং ব্যবস্থাপনা নীতিমালা (ইংরেজি ভার্সন)-২০১১

৩.     ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, তদারকি এবং ব্যবস্হাপনা নীতিমালা, ২০১১ (বাংলা ভার্সন)

৪.     জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১০-২০১৫

৫.     জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা, ২০১৫

৬.     EGPP বাস্তবায়ন নির্দেশিকা

৭.     কাজের বিনিময়ে খাদ্য বাস্তবায়ন নীতিমালা

৮.     অনুদান হিসাবে প্রাপ্ত কোরবানির গোশ্‌ত বিতরণ নির্দেশিকা

৯.     মানবিক সহায়তা কর্মসূচী বাস্তবায়ন নির্দেশিকা

১০.   টিআর বাস্তবায়ন নির্দেশিকা

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট

আইন ও বিধিমালা

১.     Criminal Rules and orders (practice and procedure of subordinate courts), 2009, Volume -I and Volume-II (2011)

২.     Bangladesh Superme Court (High court Division) Rules-1973 (সংশোধিত, ২০১২)

৩.     Guidelines for Supreme Court Judges for Claiming Medical Expenses Incurred Abroad, 2013

৪.     Guidelines for Supreme Court Judges for Claiming Medical Expenses Incurred Abroad, 2015

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

আইন ও বিধিমালা

১.     মূল্য সংযোজন কর ও সম্পুরক শুল্ক আইন, ২০১২

২.     বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি বিধিমালা, ২০১২

৩.     শুল্ক আইন, ২০১৪

৪.     উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভী (আরোপ ও আদায় ) আইন, ২০১৫

৫.     মূল্য সংযোজন কর ও শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬

৬.     মূল্য সংযোজন কর ও সম্পুরক শুল্ক বিধিমালা, ২০১৬

নীতি কৌশল

১.     আমদানি নীতি আদেশ, ২০১৫-১৮

২.     রপ্তানি নীতি, ২০১৫-১৮

সারণি ৩: ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল ও সংশোধিত বাজেট বরাদ্দ

(কোটি টাকায়)

খাত

বাজেট ২০১৭-১৮

সংশোধিত ২০১৭-১৮

২০১৭-১৮ মার্চ পর্যন্ত প্রকৃত

মোট রাজস্ব আয়

২,৮৭,৯৯০

২,৫৯,৪৫৪

১,৬২,১১০

(১৩.০)

(১১.৬)

(৭.২)

এনবিআর রাজস্ব

২,৪৮,১৯০

২,২৫,০০০

১,৪০,৭১৫

এনবিআর বহির্ভূত রাজস্ব

৮,২৫৮

৭,২০২

৫,৪৩৪

কর ব্যতীত প্রাপ্তি

৩১,৫৪২

২৭,২৫২

১৫,৯৬১

মোট ব্যয়

৪,০০,২৬৬

৩,৭১,৪৯৫

১,৬৭,১৭৭

(১৮.০)

(১৬.৬)

(৭.৫)

পরিচালন আবর্তক ব্যয়

২,০৯,১৪২

১,৯৩,৮২৮

১,১২,৫১৪

(৯.৪)

(৮.৭)

(৫.০)

উন্নয়ন ব্যয়

১,৫৯,০১৩

১,৫৩,৬৮৮

৩৯,৯৩৮

(৭.২)

(৬.৯)

(১.৮)

তন্মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

১,৫৩,৩৩১

১,৪৮,৩৮১

৩৯,৪৭০

(৬.৯)

(৬.৬)

(১.৮)

অন্যান্য ব্যয়

৩২,১১১

২৩,৯৭৯

১৪,৭২৫

(১.৪)

(১.১)

(০.৭)

বাজেট ঘাটতি

-১,১২,২৭৬

-১,১২,০৪১

-৫,০৬৭

(-৫.০)

(-৫.০)

(-০.২)

অর্থায়ন

 

 

 

বৈদেশিক উৎস

৫১,৯২৪

৪৬,০২৪

২,১৭১

(২.৩)

(২.১)

(০.১)

অভ্যন্তরীণ উৎস

৬০,৩৫১

৬৬,০১৭

২,৮৯০

(২.৭)

(২.৯)

(০.১)

তন্মধ‍্যে ব্যাংক উৎস

২৮,২০৩

১৯,৯১৭

-১১,৮১৮

(১.৩)

(০.৯)

(-০.৫)

জিডিপি

২২,২৩,৬০০

২২,৩৮,৪৯৮

২২,৩৮,৪৯৮

উৎস: অর্থ বিভাগ; বন্ধনিতে জিডিপি’র শতাংশ; ক= বাজেট প্রণয়নকালীন নামিক জিডিপি; খ= নামিক জিডিপির সাময়িক হিসাব।

সারণি ৪: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত আয় ও ব্যয়ের প্রাক্কলন

(কোটি টাকায়)

খাত

বাজেট

২০১৮-১৯

সংশোধিত

২০১৭-১৮

বাজেট

২০১৭-১৮

হিসাব

২০১৬-১৭                       

মোট রাজস্ব আয়

৩,৩৯,২৮০

২,৫৯,৪৫৪

২,৮৭,৯৯০

২,০১,২১০

(১৩.৪)

(১১.৬)

(১৩.০)

(১০.৩)

এনবিআর কর

২,৯৬,২০১

২,২৫,০০০

২,৪৮,১৯০

১,৭১,৬৩৬

এনবিআর বহির্ভূত কর

৯,৭২৭

৭,২০২

৮,২৫৮

৬,৪৩৮

কর ব্যতীত প্রাপ্তি

৩৩,৩৫২

২৭,২৫২

৩১,৫৪২

২৩,১৩৬

মোট ব্যয়

৪,৬৪,৫৭৩

৩,৭১,৪৯৫

৪,০০,২৬৬

২,৬৯,৪৯৯

(১৮.৩)

(১৬.৬)

(১৮.০)

(১৩.৮)

পরিচালন আবর্তক ব্যয়

২,৫১,৬৬৮

১,৯৩,৮২৮

২,০৯,১৪১

১,৬৪,৪৮৮

(৯.৯)

(৮.৭)

(৯.৪)

(৮.৪)

উন্নয়ন ব্যয়

১,৭৯,৬৬৯

১,৫৩,৬৮৮

১,৫৯,০১৩

৮৮,০৯০

(৭.১)

(৬.৯)

(৭.২)

(৪.৫)

তন্মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

১,৭৩,০০০

১,৪৮,৩৮১

১,৫৩,৩৩১

৮৪,০৯৩

(৬.৮)

(৬.৬)

(৬.৯)

(৪.৩)

অন্যান্য ব্যয়

৩৩,২৩৬

২৩,৯৭৯

৩২,১১২

১৬,৯২১

(১.৩)

(১.১)

(১.৪)

(০.৯)

বাজেট ঘাটতি

১,২৫,২৯৩

১,১২,০৪১

১,১২,২৭৬

৬৮,২৮৯

(৪.৯)

(৫.০)

(৫.০)

(৩.৫)

অর্থায়ন

 

 

 

 

বৈদেশিক উৎস (অনুদান সহ)

৫৪,০৬৭

৪৬,০২৪

৫১,৯২৪

১২,৩০৪

(২.১)

(২.১)

(২.৩)

(০.৬)

অভ্যন্তরীণ উৎস

৭১,২২৬

৬৬,০১৭

৬০,৩৫২

৫৫,৯৮৫

(২.৮)

(২.৯)

(২.৭)

(২.৯)

তন্মধ্যে ব্যাংক উৎস

৪২,০২৯

১৯,৯১৭

২৮,২০২

-৮,৩৭৯

(১.৭)

(০.৯)

(১.৩)

(-০.৪)

জিডিপি

২৫,৩৭,৮৪৯

২২,৩৮,৪৯৮

২২,২৩,৬০০

১৯,৫৬,০৫৫

উৎস: অর্থ বিভাগ; বন্ধনিতে জিডিপি’র শতাংশ দেখানো হয়েছে; ক= বাজেট প্রণয়নকালীন নামিক জিডিপি; খ= নামিক জিডিপির সাময়িক হিসাব।

সারণি ৫: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির খাতওয়ারি বরাদ্দ

(কোটি টাকায়)

মন্ত্রণালয়/বিভাগ

বাজেট
২০১৮-১৯

সংশোধিত
২০১৭-১৮

বাজেট
২০১৭-১৮

হিসাব
২০১৬-১৭

হিসাব
২০১৫-১৬

হিসাব
২০১৪-১৫

হিসাব
২০১৩-১৪

(ক) মানব সম্পদ

 

 

 

 

 

 

 

১. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

৮,৩১২

৭,৪০২

৮,৭৫২

৫,৪৫১

৪,৯২৪

৩,৯৯৪

৪,৩৭৪

(৪.৮)

(৫.০)

(৫.৭)

(৬.৫)

(৬.১)

(৬.২)

(৭.৯)

২. স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ

৯,০৪১

৬,৯২৮

৭,৮৪২

৩,০৭৮

৩,৬৫২

৩,৬৭১

৩,৪১৭

(৫.২)

(৪.৭)

(৫.১)

(৩.৭)

(৪.৫)

(৫.৭)

(৬.২)

৩. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ

৬,০০৬

৪,৩৪৭

৬,১৬৫

৫,০৪৫

৩,৯০৮

৪,০৮৮

৩,০৩৩

(৩.৫)

(২.৯)

(৪.০)

(৬.০)

(৪.৮)

(৬.৩)

(৫.৫)

৪.অন্যান্য

২৩,০৯৩

১৮,০৫৯

২১,২৭০

৮,২৮৩

৪,৫২৫

৪,৪৬৬

৩,৩৫৫

(১৩.৩)

(১২.২)

(১৩.৯)

(৯.৮)

(৫.৬)

(৬.৯)

(৬.১)

উপ-মোট:

৪৬,৪৫২

৩৬,৭৩৬

৪৪,০২৯

২১,৮৫৭

১৭,০০৯

১৬,২১৯

১৪,১৭৯

(২৬.৯)

(২৪.৮)

(২৮.৭)

(২৬.০)

(২১.০)

(২৫.০)

(২৫.৭)

(খ) কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন

 

 

 

 

 

 

 

৫. স্থানীয় সরকার বিভাগ

২৫,৩৩৮

২২,৭৯১

২১,৪৬৫

১২,৩৬৫

১৫,২৮৫

১৩,৯৮৩

১০,৫৪৪

(১৪.৬)

(১৫.৪)

(১৪.০)

(১৪.৭)

(১৮.৯)

(২১.৫)

(১৯.১)

৬. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

৫,৬০৬

৪,৭৫১

৪,৬৭৫

৩,৬৭১

২,৭১৮

২,০৬১

১,৯৯৮

(৩.২)

(৩.২)

(৩.০)

(৪.৪)

(৩.৪)

(৩.২)

(৩.৬)

৭.কৃষি মন্ত্রণালয়

১,৮৪৪

১,৪৯৪

১,৮০০

১,৬২০

১,৭৩৪

১,৪০৬

১,২৭৩

(১.১)

(১.০)

(১.২)

(১.৯)

(২.১)

(২.২)

(২.৩)

৮.অন্যান্য

৪,৮৬৪

৪,৫৪৭

৪,৫২৫

২,৯৭৭

২,৬৫০

২,৬২৬

২,২৭৭

(২.৮)

(৩.১)

(৩.০)

(৩.৫)

(৩.৩)

(৪.০)

(৪.১)

উপ-মোট:

৩৭,৬৫২

৩৩,৫৮৩

৩২,৪৬৫

২০,৬৩৩

২২,৩৮৭

২০,০৭৬

১৬,০৯২

(২১.৮)

(২২.৬)

(২১.২)

(২৪.৫)

(২৭.৭)

(৩০.৯)

(২৯.২)

(গ) জ্বালানী অবকাঠামো

 

 

 

 

 

 

 

৯. বিদ্যুৎ বিভাগ

২২,৮৯৩

২২,৭৫৭

১৮,৮৪৫

১৩,৪৪৭

১৫,৮৬৪

৮,৩০৫

৮,৩১১

(১৩.২)

(১৫.৩)

(১২.৩)

(১৬.০)

(১৯.৬)

(১২.৮)

(১৫.১)

১০. জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ

১,৮২০

১,৩৪৬

২,১১১

১,০৯৯

১,০৫৬

১,০১৪

১,৮৮১

(১.১)

(০.৯)

(১.৪)

(১.৩)

(১.৩)

(১.৬)

(৩.৪)

উপ-মোট:

২৪,৭১৩

২৪,১০৩

২০,৯৫৬

১৪,৫৪৬

১৬,৯২০

৯,৩১৯

১০,১৯২

(১৪.৩)

