৫ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপি সংশোধন

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮১ কোটি টাকার সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2018, 05:57 PM
Updated : 6 March 2018, 06:59 PM

তবে স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নসহ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।

স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা কর্পোরেশনের মোট বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। তা থেকে ১ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা বা ১৪ শতাংশ কমিয়ে ৯ হাজার ২১৩ কোটি টাকায় সংশোধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় চলতি অর্থবছরের জন্য এ সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “চলতি অর্থবছরের জন্য বৈঠকে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকেল্পর বরাদ্দসহ সংশোধিত এডিপি‘র বরাদ্দ সর্বমোট ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।”

এর মধ্যে স্থানীয় মুদ্রার জোগান থাকবে ৯৬ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য থেকে আসবে ৫২ হাজার ৫০ কোটি টাকা এবং ৯ হাজার ২১৩ কোটি টাকা স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।

জিয়াউল বলেন, সংশোধিত এডিপিতে মোট ১ হাজার ৬৫৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প হিসেবে ১ হাজার ২৭টি প্রকল্পের তালিকা অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়েছে।

বৈঠকে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির সুবিধার্থে ২৬৮টি প্রকল্প বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প অন্তর্ভূক্তির প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জিয়াউল বলেন, “চলতি অর্থবছরের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ৩০০টি প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল, এসব প্রকল্প শেষ করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া্ হয়েছে।”

পরিকল্পনা সচিব বলেন, বৈঠকে পাবলিক মানি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৯ (১৪/১) ধারা অনুযায়ী আন্তঃমন্ত্রণালয় উপযোজন বা কোনো মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ অপরিবর্তিত রেখে ওই মন্ত্রণালয় বা বিভাগের বরাদ্দ পুনঃ উপযোজন করার নির্দেশনা অনুমোদন করা হয়েছে।

অর্থাৎ যে কোনো মন্ত্রণালয় তার চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে প্রয়োজনে এক প্রকল্প থেকে অন্য প্রকল্পে বরাদ্দ কমাতে বা বাড়াতে পারবে।

বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থ বছর অর্থনীতির অনুকূলে থাকায় বাংলাদেশের মানুষের জন্য অনেক ‘সুখকর সংবাদ’ নিয়ে আসবে।

তিনি বলেন, “বহির্বিশ্বে ২০০৮ সাল থেকে নয় বছর যে অর্থনৈতিক মন্দাভাব ছিল। এখন উন্নত বা উন্নয়নশীল কোনো অর্থনীতিতেই সেটি আর পরিলক্ষিত হচ্ছে না। সর্বত্রই অর্থনীতিতে আজ চাঙ্গা ভাব। কোথায়ও ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি নেই, বেকারত্বও কোথাও দেখা যাচ্ছে না।”

মুস্তফা কামাল বলেন, “আমাদের কাছাকাছি দুটি শক্তিশালী অর্থনীতি হল ভারত ও চীন। ভারতে এ বছরের শুরুতে বৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৬.৫ শতাংশ। অতি সম্প্রতি তারা ঘোষণা দিয়েছেন তাঁদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.২ ভাগ। চীনের প্রবৃদ্ধিও ভাল অবস্থানে আছে, ৬.৫ শতাংশ।

“সার্বিক বিবেচনায় আমরা প্রত্যাশা করছি আমাদের জিডিপিতেও প্রবৃদ্ধি গত বছরের চাইতে এ বছর আরও ভালো অবস্থানে জায়গা করে নেবে।”

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আট মাসে রেকর্ড ৬২ হাজার ৩৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের বাস্তবায়ন ছিল ৪৫ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা।