মোংলা বন্দরে নাব্যতা বাড়াতে ৭১২ কোটি টাকার প্রকল্প

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর মোংলায় জাহাজ চলাচলের সুবিধায় পশুর নদীর নাব্যতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2017, 11:26 AM
Updated : 14 Nov 2017, 11:50 AM

এ জন্য ‘মোংলা বন্দর চ্যানেলের আউটার বারের ড্রেজিং’ নামে ৭১২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায় বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মোংলা বন্দর চ্যানেলেরে এংকারেজে ১০ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য চ্যানেলের আউটার বার এলাকায় নাব্যতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।”

বঙ্গোপসাগর থেকে মংলা বন্দরের চ্যানেলের প্রবেশ মুখে কম গভীরতা সম্পন্ন একটি প্রশস্ত নৌপথ রয়েছে, যা ‘আউটার বার’ নামে পরিচিত।

এ এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের সময় সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ চলাচল করতে পারে। কিন্তু এংকারেজ এলাকায় সাড়ে ১০ মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ার সুযোগ থাকলেও আউটার বার এলাকায় কম গভীরতার কারণে সাড়ে ৮ মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ ঢুকতে পারে না।

আউটার বার এলাকায় গভীরতা বাড়িয়ে সাড়ে আট মিটারের বেশি ড্রাফটের জাহাজ চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করতেই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরের অবস্থানগত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ ভারত, নেপাল ও ভুটানের মালামাল হ্যান্ডলিং ও পরিবহনের সুযোগ রয়েছে।

পদ্মা সেতু, খুলনা-মংলা পর্যন্ত রেল লাইন, খানজাহান আলী বিমান বন্দর, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং মংলা এলাকায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পর এই বন্দরের গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, “এ পরিস্থিতিতে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও দক্ষতার সাথে পরিচালনার জন্য সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ পরিচালনা করতে হবে।এ প্রেক্ষিতে পশুর চ্যানেলের আউটার বার এলাকায় প্রয়োজনীয় ড্রেজিংয়ের জন্য এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

মঙ্গলবারের সভায় এটিসহ প্রায় ৩ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৩১৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে, বাকি ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা সংস্থান হবে নিজস্ব তহবিল থেকে।

 

সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে

>> বরিশালে ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস’ স্থাপন প্রকল্প, ব্যয় এক হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা।  

>> ‘শালিখা (মাগুরা) আড়পাড়া-কালিগঞ্জ (ঝিনাইদহ) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ প্রকল্প’; ব্যয় প্রায় ১১০ কোটি টাকা।

>> ‘বরিশাল (দিনারের পুল) লক্ষ্মীপাশা-দুমকী মহাসড়কে রাঙ্গামাটি নদীর উপর গোমা সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৫৮ কোটি টাকা।

>> ‘বৃহত্তর খুলনা ও যশোর জেলার ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ১২৭ কোটি টাকা।

>> ‘বৃহত্তর বগুড়া ও দিনাজপুর জেলা ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

>> ‘ভেড়ামারা (বাংলাদেশ) বহরমপুর (ভারত) দ্বিতীয় ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন (বাংলাদেশ অংশ) নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয় ১৮৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

>> ‘জাতীয় চিত্রশালা এবং জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা।

>> ‘ঝিনাইদহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ১২০ কোটি টাকা।

>>  ‘ইনস্টিটিউট অব বায়েইকুভ্যালেন্স স্টাডিজ এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস প্রতিষ্ঠাকরণ’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৯১ কোটি টাকা।