(১৬.২)

(১৩.৭)

(১৭.৩)

(২০.৯)

(১৪.৪)

(১৮.৫)

(ঘ) যোগাযোগ বকাঠামো

 

 

 

 

 

 

 

১১. রেলপথ মন্ত্রণালয়

১১,১৫৫

১০,৮১৭

১৩,০০১

২,০৫৩

৩,৩৪৫

৩,২৮১

২,৮৫৮

(৬.৪)

(৭.৩)

(৮.৫)

(২.৪)

(৪.১)

(৫.১)

(৫.২)

১২. সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ

২০,৮১৭

১৭,৩১৭

১৬,৮২০

৭,৯৫৩

৬,৫০৭

৪,২৯৮

৩,৬২৫

(১২.০)

(১১.৭)

(১১.০)

(৯.৫)

(৮.০)

(৬.৬)

(৬.৬)

১৩. সেতু বিভাগ

৯,১১২

৬,৮৬৪

৮,৪০৪

৩,৭৩৮

৫,২৬৬

৫,২৯৯

২,০৬৭

(৫.৩)

(৪.৬)

(৫.৫)

(৪.৪)

(৬.৫)

(৮.২)

(৩.৭)

১৪.অন্যান্য

৪,৩৬৬

২,৯৬৫

২,৮২৯

২,২৯৯

১,৩৬২

৭৫৭

৮০৫

(২.৫)

(২.০)

(১.৮)

(২.৭)

(১.৭)

(১.২)

(১.৫)

উপ-মোট:

৪৫,৪৫০

৩৭,৯৬৩

৪১,০৫৪

১৬,০৪৩

১৬,৪৮০

১৩,৬৩৫

৯,৩৫৫

(২৬.৩)

(২৫.৬)

(২৬.৮)

(১৯.১)

(২০.৪)

(২১.০)

(১৭.০)

মোট:

১,৫৪,২৬৭

১,৩২,৩৮৫

১,৩৮,৫০৪

৭৩,০৭৯

৭২,৭৯৬

৫৯,২৪৯

৪৯,৮১৮

(৮৯.২)

(৮৯.২)

(৯০.৩)

(৮৬.৯)

(৯০.০)

(৯১.৩)

(৯০.৪)

১৫. অন্যান্য

১৮,৭৩৩

১৫,৯৯৬

১৪,৮২৭

১১,০১৪

৮,০৬৭

৫,৬৭০

৫,৩১৫

(১০.৮)

(১০.৮)

(৯.৭)

(১৩.১)

(১০.০)

(৮.৭)

(৯.৬)

মোট এডিপি

১,৭৩,০০০

১,৪৮,৩৮১

১,৫৩,৩৩১

৮৪,০৯৩

৮০,৮৬৩

৬৪,৯১৯

৫৫,১৩৩

উৎস: অর্থ বিভাগ; বন্ধনিতে মোট এডিপি বরাদ্দের শতকরা হার দেখানো হয়েছে।

সারণি ৬: সমগ্র বাজেটের খাতভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ

(কোটি টাকায়)

মন্ত্রণালয়/বিভাগ

বাজেট

২০১৮-১৯

সংশোধিত

২০১৭-১৮

বাজেট

২০১৭-১৮

হিসাব

২০১৬-১৭

হিসাব

২০১৫-১৬

হিসাব

২০১৪-১৫

হিসাব

২০১৩-১৪

(ক) সামাজিক অবকাঠামো

১,২৭,০১৯

১,০৭,৭১৭

১,১৭,২৯৮

৭৭,৪৮৯

৭২,৮৭৮

৫৫,৮৫৭

৫০,৭২৫

(২৭.৩৪)

(২৯.০০)

(২৯.৩১)

(২৮.৭৫)

(৩০.৩৬)

(২৬.৭৪)

(২৬.৮২)

মানব সম্পদ

 

 

 

 

 

 

 

১. শিক্ষা মন্ত্রণালয়

২৪,৮৮৮

২১,৫১৮

২৩,১৪১

২১,৭১১

২১,৫৯০

১৬,১২২

১৪,১৩১

(৫.৩৬)

(৫.৭৯)

(৫.৭৮)

(৮.০৬)

(৮.৯৯)

(৭.৭২)

(৭.৪৭)

২. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

২২,৪৬৬

২০,০৯৮

২২,০২২

১৭,১৯৭

১৬,২৪০

১১,৮৯৮

১১,০৩১

(৪.৮৪)

(৫.৪১)

(৫.৫০)

(৬.৩৮)

(৬.৭৭)

(৫.৭০)

(৫.৮৩)

৩. স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়

১৮,১৫৯

১৫,৩৮০

১৬,১৮২

৩,৬৪৪

১২,৬৯৪

১০,৪১৯

৯,৩৮৫

(৩.৯১)

(৪.১৪)

(৪.০৪)

(১.৩৫)

(৫.২৯)

(৪.৯৯)

(৪.৯৬)

৪. অন্যান্য

৪৭,৬৯৩

৪০,১২৩

৪৩,২২০

২৭,৮৫৩

১৪,৩০০

১১,৯২৬

৯,৫১৫

(১০.২৭)

(১০.৮০)

(১০.৮০)

(১০.৩৪)

(৫.৯৬)

(৫.৭১)

(৫.০৩)

উপ-মোট:

১,১৩,২০৬

৯৭,১১৯

১,০৪,৫৬৫

৭০,৪০৫

৬৪,৮২৪

৫০,৩৬৫

৪৪,০৬২

(২৪.৩৭)

(২৬.১৪)

(২৬.১২)

(২৬.১২)

(২৭.০০)

(২৪.১১)

(২৩.৩০)

খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা

 

 

 

 

 

 

 

৫. খাদ্য মন্ত্রণালয়

৪,১৫৫

১,৯১৬

৩,৮৮১

৩৪৪

১,২৬৯

৭৩৫

৯১৯

(০.৮৯)

(০.৫২)

(০.৯৭)

(০.১৩)

(০.৫৩)

(০.৩৫)

(০.৪৯)

৬. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়

৯,৬৫৮

৮,৬৮২

৮,৮৫২

৬,৭৪০

৬,৭৮৫

৪,৭৫৭

৫,৭৪৪

(২.০৮)

(২.৩৪)

(২.২১)

(২.৫০)

(২.৮৩)

(২.২৮)

(৩.০৪)

উপ-মোট:

১৩,৮১৩

১০,৫৯৮

১২,৭৩৩

৭,০৮৪

৮,০৫৪

৫,৪৯২

৬,৬৬৩

(২.৯৭)

(২.৮৫)

(৩.১৮)

(২.৬৩)

(৩.৩৬)

(২.৬৩)

(৩.৫২)

(খ) ভৌত অবকাঠামো

১,৪৩,৯৮২

১,২৬,১৮৯

১,২৭,০৫৭

৭৬,৪৮৪

৮১,০৬৭

৬৫,১৬৮

৫৮,৫১২

(৩০.৯৯)

(৩৩.৯৭)

(৩১.৭৪)

(২৮.৩৮)

(৩৩.৭৭)

(৩১.২০)

(৩০.৯৪)

 কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন

 

 

 

 

 

 

 

৭. কৃষি মন্ত্রণালয়

১৩,৯১০

১০,৩১৫

১৩,৬০০

৭,৬০৮

১০,৭৩৯

১০,৩৪৫

১২,০৭৫

(২.৯৯)

(২.৭৮)

(৩.৪০)

(২.৮২)

(৪.৪৭)

(৪.৯৫)

(৬.৩৯)

৮. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

৭,০৯৩

৬,১২২

৫,৯২৭

৪,৬৩৬

৩,৬৪৬

২,৮৪৩

২,৭৪৩

(১.৫৩)

(১.৬৫)

(১.৪৮)

(১.৭২)

(১.৫২)

(১.৩৬)

(১.৪৫)

৯. স্থানীয় সরকার বিভাগ

২৯,১৫০

২৬,৫৪০

২৪,৬৬৫

১৫,৩৮৭

১৭,৭০১

১৬,০৬০

১২,৪০৬

(৬.২৭)

(৭.১৪)

(৬.১৬)

(৫.৭১)

(৭.৩৭)

(৭.৬৯)

(৬.৫৬)

১০. অন্যান্য

৮,৭৭৫

৮,০৩৬

৭,৯৩৭

৭,১৭৪

৫,৬৮৩

৫,০৫৪

৪,৫২৬

(১.৮৯)

(২.১৬)

(১.৯৮)

(২.৬৬)

(২.৩৭)

(২.৪২)

(২.৩৯)

উপ-মোট:

৫৮,৯২৮

৫১,০১৩

৫২,১২৯

৩৪,৮০৫

৩৭,৭৬৯

৩৪,৩০২

৩১,৭৫০

(১২.৬৮)

(১৩.৭৩)

(১৩.০২)

(১২.৯১)

(১৫.৭৩)

(১৬.৪২)

(১৬.৭৯)

বিদ্যুৎ ও জ্বালানী

২৪,৯২১

২৪,২৬০

২১,১১৮

১৪,৬২০

১৬,৯৮৪

৯,৩৫৯

১০,২৬৬

(৫.৩৬)

(৬.৫৩)

(৫.২৮)

(৫.৪২)

(৭.০৮)

(৪.৪৮)

(৫.৪৩)

যোগাযোগ অবকাঠামো

 

 

 

 

 

 

 

১১. সড়ক বিভাগ

২৪,৩৮০

২০,৮৭৯

১৯,৬৯৬

১০,৪৯৭

৮,৯০০

৬,৪৬০

৫,৫৬০

(৫.২৫)

(৫.৬২)

(৪.৯২)

(৩.৯০)

(৩.৭১)

(৩.০৯)

(২.৯৪)

১২. রেলপথ মন্ত্রণালয়

১৪,৫৪২

১৩,৮৭৯

১৬,০১৩

৩,৪৮৯

৫,৪১৭

৫,০৯৩

৪,৪৬২

(৩.১৩)

(৩.৭৪)

(৪.০০)

(১.২৯)

(২.২৬)

(২.৪৪)

(২.৩৬)

১৩. সেতু বিভাগ

৯,১১৪

৬,৮৯০

৮,৪৩০

৩,৭৬৯

৫,২৮৮

৫,২৯৯

২,০৬৭

(১.৯৬)

(১.৮৫)

(২.১১)

(১.৪০)

(২.২০)

(২.৫৪)

(১.০৯)

১৪. অন্যান্য

৫,০৪৫

৩,৫৬০

৩,৪১৯

২,৮৫০

১,৮৩৪

১,০৩৬

১,০৬৯

(১.০৯)

(০.৯৬)

(০.৮৫)

(১.০৬)

(০.৭৬)

(০.৫০)

(০.৫৭)

উপ-মোট:

৫৩,০৮১

৪৫,২০৮

৪৭,৫৫৮

২০,৬০৫

২১,৪৩৯

১৭,৮৮৮

১৩,১৫৮

(১১.৪৩)

(১২.১৭)

(১১.৮৮)

(৭.৬৫)

(৮.৯৩)

(৮.৫৬)

(৬.৯৬)

১৫. অন্যান্য সেক্টর

৭,০৫২

৫,৭০৮

৬,২৫২

৬,৪৫৪

৪,৮৭৫

৩,৬১৯

৩,৩৩৮

(১.৫২)

(১.৫৪)

(১.৫৬)

(২.৩৯)

(২.০৩)

(১.৭৩)

(১.৭৭)

(গ) সাধারণ সেবা

১,১৭,৫৪২

৮৩,৪৫৬

৯৯,৭০০

৭২,৫৬৬

৪৮,৮৬০

৩৯,২৭৩

৩৮,৩০০

(২৫.৩০)

(২২.৪৬)

(২৪.৯১)

(২৬.৯৩)

(২০.৩৫)

(১৮.৮০)

(২০.২৫)

জনশৃংখলা ও নিরাপত্তা

২৬,৫৯৪

২৩,৯৮১

২২,৮৫১

১৯,৬৮৬

১৬,৪৭৪

১৩,১৬১

১১,৭৬১

(৫.৭২)

(৬.৪৬)

(৫.৭১)

(৭.৩০)

(৬.৮৬)

(৬.৩০)

(৬.২২)

১৬. অন্যান্য

৯০,৯৪৮

৫৯,৪৭৫

৭৬,৮৪৯

৫২,৮৮০

৩২,৩৮৬

২৬,১১২

২৬,৫৩৯

(১৯.৫৮)

(১৬.০১)

(১৯.২০)

(১৯.৬২)

(১৩.৪৯)

(১২.৫০)

(১৪.০৩)

মোট:

