আর কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক এতটা সক্রিয় নয়: আতিউর

সব মানুষকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের আওতায় আনতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2017, 05:39 AM
Updated : 17 June 2017, 05:39 AM

তিনি নানা উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, “বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা এক্ষেত্রে সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছে, যা অন্য কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ঘটতে দেখা যায় না।”

বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কাছে এফএফ ভবনে ইউএনডিপির এক বিশেষ অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

ইউএনডিপির হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট কার্যালয়ের পরিচালক সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে ‘ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুসন অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ : দ্য সাকসেস স্টোরি অব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস’ শীর্ষক এ বিশেষ বক্তৃতামালায় চীন, ভারত, পাকিস্তান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের অর্ধশতাধিক অর্থনীতিবিদ, নাগরিক সমাজ ও ব্যাংক খাতের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। 

জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনের সভাপতি পিটার থমসনের উদ্যোগে ‘অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক তিন দিনের আলোচনা সভার পর এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন আতিউর।

তিনি বলেন, প্রতিটি বাঙালির মধ্যেই বিশেষ একটি আবেগ আর চেতনা রয়েছে, যাকে ‘ইনক্লুসিভিটি স্পিরিট’ হিসেবে মনে করা হয়। সেই অন্তর্ভুক্তিমূলক চেতনাকে কাজে লাগিয়ে বাস্তবভিত্তিক কিছু করার চেষ্টা চলছে।

“সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এখন এই অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে নিয়োজিত ব্যাংকগুলোকে সাথে নিয়ে এগুচ্ছে। বিশেষ করে, যারা পেছনে পড়ে আছে, তাদের সেবা দিয়ে, ফাইন্যান্স দিয়ে একসাথে নিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করছে।

“পৃথিবীর খুব কম দেশেই অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন ভূমিকা রয়েছে।”

মানব সম্পদ উন্নয়নে আর্থিক, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে স্বউদ্যোগে সামাজিক উদ্যোক্তার সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশে ব্যাংকের ভূমিকার কথাও বলেন আতিউর।

বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের বাড়াতেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকার কথাও বলেন তিনি।

“বাংলাদেশে এখন মোবাইল ব্যাংকের একাউন্টের সংখ্যা ৪ কোটিরও বেশি। বিশ্বের আর কোনো দেশে এতটা নেই।”

আতিউর বলেন, “সুখের কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ কখনও অন্যের মুখাপেক্ষি হয়নি। নিজেরাই বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করছে। সফলতা না এলে, আবার নবউদ্যমে শুরু করছে।

“উদ্যোগ থেকেই তারা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে নবউদ্যমে এগুচ্ছেন। এমন উদাহরণও বিশ্বে আর কোথাও নেই।”

সাবেক গভর্নর বলেন, “আমরা এক্সপেরিমেন্ট করি, যদি ভুলও হয়, সেখান থেকে শিখি এবং শেখার পরই নতুন করে চলার পথ বের করি। এটি বাংলাদেশের একটি মডেল।”

“সারাবিশ্বের অর্থনীতি যখন টলায়মান ছিল, তখনও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল ছিল এবং এখন তা গতিশীল হয়েছে, এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উন্নয়নমুখী ভূমিকা পালন করেছে,” বলেন তিনি।

ড. সেলিম জাহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পথ সুগম হবার নেপথ্যে ‘ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল অন্তর্ভুক্তি’র ভূমিকা অপরিসীম।