সিআইপি হলেন ১৬৪ ব্যবসায়ী

ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য ১৬৪ জন ব্যবসায়ীর হাতে সিআইপি কার্ড তুলে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2017, 05:21 PM
Updated : 12 Nov 2017, 07:36 PM

রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী নির্বাচিতদের হাতে এই কার্ড তুলে দেন।

২০১৪ সালে অর্থনীতিতে অবদানের জন্য এদের এই কার্ড দেওয়া হল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ওই বছর ১৬টি পণ্যখাতে ১৩১ জন রপ্তানিকারক এবং পদাধিকার বলে ৩৩ জন ব্যবসায়ী নেতাকে সিআইপি হিসাবে নির্বাচিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সরকারি এক গেজেটের তথ্য অনুযায়ী, সিআইপি হিসাবে নির্বাচিত ব্যবসায়ীরা সচিবালয়ে প্রবেশে পাস, গাড়ির স্টিকার, জাতীয় অনুষ্ঠান ও সিটি করপোরেশনের নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ পাবেন। বিমান, সড়ক, রেলপথ ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার থাকবে।

এছাড়া ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে লেটার অব ইন্ট্রোডাকশান পাবেন। সিআইপি এবং তাদের ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী সরকারি হাসপাতালে কেবিন পেতে অগ্রাধিকার, বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহার করতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে সিআইপিদের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভপতি আসিফ ইব্রাহীম, এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু বক্তব্য রাখেন।

কাজী আকরাম বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস করতে ১০ দিন সময় ব্যয় হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কী করে ব্যবসা বাণিজ্য হবে?”

আসিফ ইব্রাহীম বলেন, সম্প্রতি রপ্তানির প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ধীর গতি বাণিজ্যের অন্যতম একটি সমস্যা। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানে নজর দেওয়া উচিত।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগগুলো স্বীকার করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, “একথা ঠিক যে আমাদের বিমানবন্দর ও নদী বন্দরে পণ্য খালাসে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। আমি এটা অস্বীকার করতে পারি না। এই অবস্থার উত্তোরণ প্রয়োজন। ”

সরকার ব্যবসা করছে না, ব্যসায়ীদের জন্য পথ তৈরি করে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য একটা সুদূর প্রসারী লক্ষ্য থাকা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার পণ্যের বহুমুখীকরণ ও বাজার ব্যবস্থার বহুমুখীকরণের নীতি নিয়ে এগোচ্ছে।

সিআইপি নীতিমালা-২০১৩ অনুসারে ইপিবির মহাপরিচালকের নেতৃত্বে প্রাথমিক কমিটি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (রপ্তানি) নেতৃত্বে চূড়ান্ত কমিটি সিআইপি নির্বাচন করে।

আবেদনপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি আয়, নতুন পণ্য রপ্তানি, নতুন বাজারে প্রবেশ বিবেচনা করা হয়। এছাড়া রপ্তানি বাণিজ্যে রপ্তানিকারকদের বাণিজ্যবিরোধ সংশ্লিষ্টতা, ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ এবং ঋণ- লেনদেন অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়।

সিআইপি কার্ড পেলেন যারা

কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাত ক্যাটাগরিতে সিআইপি হয়েছেন প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী। এ খাতে অন্য সিআইপিরা হলেন- স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, মোহাম্মদ মনসুর, গোবিন্দ চন্দ্র সাহা, গকুল চন্দ্র সাহা, শেখ আবদুল কাদের, রফিকুল ইসলাম (লিটন) ও আবদুল মোতালেব।

তৈরি পোশাক খাতে উভেন ক্যাটাগরিতে সিআইপি হয়েছেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ। এই ক্যাটগারিতে অন্যরা হলেন- আবদুস সালাম মুর্শেদী, আতিকুল ইসলাম, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, শরীফ জহীর, আরশাদ জামাল, আলী আজিম খান, মুজিবুর রহমান, মেজবাহউদ্দিন খান, আজিজুল ইসলাম, মহিদুল ইসলাম খান, কাজী এ এফ এম জয়নুল আবেদিন, ফেরদৌস পারভেজ বিভন, ইতেমাদ উদ দৌলাহ, ওয়াসিম রহমান, তানভীর আহমেদ ও তানভীর আহমেদ।

নিট ক্যাটাগরিতে সিআইপি হয়েছেন- গোলাম মোস্তফা, স্যামুয়েল এস চৌধুরী, নাফিস সিকদার, গাওহার সিরাজ জামিল, মাসুদুজ্জামান, অমল পোদ্দার, নাজীম উদ্দিন আহমেদ, শামসুজ্জামান, আসাদুল ইসলাম, মহিউদ্দিন ফারুকী, নাবিল উদ দৌলাহ, জয়নাল আবেদীন মোল্লা, রিয়াজ উদ্দন আল মামুন, আসিফ আশরাফ, আসিফ মঈন, আবদুস সোবহান, আবদুল কাদির মোল্লা, আসিফ ইব্রাহিম, মশিউর রহমান চমক, এম এ সবুর, এফ এম কবির মহিউদ্দিন, নাসির উদ্দিন, প্রীতি পোদ্দার, সাফিনা রহমান, নুরুল আলম চৌধুরী ও অঞ্জন শেখর দাশ।

নিট খাতে আরও যারা সিআইপি হয়েছেন- শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ, রানা শফিউল্লাহ, রাকিবুল কবির, এম ডি এম জালাল উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ আবদুল জব্বার, খলিলুর রহমান, সুলতানা জাহান, শাহরিয়ার আহমেদ, এ বি এম সামসুদ্দিন, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম খান এবং বস্ত্র খাতে কুতুব উদ্দিন আহমেদ, সাখাওয়াত হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ জাবের ও আবদুল্লাহ মোহাম্মদ জুবায়ের।

এছাড়া পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া, ওষুধসহ আরও কয়েকটি খাতে অবদানের জন্য বেশ কয়েকজনকে সিআইপি কার্ড দেওয়া হয়।

একইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ২০১৪ সালের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদেরও সিআইপি কার্ড তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।