৩,৮৮,৫৪৩

৩,১৭,৩৬২

৩,৪৪,০৫৫

২,২৬,৫৩৯

২,০২,৮০৫

১,৬০,২৯৮

১,৪৭,৫৩৭

(৮৩.৬৩)

(৮৫.৪৩)

(৮৫.৯৬)

(৮৪.০৬)

(৮৪.৪৯)

(৭৬.৭৫)

(৭৮.০২)

(ঘ) সুদ পরিশোধ

৫১,৩৪০

৩৭,৯২০

৪১,৪৬২

৩৫,০৯০

৩৩,০৫৮

৩০,৯৭৩

২৮,০০০

(১১.০৫)

(১০.২১)

(১০.৩৬)

(১৩.০২)

(১৩.৭৭)

(১৪.৮৩)

(১৪.৮১)

(ঙ) পিপিপি ভর্তুকি ও দায়

২২,২০১

৮,৯৮৪

৭,৫০৯

২,৩১০

৩,৬১৪

৪,১৩২

৩,৩৬৭

(৪.৭৮)

(২.৪২)

(১.৮৮)

(০.৮৬)

(১.৫১)

(১.৯৮)

(১.৭৮)

(চ) নীট ঋণ দান ও অন্যান্য

২,৪৮৯

৭,২২৯

৭,২৪০

৫,৫৬০

৫৭০

১৩,৪৬৭

১০,১৯৪

(০.৫৪)

(১.৯৫)

(১.৮১)

(২.০৬)

(০.২৪)

(৬.৪৫)

(৫.৩৯)

মোট বাজেট:

৪,৬৪,৫৭৩

৩,৭১,৪৯৫

৪,০০,২৬৬

২,৬৯,৪৯৯

২,৪০,০৪৭

২,০৮,৮৭০

১,৮৯,০৯৮

উৎস: অর্থ বিভাগ; বন্ধনিতে মোট বাজেটের শতকরা হার দেখানো হয়েছে।

সারণি ৭: মন্ত্রণালয়/বিভাগওয়ারি বাজেট বরাদ্দ

(কোটি টাকায়)

মন্ত্রণালয়/বিভাগ

বাজেট

২০১৮-১৯

সংশোধিত

২০১৭-১৮

বাজেট

২০১৭-১৮

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়

২৩

২২

২২

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

৩৩২

৩১৫

৩১৫

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

২,৮০১

৪,৮০৪

১,৪৫৭

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

১৪৭

৮৩

৯৫

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

১৮০

১৬৮

১৬৫

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়

১,৮৯৫

৯৫৩

১,০৭১

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

২,৬২৪

২,৫১৮

২,০৪৬

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন

৭৭

৮০

৭৪

অর্থ বিভাগ

১,১৭,১৪২

৬৩,৯৭২

৯০,৬৭২

বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয়

২১৫

১৯৫

১৯৬

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ

২,৪২৭

২,০৪৪

২,২০৬

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ

২,৬২২

২,৩৪৪

২,৫৪১

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ

৩,২১৯

২,৭৬৩

২,১৮১

পরিকল্পনা বিভাগ

১,৩৮০

৭১৪

১,৩৩২

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ

১৩৫

১১২

১০০

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ

৫৯৯

৫৬৯

৫১৮

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

৫৫৬

৩১২

৬১২

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

১,২৫০

১,২১৭

১,১৮৯

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়

২৯,০৬৬

২৬,৪০০

২৫,৭৪০

সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ

৩৫

৩০

৩০

আইন ও বিচার বিভাগ

১,৫২২

১,৪৭৮

১,৪২৩

জননিরাপত্তা বিভাগ

২১,৪২৪

১৯,৩৯৭

১৮,২৮৮

লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ

৩৫

২৬

২২

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়

২২,৪৬৫

২০,০৯৫

২২,০২১

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ

২৪,৮৯৫

২১,৫২৪

২৩,১৪৭

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়

১২,২০১

৯,৬৯১

১১,০৩৮

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ

১৮,১৬৬

১৫,৩৮৬

১৬,২০৩

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ

২,৬৮১

৩,৪৭৯

৩,৯৭৪

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়

৫,৫৯১

৪,৮১৬

৪,৮৩২

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়

৩,৪৯০

২,৬৩৩

২,৫৭৬

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়

২২৭

১৯২

২৬২

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

৪,৯৬৩

৩,৭৮৪

৩,৭৩৪

তথ্য মন্ত্রণালয়

১,১৬৬

৮৫১

১,১৪৬

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়

৫০৯

৩৯৬

৪১৭

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

১,১৬৮

৯৭৫

৬৫৯

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

১,৪৯৮

১,১৯০

১,৩৮৭

স্থানীয় সরকার বিভাগ

২৯,১৫৩

২৬,৫৪২

২৪,৬৭৪

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ

২,২০৮

২,১৯৬

১,৮৮৪

শিল্প মন্ত্রণালয়

১,৩৫২

১,৩৫২

১,৮২৫

প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়

৫৯৫

৫২৮

৬৮৮

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়

৭৩৮

৭৭৩

৮৯৫

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ

১,৯৮৪

১,৪৪০

২,২২৪

কৃষি মন্ত্রণালয়

১৩,৯১৪

১০,৩১৯

১৩,৬০৪

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

১,৮৬৮

১,৭৬১

১,৯২৯

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়

১,২৬৯

৮৯১

১,১১৯

ভূমি মন্ত্রণালয়

২,১১৪

১,৯৪৪

১,৮৫৩

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়

৭,০৯৩

৬,১২২

৫,৯২৬

খাদ্য মন্ত্রণালয়

৪,৫২৪

৫,৮১১

৪,২৪২

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়

৯,৬৫৮

৮,৬৮২

৮,৮৫৩

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ

২৪,৩৮০

২০,৮৮০

১৯,৬৯৭

রেলপথ মন্ত্রণালয়

১৪,৫৫৭

১৩,৮৯৮

১৬,০৩২

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়

৩,৫৩৭

২,৯০৬

২,৭৩২

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়

১,৫০৮

৬৫৫

৬৮৭

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ

৩,৩৭৯

১,৭৪৫

২,৫২১

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়

১,৩০৯

১,২৪৩

১,১৫০

বিদ্যুৎ বিভাগ

২২,৯৩৬

২২,৮২১

১৮,৮৯৪

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

৪,২৬১

৩,৮৪৯

৩,৯৮৬

দুর্নীতি দমন কমিশন

১১৭

৯৪

১০১

সেতু বিভাগ

৯,১১৪

৬,৮৯০

৮,৪৩০

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ

৫,৭০২

৫,১৪১

৫,২৭১

সুরক্ষা সেবা বিভাগ

৩,৩৫০

২,৮৪৬

২,৮৮৩

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ

৫,২২৭

৪,৬৩৮

৪,৪৭৫

সর্বমোট:

৪,৬৪,৫৭৩

৩,৭১,৪৯৫

৪,০০,২৬৬

উৎস: অর্থ বিভাগ।

সারণি ৮: আর্থ-সামাজিক খাতে অগ্রগতির চিত্র

বছর

প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল

(বছর)

জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার

(%)

দরিদ্র জনসংখ্যা (%)

অতিদরিদ্র জনসংখ্যা (%)

সাক্ষরতার হার

(%)

শিশু মৃত্যু হার

(প্রতি হাজার জীবিত জন্মে)

২০০৬

৬৫.৪

১.৪৯

৩৮.৪

২৪.২

৫২.৩

৪৫.০

২০০৭

৬৬.৬

১.৪৭

৩৬.৮

২২.৬

৫৩.৩

৪৩.০

২০০৮

৬৬.৮

১.৪৫

৩৫.১

২১.০

৫৪.৪

৪১.০

২০০৯

৬৭.২

১.৩৬

৩৩.৪

১৯.৩

৫৫.৫

৩৯.০

২০১০

৬৭.৭

১.৩৬

৩১.৫

১৭.৬

৫৬.৮

৩৬.০

২০১১

৬৯.০

১.৩৭

২৯.৯

১৬.৫

৫৫.৮

৩৫.০

২০১২

৬৯.৪

১.৩৬

২৮.৫

১৫.৪

৫৬.৩

৩৩.০

২০১৩

৭০.৪

১.৩৭

২৭.২

১৪.৬

৫৭.২

৩১.০

২০১৪

৭০.৭

১.৩৭

২৬.০

১৩.৮

৫৮.৬

৩০.০

২০১৫

৭০.৯

১.৩৭

২৪.৮

১২.৯

৬৩.৬

২৯.০

২০১৬

৭১.৬

১.৩৬

২৪.৩

১২.৯

৭১.০

২৮.০

উৎস: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ।

সারণি ৯: রাজস্ব খাতের কতিপয় সূচকের অগ্রগতি

(কোটি টাকায়)

অর্থবছর

রাজস্ব আয়

এনবিআর

নন-এনবিআর

এনটিআর

মোট ব্যয়

এডিপি

২০০৫-০৬

৪২,৫৬৬

৩২,৪৪৬

১,৫২৬

৮,৫৯৪

৫৯,৫৩৬

১৯,৬৩৩

(৮.৮)

(৬.৭)

(০.৩)

(১.৮)

(১২.৩)

(৪.১)

২০০৬-০৭

৪৮,৫৪১

৩৬,১৭৭

১,৮৫৪

১০,৫১০

৬৪,০৫০

১৮,০৪২

(৮.৮)

(৬.৬)

(০.৩)

(১.৯)

(১১.৭)

(৩.৩)

২০০৭-০৮

৫৯,৪৬৯

৪৫,৮১৯

২,৩১৩

১১,৩৩৭

৯০,৬৯৬

১৮,৫৪৭

(৯.৫)

(৭.৩)

(০.৪)

(১.৮)

(১৪.৩)

(৩.০)

২০০৮-০৯

৬৪,৫৬৮

৫০,২১৬

২,৬৫৩

১১,৬৯৯

৮৯,৩১৬

১৯,৪৩৮

(৯.২)

(৭.১)

(০.৪)

(১.৭)

(১২.৭)

(২.৮)

২০০৯-১০

৭৫,৯০৫

৫৯,৭৪২

২,৭৪৩

১৩,৪২০

১,০১,৫২১

২৫,৫৫৩

(৯.৫)

(৭.৫)

(০.৩)

(১.৭)

(১২.৭)

(৩.২)

২০১০-১১

৯২,৯৯৩

৭৬,২২৫

৩,৩২৩

১৩,৪৪৫

১,২৮,২৮৪

৩৩,২৮৩

(১০.২)

(৮.৩)

(০.৪)

(১.৫)

(১৪.০)

(৩.৬)

২০১১-১২

১,১৪,৬৭৫

৯১৫,৯৫

৩,৬৩৩

১৯,৪৪৭

১,৫২,৪৫৩

৩৭,৫৩৩

(১০.৯)

(৮.৭)

(০.৩)

(১.৮)

(১৪.৫)

(৩.৬)

২০১২-১৩

১,২৮,৮৪৯

১,০৩,৩৩২

৪,১২১

২১,৩৯৬

১,৭৫,৬৪৪

৪৯,৪৭৩

(১০.৮)

(৮.৬)

(০.৩)

(১.৮)

(১৪.৭)

(৪.১)

২০১৩-১৪

১,৪১,০৮৩

১,১১,৪২৩

৪,৬০৯

২৫,০৫১

১,৮৯,০৭৭

৫৫,১৩৪

(১০.৫)

(৮.৩)

(০.৩)

(১.৯)

(১৪.১)

(৪.১)

২০১৪-১৫

১,৪৫,৯৬৬

১,২৩,৯৭৭

৪,৮২১

১৭,১৬৮

২,০৪,৩৮৩

৬০,৩৭৭

(৯.৬)

(৮.২)

(০.৩)

(১.১)

(১৩.৫)

(৪.০)

২০১৫-১৬

১,৭২,৭২৯

১,৪৬,২৪২

৫,৬৪৫

২০,৮৪৩

২,৪০,০৪৭

৮০,৮৬৩

(১০.০)

(৮.৪)

(০.৩)

(১.২)

(১৩.৯)

(৪.৭)

২০১৬-১৭

২,০১,২৩১

১,৭১,৬৩৯

৬,২৯৯

২৩,২৯৩

২,৬৯,৩৮১

৮৪,১০০

(১০.২)

(৮.৭)

(০.৩)

(১.২)

(১৩.৬)

(৪.৩)

২০১৭-১৮ মূ.

