নতুন এডিপিতে সাত মেগা প্রকল্পে ৩০ হাজার কোটি টাকা

ভোটের আগে সরকারের শেষ বাজেটে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রস্তাব করতে যাচ্ছে পরিকল্পনা কমিশন।

জাফর আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2018, 03:43 PM
Updated : 8 May 2019, 11:49 AM

এই প্রস্তাবে অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ থাকছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।

প্রস্তাবিত এই  এডিপির আকার চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির ১৬.৫৯ শতাংশ বেশি। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় উন্নয়ন খাতে বরাদ্দের এই আকার হবে ৮.২৮ শতাশ।

বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় পরিকল্পনা কমিশনের এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে পরিকল্পনা সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সকাল ১০টায় এ বৈঠক শুরু হবে।

পরিকল্পনা কশিনের কার্যক্রম বিভাগের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এডিপিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ থাকছে চলমান সাতটি মেগা প্রকল্পে।

এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় ১১ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে পদ্মা রেল লিংক প্রকেল্পের জন্য। আর পদ্মা বহুমূখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ৪ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা হবে তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ।

এছাড়া মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টের জন্য ২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা, কর্ণফূলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পে ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা, এবং দোহাজারি-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম প্রকল্পে ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

গত জানুয়ারিতে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হয়

গতবছর নভেম্বরে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু হয়

চলতি অর্থবছরের বাজেটে মূল এডিপির আকার ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। গত মার্চে তা কমিয়ে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮১ কোটি টাকার সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেয় সরকার।

ওই কর্মকর্তা জানান, নতুন অর্থবছরের জন্য দেশীয় সম্পদের যোগান ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। আর প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বৈদেশিক সম্পদের যোগান ধরা হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা।

আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এডিপিতে খাতভিত্তিক সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে সড়ক পরিবহন খাতে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ২২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা থাকছে বিদ্যুৎ খাতের জন্য। ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতে থাকছে ১৭ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ।

এরপর পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের জন্য ১৬ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা, শিক্ষা ও ধর্ম খাতের জন্য ১৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ১৪ হাজার ২১১ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য পুষ্টি, জন্যসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতের জন্য ১১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা এবং কৃষি খাতের জন্য ৭ হাজার ৭৬ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় ভিত্তিক হিসাবে সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য। বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য ২২ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা এবং সড়ক পরিবহন ও মহা সড়ক বিভাগের জন্য ২০ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব থাকছে।

এছাড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ১১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১১ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা, সেতু বিভাগের জন্য ৯ হাজার ১১২ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের জন্য ৬ হাজার ৬ কোটি টাকা এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য ৫ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।