সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2017, 04:40 PM
Updated : 21 May 2017, 04:41 PM

রোববার ঢাকা চেম্বারের নেতাদের দাবির পরিপেক্ষিতে তিনি বলেন, “আমাদের এখানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আসলেই বেশি। সাধারণত ব্যাংক আমানতের সুদের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১/২ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে এই ব্যবধান ৪ শতাংশের বেশি।

“এটা চলতে থাকলে এ খাতে বিনিয়োগ আরও বেড়ে যাবে। সরকারের ভবিষ্যত ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে। সে কারণেই আমরা এটাকে কমানোর (রিভিউ) সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।”

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। অন্যদিকে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশের মতো।

বিক্রির লাগাম টেনে ধরতে ২০১৫ সালের ১০ মে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার গড়ে ২ শতাংশ করে কমিয়েছিল সরকার। দুই বছর পর আরেক দফা কমানো হচ্ছে।

সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকের শুরুতেই ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কমলেও ব্যাংক ঋণের সুদের হার এখনও অনেক বেশি। সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ হার ব্যাংক ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।”

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, “হ্যাঁ, এটা ঠিক যে আমাদের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আসলেই বেশি। এটা আমি রিভিউ করব। বাজেটে অথবা বাজেট পাসের পর সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হবে।”

ফাইল ছবি

ব্যাংকের আমানতের তুলনায় সুদ বেশি দেওয়া এবং পুঁজিবাজারে পড়তিভাবে অনেকেই নিরাপদ বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছেন। সম্প্রতি ব্যাংকের সুদ হার আরও কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্র বিক্রির পালেও হাওয়া লাগে।

মুহিত বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সমাজের একটি অংশকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্যই সঞ্চয়পত্রের বেশি সুদ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে সেটা আমরা বেশি দিতে চাই না। মার্কেট রেটের চেয়ে ১/২ শতাংশ বেশি দিতে চাই। ৪/৫ শতাংশ নয়।”

আগে পাঁচ বছর মেয়াদী এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পাওয়া যেত। ২০১৫ সালে সুদ হার কমানোর পর এখন পাওয়া যাচ্ছে ৯১২ টাকা।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে যে পরিমাণ অর্থ ধার করার লক্ষ্য ধরেছিল, নয় মাসেই তার দ্বিগুণ নিয়ে ফেলেছে।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই সরকারকে এই ঋণ বহন করতে হচ্ছে; গুণতে হচ্ছে সুদ। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে সরকারের বাজেট ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ার করে আসছিলেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।