২,৮৭,৯৯০

২,৪৮,১৯০

৮,৬২২

৩১,১৭৯

৪,০০,২৬৭

১,৫৩,৩৩১

(১৩.০)

(১১.২)

(০.৪)

(১.৪)

(১৮.০)

(৬.৯)

২০১৭-১৮ সং

২,৫৯,৪৫৪

২,২৫,০০০

৭,৫০০

২৬,৯৫৪

৩,৭১,৪৯৫

১,৪৮,৩৮১

(১১.৬)

(১০.১)

(০.৩)

(১.২)

(১৬.৬)

(৬.৬)

উৎস: অর্থ বিভাগ; বন্ধনিতে জিডিপি’র শতাংশ; মূ= মূল বাজেট; সং= সংশোধিত বাজেট।

সারণি ১০: বহিঃখাতের কতিপয় সূচকের অগ্রগতি

অর্থবছর

রপ্তানি

(বি.মা.ড.)

আমদানি

(বি.মা.ড.)

প্রবাস আয়

(বি.মা.ড.)

রিজার্ভ

(বি.মা.ড.)

চলতি হিসাবের ভারসাম্য (জিডিপি’র শতাংশ)

বিনিময় হার

(টাকা/ডলার)

২০০৫-০৬

১০.৫

১৪.৮

৪.৮

৩.৫

১.১

৬৭.২

২০০৬-০৭

১২.২

১৭.২

৬.০

৫.১

১.২

৬৯.১

২০০৭-০৮

১৪.১

২১.৬

৭.৯

৬.১

০.৮

৬৮.৬

২০০৮-০৯

১৫.৬

২২.৫

৯.৭

৭.৫

২.৪

৬৮.৮

২০০৯-১০

১৬.২

২৩.৭

১১.০

১০.৭

৩.২

৬৯.২

২০১০-১১

২২.৯

৩৩.৭

১১.৭

১০.৯

-১.৩

৭১.২

২০১১-১২

২৪.৩

৩৫.৫

১২.৮

১০.৪

-০.৩

৮১.৯

২০১২-১৩

২৭.০

৩৪.১

১৪.৫

১৫.৩

২.০

৭৭.৮

২০১৩-১৪

৩০.২

৪০.৭

১৪.২

২১.৫

১.০

৭৭.৭

২০১৪-১৫

৩১.২

৪০.৬

১৫.৩

২৫.০

১.০

৭৭.৭

২০১৫-১৬

৩৪.৩

৪৩.১

১৪.৯

৩০.২

১.৬

৭৮.৩

২০১৬-১৭

৩৪.৮

৪৭.০

১২.৮

৩৩.৫

-০.৮

৭৯.১

২০১৭-১৮

৩০.৪

৪৩.৬

১২.১

৩২.৪

-২.৬

৮৩.৭

উৎস: বাংলাদেশ ব্যাংক; ক= এপ্রিল পর্যন্ত, খ= মার্চ পর্যন্ত গ= ৩ জুন ২০১৮ তারিখে।

সারণি ১১: আর্থিকখাতের কতিপয় সূচকের অগ্রগতি

অর্থবছর

ব্যাংকের শাখা

আর্থিক খাতের গভীরতা (এম২/ জিডিপি)

ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহ ‍
(প্রবৃদ্ধি,%)

ব্যক্তিখাতে ঋণ বিতরণ

(হাজার কোটি টাকা)

কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ

(হাজার

কোটি টাকা)

শিল্প ঋণ বিতরণ

(হাজার কোটি টাকা)

ঋণের সুদ

(ভাড়িত গড়,%)

সুদের হার ব্যবধান

(%)

২০০৫-০৬

৬,৪২৫

৩৭.৫

১৯.৩

১৩২.৩

৫.৫

৯.৭

১২.০৬

৫.৩৮

২০০৬-০৭

৬,৫৯৬

৩৮.৫

১৭.১

১৫২.২

৫.৩

১২.৪

১২.৭৮

৫.৯৩

২০০৭-০৮

৬,৭৪৭

৩৯.৬

১৭.৬

১৯০.১

৮.৬

২০.২

১২.২৯

৫.৩৪

২০০৮-০৯

৬,৯৩৬

৪২.১

১৯.২

২১৭.৯

৯.৩

২০.০

১১.৮৭

৪.৮৬

২০০৯-১০

৭,২৪৬

৪৫.৫

২২.৪

২৭০.৮

১১.১

২৫.০

১১.৩১

৫.৩০

২০১০-১১

৭,৭১২

৪৮.১

২১.৩

৩৪০.৭

১২.২

৩২.২

১২.৪২

৫.১৫

২০১১-১২

৮,০৫৯

৪৯.০

১৭.৪

৪০৭.৯

১৩.২

৩৫.৩

১৩.৭৫

৫.৬০

২০১২-১৩

৮,৪২৭

৫০.৩

১৬.৭

৪৫২.২

১৪.৭

৪২.৫

১৩.৬৭

৫.১৩

২০১৩-১৪

৮,৭৯৪

৫২.১

১৬.১

৫০৭.৬

১৬.০

৪২.৩

১৩.১০

৫.৩১

২০১৪-১৫

৯,১৩১

৫২.০

১২.৪

৫৭৪.৬

১৬.০

৫৯.৮

১১.৬৭

৪.৫১

২০১৫-১৬

৯,৪৫৩

৫২.৯

১৬.৩

৬৭১.০

১৭.৬

৬৫.৫

১০.৩৯

৪.১২

২০১৬-১৭

৯,৭২০

৫১.৪

১০.৯

৭৭৬.১

২১.০

৬২.২

৯.৫৬

৪.৭২

২০১৭-১৮

 ৯,৯৭৩

৪৭.৩

৯.১

৮৮১.৫

১৮.০

৩৩.৬

৯.৭০

৪.৪

উৎস: বাংলাদেশ ব্যাংক; ক= ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, খ= মার্চ পর্যন্ত বছরভিত্তিতে, গ= এপ্রিল পর্যন্ত, ঘ= ডিসেম্বর, সা= সাময়িক।

পরিশিষ্ট-খ

সারণিসমূহের তালিকা

সারণি

শিরোনাম

পৃষ্ঠা

কৃষিখাত

১৩৬

১)

কৃষি

১৩৬

২)

মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরী

১৩৬

৩)

তামাক

১৩৬

৪)

খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প

১৩৬

৫)

সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ

১৩৮

শিল্প খাত

১৩৮

১)

ঔষধ শিল্প

১৩৮

২)

চামড়া শিল্প

১৪৫

৩)

টেক্সটাইল

১৪৬

৪)

লৌহ ও ইস্পাত

১৪৬

৫)

গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ

১৪৬

৬)

রেফ্রিজারেটর এবং কম্প্রেসার শিল্প

১৪৬

৭)

মুদ্রণ শিল্প

১৪৭

৮)

রি-মেল্টেড লেড

১৪৭

৯)

ইলেকট্রিক্যাল পণ্য

১৪৮

পরিবহন খাত

১৪৮

১)

হাইব্রিড মোটর গাড়ি

১৪৮

২)

পুরাতন গাড়ি

১৪৮

৩)

মোটর সাইকেল

১৪৮

৪)

লিফ স্প্রিং

১৪৯

৫)

টায়ার টিউব উৎপাদন

১৪৯

৬)

বাইসাইকেল শিল্প

১৪৯

   ৪

তথ্যপ্রযুক্তি খাত

১৪৯

১)

সেলুলার ফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কতিপয় কাঁচামালের শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব

১৪৯

২)

সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব

১৫১

ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ

১৫১

১)

যে সকল পণ্যের  আমদানি শুল্ক (CD) হ্রাস  করা হয়েছে

১৫২

২)

যে সকল পণ্যের আমদানি শুল্ক (CD) বৃদ্ধি করা হয়েছে

১৫২

৩)

যে সকল পণ্যের সম্পুরক শুল্ক আরোপ/হ্রাস/বৃদ্ধি/প্রত্যাহার করা হয়েছে

১৫২

৪)

যে সকল পণ্যের আমদানি পর্যায়ে VAT প্রত্যাহার করা হয়েছে

১৫২

৫)

যে সকল পণ্যের আমদানি পর্যায়ে VAT আরোপ করা হয়েছে

১৫২

৬)

যে সকল পণ্যের উপর রেগুলেটরি ডিউটি আরোপ করা হয়েছে

১৫২

৭)

বাজেটে যে সকল H.S. Code এর বর্ণনায় পরিবর্তন, সংশোধন, বিভাজন, একীভূতকরণ এবং নতুন H.S. Code সৃজন করা হয়েছে

১৫৩

সারণি ১: কৃষিখাত

১) কৃষি

  • চাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে সকল প্রকার চাল আমদানিতে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ প্রযোজ্য হবে।

  • সকল প্রকার স্টার্চ এর আমদানি শুল্ক ও রেগুলেটরি ডিউটি যৌক্তিকীকরণ করা হয়েছে

Heading

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

11.08

1108.11.00

Wheat starch

CD

RD

CD

RD

15

0

15

10

1108.12.00

Maize (corn) starch

25

3

15

10

1108.13.00

Potato starch

15

0

15

10

1108.14.00

Manioc (cassava) starch

15

0

15

10

1108.19.00

Other starches

15

0

15

10

২) মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরী

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

 

 

 

CD

RD

CD

RD

1

1208.10.00

Flours and meals of oil seeds or oleaginous fruits, other than those of mustard.

0

10

0

5

2

2304.00.00

Oil-cake and other solid residues whether or not ground or in the form of pellets, resulting from the extraction of soya-bean oil.

10

0

0

5

৩) তামাক

  • রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহার

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing ED Rate (%)

Proposed ED Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

2402.10.00

Cigars, cheroots and cigarillos, containing tobacco

25

0

2

2402.20.00

Cigarettes containing tobacco  

25

0

3

2402.90.00

Other Cigars, cheroots, of tobacco substitutes.

25

0

4

2403.11.00

Water pipe tobacco

25

0

5

2403.19.00

Other Smoking tobacco

25

0

6

2403.91.00

"Homogenised" or "reconstituted" Tobacco

25

0

7

2403.99.00

Other tobacco extracts

25

0

৪) খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প

  • আমদানি শুল্ক

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

0409.00.10

Natural honey Wrapped/canned upto 2.5 kg

10

25

2

Heading 08.01 (All H.S.Code)

Coconuts, Brazil nuts and cashew nuts, fresh or dried, whether or not shelled or peeled.

10

25

3

0802.11.10

0802.11.90

0802.12.10

0802.12.90

Almonds

10

25

4

0802.21.10

0802.21.90

0802.22.10

0802.22.90

Hazelnuts or filberts (Corylus spp.)

10

25

5

0802.31.10

0802.31.90

0802.32.10

0802.32.90

Walnuts

10

25

6

1104.12.10

1104.19.10

1104.22.10

1104.23.10

1104.29.10

1104.30.10

Cereal grains otherwise worked (for example, hulled, rolled, flaked, pearled, sliced or kibbled), except rice of Heading 10.06; germ of cereals, whole, rolled, flaked or ground (Wrapped/canned upto 2.5 kg)

5, 15

25

7

1104.12.90

Other oats

10

5

  • সম্পূরক শুল্ক

Sl. No.

