ঘুমধুম পর্যন্ত রেল প্রকল্পে ৩০ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি

বেশ কয়েক বছর আটকে থাকার পর চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির সঙ্গে সরকারের চূড়ান্ত ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 June 2017, 12:18 PM
Updated : 21 June 2017, 01:43 PM

চুক্তি অনুযায়ী, প্রকল্পের জন্য এডিবি ৩০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে। এর মধ্যে ২১ কোটি ডলার অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্সেস-ওসিআর বা কিছুটা কঠিন শর্তের। এ ঋণের জন্য সব মিলে প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ সুদ দিতে হবে।

বাকি নয় কোটি ডলার দেবে কিছুটা সহজ শর্তের ঋণ, যার জন্য ২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ২৫ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

বুধবার এ বিষয়ে এডিবি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মধ্যে চুক্তি স্বক্ষরিত হয়।

চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে ইআরডির ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং এডিবির পক্ষে সংস্থাটির প্রিন্সিপাল কান্ট্রি স্পেশালিস্ট জ্যোৎস্না ভার্মা স্বাক্ষর করেন।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ইআরডি এডিবির প্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের পর কাজী শফিকুল আজম সাংবাদিকদের বলেন, “এ প্রকল্পটি দেশের যোগাযোগ খাতের জন্য অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্প। সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। এ প্রকল্পটি আঞ্চলিক যোগাযোগ তৈরির জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি বলেন, “প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার অনেক আগে থেকেই বৈদেশিক ঋণ সহায়তার খুঁজে নামলেও দাতাদের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত এডিবি এগিয়ে আসল।”

এজন্য এডিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সচিব বলেন, “এডিবির কাছে আমরা আরও বড় বড় প্রকল্পে অর্থায়ন আশা করি।”

প্রকল্পটির জন্য এবার ৩০ কোটি ডলারের চুক্তি হলেও এতে এডিবি চার কিস্তিতে মোট ১৫০ কোটি ডলার অর্থায়ন করবে বলে জানান এডিবির প্রিন্সিপাল কান্ট্রি স্পেশালিস্ট জ্যোৎস্না ভার্মা।

তিনি বলেন, “প্রথম কিস্তিতে ৩০ কোটি ডলার হলো। পরের কিস্তি হবে ৪০ কোটি ডলারের, তৃতীয় কিস্তি হবে ৫০ কোটি ডলার এবং সর্বশেষ কিস্তিতে ৩০ কোটি ডলারের চুক্তি হবে। প্রত্যেকটির জন্য আলাদা আলাদা চুক্তি করতে হবে।”

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু ও কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে ২০১০ সালে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক।

তবে এখন তা বেড়ে ১৮ হাজার কোটিতে উন্নীত হয়েছে বলে চুক্তি স্বাক্ষরের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জানান প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “আগের পরিকল্পনায় এ প্রকল্পে একটি মিটার গেজ রেললাইন তৈরির নির্দেশনা ছিল। এখন এটিকে ডুয়েল গেজে উন্নীত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ডাবল লাইনের জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

“তাছাড়াও সময়ের সঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধির প্রবণতা যুক্ত হয়ে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি এখন ১৮ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে।”

২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ২০১৯ সালের মধ্যে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত অংশ শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। গত বছরের ১৯ এপ্রিল একনেক সভায় সংশোধিত এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ার সময় সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।