আজকেই অবসরে যান: মুহিতকে বাবলু

ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ‘আজকেই’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে অবসরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2018, 01:12 PM
Updated : 18 Feb 2018, 01:15 PM

রোববার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি বলেন, “অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ডিসেম্বরে অবসরে যাবেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন আপনি রক্তক্ষরণ কনটিনিউ করবেন? আমাদের বাঁচান, দেশকে বাঁচান, জাতিকে বাঁচান।

“ডিসেম্বর পর্যন্ত ওয়েট করার দরকার কী? আপনি আজকেই অবসরে চলে যান, গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচান, আমাদের বাঁচান। দায়িত্ব নিয়ে আজকেই অবসরে যান, দেশ জাতিকে পরিত্রাণ দেন।”

ব্যাংক খাতে ঋণ কেলেঙ্কারির জন্য অর্থমন্ত্রীকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার এক অনুষ্ঠানে মুহিত বলেন, আগামী ডিসেম্বরেই অবসরে যাবেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত (ফাইল ছবি)

অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বাবলু বলেন, “অর্থপাচার বন্ধে কোনো ব্যবস্থা হয়নি। ব্যাংক খাতে আতঙ্ক-উদ্বেগ-বিভ্রান্তি। এই হচ্ছে মানি মার্কেটের অবস্থা।”

অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, “হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। প্রথম পানামা পেপারসে নাম আসল, সরকার বা অর্থমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা নিলেন না। তারপর প্যারাডাইস পেপারসে নাম আসল অনেক ব্যবসায়ীর কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিলেন না।

“এগুলো বিভিন্ন ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট...ওয়াশিংটনভিত্তিক কোম্পানি বের করছে। অথেনটিসিটি আছে। ওগুলোর ওপর ভিত্তি করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।

“আমাদের ২৭ জনের নাম এসেছে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কত টাকা পাচার হয়েছে তারও কোনো হিসাব উনি (অর্থমন্ত্রী) সংসদে দেননি, মনে হয় উনি বাধ্যও নন। মাঝে মাঝে বলেন, চার হাজার কোটি টাকা কোনো টাকা হলো?”

ঋণ কেলেঙ্কারিতে সঙ্কটে পড়া রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংককে ঘাটতি পূরণে তহবিল জোগানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কার টাকা এটা? এটা গৌরি সেনের টাকা নয়, ১৬ কোটি মানুষের টাকা। কীভাবে দিলেন, তার কোনো উত্তর নেই।”

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু (ফাইল ছবি)

বাবলু বলেন, “সব ব্যাংকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ছোটবেলায় শুনতাম, যার হয় যক্ষা তার নাই রক্ষা। অর্থনীতির যক্ষা হয়েছে, অর্থনীতির কোনো রক্ষা নাই। বাঁচাতে হবে। অর্থনীতির রক্তক্ষরণের কারণে দেশের রক্তক্ষরণ হচ্ছে, জাতির রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে।

“দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না, কর্মসংস্থান হচ্ছে না। কর্মসংস্থান না হলে অর্থনীতি বেগবান হবে কীভাবে? প্যারাডাইস পেপারস, পানামা পেপারসে কোনো রাজনীতিবিদের নাম আসেনি। যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় কিসের? সুশীল সমাজ অনেক কথা বলে। আমাদের নামে কোনো অ্যাকাউন্ট বের করতে পারেনি। তাদের নামেই বের হয়েছে।”

এরর আগে বিরোধী দলের আরেক সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, “ঢাকা স্টক মার্কেটে স্মরণকালের বড় বিপর্যয় ঘটে গেছে। প্রত্যেক শেয়ার নিম্নমুখী। এই মুহূর্তে ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

“এজন্য একদল ভারত, আরেক দল চীনে দৌঁড়াচ্ছে।”

ঢাকা স্টকের শেয়ার বিক্রি না করার নির্দেশনা চেয়ে কাজী ফিরোজ বলেন, “এটি হলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।”