H.S.Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

0801.11.10

0801.12.10

0801.19.10

0801.21.10

0801.22.10

0801.31.10

0801.32.10

0802.11.10

0802.12.10

0802.21.10

0802.22.10

0802.31.10

0802.32.10

0802.41.10

0802.42.10

0802.51.10

0802.52.10

0802.61.10

0802.62.10

0802.70.10

0802.80.10

0802.90.91

Coconuts, Brazil nuts, cashew nuts and other nuts, fresh or dried (Wrapped or canned upto 2.5 kg)

0

20

2

0901.11.10

0901.12.10

0901.21.10

0901.22.10

0901.90.10

Coffee; coffee husks and skins; coffee substitutes containing coffee in any proportion (wrapped or canned upto 2.5 kg)

0

20

3

0902.10.00

0902.20.00

Green tea

0

20

4

1704.10.10

1704.90.10

Sugar confectionery (including white chocolate), not containing cocoa, put up for retail sale

20

45

5

1806.20.00

কোকাযুক্ত চকলেট এবং অন্যান্য খাদ্য প্রিপারেশন (২ কেজির উর্ধ্বে ব্লক, স্লাব বা বার আকারে অথবা তরল, পেস্ট, গুড়া, দানাদার বা অন্যরুপে বাল্ক প্যাকিং এ)

20

45

6

1806.31.00 1806.32.00

ফিনিস্ড চকলেট (ব্লক, স্লাব বা বার আকারে)

20

45

7

1806.90.00

অন্যান্য

20

45

৫) সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ

  • মুলধনী যন্ত্রপাতি সুবিধা প্রদান

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

5608.11.10

Fishing nets for fishing trawler

5

1

সারণি ২: শিল্প খাত

১) ঔষধ শিল্প

অ)  ঔষধ শিল্পের নিম্নোক্ত কাঁচামাল বিদ্যমান প্রজ্ঞাপনের Table-1 এ অন্তর্ভুক্তি

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

1211.90.99

Ginkgo biloba extract

10

5

2

1302.19.00

Panax Ginseng (Root Extract)

10

5

3

2846.90.00

Gadodiamide

10

5

4

2903.39.00

Propyl paraben/ Propyl Hydroxybenzoate

10

5

5

2915.29.90

Calcium Acetate

10

5

6

2915.50.90

Calcium Propionate 

10

5

7

2916.39.00

Dexibuprofen

5

5

8

2916.39.00

Nepafanac (Micronised & Sterile)

5

5

9

2918.15.00

Boron Citrate

5

5

10

2918.16.00

Copper Gluconate

5

5

11

2918.16.00

Zinc Gluconate

5

5

12

2918.19.90

Ursodeoxycholic acid

10

5

13

2918.99.00

Atorvastatine Calcium

5

5

14

2918.99.00

Rosuvastatin Calcium

5

5

15

2918.99.00

Rosuvastatin Calcium

5

5

16

2920.90.90

Nitroglycerine /Nitroglycerine Granules/ Nitroglycerine SR Granules 1.73% W/W

10

5

17

2922.19.90

Betaxolol Hydrochloride

5

5

18

2922.49.00

Baclofen

5

5

19

2922.49.00

Eplerenone

5

5

20

2922.50.00

Bisoprolol Fumarate

5

5

21

2922.50.00

Ivabradine HCl

5

5

22

2922.50.00

Nebivolol Hydrochloride

5

5

23

2922.50.00

Propafenone Hydrochloride

5

5

24

2922.50.00

Tolterodine Tartrate

5

5

25

2924.29.00

Ondansetron/Ondansetron Hydrochloride

5

5

26

2924.29.00

Paracetamol

5

5

27

2924.29.00

Paracetamol (Injection Grade)

5

5

28

2924.29.00

Roflumilast

5

5

29

2930.40.00

DL-Methionine

0

0

30

2931.90.00

Ferric Hydroxy Polymaltose Complex Powder

5

5

31

2932.20.00

Warfarin Sodium

10

5

32

2933.21.00

Dantrolene Sodium

5

5

33

2933.29.00

Benzoyl Metronidazole

5

5

34

2933.29.00

Dexmedetomidine HCl

5

5

35

2933.29.00

Histamine dihydrochoride and phosphate

5

5

36

2933.29.00

Isoconazole Nitrate (micro)

5

5

37

2933.29.00

Metronidazole Benzoate

5

5

38

2933.39.00

Acaftadine

0

0

39

2933.39.00

Bepotastine Besilate

0

0

40

2933.39.00

Dabigatran

0

0

41

2933.39.00

Dabigatran Etexilate Mesylate

0

0

42

2933.39.00

Dexlansoprazole

0

0

43

2933.39.00

Ebastine

0

0

44

2933.39.00

Esomeprazole Magnasium

0

0

45

2933.39.00

Esomeprazole Magnesium Trihydrade

0

0

46

2933.39.00

Esomeprazole Sodium

0

0

47

2933.39.00

Fentanyl Citrate

0

0

48

2933.39.00

Fexofenadine Hydrochloride

0

0

49

2933.39.00

Mirabegron

0

0

50

2933.39.00

Nicorandil

0

0

51

2933.39.00

Pyridostigmine Bromide

0

0

52

2933.39.00

Rabeprazole Sodium

0

0

53

2933.39.00

Rupatadine Fumarate

0

0

54

2933.39.00

Trastuzumab

0

0

55

2933.39.00

Cetuximab

0

0

56

2933.39.00

Triprolidine

0

0

57

2933.39.00

Triprolidine Hydrochloride

0

0

58

2933.39.00

Vecuronium Bromide

0

0

59

2933.49.00

Orlistat

5

5

60

2933.49.00

Risedronate Sodium

5

5

61

2933.59.90

Benzoyl Calcium pas

5

5

62

2933.59.90

Benzoyl PAS Calcium

5

5

63

2933.59.90

Eflornithine HCl Monohydrate

5

5

64

2933.59.90

Eszopiclone

5

5

65

2933.59.90

Flunarizine

5

5

66

2933.59.90

Flunarizine Dihydrochloride

5

5

67

2933.59.90

Hydroxyzine HCl

5

5

68

2933.59.90

Linagliptin

5

5

69

2933.59.90

Xanthan Gum

5

5

70

2933.79.90

Fosphenytoin Sodium

5

5

71

2933.91.00

Croquat-L

0

0

72

2933.91.00

Flupentixol Dihydrochloride

0

0

73

2933.91.00

Flupentixol Hydrochoride

0

0

74

2933.99.00

Betahistine Hydrochloride

0

0

75

2933.99.00

Doripenem Monohydrate Sterile

0

0

76

2933.99.00

Ganciclovir

0

0

77

2933.99.00

Glucosamine Sulphate Potassium Chloride

0

0

78

2933.99.00

Imatinib

0

0

79

2933.99.00

Imatinib Mesylate

0

0

80

2933.99.00

Irbesartan

0

0

81

2933.99.00

Sacubitril & Valsartan

0

0

82

2934.99.90

Calcium Dobesilate

5

5

83

2934.99.90

Canagliflozin

5

5

84

2934.99.90

Clavulanate Potassium

5

5

85

2934.99.90

Duloxetine

5

5

86

2934.99.90

Fluconazole

5

5

87

2934.99.90

Ketoconozole

5

5

88

2934.99.90

Ofloxacinn

5

5

89

2934.99.90

Olmesartan Medoxomil

5

5

90

2934.99.90

Pyrantel Citrate

5

5

91

2934.99.90

Pyrantel Pamoate

5

5

92

2934.99.90

Silodosin

5

5

93

2935.90.00

Brinzolamide (Micronised & Sterile)

0

0

94

2935.90.00

Glimepiride

0

0

95

2936.26.00

Mecobalamin

0

0

96

2937.19.90

HP FSH Bulk Powder

5

5

97

2937.22.00

Betamethasone Dipropionate

5

5

98

2937.22.00

Dexamethasone Acetate

5

5

99

2937.23.10

Drospirenone (micronized)

0

 

100

2937.23.10

Ethinyl Estradiol

0

 

101

2937.23.99

Allylestrenol

5

5

102

2937.23.99

Estradiol/Oestradiol Benzoate/Phenylpropionate/ Undecylate

5

5

103

2937.29.00

Difluprednate (Micronised)

5

5

104

2937.29.00

Fluticasone Furoate/Propionate (Micronized)

5

5

105

2937.50.00

Carboprost Tromethamine

5

5

106

2937.90.00

Dutasteride

5

5

107

2938.90.90

Gliclazide

5

5

108

2938.90.90

Sitagliptin Phosphate

5

5

109

2939.59.00

Doxofylline

10

5

110

2939.79.90

Ipratropium Bromide

10

5

111

2940.00.00

Iron Sucrose Concentrated Solution/Iron Sucrose Solution

10

5

112

2941.10.00

Ceftolozane

0

0

113

2941.10.00

Piperacillin Sodium

0

0

114

2941.10.00

Tazobactam Sodium

0

0

115

2941.10.00

Tebipenem

0

0

116

2941.90.90

Calcipotriol Monohydrate

0

0

117

2941.90.90

Cefadroxil Monohydrate

0

0

118

2941.90.90

Cefixime Anhydrous

0

0

119

2941.90.90

Ceftazidime Sodium/Ceftazidime Sodium (Sterile)

0

0

120

2941.90.90

Ceftibuten Dihydrate

0

0

121

2941.90.90

Ceftraoline

0

0

122

2941.90.90

Ceftriaxone Sodium/Ceftriaxone Sodium (Sterile)

0

0

123

2941.90.90

Cefuroxime Axetil/ Cefuroxime Axetil (Micronised)/Compacted/Amorphous

0

0

124

2941.90.90

Cefuroxime Sodium/Cefuroxime Sodium (Sterile)

0

0

125

2941.90.90

Clindamycin and its salts (all forms)

0

0

126

2941.90.90

Etrapenem Sodium

0

0

127

2941.90.90

Gatifloxacin Sesquihydrate

0

0

128

2941.90.90

Gentamicin/Gentamicin Sulphate

0

0

129

2941.90.90

Levofloxacin Hemihydrate

0

0

130

2941.90.90

Vancomycin Hydrochloride (Sterile)

0

0

131

2941.90.90

Zinc Bacitracin Non-Sterile Micro

0

0

132

2942.00.10

Daclatasvir Hydrochloride

0

0

133

2942.00.10

Velpatasvir

0

0

134

2942.00.90

Loteprednol Etabonate (Sterile & Micronized)

5

5

135

2942.00.90

Apremilast

5

5

136

2942.00.90

Besifloxacin HCl (Micronised & Sterile)

5

5

137

2942.00.90

Butaphosphan

5

5

138

2942.00.90

Topiramate

5

5

139

3002.20.00

Hepatities B Vaccine Bulk

0

0

140

3002.20.00

Ready to fill Bulk Rabies Vaccine

0

0

141

3002.20.00

Tetanus Toxoid Bulk vaccine

0

0

আ) ঔষধ শিল্পের নিম্নোক্ত কাঁচামাল বিদ্যমান প্রজ্ঞাপনের Table-2 এ অন্তর্ভুক্তি

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

1504.10.00

Refined Soybean Oil (Pharmaceutical grade)

10

10

2

2841.70.00

Sodium Molybdate

10

10

3

2841.70.00

Sodium Molybdate 1%

10

10

4

3921.90.99

Multilayer extruded film for packing IV fluid

25

15

5

3923.30.90

Pouch for Infusion Set

25

15

6

3923.30.90

Pouch for Scalp Vein Set

25

15

7

3923.30.90

Shell of PVC/PVDC for suppository printed with the name of medicine

25

15

8

3923.30.90

PVC tube printed with the name of medicine

25

15

9

3923.50.00

Viscose rings & caps excl. pilfer proof caps

25

15

10

3923.50.00

Stopper & plugs for IV fluid bag

25

15

11

3926.90.30

Finger Grip for Prefill Syringe

25

15

ই)  ক্যান্সার নিরোধক ঔষধ প্রস্তুতের জন্য আমদানি পর্যায়ে কতিপয় উপকরণে রেয়াতী সুবিধা প্রদান

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

2933.39.00

Regorafenib

0

0

2

2933.49.00

Lenvatinib Mesylate

5

0

3

2933.79.90

Palbociclib

5

0

4

2933.99.00

Sunitinib Maleate

0

0

5

2935.90.00

Baricitinib

0

0

ঈ)  ঔষধ শিল্পের সক্রিয় কাঁচামাল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় রাসায়নিকের রেয়াতি সুবিধা প্রদান

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

1211.90.21

Peppermint

10

0

2

1301.90.00

Xanthan gum 1400

5

0

3

2519.90.00

Magnesium oxide

10

0

4

2526.20.10

Purified talc

5

0

5

2710.19.19

Petroleum Ether

25

0

6

2809.20.00

Ortho Phosphoric Acid

10

0

7

2811.22.00

Aerosil

5

0

8

2812.90.00

Thionyl chloride

10

0

9

2812.90.00

Tributyltin chloride

10

0

10

2812.90.00

Valeroyl chloride

10

0

11

2814.20.00

Ammonia (25%)

10

0

12

2823.00.00

Titanium dioxide

5

0

13

2823.00.00

Titanium (IV) isopropoxide

5

0

14

2827.31.00

Magnesium Chloride Hexahydrate

5

0

15

2827.39.00

Chromic Chloride

10

0

16

2827.60.00

Cuprous iodide

10

0

17

2828.90.00

Sodium Hypochlorite (5.25%)

10

0

18

2832.10.00

Sodium Hydrosulfite

10

0

19

2832.20.00

Sodium hydrosulphite (Hydrose)

10

0

20

2832.30.00

Sodium Thiosulfate

10

0

21

2833.19.00

Potassium Hydrogen Sulphate

10

0

22

2833.21.00

Magnesium Sulphate Heptahydrate

0

0

23

2833.24.00

Nickle Sulphate

10

0

24

2835.22.00

Sodium dihydrogen phosphate

5

0

25

2835.29.00

2-Chloro-1,3-Bis(Dimethylamino Trimethinium Hexafluorophosphate (CDT-Salt)

5

0

26

2839.90.90

Sodium metavandate Dihydrate

10

0

27

2841.70.00

Ammonium Molibdate

10

0

28

2841.70.00

Sodium Molibdate

10

0

29

2842.90.90

Sodium Selenate Anhydrous

10

0

30

2901.10.00

Heptane

10

0

31

2902.20.00

Parachlorobenzophenone(4-Chlorobenzophenone)

