অর্থবছরের ৫ মাস: রাজস্ব আদায় বাড়লেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রাজস্ব আদায় বাড়লেও লক্ষ্য পূরণ হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2018, 04:06 PM
Updated : 2 Jan 2018, 04:32 PM

এই পাঁচ মাসে ৭৫ হাজার ৩০৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি হলেও লক্ষ্যের চেয়ে সাড়ে ১০ শতাংশ কম।

রাজস্ব আহরণে লক্ষ্য পূরণ না হওয়া প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “বাজেট প্রস্তাবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে লক্ষ্য ধরা হয়েছিল। পরে সেটি আর আরোপ না করায় ভ্যাট থেকে যে বাড়তি কর আদায় হওয়ার কথা ছিল তা হচ্ছে না।

“তবে ১৯-২০ শতাংশের মতো যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেটাও মন্দ নয়। মানুষের মধ্যে কর দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। কর মেলায় ব্যাপক উপস্থিতি তারই প্রমাণ দেয়। বিশেষ করে আমাদের যুব সমাজের মধ্যে খুবই আগ্রহ। তারা বুঝতে পারছে সরকারকে ট্যাক্স না দিলে উন্নয়ন হবে কিভাবে।”

‘এই উপলব্ধিই’ আগামী দিনগুলোতে রাজস্ব বাড়াতে অবদান রাখবে বলে মনে করেন মুহিত।

গত বছরের ১ জুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে যে বাজেট পেশ করেছিলেন তাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন।ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এর বিরোধিতা করে আন্দোলনের হুমকি দেয়।সংসদে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরাও ভ্যাটের প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান।শেষ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাব প্রত্যাহার করেই বাজেট পাস হয়।

চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত করের পরিমাণ ধরা হয় দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

এনবিআরের এই করের মধ্যে ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ৯১ হাজার কোটি টাকা। আয়কর ও ভ্রমণ কর ৮৭ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। আর আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে করের পরিমাণ হচ্ছে ৭০ হাজার কোটি টাকা।

জুলাই-নভেম্বর সময়ে ভ্যাট থেকে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩২ হাজার ৭৭৭ কোটি ৮৬ টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ৫৪ কোটি ৩ লাখ টাকা। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সাড়ে ১৬ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যের চেয়ে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ কম।

এ সময়ে ২৫ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা আয়কর ও ভ্রমণ করের লক্ষ্যের বিপরীতে আদায় হয়েছে ২১ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৪ শতাংশ কম।

আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ে ২৬ হাজার ৯৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা লক্ষ্যের বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৪ হাজার ৬০৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এটা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ শতাংশ বেশি। তবে লক্ষ্যের চেয়ে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ কম।

এনবিআরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

গত পাঁচ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের গড় হার ছিল ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ।