ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের ৭০ শতাংশই দরিদ্র: মুহিত

ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্যকে ‘জাদুঘরে পাঠানোর’ ঘোষণা দেওয়া হলেও তা আসলে কতটা কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2018, 06:16 PM
Updated : 12 April 2018, 06:16 PM

বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এক সময় ড. ইউনূস (গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা) বলতেন, ক্ষুদ্র ঋণ পাওয়া গরিব মানুষের অধিকার। এ ধারণা দিয়ে তিনি সফলও হয়েছেন।কিন্তু ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে কি দারিদ্র্য কমেছে?

“ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের ৭০ শতাংশই এখনও দারিদ্র্য সীমার নিচে।”

মুহিত বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক এখন আর ‘ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে কাজ করছে না’।

“বরং তারা এখন অন্য কিছু নিয়েই ব্যস্ত।”

পল্লী-কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান খলীকুজ্জমান আহমদের ‘সোসিও-ইকোনমিকস অব বাংলাদেশ থ্রু দ্য ডেকেইডস’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী একথা বলেন।

সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পিকেএসএফের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মেসবাহ্‌উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক তৌফিক আহমদ চৌধুরী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাজমা বেগম বক্তব্য দেন।

খলীকুজ্জমান আহমদের বই সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, “গত ৩৮ বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে ২২টি অধ্যায়ে সাজানো হয়েছে বইটি। ১৯৭৯ সালের প্রেক্ষিত নিয়ে দাতাদের ঋণ সহায়তার অধ্যায়টি রচনা করেছেন ড. খলীকুজ্জমান।

“তখনকার পরিস্থিতি আসলেই খারাপ ছিল। বাংলাদেশ ছিল ঋণ সহায়তা নির্ভর। মোট রাজস্বের চাইতেও বেশি ছিল বিদেশি ঋণ। বইটিতে এসব ছাড়াও বিগত সময়ে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল সুন্দর করে তুলে ধরেছেন।”

তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন, বৈষম্য দূরীকরণ, সবার জন্য মানবমর্যাদা নিশ্চিতকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি পৃথিবীতে সাম্প্রতিককালে উচ্চারিত হলেও কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এই দর্শনগুলি সেই সত্তরের দশক থেকেই বলে আসছেন।

বইটিতে স্থান পাওয়া ১৯৭৯ সালে লেখা একটি প্রবন্ধের উদাহরণ টেনে অধ্যাপক নাজমা বেগম বলেন, দেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে মানুষের দক্ষতা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা লেখক প্রায় ৪০ বছর আগেই বলেছেন।

“দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এই সব লেখায় তিনি যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, তা দেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী।”