10

0

32

2902.30.00

P-toluenesulphonylurea (PTSU)

5

0

33

2902.41.00

Mix-Xylene

10

0

34

2902.41.00

O-Xylene

10

0

35

2902.90.90

4́-bromomethyl-2-cyanobiphenyl(Bro-OTBN)

10

0

36

2903.12.00

Methylene dichloride

10

0

37

2903.39.00

1-Acetoxyethylbromide (1-AEB)

10

0

38

2903.99.00

1,3-Difluoro Benzene

10

0

39

2904.99.00

p-Toluenesulfonic Acid

10

0

40

2905.12.10

Iso propyl Alcohol (IPA)

10

0

41

2905.43.00

Mannitol

10

0

42

2907.29.00

5-(4'-(bromomethyl) (1,1'-biphenyl)-2-yl)-1-trityl-1h-tetraazole    

5

0

43

2912.11.00

Formaldehyde (37% w/w)

25

0

44

2914.79.00

2,4-Difluoro-a-(1H-1,2,4-Triazolyl) Acetophenone

10

0

45

2915.29.90

Ammonium Acetate

10

0

46

2915.29.90

(R)-(-)-3-(Carbamoylmethyl)-5-Methylhexanoic acid

10

0

47

2915.39.00

(4R-Cis)-1,1-dimethylethyl-6(2-aminoethyl)-2,2-dimethyl-1,3-dioxane-4-acetate 

10

0

48

2915.39.00

Isopropyl acetate

10

0

49

2916.13.00

Methacrylic acid

5

0

50

2916.31.00

Methyl Paraben

5

0

51

2916.39.00

2-(4-(4-(4-(hydroxydiphenylmethyl)-1-piperidinyl)-1-oxobutyl) phenyl)-2, 2-dimethyl acetic acid methyl ester. (DN10)

5

0

52

2916.39.00

4-[4-[4-(hydroxydiphenylmethyl)-1-piperidinyl]-1-hydroxybutyl]-α,α-dimethylbenzeneacetic acid  (Fexofenadine base- fex12)

5

0

53

2917.39.00

Dibutyl phthalate

25

0

54

2918.12.00

Di-p-tolyl-tartaric acid

5

0

55

2918.13.00

D (-) diethyl tartrate

5

0

56

2918.16.00

Calcium gluconate

5

0

57

2918.19.90

D (-) Mandelic Acid

10

0

58

2921.11.00

N,N-Diisopropylethylamine

5

0

59

2921.29.00

N-Amino-3-azabicyclo(3,3,0) octane hydrochloride(NAZA)

5

0

60

2921.49.00

1-[2-amino-l-(4- methoxyphenyl) ethyl] cyclohexanol

5

0

61

2921.49.00

1-[2-amino-l-(4- methoxyphenyl)ethyl] cyclohexanol hydrochloride

5

0

62

2922.15.00

Triethanolamine

5

0

63

2922.19.90

2-Amino-2-(hydroxymethyl)-1,3-propanediol (Tromethamine)

5

0

64

2922.19.90

3-Amino-1-hydroxyadamantane

5

0

65

2922.49.00

Di-Sodium EDTA

5

0

66

2922.50.00

L-Valine

5

0

67

2925.19.90

N-Chlorosuccinamide

5

0

68

2929.10.00

Trans-4-methyl cyclohexyl isocyanate

10

0

69

2931.90.00

1,3-Bis(trimethylsilyl)urea (BSU)

5

0

70

2932.99.00

Sucralose

10

0

71

2933.19.00

(4R-Cis)-1, 1-dimethylethyl-6-[2-[(2-4-flurophenyl)-5-(1-methylethyl)-3-phenyl-4-[(phenylamino) carbonyl]-1H-pyrrol-1-yl] ethyl]-2, 2-dimethyl-1,3 dioxane-4-acetate

5

0

72

2933.19.00

5-(4-fluoropheynl)-2-(1-methylethyl)-1-(3-oxopropyl)-n,4-4-diphenyl-1H-pyrrole-3-carboxamide 

5

0

73

2933.29.00

(+/-)-5-benzoyl-2,3-dihydro-1H-pyrrolizine-1-carboxylic acid (Ketorolac acid)

5

0

74

2933.29.00

2-Butyl-4-Chloro-5-formylimidazole

5

0

75

2933.29.00

2-Marcepto-5-difluoromethoxy benzimidazole

5

0

76

2933.29.00

2-n-butyt-4 chtoro-S-hydroxy methyl-2[3 cyano biphenyl] imidazole(BCFI)

5

0

77

2933.29.00

Trityl Losartan (2-butyl-4 chloro-1'ft2 '(1H-tetrazole-S-yl)[1'1 -biphenyl]-4'yllmethyll-1H-imidazole' 5'methanol)

5

0

78

2933.31.00

2-chloromethyl-3,4-dimethoxy pyridine hydrochloride

10

0

79

2933.31.00

Methyl ethyl 2-(2-aminoethoxymethyl)-4-(2-chlorophenyl)-6-methyl-1,4-dihydropyridine-3,5-dicarboxylate; Amlodipine base

10

0

80

2933.32.00

(R)-3-Aminopiperidine dihydrochloride

10

0

81

2933.32.00

Ketosulfone; 1-(6-Methylpyridin-3-yl)-2-[4-(methylsulfonyl) phenyl] ethanone

10

0

82

2933.39.00

[2-[4-(3-methoxy propoxy)-3-methyl-pyridine-2yl]methyl sulfonyl] 1-H-benzimidazole (Intermediate - 01)

0

0

83

2933.39.00

[2-[4-(3-methoxy propoxy)-3-methyl-pyridine-2yl]methyl thio] 1-H-benzimidazole (Rebeprazole Sulfide)

0

0

84

2933.39.00

1,3-dioxane-4-acetic acid,6-[(1E)-2-[4-(4-fluoro phenyl)-6-(1-methyl ethyl)-2-[methyl(methyl sulfonyl) amino]-5-pyridinyl]-2,2-dimethyl-1,1- dimethyl ethyl ester (4R,6R).

0

0

85

2933.39.00

1-methyl-2-pyrrolidone

0

0

86

2933.39.00

2-Chloromethyl-3,5-dimethyl- 4-methoxy pyridine hydrochloride

0

0

87

2933.39.00

2-mercapto-5-methoxy benzimidazole

0

0

88

2933.39.00

5-difluromethoxy-2-{[(3,4-dimethoxy-2-pyridinyl)methyl]thio}-1H-benzimidazole

0

0

89

2933.39.00

5-Methoxy-2-(4-methoxy)-3,5-Dimethyl-2-Pyridinylmethyl)thio-1H-Benzamidazole (Omeprazole Sulphide)

0

0

90

2933.39.00

N-methyl pyrrolidone(NMP)

0

0

91

2933.49.00

1-Cyclopropyl-6-fluoro-4-oxo-7-piperazin-1-yl-quinoline-3-Carboxylic acid(Cipro base)

5

0

92

2933.49.00

7-Chloro-1-cyclopropyl-6-fluoro-1,4-dihydro-4-oxoquinoline-3-carboxylic acid/ Q-acid

5

0

93

2933.59.90

1,8-Diazabicyclo[5.4.0]undec-7-ene (DBU)

5

0

94

2933.59.90

2-(((3aR,4S,6R,6aS)-6-(5-chloro-7-(((1R,2S)-2-(3,4-difluorophenyl)cyclopropyl)amino)-5-(propylthio)-3H-[1,2,3]triazolo[4,5-d]pyrimidin-3-yl)-2,2-dimethyltetrahydro-3aH-cyclopenta[d][1,3]dioxol-4-yl)oxy)ethanol

5

0

95

2933.59.90

Ethoxy carbonyl piperazine

5

0

96

2933.99.00

1H-1,2,4-Triazole

0

0

97

2933.99.00

D-(+)-Methyl-alpha-(2-thienylethamino)(2-chlorophenyl)acetate hydrochloride

0

0

98

2933.99.00

Loratadine

0

0

99

2933.99.00

Methyl alpha-(4,5,6,7-tetrahydro thieno [2,3-c] pyrid-5-yl) (2-chlorophenyl)  acetate hydrochloride. (Couple amine)

0

0

100

2934.20.00

S-2-Benzothiazolyl (Z) -2-(2-Aminothiazol-4-yl)-2-methoxycarbonyl Methoxyimino thioacetate (MICA Ester)

5

0

101

2934.99.90

(2S)-1-(Chloroacetyl) pyrrolidine-2-Carbonitrile

5

0

102

2934.99.90

(R)-4-oxo-4-[3-(trifluoromethyl)-5,6-dihydro[1,2,4]triazolo[4,3-a]pyrazin-7(8H)-yl]-1-(2,4,5-trifluorophenyl)butan-2-amine

5

0

103

2934.99.90

(Z)-3-amino-1-(3-trifluoromethyl)-5,6-dihydro- [1,2,4]-trizolo[4,3-α]pyrazin -7(8H)-yl-4-(2,4,5-trifluorophenyl)but-2-en-1-one (Intermediate A)

5

0

104

2934.99.90

3-amino-1-(3-(trifluoromethyl)-5,6-dihydro-1,2,4 triazol (4,3-a) pyrazin-7(8H)-yl)-4-(2,4,5-trifluorophenyl)butan-1-one

5

0

105

2934.99.90

7-[(3R)-3-Amino-1-oxo-4-(2,4,5-trifluorophenyl) butyl] -5,6,7,8-tetrahydro-3-(trifluoromethyl) [1,2,4] trizolo[4,3-α]pyrazine-mandelate.

5

0

106

2934.99.90

8-Bromo-7-(2-butyn-1-yl)-3,7-dihydro-3-methyl-1-[(4-methyl-2-quinazolinyl)methyl]-1H-purine-2,6-dione

5

0

107

2935.90.00

4-[2-(Ethyl-4-methyl-2-carbonyl pyridine amido)ethyl] benzene sulfonamide

0

0

108

2938.90.90

N-[(1S)-2-[(1S,3S,5S)-3-cyano-2-azabicyclo[3.1.0]hex-2-yl]-1-(3-hydroxytricyclo[3.3.1.1]dec-1-yl)-2-oxoethyl]carbamic acid 1,1-dimethylethyl ester

5

0

109

2941.10.00

(6R,7R)-3-{[(aminocarbonyl) oxy]methyl}-7-{[(2Z)-2-(2-furyl)-2-(methoxyimino) acetyl]amino}-8-oxo-5-thia-1-azabicyclo[4.2.0]oct-2-ene-2-carboxylic acid (Cefuroxime acid)

0

0

110

2941.10.00

7-Amino desacetoxycephalosporanic acid (7-ADCA)

0

0

111

2941.10.00

7-Amino-3-Vinyl-3-Cephem- 4-Carboxylic Acid (7-AVCA)

0

0

112

2941.90.90

9-Deoxo-9a-aza-9a-homoerythromycin A (Aza erythromycin)

0

0

113

3402.11.10

Benzene Sulphonic acid

15

0

114

3907.20.00

Polysorbate-80

5

0

115

3912.31.00

Hydroxypropyl methyl cellulose (HPMC E-5)

5

0

116

3913.90.00

Polacrilin Potassium

5

0

২) চামড়া শিল্প

Sl. No.

Existing H.S. Code

Splited

H.S. Code

Description

(1)

(2)

(3)

(4)

1

4104.11.00

4104.11.10

--- Split leather

4104.11.90

--- Other

2

4104.19.00

4104.19.10

--- Split leather

4104.19.90

--- Other

3

4104.41.00

4104.41.10

--- Split leather

4104.41.90

--- Other

4

4104.49.00

4104.49.10

--- Split leather

4104.49.90

--- Other

5

4106.21.00

4106.21.10

--- Split leather In the wet state of goats or kids

4106.21.90

--- Other

6

4106.22.00

4106.22.10

--- Split leather In the dry state (crust) of goats or kids

4106.22.90

--- Other

৩) টেক্সটাইল

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

5301.29.10

Other flax fibre

CD-0, VAT-15

CD-0, VAT-0

2

5301.30.00

Flax tow and waste

CD-10, VAT-15

CD-0, VAT-0

৪) লৌহ ও ইস্পাত

অ) ফেরো-এলয় এর রেগুলেটরি ডিউটি হ্রাস

Heading

H.S. Code

Description

Existing  RD Rate

Proposed RD Rate

(1)

(2)

(3)

(4)

(4)

72.02

7202.11.00

Ferromanganese: Containing by weight more than 2% of carbon

15%

10%

 

7202.21.00

Ferrosilicon: Containing by weight more than 55% of silicon

15%

10%

 

7202.30.00

Ferro-silico-manganese

15%

10%

আ) স্পঞ্জ আয়রণের স্পেসিফিক কাস্টমস ডিউটি হ্রাস

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Duty

Proposed Duty

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

72.03 (All H.S.Code)

Ferrous products obtained by direct reduction of iron ore and other spongy ferrous products, in lumps, pellets or similar forms; iron having a minimum purity by weight of 99.94%, in lumps, pellets or similar forms.

