প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশর উপরেই থাকবে: এডিবি

গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও বাংলাদেশে ৭ শতাংশের উপরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে বলে মনে করছেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েনচাই ঝ্যাং।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2018, 02:59 PM
Updated : 18 Jan 2018, 02:59 PM

বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠকে যোগ দিয়ে ঢাকা ছাড়ার আগে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গত দুই বছরে ৭ শতাংশের বেশি করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের পূর্বাভাস হচ্ছে, চলতি অর্থবছরেও বাংলাদেশে ৭ শতাংশে উপরে প্রবৃদ্ধি হবে।”

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। ২০১৬-১৭  অর্থবছরে হয়েছে ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ।

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৪ শতাংশের লক্ষ্য ধরেছে সরকার।

বাংলাদেশের উন্নয়নের বড় অংশীদার হিসেবে সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট।   

তিনি বলেন, ২০১১ থেকে ২০১৫ এই পাঁচ বছরে এডিবি বাংলাদেশকে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ-সহায়তা দিয়েছিল। ২০১৬-২০২০ সালে তা বাড়িয়ে ৮ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে।

কর্মসংস্থান বাড়ানোকে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখার কথা জানান ওয়েনচাই ঝ্যাং।

“বাংলাদেশে প্রচুর যুবক রয়েছে। তাদের জন্য অনেক অনেক চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে এবং এটাই হচ্ছে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।”

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) হাতিয়ার হতে পারে বলে তার মত।

“এ খাতেই বিপুল সংখ্যক যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। সরকার যে এ খাতে কাজ করছে না, তা নয়। তবে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। অর্থায়ন বাড়াতে হবে।”

রাজধানী ঢাকাসহ বড় শহরগুলোর উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপের সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি করার পরামর্শ দেন ঢাকায় নেমে যানজটে পড়া ওয়েনচাই ঝ্যাং।

একইসঙ্গে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন এডিবি ভাইস প্রেসিডেন্ট।

রপ্তানি আয় আরও বাড়াতে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণেরও কথা বলেছেন এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট।

তিনি প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার, শিশু মৃত্যুহার কমানো, মাতৃস্বাস্থ্য উন্নতি, নিরাপদ খাবার পানি, সেনিটেশন এবং ১৯৯০ সালের তুলনায় ২০১৫ সালের মধ্যে দারিদ্যের হার অর্ধেক কমানোসহ সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যগুলোর প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, অবকাঠামোর উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে আছে এডিবি। শিক্ষার মানোন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ বাড়ানো এবং আরও বেশি কর্মসংস্থান বিশেষ করে নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাংলাদেশের এসডিজি বাস্তবায়নের পথে অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠকে যোগ দিতে মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় আসের এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার দুদিনব্যাপী এ বৈঠকের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ওয়েনচাই ঝ্যাং।

আগারগাঁওয়ে এডিবি অফিসে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ উপস্থিত ছিলেন।