পেঁয়াজ অনেক বেশি ‘তেজস্ক্রিয়’: পরিকল্পনামন্ত্রী

বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার ফল সরকারের জন্য খারাপ হবে বলে সতর্ক করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2018, 11:14 AM
Updated : 4 Jan 2018, 11:54 AM

তিনি বলেছেন,  “পেঁয়াজ হতে সাবধান। পেঁয়াজ অনেক বেশি তেজস্ক্রিয়। চার-পাঁচ বছর আগে পেঁয়াজের কারণে দিল্লিতে সরকার পরিবর্তন হয়েছে।”

ভোটের বছরের শুরুতে বৃহস্পতিবার ঢাকার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে পেঁয়াজ নিয়ে এই সতর্কবার্তা দেন মুস্তফা কামাল।

গত মাসে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম কয়েকগুণ বেড়ে প্রতি কেজি ১০০ টাকা ছাড়ায়। দাম কিছুটা কমে এখন ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এবার দেশে ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি ভারতে পেঁয়াজের আগাম আবাদ ভালো না হওয়াকে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখাচ্ছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

বন্যাকে কারণ দেখিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “পেঁয়াজ লাগানোর জন্য মাটিই তো পাওয়া যায়নি। সব মাটি পানির নিচে ছিল।”

‘মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) নতুন ভিত্তি ও সংশোধন: প্রসঙ্গ বাংলাদেশ’ আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা এ বি আজিজুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলের (সানেম) এক প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, “চাল ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে নতুন করে মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে যায়, তা আমি মনে করি না। দারিদ্র্য নিরূপণের জন্য আরও অনেক প্যারামিটার রয়েছে।”

সম্প্রতি সানেমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চালের দাম বৃদ্ধির কারণে নতুন করে ৫ লাখ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে গেছে।

২০১৮ সাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত থাকার আসা প্রকাশ করেন মুস্তফা কামাল।

আ হ ম মুস্তফা কামাল (ফাইল ছবি)

তিনি বলেন, “আমাদের নতুন করে বিনিয়োগ না বাড়িয়েও প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে আমাদের যে বিনিয়োগ বা শিল্প রয়েছে, তাতে আরও দক্ষতা বাড়িয়ে উৎপাদন বাড়িয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব। উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বাড়ানো গেলে ২০১৯ সালের মধ্যেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।”

ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে বিশ্বের অনেক দেশ ও সংস্থা ‘বিস্ময়’ বলে থাকে।

“এ উন্নতির মধ্যেও স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সরকার কম বরাদ্দ দিচ্ছে। আমাদের সম পর্য়ায়ের দেশগুলো এ দুই খাতে যে বরাদ্দ দিচ্ছে, সে তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।”

মসিউর রহমান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) আরও বেশি তৎপর এবং সময়যোপযোগী করার উপর জোর দেন।

“বিবিএসের ত্রুটি থাকলে তা দূর করা দরকার। পরিসংখ্যানের মান উন্নত করেই উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে হিসাবের মধ্যে আনতে হবে।”

মির্জ্জা আজিজ বলেন, “জনসংখ্যার বোনাস শুধু নম্বর দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না, মান নিয়েও ভাবতে হবে। দারিদ্র্য বিমোচন এখনও অনেক বাকি রয়েছে, এজন্য ভাবতে হবে।”