BDT 1000/per MT

BDT 800/per MT

৫) গুঁড়া দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

1901.90.11

---- Filled milk powder imported by VAT registered milk products manufacturing industries

25

10

৬) রেফ্রিজারেটর এবং কম্প্রেসার শিল্প

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

2901.23.10

Refrigerant isobutane/R600a imported by VAT registered refrigerator manufacturing industries

10

5

2

7210.61.10

Flat-rolled products of iron or non-alloy steel plated or coated with aluminium-zinc alloys of a thickness of 0.25 mm or more imported by VAT registered refrigerator or air conditioner manufacturing industry

25

5

3

7210.70.10

Flat-rolled products of iron or non-alloy steel painted, varnished or coated with plastics of a thickness of 0.3 mm or more imported by VAT registered refrigerator or air conditioner manufacturing industry

25

5

4

7411.10.10

Tubes and pipes of refined copper imported by VAT registered air conditioner or refrigerator or compressor manufacturing industry

25

5

5

8532.29.10

Capacitor imported by VAT registered compressor manufacturers

25

5

6

8536.90.10

 Connector; Terminal; Electrical apparatus Imported by VAT registered compressor manufacturing industry

25

5

7

8311.10.10

Welding wire imported by VAT registered compressor manufacturers

25

15

8

7320.90.20

Spring imported by VAT registered compressor manufacturers

25

15

9

4823.70.10

Paper gasket imported by VAT registered compressor manufacturers

25

15

৭) মুদ্রণ শিল্প

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

 

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

 

 

 

 

CD

SD

CD

SD

1

3215.11.10

Flexo/Gravure in liquid form imported by VAT  registered manufacturers

25

0

10

0

2

3215.19.10

Flexo/Gravure in liquid form imported by VAT  registered manufacturers

25

0

10

0

3

4901.99.90

Other (excl. books)

5

0

25

0

4

4909.00.00

Printed or illustrated postcards; printed cards bearing personal greetings, messages or announcements, whether or not illustrated, with or without envelopes or trimmings.

25

0

25

20

5

4910.00.00

Calenders of any kind, printed, including calender blocks

25

0

25

20

6

49.11 (All H.S.Codes)

ছাপানো ছবি, ফটোগ্রাফস্সহ অন্যান্য ছাপানো পণ্য সামগ্রী

25

10

25

20

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

৮) রি-মেল্টেড লেড

  • রি-মেল্টেড লেড-এ রপ্তানি শুল্ক (ED) আরোপ করা হয়েছে

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing ED Rate (%)

Proposed ED Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

7801.10.00

Refined lead

0

25

2

7801.91.00

Other lead containing by weight antimony as the principal other element

0

25

3

7801.99.00

Other

0

25

৯) ইলেকট্রিক্যাল পণ্য

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

 

 

 

CD

SD

CD

SD

1

8504.40.10

Mobile and other battery charger (less than 10 VA)

10

0

15

0

2

8504.40.20

UPS/IPS (capacity upto 2,000 VA)

10

0

15

0

3

8504.40.30

Voltage stabilizer (capacity upto 2,000 VA)

1

0

15

0

4

8536.20.00

Automatic circuit breakers

5

0

10

0

5

8536.61.00

Lamp-holders

25

10

25

20

6

8545.90.20

Carbon rod

25

0

15

0

7

8504.90.21

Formed core imported by VAT registered voltage stabilizer manufacturing industries

25

0

10

0

সারণি ৩: পরিবহন খাত

১) হাইব্রিড মোটর গাড়ি

  • পরিবেশ দূষণ এবং জ্বালানী ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য হাইব্রিড গাড়ির আমদানি উৎসাহিত করার জন্য ১৮০০ সিসি পর্যন্ত হাইব্রিড মোটর গাড়ি আমদানি সম্পূরক শুল্ক ৪৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

২) পুরাতন গাড়ি

  • পুরাতন গাড়ি আমদানি কিছুটা নিরম্নৎসাহিত করার লক্ষ্যে বর্তমানে বিদ্যমান অবচয় সুবিধা বছর ভিত্তিক ৫ শতাংশ হারে হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 (ক)

১ (এক) বৎসর পর্যন্ত পুরাতন বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ও যানবাহনের  জন্য-

০%

(খ)

১ (এক) বৎসরের অধিক হইতে ২ (দুই) বৎসর পর্যন্ত পুরাতন বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ও যানবাহনের জন্য -

১০%

(গ)

২ (দুই) বৎসরের অধিক হইতে ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত পুরাতন বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ও যানবাহনের জন্য -

২০%

(ঘ)

৩ (তিন) বৎসরের অধিক হইতে ৪ (চার) বৎসর পর্যন্ত পুরাতন বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ও যানবাহনের জন্য -

৩০%

(ঙ)

৪ (চার) বৎসরের অধিক হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর পর্যন্ত পুরাতন বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ও যানবাহনের জন্য -

৩৫%

৩) মোটর সাইকেল

  • মোটর সাইকেলের উৎপাদক/প্রগতিশীল উৎপাদকগণকে কতিপয় উপকরণ আমদানিতে রেয়াতী সুবিধা প্রদান সংক্রামত্ম প্রজ্ঞাপনের  TABLE-I ও TABLE-II তে অন্তর্ভুক্তি

TABLE-I

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

3403.19.00

Mold release preparation

10

5

2

3506.91.90

Adhesives

25

5

3

3814.00.90

Electric discharging machine (EDM) fluid

15

5

4

3908.10.00

Polyamide

5

5

5

3908.90.00

Glass filled (GF) nylon

5

5

6

3909.40.90

Phenolic resin

10

5

7

4002.31.00

Isobutene-isoprene (Butyl)

5

5

8

4002.49.00

Chloroprene rubber

5

5

TABLE-II

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

7228.70.00

Angles, shapes and sections

10

-

2

7301.20.00

Welded angles, shapes and sections

10

-

৪) লিফ স্প্রিং

  • লিফ স্প্রিং এর সম্পূরক শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing SD Rate (%)

Proposed SD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

7320.10.00

লীফ-প্রীং

20

10

৫) টায়ার টিউব উৎপাদন

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

2712.20.10

Paraffin wax containing by weight less than 0.75% of oil imported by VAT registered tyre tube manufacturing industries

25

10

2

3909.40.10

Phenolic resins imported by VAT registered ink or tyre tube manufacturing industries

10

5

৬) বাইসাইকেল শিল্প

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing CD Rate (%)

Proposed CD Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

8714.94.10

Brake Of bicycles and other, not motorised

10

25

2

8714.95.10

Saddle Of bicycles and other, not motorised

10

25

সারণি ৪: তথ্যপ্রযুক্তি খাত

১) সেলুলার ফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কতিপয় কাঁচামালের শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব

  • সেলুলার ফোন উৎপাদন বা সংযোজনের জন্য আমদানিতে কতিপয় উপকরণে রেয়াতী সুবিধা প্রদান সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের TABLE-I ও TABLE-II তে অন্তর্ভুক্তি

TABLE-I

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

2513.10.00

Pumice stone

10

1

2

2827.41.00

Cupric chloride

10

1

3

2833.25.00

Copper (II) sulfate pentahydrate

10

1

4

2833.29.90

Sodium persulphate

10

1

5

2933.79.90

N-Methyl-2-Pyrrolidone (NMP)

5

1

6

3215.11.90

Solder Mask and Ink (Printing ink)

25

1

7

3402.19.90

Antifoaming agent

10

1

8

3702.98.00

Unexposed photosensitive film of a width exceeding 35mm

10

1

9

3707.90.00

Chemical preparations for photographic uses

15

1

10

3810.10.00

Soldering paste

10

1

11

3824.99.90

Lithium Hexaflouride Phosphate electrolyte

25

1

12

2842.10.90

Lithium iron phosphate

10

1

13

3824.99.90

Electroplating salts and chemicals for PCB manufacturing

25

1

14

3919.10.90

Adhesive Type Foam; Adhesive Tape (Polypropylene 32 um), Single Foamed Tape

25

1

15

3919.90.20

Double glue adhesive tape

25

1

16

3920.20.20

Non printed cast polypropylene film

10

1

17

3920.99.90

Thermoplastic sheets

25

1

18

4811.49.00

Optically Clear Adhesive (OCA) Paper, High temperature paper/tape

25

1

19

4811.90.20

Solid barley paper; Insulation paper; Hollow barley paper

10

1

20

5911.90.00

Screen printing mesh

1

1

21

7403.19.00

Copper anode ball

5

1

22

7410.11.00

Copper foil

10

1

23

7410.21.90

Copper clad laminated with backing materials; Copper foil thickness not exceeding 1.5 mm

10

1

24

7506.10.00

Nickel strip

15

1

25

7607.11.90

Aluminium foil

15

1

26

8001.10.00

Tin, not alloyed

5

1

27

8001.20.00

Tin alloys

5

1

28

8003.00.00

Pure tin anode

10

1

29

8311.20.00

Solder lead wire

25

1

30

8311.30.00

Solder lead bar

10

1

31

8506.90.10

Separator

10

1

32

8507.60.00

Lithum ion/Polymer cell

25

1

33

8516.80.00

Thermistor

10

1

34

8517.70.00

Magmetic beads, Processed Plain Metal-Alloy Sheet For Mobile Housing; Decoration Steel Sheet For making Mobile Body Casing

10

1

35

8517.70.00

Sim Card slot/T-Card slot

10

1

36

8534.00.00

Protection Circuit Board, BMS (Battery management system)

5

1

37

8541.40.90

Light Emitting Diodes (LED)

5

1

38

8541.50.00

Thermistor

5

1

39

8546.90.00

Heat Sink/Shield

10

1

40

9013.90.10

Diffuser Back light controller

5

1

TABLE-II

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

8507.60.00

Lithium Ion Battery; Lithium Polymer Battery

25

10

2

8517.70.00

Vibrator; Motor; Receiver

10

10

3

8517.70.00

Earphone button, other covers for mobile components

10

10

4

8544.19.90

USB Cable; OTG Cable

25

10

২) সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব

  • কম্পিউটার যন্ত্রপাতি ও উপকরণের ক্ষেত্রে রেয়াতি সুবিধা প্রদান

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

8523.29.12

Database; productivity, communication or collaboration software for automatic data processing machines recorded on magnetic media

CD-25, VAT-15

CD-5

2

8523.29.13

Other software for automatic data processing machines recorded on magnetic media

CD-25, VAT-15

CD-5

3

8523.49.21

Database; productivity, communication or collaboration software for automatic data processing machines recorded on optical media

CD-25, VAT-15

CD-5

4

8523.49.29

Other software for automatic data processing machines recorded on optical media

CD-25, VAT-15

CD-5

5

8523.80.10

Database; operating system; developments tools; productivity, communication or collaboration software for automatic data processing machines

CD-25, VAT-15

CD-5

6

8523.80.20

Other software for automatic data processing machines

CD-25, VAT-15

CD-5

সারণি ৫: ট্যারিফ যৌক্তিকীকরণ

১) যে সকল পণ্যের  আমদানি শুল্ক (CD) হ্রাস  করা হয়েছে

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

0508.00.00

Coral and similar materials, unworked or simply prepared but not otherwise worked; shells of molluscs, crustaceans or echinoderms and cuttlebone, unworked or simply prepared but not cut to shape, powder and waste thereof.

10

5

2

1102.20.00

Maize (corn) flour

25

15

3

1102.90.00

Other

25

15

4

1108.12.00

Maize (corn) starch

25

15

5

7605.11.00

Aluminiym wire, not alloyed, of which the maximum cross-sectional dimension exceeds 6 mm

15

5

6

7605.19.00

Other non alloyed amluminium wire

25

5

7

7605.21.00

Alloys aluminium wire of which the maximum cross-sectional dimension exceeds 7 mm

10

5

8

7605.29.00

Other alloy aluminium wire

25

5

২) যে সকল পণ্যের আমদানি শুল্ক (CD) বৃদ্ধি করা হয়েছে

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

3819.00.00

Hydraulic brake fluids and other prepared liquids for hydraulic transmission, not containing or containing less than 70% by weight of petroleum oils or oils obtained from bituminous minerals

10

15

2

3206.19.10

Filler master batch

10

15

3

3206.19.20

Color master batch

5

15

4

3206.19.90

Other pigments and preparations

5

15

5

8523.59.10

Proximity Cards and tags

15

25

6

6813.20.90

Finished brake linings

10

15

৩) যে সকল পণ্যের সম্পুরক শুল্ক আরোপ/হ্রাস/বৃদ্ধি/প্রত্যাহার করা হয়েছে

Sl. No.

