বিশ্ব ব্যাংকের বেশি সুদের ঋণ নেওয়া শুরু

এতদিন এক শতাংশেরও কম সুদে বিশ্ব ব্যাংক থেকে ঋণ পেলেও এই প্রথম অনমনীয় ঋণ নিচ্ছে বাংলাদেশ, যার সুদ হার তিনগুণের বেশি হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2017, 04:15 PM
Updated : 24 August 2017, 04:15 PM

বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের একটি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা-আইডিএ’র সঙ্গে একটি ঋণ চুক্তি করে সরকার।

এর আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের স্কেল-আপ ফ্যাসিলিটি (এসইউএফ) ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ডলার দেওয়া হবে। এর জন্য সুদ দিতে হবে ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ হারে। ঋণ পরিশোধে সময় পাওয়া যাবে ৩০ বছর। গ্রেস পিরিয়ড থাকলে নয় বছর।

এতদিন বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আইডিএ থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ নেয়, তার সুদ হার ছিল শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।

এখনও নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থাকায় নির্দিষ্ট বরাদ্দ অনুযায়ী স্বল্প সুদের ওই ঋণ পাবে বাংলাদেশ। বাড়তি ঋণ নিতে হলে বেশি সুদের এসইউএফের দ্বারস্থ হতে হবে।

রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে দুপুরে ওই ঋণ চুক্তির পর বিশ্ব ব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফন বলেন, “বাংলাদেশ যতদিন উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় থাকবে, ততদিন বিশ্ব ব্যাংকের একটা বরাদ্দ অনুযায়ী কম সুদের ঋণ পাবে। কিন্তু বাংলাদেশের যদি এর চেয়ে বেশি ঋণের দরকার হয় তাহলে এই নতুন তহবিল থেকে নিতে হবে।”

এই ঋণের অর্থ বাংলাদেশ যে প্রকল্পে ব্যয় করবে তা শেষ হলে বাংলাদেশ সরকারের ‘প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলার’ বাঁচবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“তাছাড়া বাংলাদেশ কয়েক বছরের মধ্যেই মধ্য আয়ের কাতারে চলে গেলে কম সুদের ঋণ আর পাবে না। তখন এরকম সুদের তহবিল থেকেই ঋণ নিতে হবে। তাই এখন থেকেই কিছুটা করে সেই ঋণ নিয়ে অভ্যস্ত হলে সুবিধা হবে,” বলেন বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধি।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম ওই ঋণ চুক্তিতে সই করেন।

তিনি বলেন, “গত অর্থবছর আমরা বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে অর্থছাড়ের যে টার্গেট করেছিলাম তার শতভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের বাস্তবায়ন সক্ষমতা বেড়েছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

“বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন আমাদের অতিরিক্ত অর্থায়ন দরকার। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংক তাদের কম সুদের ঋণ আমাদের এ অতিরিক্ত অর্থায়নে দিচ্ছে না। তাই আমাদের বেশি সুদের ঋণ নিতে হচ্ছে।”

তবে দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে ‘পাওয়ার সিস্টেম রিলায়েবিলিটি অ্যান্ড ইফিশিয়েন্সি ইম্প্রুভমেন্ট’ প্রকল্পের গুরুত্ব ও লাভ বিবেচনায় ওই সুদের হার ‘বেশি নয়’ বলে মন্তব্য করেন সচিব।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা আধুনিকায়নের মাধ্যমে এ খাতের দক্ষতা ও নির্ভরযোগ্যতা বাড়বে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচও কমে আসবে।

এ প্রকল্পের আওতায় বরিশাল, খুলনা, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া ও ফেনী জেলার বিভিন্ন স্থানে ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন স্থাপনসহ বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।