রেমিটেন্স বাড়াতে নানা পদক্ষেপ

দেশের অর্থনীতিতে রেমিটেন্সের গুরুত্ব অনুধাবন করে তা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 10:24 AM
Updated : 1 June 2017, 10:24 AM

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, গত এপ্রিল মাসে তার আগের মাসের তুলনায় কিছু বাড়লেও অর্থবছরের ১০ মাসের হিসাবে প্রবাসীদের অর্থ পাঠানো কমেছে ১৬ শতাংশ।

প্রবাসীরা এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ২৬ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। মার্চে পাঠিয়েছিলেন ১০৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা মোট এক হাজার ২৮ কোটি ৭২ লাখ (১০.২৮ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ে দেশে এসেছিল ১ হাজার ২২৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে এই ১০ মাসে প্রবাসী আয় কমেছে ১৬ শতাংশ।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণ রেমিটেন্সের এই নিম্নমুখী প্রবণতায় উদ্বেগ জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নিজেও।

এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ইআরএফের সঙ্গে এক প্রাক বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ব্যাংক থেকে কোনো মাশুল নেওয়া হবে না বলে জানান।  

বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায়ও মুহিত রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে বেশকিছু পদক্ষেপের কথা বলেন। 

তিনি বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাস আয়ের গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা বিবেচনায় রেখে তা বৃদ্ধির জন্য নানামুখী পদক্ষপে গ্রহণ করা হয়েছে।

“এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রবাস আয় প্রেরণ ব্যয় হ্রাস, বিদেশে র্কমরত ব্যাংকের শাখা ও এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোকে রেমিটেন্স প্রেরণে দক্ষ করে তোলা, প্রবাসীরা যেসব দেশে র্কমরত সেসব দেশের স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সাথে এ দেশের ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ড্রয়িং ব্যবস্থা জোরদারকরণ এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রেরণে উদ্বুদ্ধকরণ।”

দেশে রেমিটেন্সের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম র্শীষস্থানীয় প্রবাস আয় গ্রহীতা। বিবিএসের এক জরিপে দেখা যায় ২০১৫ সালে বাংলাদশের অভিবাসন সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো গড়ে ৩ লাখ ২ হাজার টাকার প্রবাসী আয় গ্রহণ করেছেন। এ জরিপের ফলাফলে আরো দেখা যায় প্রবাসী আয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ হয়।

“প্রবাসীদের বিনিয়োগে বিশেষভাবে উপকৃত হয় দেশের নির্মাণ খাত। তাছাড়া প্রবাসী আয় ভোগ ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমেও জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে।আশার কথা হলো, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ২০১৭ সালে প্রবাস আয়ের নিম্নমুখী ধারা থেকে বিশ্বের ঘুরে দাঁড়ানো এবং দুই শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে প্রক্ষেপন করছে।”

মুহিত বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের এ সকল উদ্যোগ এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী ধারা আমাদের প্রবাস আয় প্রবাহে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।”