H.S.Code

Description

Existing Rate (%)

Proposed Rate (%)

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

6110.12.00

6110.19.00

কাশ্মিরী ছাগল বা অন্য প্রাণীর সরু লোম দ্বারা তৈরী সামগ্রী

0

45

2

8510.20.00

Hair clippers

0

20

3

8510.30.00

Hair‑removing appliances

0

20

৪) যে সকল পণ্যের আমদানি পর্যায়ে VAT প্রত্যাহার করা হয়েছে

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing VAT rate

Proposed VAT rate

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

3215.90.20

Ink for ball point pen imported by VAT registered ball point pen manufacturing industries

15%

0%

৫) যে সকল পণ্যের আমদানি পর্যায়ে VAT আরোপ করা হয়েছে

Sl. No.

H.S. Code

Description

Existing VAT rate

Proposed VAT rate

(1)

(2)

(3)

(4)

(5)

1

Heading

47.01 to 47.06

(All H.S.Codes)

Pulp imported by commercial importer

0%

15%

৬) যে সকল পণ্যের উপর রেগুলেটরি ডিউটি (Regulatory Duty) আরোপ করা হয়েছে

Heading

H.S. Code

Description

RD Rate

RD Rate

(1)

(2)

(3)

(4)

(4)

11.02

All H.S Codes

Cereal flours other than of wheat or meslin

0%

10%

76.05

7605.11.00

7605.21.00

Aluminium wire

0%

10%

7605.19.00

7605.29.00

Other aluminium wire

0%

20%

৭) বাজেটে যে সকল H.S. Code এর বর্ণনায় পরিবর্তন, সংশোধন, বিভাজন, একীভূতকরণ এবং নতুন H.S. Code সৃজন করা হয়েছে

ক)  যে সকল H.S. Code এর বর্ণনা পরিবর্তন/সংশোধন করা হয়েছে

Sl. No.

H.S. Code

Existing Description

Changed Description

(1)

(2)

(3)

(4)

1

1901.90.30

Preparations for infant use in bulk imported by VAT registered infant food industry

Preparations for infant or young children in bulk imported by VAT registered food industry

2

3801.30.10

Graphite paste imported by VAT registered ferro alloy manufacturing industry

Graphite or carbon electrode paste imported by VAT registered ferro alloy manufacturing industry

3

3909.40.10

Imported by VAT registered ink manufacturing industries

Imported by VAT registered ink or tyre tube manufacturing industries

4

4412.39.00

Other

Other, with both outer plies of coniferous wood

5

6304.20.00

Bed nets, of warp knit fabrics specified in Subheading Note 1 to this Chapter

Bed nets specified in Subheading Note 1 to this Chapter

6

4901.99.90

Other books

Other

7

5512.19.10

Silk screen imported by VAT registered ceramic ware manufacturers

Silk screen imported by VAT registered ceramic ware or tiles manufacturers

8

7411.10.10

Imported by VAT registered air conditioner or compressor manufacturing industry

Imported by VAT registered air conditioner or refrigerator or compressor manufacturing industry

9

7208.52.10

Imported by VAT registered Transformer, pre-fabricated building, motorcycle and products of Chapter 72 and Chapter 73 manufacturing industry

Imported by VAT registered Transformer, pre-fabricated building and products of Chapter 72 and Chapter 73 manufacturing industry

10

7208.53.10

Imported by VAT registered Transformer, pre-fabricated building, motorcycle and products of Chapter 72 and Chapter 73 manufacturing industry

Imported by VAT registered Transformer, pre-fabricated building and products of Chapter 72 and Chapter 73 manufacturing industry

11

8523.29.12

Operating systems; development tools

Database; operating systems; development tools; productivity; communication or collaboration software

12

8523.29.13

Other computer software

Other software for automatic data processing machines

13

8523.49.21

Operating systems; development tools

Database; operating systems; development tools; productivity; communication or collaboration software

14

8523.49.31

Other computer software

Other software for automatic data processing machines

15

8703.40.23

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, brand new

16

8703.40.24

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, reconditioned

17

8703.50.23

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, brand new

18

8703.50.24

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, reconditioned

19

8703.60.23

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, brand new

20

8703.60.24

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, reconditioned

21

8703.70.23

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, brand new

22

8703.70.24

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, brand new

Microbus, reconditioned

23

3824.99.50

Coated calcium carbonate imported by calcium carbonate filler manufacturers

Coated calcium carbonate imported by VAT registered plastic goods or calcium carbonate filler manufacturers

খ) যে সকল H.S.Code একীভুত (Merge) করা হয়েছে

Sl. No.

Existing H.S. Code

Merged

H.S. Code

Description

(1)

(2)

(3)

(4)

1

7304.39.10

7304.39.00

--Other

7304.39.90

2

8301.20.10

8301.20.00

- Locks of a kind used for motor vehicles

8301.20.90

3

8483.10.10

8483.10.00

- Transmission shafts (including cam shafts and crank shafts) and cranks

8483.10.90

4

8511.20.10

8511.20.00

- Ignition magnetos; magneto-dynamos; magnetic flywheels

8511.20.90

5

8511.40.10

8511.40.00

- Starter motors and dual purpose starter-generators

8511.40.90

6

9029.20.10

9029.20.00

- Speed indicators and tachometers; stroboscopes

9029.20.90

গ) যে সকল H.S.Code বিভাজন (Split) করা হয়েছে

Sl. No.

Existing H.S. Code

Splited

H.S. Code

Description

(1)

(2)

(3)

(4)

1.

0901.11.00

0901.11.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg

0901.11.90

--- Other

2.

0901.12.00

0901.12.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg

0901.12.90

--- Other

3.

0901.21.00

0901.21.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg

0901.21.90

--- Other

4.

0901.22.00

0901.22.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg

0901.22.90

--- Other

5.

0901.90.00

0901.90.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg

0901.90.90

--- Other

6.

1104.19.00

1104.19.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg.

1104.19.90

--- Other

7.

1104.22.00

1104.22.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg.

1104.22.90

--- Other

8.

1104.23.00

1104.23.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg.

1104.23.90

--- Other

9.

1104.29.00

1104.29.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg.

1104.29.90

--- Other

10.

1104.30.00

1104.30.10

--- Wrapped/canned upto 2.5 kg.

1104.30.90

--- Other

11.

1704.10.00

1704.10.10

--- Put up for retail sale

1704.10.90

--- Other

12.

1704.90.00

1704.90.10

--- Put up for retail sale

1704.90.90

--- Other

13.

1901.90.10

1901.90.11

---- Filled milk powder imported by VAT registered milk products manufacturing industries

1901.90.19

---- Other

14.

2712.20.00

2712.20.10

--- Imported by VAT registered tyre tube manufacturing industries

2712.20.90

--- Other

15.

2901.23.00

2901.23.10

--- Refrigerant isobutane/R600a imported by VAT registered refrigerator manufacturing industries

2901.23.90

--- Other

4106.22.90

--- Other

16.

4823.70.00

4823.70.10

--- Gasket imported by VAT registered compressor manufacturers

4823.70.90

--- Other

17.

8504.90.20

8504.90.21

---- Formed core imported by VAT registered voltage stabilizer manufacturing industries

8504.90.29

---- Other

18.

8532.29.00

8532.29.10

--- Capacitor imported by VAT registered compressor manufacturers

8532.29.90

--- Other

19.

8311.10.00

8311.10.10

--- Welding wire imported by VAT registered compressor manufacturers

8311.10.90

--- Other

20.

8523.80.00

8523.80.10

--- Database; operating systems; development tools; productivity; communication or collaboration software

8523.80.20

--- Other software for automatic data processing machines

8523.80.90

--- Other

ঘ) যে সকল H.S. Code বাতিল করা হয়েছে

Sl. No.

New

H.S. Code

Description

(1)

(2)

(3)

1.

4401.10.00

Fuel wood, in logs, in billets, in twigs, in faggots or in similar forms

2.

4403.10.00

Treated with paint, stains, creosote or  other preservatives     

3.

4403.20.00

Other, coniferous      

4.

4403.92.00

Of beech (Fagus spp.)

5.

4406.10.00

Railway or tramway sleepers (cross-ties) of wood Not impregnated             

6.

4406.90.00

Other Railway or tramway sleepers (cross-ties) of wood

7.

4407.10.00

Coniferous

8.

4412.32.00

Other, with at least one outer ply of nonconiferous wood         

9.

8703.40.25

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

10.

8703.40.26

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

11.

8703.50.25

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

12.

8703.50.26

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

13.

8703.60.25

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

14.

8703.60.26

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

15.

8703.70.25

Microbus of a cylinder capacity not exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

16.

8703.70.26

Microbus of a cylinder capacity exceeding 1800 cc, CBU, reconditioned

ঙ) যে সকল H.S. Code নতুন সৃষ্টি করা হয়েছে

Sl. No.

New

H.S. Code

Description

(1)

(2)

(3)

1

2710.19.23

Recycled lubricating oil

2

2710.19.24

Recycled lube base oil

3

2712.90.20

Paraffin wax imported by VAT registered manufacturers

4

3206.19.20

Color master batch

5

4401.11.00

Coniferous

6

4401.12.00

Non-coniferous

7

4401.40.00

Sawdust and wood waste and scrap, not agglomerated.

8

4403.11.00

Treated with paint, stains, creosote or  other preservatives:Coniferous

9

4403.12.00

Treated with paint, stains, creosote or  other preservatives:Non-coniferous

10

4403.21.00

Other, coniferous Of pine (Pinus spp.), of which any cross-sectional dimension is 15 cm or more

11

4403.22.00

Other, coniferous Of pine (Pinus spp.), other

12

4403.23.00

Other, coniferous Of fir (Abies spp.) and spruce (Picea spp.), of which any cross-sectional dimension is 15 cm or more

13

4403.24.00

Other, coniferous Of fir (Abies spp.) and spruce (Picea spp.), other

14

4403.25.00

Other, of which any cross-sectional dimension is 15 cm or more

15

4403.26.00

Other, coniferous

16

4403.93.00

Of beech (Fagus spp.), of which any cross-sectional dimension is 15 cm or more

17

4403.94.00

Of beech (Fagus spp.), other

18

4403.95.00

Of birch (Betula spp.), of which any cross-sectional dimension is 15 cm or more

19

4403.96.00

Of birch (Betula spp.), other

20

4403.97.00

Of poplar and aspen (Populus spp.)

21

4403.98.00

Of eucalyptus (Eucalyptus spp.)

22

4406.11.00

Railway or tramway sleepers (cross-ties) of wood, not impregnated: Coniferous

23

4406.12.00

Railway or tramway sleepers (cross-ties) of wood, not impregnated: Non-coniferous

24

4406.91.00

Other Railway or tramway sleepers (cross-ties) of wood: Coniferous

25

4406.92.00

Railway or tramway sleepers (cross-ties) of wood:Non-coniferous

26

4407.11.00

Of pine (Pinus spp.)

27

4407.12.00

Of fir (Abies spp.) and spruce (Picea spp.)

28

4407.19.00

Other

29

4407.96.00

Of birch (Betula spp.)

30

4407.97.00

Of poplar and aspen (Populus spp.)

31

4412.33.00

Other, with at least one outer ply of non-coniferous wood of the species alder (Alnus spp.), ash (Fraxinus spp.), beech (Fagus spp.), birch (Betula spp.), cherry (Prunus spp.), chestnut (Castanea spp.), elm (Ulmus spp.), eucalyptus (Eucalyptus spp.), hickory (Carya spp.), horse chestnut (Aesculus spp.), lime (Tilia spp.), maple (Acer spp.), oak (Quercus spp.), plane tree (Platanus spp.), poplar and aspen (Populus spp.), robinia (Robinia spp.), tulipwood (Liriodendron spp.) or walnut (Juglans spp.)

32

4412.34.00

Other, with at least one outer ply of non-coniferous wood not specified under subheading 4412.33

33

4412.39.00

Other, with both outer plies of coniferous wood

34

4901.99.30

Other books

35

8545.90.20

Carbon rod

36

8504.40.30

Voltage stabilizer (capacity upto 2,000 VA)

37

7320.90.20

Spring imported by VAT registered compressor manufacturers