সোনালী ব্যাংকের ১৮১ শাখা লোকসানে, অলস ৮০ হাজার কোটি টাকা

দেড় শতাধিক শাখার লোকসানের সঙ্গে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সমালোচনা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2018, 12:49 PM
Updated : 3 Feb 2018, 12:53 PM

এছাড়া ব্যাংকটিতে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি পড়ে থাকারও সমালোচনা হয়েছে।

শনিবার সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, “ব্যাংকের ১ হাজার ২১১ শাখার মধ্যে লোকসানি শাখার সংখ্যা ১৮১টি, একটু বেশি। বন্ধ করাও যায় না এসব শাখা, কারণ জনগণ আপত্তি করে।

“এছাড়া ঋণ আমানত অনুপাতের (এডিআর) দিকে নজর দিলে দেখতে পাই তা আপনাদের জন্য ক্ষতিকর। এটা বিশ্বাসই করা যায় না আপনাদের এডিআর মাত্র ৩৮ শতাংশের মত। সেই সাথে আপনাদের শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণও অত্যন্ত বেশি।”

সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৭ সালের শেষে ব্যাংকটির ঋণ আমানত অনুপাত ঠেকেছে ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশে, শ্রেণিকৃত ঋণের হার ৩৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং লোকসানে থাকা ব্যাংকের শাখা ১৮১টি।

অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, “সব ব্যাংকগুলো যেখানে আমানত সংকটে আছে সেখানে সোনালী ব্যাংক ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি বসিয়ে রেখেছে।”

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ব্যাংকিং কমাতে ঋণ আমানত অনুপাত কমিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, “অন্যান্য ব্যাংকের এডিআরে লাগাম টানতে হচ্ছে আমাদের, কিন্তু সোনালী ব্যাংক অনেক নিচে রয়েছে। 

“২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে তাদের ঋণ আমানত অনুপাত ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ , সেটি কিন্তু মোটেই সন্তোষজনক নয়। দিন শেষে আপনাকে ব্যবসা করতে হবে। আপনি যত বড় দায়িত্ব পালন করুন না কেন, দিন শেষে আপনাকে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হবে।”

ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, “সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি মনোভাব রয়েছে যে ঋণ যত কম দেওয়া যায় তত নিরাপদ থাকা যায়। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বলছি, এই মনোভাব থেকে উঠে আসতে হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পরিচালনা পর্ষদের নিয়মাচার মেনে ঋণ প্রদান করেন তাহলে কোনো অসুবিধা হবার কথা না।

“ইতোমধ্যে আপনাদের শ্রেণিকৃত ঋণের আশানরূপ কোনো উন্নতি হয়নি, যা গত বছরের চেয়ে বেড়ে ৩৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ হয়েছে- এটা কাঙ্ক্ষিত বা সন্তোষজনক নয়। এছাড়া লোকসানে আছে ১৮১টি শাখা, যেখানে ২০১৫ সালে ছিল ১২৪টি।”

লোকসানে থাকা শাখাগুলোকে লাভজনক করে তুলতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ‘টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান’ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।