মুদ্রাপাচারের এই ঘটনায় দেগিতোর সঙ্গে অভিযুক্ত বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলরেমের তিন নির্বাহীকে বাদ দিয়ে দেশটির বিচার বিভাগ অভিযোগপত্র দিয়েছে বলে ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত বছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে ফিলিপিন্সের রিজল ব্যাংকের মাকাতি শহর শাখায় নেওয়া হয়।
বিশ্বজুড়ে আন্তঃব্যাংক মুদ্রা লেনদেনের মাধ্যম সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি করা রিজার্ভের ওই অর্থের একাংশ ব্যাংক থেকে ছাড় হয়ে জুয়ার টেবিলে চলে যায়। সে সময় ওই শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন দেগিতো।
ইনকোয়ারারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দেগিতো বলেন, এই ঘটনার হোতাদের বাদ দিয়ে তাকে দাবার ঘুঁটি বানানো হয়েছে।
দেগিতো বলেন, মাকাতি শহরের আদালত থেকে অর্থ পাচারের মামলায় তিনি জামিন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। বিচারের মুখোমুখি হতে সমন পাওয়ার পর আইনজীবীও নিয়োগ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থের বড় অংশটি ফিলিপাইন গেলেও বাকি ২ কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়, যা পরে উদ্ধার হয়েছে। তবে ফিলিপাইনে চলে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগই এখনো উদ্ধার হয়নি।
ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের আরসিবিসি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসার পর তা মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে।
এভাবে হাতবদল হয়ে সবশেষে ফিলরেমের মাধ্যমে ওই ৮ কোটি ডলার ফিলিপাইন থেকে আবার অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়। এতে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ ওই ব্যাংকটির তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক দেগিতোকে বরখাস্ত করা হয়। গত বছরের অগাস্টে ফিলিপিন্স সরকার তাকে গ্রেপ্তারও করে।
দেগিতো বরাবরই অর্থ পাচারের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, আরসিবিসির উঁচু পর্যায়ের নির্দেশে তাকে কিছু কাজ করতে হয়েছে। আরসিবিসির চাকরি হারানোর পর এখন তিনি বেকার।
এদিকে ফিলিপাইন থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গত মঙ্গলবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় গেছে।