বিদ্যুৎ নিয়ে সন্তুষ্ট ৮৭ শতাংশ: জরিপ

বাংলাদেশে বর্তমান বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে প্রায় ৮৭ ভাগ মানুষ কম-বেশি সন্তুষ্ট বলে এক জনমত জরিপে উঠে এসেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2018, 12:49 PM
Updated : 22 Jan 2018, 12:53 PM

বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) চালানো এই জরিপে দাবি করা হয়েছে, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ আস্থাশীল।

সোমবার বিকালে বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠানে এই জনমত জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ৭৯ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ আস্থাশীল, পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ আস্থাশীল নয় এবং ১৪ দশমিক সাত শতাংশ সঠিকভাবে বলতে পারছে না।

বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে বলা হয়, সামগ্রিকভাবে ১১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ খুবই সন্তুষ্ট, ৪৮ দশমিক আট শতাংশ সন্তুষ্ট, ২৯ দশমিক নয় শতাংশ মোটুমটি সন্তুষ্ট এবং সন্তুষ্ট নয় এমন হার ১৩ দশমিক এক শতাংশ।

২০১৬ সালের অক্টোবরে এবং ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই জনমত জরিপ চালানো হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া মোট ১৯ হাজার ৬০০ জনকে ছয়টি প্রশ্ন করা হয়। এদের মধ্যে গ্রীষ্মকালে প্রশ্ন করা হয় ৯ হাজার ৯২৭ জনকে এবং শীতকালে ৯ হাজার ৬৭৩ জনকে।

বিবিএসের পরিচালক সি এস রায় জনমত জরিপ প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় বলেন, “সন্তুষ্টির পরিমাণ গ্রীষ্ম ও শীতকালে পার্থক্য আছে।”

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এই জনমত জরিপ করায় বিবিএস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।

 তিনি বলেন, “জরিপের উদ্দেশ্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণ কী ভাবছে, তা জানা।

“গত নয় বছরে দেশের ৯০ ভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। আমরা যা বলি তার চেয়ে বড় কথা হল, মানুষ কী ভাবছে?”

বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মাইলফলক ছোঁয়ায় ২০১৬ সালে এই উৎসব করেছিল সরকার (ফাইল ছবি)

সরকারের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে।

২০০৯ সাল থেকে নয় হাজার ২৫৪ মেগাওয়াটের ৮৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে। তবে বর্তমানে সরকার বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দিকে নজর দিয়েছে। রূপপুরে দুই হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।

এছাড়া মহেশখালীতে একাধিক কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বাগেরহাটে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং দেশের অন্যান্য জায়গাতেও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস জানান, বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর (ক্যাপটিভসহ) উৎপাদনক্ষমতা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। চলতি বছর আরও চার হাজার ৪২৭ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। ২০২১ সালের মধ্যে যুক্ত হবে হবে নয় হাজার মেগাওয়াট।

এজন্য আগামী তিন বছর বিদ্যুৎ খাতে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু উপস্থিত ছিলেন।