নতুন কর্মসংস্থানে জোর দিতে হবে: অর্থমন্ত্রী

উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য নতুন নতুন খাত সৃষ্টি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2018, 03:09 PM
Updated : 23 March 2018, 03:28 PM

শুক্রবার রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে ‘অগ্রযাত্রার সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক কর্মশালায় অর্থমন্ত্রী একথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদেরকে এখন অনেক বেশি কর্মসংস্থান ‍সৃষ্টির দিকে নজর দিতে হবে। বেসরকারি খাতগুলো এবিষয়ে নিশ্চয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশীয় অনেক সম্পদ এখনও পড়ে আছে, এগুলো কাজে লাগাতে আরও বিনিয়োগ নিয়ে আসতে হবে।”

জলবায়ু পরিবর্তনকে অগ্রযাত্রার অন্যতম বাধা হিসাবে উল্লেখ করে মুহিত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নের সূচকগুলো যাতে দিন দিন ভালো হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে।

ঢাকায় বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধি, দেশীয় ব্যবসায়ী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় একটি প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন মুহিত। উন্মুক্তভাবে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরাও সেই আলোচনায় অংশ নেন।

বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বেসরকারি খাতের সক্রিয়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে কর্মশালায় অংশ নেওয়া একাধিক বিশেষজ্ঞ মত দিয়েছেন।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে পুরোপুরি বের হতে হলে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

“এর মধ্যে রয়েছে রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে ভালো করা। এসডিজির শর্তগুলো পূরণে অতিরিক্ত ৬০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। ”

ব্যবসায় সহজীকরণ (ডুয়িং বিজনেস) সূচকে পিছিয়ে পড়া পরিস্থিতির উত্তরণে আরও গতি দিয়ে কাজ করার পাশাপাশি অভিবাসীদের দেশীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার উপর জোর দেন তিনি

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে বেরিয়ে আসার এই ঘটনা অর্থনীতিতে অনেক সম্ভাবনা জাগাবে। তবে বিদ্যামান সমস্যাগুলো দূর করতে সেগুলো নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা ও বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে।

“সারা বিশ্বে এখন বাংলাদেশের ব্রান্ডিং কারার পাশাপাশি বন্দর অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে হবে নতুন নুতন বিদেশি বিনিয়োগ।”

বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এসডিজির লক্ষ্য পূরণে আরও ৬০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বলে সরকার ধারণা করছে। বেসরকারি খাত এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

অর্থনীতির অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে হলে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার পরামর্শ দেন এই ব্যবসায়ী।

ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন হেড জানিনা জারুজেলস্কি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও বড় করার জন্য প্রয়োজন বেসরকারি খাতগুলোর সক্রিয় ভূমিকা। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর ও অন্যান্য স্থলবন্দরগুলোর দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

“ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে যেসব জটিলতা দেখা দেয় তা দূর করতে হবে।”

ওয়ান স্টপ সার্ভিস সক্রিয় করা, অর্থনৈতিক কাজে নারীর সংযুক্ত ও স্থলবন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে বলেন এই বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী। 

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার যে রাস্তা তৈরি করেছে তাতে সরকারি, বেসরকারি খাতও সিভিল সোসাইটির মূখ্য ভূমিকা রয়েছে।

“সামনে এগুনোর ক্ষেত্রে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। তবে এগুলো প্রত্যেকটিকে সম্ভাবনায় রূপ দিতে হবে।”

অন্যদের মধ্যে ইআরডি সেক্রেটারি শফিকুল আজম, বাণিজ্য সচিব সুভাশীস বসু, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, ইউএনডিপি ব্যাংককের আঞ্চলিক প্রধান হোলিয়াং জু, পিকেএসএফ চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবিরসহ বেশ কয়েকজন আলোচনায় অংশ নেন।