বিদ্যুতের দাম ৬.৩৪% বাড়ানোর প্রস্তাব ডেসকোর

গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ২০ পয়সা বা ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2017, 11:21 AM
Updated : 2 Oct 2017, 11:21 AM

তবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মূল্যায়নে ঘাটতি মেটাতে প্রতি ইউনিটে কোম্পানিটির প্রয়োজন মাত্র ৮ পয়সা। 

সোমবার টিসিবি অডিটরিয়ামে বিইআরসির গণশুনানিতে ভোক্তা প্রতিনিধিরা ডেসকোর অগ্রগতির প্রশংসা করলেও কেন বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে কমানো প্রয়োজন তার যুক্তি দিয়েছেন।

ডেসকোর আবেদনে ট্যারিফ বৃদ্ধির পক্ষে আবেদনে জনবল, অবকাঠামোগত, উন্নয়ন প্রকল্প, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার খরচ কারণ দেখানো হয়।

এতে বলা হয়, বিদ্যমান খুচরা ট্যারিফ ইউনিট প্রতি ৭.২০ টাকার বিপরীতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিট সরবরাহ ব্যয় ইউনিট প্রতি ৭.৪০ টাকা। ফলে ইউনিট প্রতি ঘাটতি ২০ পয়সা।

এই ঘাটতি সমন্বয় ও নতুন করে পাইকারি দাম বৃদ্ধি সাপেক্ষে পুনরায় সমন্বয়ের আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিইআরসির মূল্যায়নে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সাময়িক এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরের নিরীক্ষিত খরচের ধারা পর্যালোচনা করে নতুন বছরের রাজস্ব চাহিদা ঠিক করা হয়েছে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের নিট রাজস্ব চাহিদা ইউনিট প্রতি ৭.২৭ টাকার বিপরীতে খুচরা ট্যারিফ ৭.১৯ ধরা হয়েছে। ফলে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮ পয়সা।

ভূগর্ভস্থ কেবল, ভূগর্ভে সাব স্টেশনসহ কয়েকটি আধুনিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আরও চার হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন বলে শুনানিতে উল্লেখ করেন ডেসকোর অর্থ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক রফিউদ্দিন।

এই প্রসঙ্গে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, “চীনা লোকদের বুদ্ধিতে অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন কোম্পানির ক্ষতির কারণ হবে। কর্মচারীরা অবসরে গেলে পেনশনের টাকা পাবেন না। সুতরাং এসব উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন থেকে সতর্ক থাকা উচিত।”

ডেসকোর বোর্ড মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সিটিং অ্যালাউন্স হিসাবে মাথাপিছু ১১ হাজার টাকা করে দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ক্যাব প্রতিনিধি।

তিনি বলেন, “আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে যে সিকিউরিটি গার্ডদের আনা হয়, তাদের বেতন ৯ হাজার টাকার বেশি নয়। তাহলে মূল বেতনের বাইরে তাদের জন্য এতো টাকা দেওয়ার যৌক্তিকতা কী?”

ক্যাবের এই প্রশ্ন আমলে নিয়ে বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।

ক্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গৃহনির্মাণ, মেলা ও অন্যান্য কারণে দেওয়া অস্থায়ী সংযোগ নিয়ে দুর্নীতি হয়। কর্মকর্তারা নিজেরাই এসব সংযোগের বিল নিয়ে নেন।

দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে আসার আগে কোম্পানিগুলোর জনমত জরিপ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স।

প্রতিবছর বিলম্ব ফি বাবদ ডেসকো ২৭ কোটি টাকা আয় করে জানিয়ে তিনি বলেন, “সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর গ্রাহকদের কাছে বিলের কপি যায় বলে অনেক অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। আর সেকরণেও অনেকে সময় মতো বিল দিতে পারেন না।”

শুনানিতে গণসংহতি আন্দোলন, ডিসিসিআই, এমসিসিআই, বিটিএমইএ, সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের থাকার কথা থাকলেও তাদের কাউকে দেখা যায়নি।

এর আগে শুনানিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বাল্ক বা পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।

আর ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের ট্যারিফ ৪৩ পয়সা বা ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।