ব্যাংকগুলোকে এডিআর সমন্বয়ে আরও ৬ মাস

ব্যাংকগুলোর এডিআর (ঋণ-আমানত অনুপাত) সমন্বয়ের সময়সীমা আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2018, 05:58 PM
Updated : 4 April 2018, 05:30 AM

এখন পুরো ২০১৮ সাল জুড়ে ব্যাংকগুলো এডিআর সমন্বয় করতে পারবে।

ব্যাংকগুলোর চড়া সুদে আমানত সংগ্রহের লাগাম টানতে এই পদক্ষেপ বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত ৩০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর এডিআর কমানোর ঘোষণা দিয়ে তা ৩০ জুনের মধ্যে সমন্বয় করতে বলেছিল। এখন তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হল।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে গভর্নর ফজলে কবির চড়া সুদে আমানত সংগ্রহ না করতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ব্যাংকিং খাতে কোনো তারল্য সংকট নেই। কাজেই আগ্রাসী হয়ে চড়া সুদে আমানত না নেওয়ার জন্য আমি ব্যাংকারদের অনুরোধ করছি।”

একটি বেসরকারি ব্যাংকে তারল্য সংকটের কারণে পুরো ব্যাংকিং খাতে কিছু মানুষ অস্থিরতা সৃষ্টির সুযোগ খুঁজছে মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, “ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত নিয়ে ব্যাংক খাতে অহেতুক প্যানিক (আতঙ্ক) সৃষ্টি হয়েছে। এর কোনো কারণ আমি দেখছি না, এটি অত্যন্ত অমূলক আশঙ্কা।”

এর তিন তিনের মাথায় এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমানত বাড়িয়ে এডিআর সমন্বয় করতে বাধ্য হয়ে অনেক ব্যাংক আমানতের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমাদের কাছে খবর ছিল কোনো কোনো ব্যাংক ১০ শতাংশের বেশি সুদে আমানত সংগ্রহ করতে শুরু করেছিল।

“চড়া সুদে আমানত সংগ্রহের কারণে ব্যাংকগুলো ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বাড়িয়ে দিত। এতে দীর্ঘদিন পর কমতে থাকা ব্যাংক ঋণ আবারও বেড়ে যেতো, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ত বিনিয়োগে।”

এ সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই এডিআর সমন্বয়ের সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

গত ২৯ জানুয়ারি মুদ্রানীতি দেওয়ার সময় এডিআর কমানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন গভর্নর ফজলে কবির।

পরের দিন অর্থাৎ ৩০ জানুয়ারি এক সার্কুলারে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য এডিআর ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।

আর ইসলামী শরীয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য এডিআর ৯০ শতাংশ থেকে ৮৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।

এডিআর কমানোর পর ব্যাংকগুলো এখন চড়া সুদে আমানত সংগ্রহ করছে। ফেব্রুয়ারি থেকে সব ব্যাংকই তাদের আমানতের সুদের হার বাড়িয়েছে।

বেসরকারি সাউথবাংলা এগ্রিকালচারাল ব্যাংক তাদের ডিপিএসের সুদের হার বাড়িয়ে ১১ শতাংশ করেছে। এই ব্যাংকটির এফডিআরের সুদের হার এখন ৯ দশমিক ৫ শতাংশ।

এবি ব্যাংক মাসিক সঞ্চয় আমানত স্কিমের সুদ হার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ করেছে। অন্যান্য ব্যাংকও প্রায় একই হারে তাদের আমানতের বিভিন্ন স্কিমের সুদের হার বাড়িয়েছে।