তিনি বলেছেন, “আমরা বিশ্বাসি করি, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালনির উন্নয়ন খুবই জরুরি। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক বিষয় নয়, বরং প্রান্তিক মানুষের জ্বালানি সুবিধা নিশ্চিতের জন্য এই উদ্যোগ। পৃথিবীর নিরাপত্তার জন্যও এটি অপরিহার্য।”
রোববার ভারতের নয়া দিল্লিতে বিশ্বের ১২১টি দেশের সৌর বিদ্যুৎ সহযোগিতা বিষয়ক জোট ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সের (আইএসএ) ‘ফাউন্ডিং কনফারেন্সে’ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন কালচারাল সেন্টারে (আরবিসিসি) এই সম্মেলনে আবদুল হামিদ বলেন, “নবায়নযোগ্য জ্বালানির চাহিদা মোটানোর জন্য সমন্বিত নীতি এবং বড় ধরনের অর্থায়ন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায়কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।”
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে চাপ কমাতে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়াতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া অলন্দের উদ্যোগে ২০১৫ সালে আইএসএ’র কার্যক্রম শুরু হয়। ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রামে আইএসএ’র সদর দপ্তর।
বাংলাদেশ আশা করছে, জোটভুক্ত দেশগুলো সৌরশক্তির অধিকতর ব্যবহারে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের ক্ষতির দিক তুলে ধরে আবদুল হামিদ সম্মেলনে বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিরূপ প্রভাব দেখা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে দায়ী না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রয়াস চালাচ্ছে।”
বাংলাদেশ সরকার ২০২১ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় দুই হাজার মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সৌরশক্তি থেকে উৎপাদিত হয় ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত।
এছাড়া সরকার সৌরশক্তি থেকে ‘ইউটিলিটি স্কেলে’ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত বৃহৎ আকারের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
আবদুল হামিদ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা সম্মেলনে তুলে ধরেন। এই সম্মেলনের মাধ্যমে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার, গবেষণা ও উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইএসএ’র সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “সকলের জন্য সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও আধুনিক জ্বালানি নিশ্চিত করার জন্য পরস্পরকে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের নতুন দ্বার উন্মোচনে আইএসএ সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর যৌথ সভাপতিত্বে এই সম্মেলনের সূচনা পর্বে দুই-কো চেয়ার এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বক্তব্য দেন।