যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করেছে, তার অনুমোদন নিতে সংসদে এই সম্পূরক বাজেট পাস করা হল।
আগামী ৩০ জুন শেষ হতে চলা চলতি অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে মঞ্জুরির অতিরিক্ত অর্থ প্রদান ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্ব প্রদানের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মঙ্গলবার সংসদে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০১৭’ উত্থাপন করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা এই সম্পূরক বাজেটের ওপর ১৪৯টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। তবে সবগুলোই কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগসংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ২৬টি মঞ্জুরি দাবি নিয়ে এই সম্পূরক বাজেট কণ্ঠভোটে সংসদের অনুমোদন পায়।
সম্পূরক বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে নতুন বিভাগ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে। এ বিভাগকে দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ৭৫৬ কোটি ৪৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
সবচেয়ে কম ৭০ লাখ ৪৩ হাজার টাকা বাড়তি বরাদ্দ পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণায়কে বাড়তি দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৮০ কোটি ৮৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বিষয়ে চারটি প্রস্তাবের ওপর সংসদে আলোচনা হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি নিয়ে আলোচনার সময় স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, “১১টি নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কী- সেটা থাকলে ভালো হত। ডিফেন্স আলাদা কিছু নয়, এটা গোপন বিষয় নয়। ডিফেন্সকে বারবার লুকিয়ে না রেখে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে উচিত।”
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দাবির ওপর পাঁচজন ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। এরা হলেন- জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন, ফখরুল ইমাম, নুরুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম ওমর এবং স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী। তাদের মধ্যে ফরাজী ছাড়া সবাই রাজধানীতে নিজেদের জন্য প্লট দাবি করেন।
পরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর পক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, “পাঁচজন বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের মূল কথা হল সংসদ সদস্যদের জন্য প্লট চাই। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এর জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “প্রতিরক্ষা খাতের অধীনে যারা কাজ করেন তারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। উন্নয়ন-অনুন্নয়ন সব খাতেই স্বচ্ছ্বতা রক্ষা করা হচ্ছে। সংসদে প্রশ্নোত্তর ও পত্রিকার খবরের মাধ্যমে এসব আসছে। জেনেও না জানার ভান করলে সে দোষ মন্ত্রণালয়ের নয়।”
সম্পূরক আর্থিক বিবৃতির ব্যাখ্যামূলক স্মারকে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মূল বাজেটে ৫৯টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের অনুকূলে নিট ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
পরে তিনটি নতুন বিভাগ সৃষ্টি করা হয়। সংশোধিত বাজেটে ২৭টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ১৮ হাজার ৩৭০ দশমিক ২৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ৭৩ হাজার ৫২১ দশমিক ৫১ কোটি টাকা কমেছে।
সার্বিকভাবে ২৩ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা কমে সংশোধিত বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে নিট ৩ লাখ ১৭ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা।