তামাকে আরও কঠোর কর কাঠামোর দাবি

ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে আসন্ন নতুন অর্থবছরের বাজেটে তামাকের জন্য আরও কঠোর কর কাঠামোর দাবি জানিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2018, 11:37 AM
Updated : 28 May 2018, 03:38 PM

তাদের দাবি, ফিল্টারের ভিত্তিতে বিড়ির জন্য আলাদা কর কাঠামো রাখা চলবে না। এছাড়া দেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির সিগারেটের ক্ষেত্রে ভিন্ন কর ব্যবস্থা তুলে দিতে হবে। সার্বিকভাবে বাড়াতে হবে তামাকের কর।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চসহ সাতটি সংগঠন সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানায়।

টোবাকো অ্যাটলাসের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিবছর বাংলাদেশে এক লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় তামাক ব্যবহারজনিত বিভিন্ন রোগে।

‘তামাকজনিত রোগ ও মৃত্যু কমাতে কঠোর করনীতি প্রণয়নে জনপ্রতিনিধিদের নিকট আহ্বান’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা ফাহমিদা ইসলাম বলেন, “তামাক থেকে বিপুল পরিমানে রাজস্ব আসে এই যুক্তি দিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির বিরোধিতা করে আসছে। এর পাশাপাশি আছে তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামোতে শুভঙ্করের ফাঁকি।”

সিগারেটের উচ্চ এবং মধ্যম স্তর একত্রিত করা, নিম্নস্তরের সিগারেটের সর্বনিম্ন দাম প্রতি ১০ সিগারেটের জন্য ৫০ টাকা নির্ধারণ, উচ্চস্তরের সর্বনিম্ন দাম ১০ সিগারেটের জন্য ১০০ টাকা নির্ধারণ, নিম্নস্তরে অ্যাড-ভেলোরেম কর ৬০ শতাংশে বৃদ্ধি করা, উচ্চস্তরে ৬৫ শতাংশ বহাল এবং প্রতি ১০ শলাকায় ৫ টাকা হারে নির্দিষ্ট কর আরোপ করার সুপারিশ করেন ফাহমিদা ইসলাম।

বিড়ির ক্ষেত্রে প্রতি ২৫ শলাকার প্যাকেটের ৬ টাকা হারে নির্দিষ্ট কর আরোপ, অ্যাড-ভেলোরেম কর ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি, ধোঁয়াবিহীন তামাকে সর্বনিম্ন ২০ গ্রামের খুচরা দাম ৫০ টাকা নির্ধারণ, অ্যাড-ভেলোরেম কর ৪৫ শতাংশে বৃদ্ধি এবং প্রতি ২০ গ্রামে ১০ টাকা হারে নির্দিষ্ট কর আরোপের দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসন্ন ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে এই সুপারিশ অনুযায়ী কর কাঠামো প্রবর্তন করা হলে ধূমপায়ীরা ধূমপান ছাড়তে বাধ্য হবে। তাতে ধূমপানের কারণে অকাল মৃত্যু কমে আসবে, তামাক ব্যবহারজনিত ক্ষতি হ্রাস পাবে।

আগের চেয়ে তুলনামূলনভাবে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমেছে জানিয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ধূমপায়ীরা একদিনে অভ্যাস ছাড়তে পারবে না, তবে তাদের এই অভ্যাস ত্যাগ করার মানসিকতা থাকতে হবে।”

তামাক ব্যবহারে আইনি কড়াকড়ি আরোপে জোর দিয়ে তামাক বিরোধী জোটের আহ্বায়ক ফরিদা আখতার বলেন, “পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য জরিমানার বিধান থাকলেও তা তেমন করা হচ্ছে না, এখানে আইন প্রয়োগের ঘাটতি রয়েছে।”

২০১৩ সালের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী উন্মুক্ত স্থানে (পাবলিক প্লেস) ধূমপান করলে ৩০০ টাকা আর্থিক দণ্ড হতে পারে। পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটের অর্ধেকজুড়ে ছবিযুক্ত স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণের বিধান রয়েছে এ আইনে।

অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক এবং তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন, তামাক বিরোধী নারী জোট, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টও এ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়।

আরও খবর