আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই: এফবিসিসিআই সভাপতি

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় 'আত্মতুষ্টিতে' না ভুগে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বজায় রাখতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে নজর দিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সরকারকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2018, 04:55 PM
Updated : 15 March 2018, 04:55 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকার মতিঝিলে এফবিসিসিআই আয়োজিত এক সভায় এ পরামর্শ আসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।

সভার প্রধান অতিথি এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে যেতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয় তার তিনটিই বাংলাদেশ পূরণ করেছে।

“তবে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।”

এই উত্তরণের প্রসঙ্গ ধরে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, “কিন্তু আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না, আমাদের এই অগ্রগতি বজায় রাখতে হবে। এছাড়া ২০২১ সাল নাগাদ আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে।

“যার জন্য আমাদের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিদেশিরা আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন, কিন্তু যে আগ্রহটা জন্মেছে তার থেকে সুবিধা নিতে হবে। আমাদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস তৈরি করতে হবে এবং দুর্নীতি ও লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে।”

শিল্পখাতে বিনিয়োগ বাড়ানোই হবে উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবুল কাশেম খান।

তিনি বলেন, "দেশের বেসরকারি সেক্টরের প্রধানদের নিয়ে বিনিয়োগ মন্ত্রণালয় গঠন করার সময় এসে গেছে। সেই সাথে ক্ষুদ্র ঋণ মন্ত্রণালয়ও গঠন করার দাবি জানাই, ছোট উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নজর দিতে হবে।”

ব্যবসায়ীদের উৎপাদিত পণ্যের উপর কর কমানোর দাবি জানিয়ে কাশেম খান বলেন, "৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে কর ১৫-২ শতাংশ করতে হবে, এই সঞ্চয় তাহলে বিনিয়োগ করতে পারবে ব্যবসায়ীরা।"

সভায় বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মঈনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সুভাশীষ বোসসহ দেশের ছোট-মাঝারি ও বৃহৎ ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উন্নয়নকে টেকসই করতে মাথাপিছু আয়ের পাশাপাশি সামাজিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সূচক তৈরি করে থাকে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)। তারই ভিত্তিতে স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশ—তিন শ্রেণিতে ভাগ করে সিডিপি।

বাংলাদেশসহ ৪৮টি দেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় আছে। প্রতি তিন বছর পরপর জাতিসংঘের সিডিপি এ তালিকায় থাকা দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে। অর্থনীতির সার্বিক গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে সিডিপির ২০১৮ সালের মূল্যায়নে বাংলাদেশের এলডিসির তালিকা বের হওয়ার যোগ্যতা অর্জন প্রায় নিশ্চিত।