এসডিজি অর্জনে অর্থের বিকল্প হতে পারে জনগণ: মুহিত

টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে বিপুল অর্থের সংস্থান করা সম্ভব হবে না মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2018, 01:58 PM
Updated : 15 March 2018, 01:58 PM

উন্নয়নের আর্দশে উদ্বুদ্ধ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের রজত জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ববক্তব্য দিচ্ছিলেন অর্থমন্ত্রী।

মুহিত বলেন, “এসডিজির (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) প্রধান লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য সমূলে উৎপাটন।

“আমি মনে করি, বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে ২০২৪ সালের মধ্যেই, যা হবে ২০৩০ সালের অনেক আগেই। বর্তমান প্রবৃদ্ধি প্রক্রিয়ার যে গতি এবং যে কর্মপদ্ধতি আমরা গ্রহণ করেছি তা আমাদের সুফল দেবে।”

তিনি বলেন, “এসডিজির জন্য আমাদের প্রয়োজন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার। এত ডলার আমরা হয়ত পাব না, এ বিষয়ে আমি মোটামুটি নিশ্চিত।

“তবে এমডিজি অর্জনে আমাদের যে অর্থের প্রয়োজন ছিল তার চেয়ে কম অর্থে আমরা তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এটাই আসল ফ্যাক্ট।”

এসডিজি অর্জনের পথ বাতলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আদর্শকিভাবে সংঘবদ্ধ জনগণ যারা উন্নয়নে অংশ নেবে, তারা হতে পারে প্রয়োজনী প্রচুর অর্থের সব থেকে ভালো বিকল্প। তাদের সঙ্গে নিয়ে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচ না করেই বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।

“জনসাধারণকে লক্ষ্য অর্জনে উদ্বুদ্ধ করলেই এটা সম্ভব এবং বাংলাদেশ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিতাড়িত করতে পারব।”

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “২০১৫ থেকে তিন বছর আমাদের জন্য খুবই ভালো যাচ্ছে। আমরা ৭ দশমিক ০২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি প্রায় তিন বছর আগে। এরপর আমরা ৭ দশমিক ২৪ শতাংশের দিকে এগিয়ে গেলাম।

“এবছর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ধারণা অনুসারে আমরা অর্জন করব সাড়ে ৭ শতাংশের কাছকাছি। কিন্তু দারিদ্র্য সমূলে উৎপাটনের জন্য তা পর্যাপ্ত নয়। এজন্য প্রয়োজন ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন।”

বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে আরও বেশি রাষ্ট্রীয় সক্রিয়তা এবং কল্যাণমূলক কাজের প্রয়োজন বলে মত দেন তিনি।

এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে দুইটিকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “একটি হলো- কেউ পিছিয়ে থাকবে না। মানব সমাজের সকলেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশ হবে, উন্নয়নের সুফল পাবে। যার অর্থ ২০৩০ এর মধ্যে দারিদ্র্য অবশ্যই সমূলে উৎপাটিত হবে। এটাই প্রধান লক্ষ্য।

“দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো- আমি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সেই পরিমাণ সম্পদ রেখে যাব যা আমি ধারণ করেছি। আমার মতে এ দুটোই এসডিজির প্রধান লক্ষ্য। এসডিজির লক্ষ্যগুলো নির্ধারণে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসডিজি অর্জনে তা আমাদের জন্য সহায়ক হবে।”  

অনুষ্ঠানে ‘ফাইন্যান্স ফর সাসটেইনেবল গ্রোথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।  

ফাইন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির, অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন এএফএম আওরঙ্গজেব।