মঙ্গলবার ‘ফাইন্যান্সিং ফর এসডিজি ইমপ্লিমেন্টেশন ইন এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই পরামর্শ দেন ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মির্জ্জা এ বি আজিজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নকারী প্রত্যেকটি দেশেরই অতিরিক্ত সম্পদের প্রয়োজন হচ্ছে।
“এসডিজি বাস্তবায়নে আগামী ১২/১৩ বছরের জন্য আমাদের প্রায় ৯২৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। আমরা টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য অন্য দেশগুলোর কাছে অর্থ চাই।”
মির্জ্জা আজিজ বলেন, “উন্নত বিশ্ব অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিলেও মাত্র সাত/আটটি দেশ ছাড়া আর কেউ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। আমাদের নিজস্ব সম্পদ দিয়েই এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হবে।”
কর আহরণের দুর্বলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপালের চেয়েও জিডিপির বিপরীতে কর আহরণ কম আমাদের।”
বাংলাদেশে বর্তমানে কর-জিডিপি অনুপাত ১২ শতাংশ ‘লজ্জাজনক’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি বলেন, এটা ২০ শতাংশে নিতে সবাইকে কর দিয়ে আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমাদের জিডিপির বিপরীতে কর হার সবচেয়ে কম বলে সমালোচনা করা হলেও গত ৮/৯ বছরে আমরা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ তিন গুণ (৩০০ শতাংশ) বাড়িয়েছি এবং এই বিপুল অর্থ মানসম্পন্ন উপায়ে ব্যয় করছি।”
২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়ন ও পরবর্তী সময়ের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সপ্তম শ্রেণি থেকে কারিগরি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার কথা জানান তিনি।
বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ওয়ানস্টপ সার্ভিসের জন্য নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগের কথা বলেন তিনি।
রপ্তানি বাজারকে আরও শক্তিশালী করতে পণ্যের বহুমুখীকরণের কথাও বলেন আবুল কালাম আজাদ।
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অনেক বাধা সত্ত্বেও এ অঞ্চলের দেশগুলোর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে।
“সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ও কম মূল্যস্ফীতি দিয়ে আমাদের অর্থনীতি ভাল করছে। এমনকি ২০০৭-০৮ সালের বিশ্বমন্দার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি উন্নতি করেছে।”
তবে সামাজিক বৈষম্যকে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় সমস্যা বলে চিহ্নিত করেন মোস্তাফিজুর।
সিপিডি ও জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিকের (এসকাপ) যৌথায়নে আয়োজিত এই আলোচনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।