‘এজেন্ট ব্যাংকিং বেশি জনপ্রিয় ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে’

ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে ‘এজেন্ট ব্যাংকিং’ জনপ্রিয় হয়ে ওঠার তথ্য বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণায়; যেখানে এই গ্রাহকের সংখ্যা সর্বোচ্চ ২৯ শতাংশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2017, 05:27 PM
Updated : 15 May 2017, 02:27 PM

রোববার মিরপুরে ইনস্টিটিউটটির মিলনায়তনে ‘এজেন্ট ব্যাংকিং: আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে কার্যকারিতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ওই গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের পরিচালক অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।

তিনি জানান, এ গবেষণায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পরের অবস্থান গৃহিণীদের; যা মোটের ১৮ শতাংশ।

বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ১৫ শতাংশ গ্রাহক সরকার-বেসরকারি চাকুরিজীবী, ৭ শতাংশ গ্রাহক শিক্ষার্থী। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সেবা দেওয়ায় কৃষকদের মধ্যেও এজেন্ট ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে মোট গ্রাহকের ৭ শতাংশ কৃষক। এমনকি ৩ শতাংশ দিনমজুরও এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ব্যাংকে তাদের হিসেব খুলেছে।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে অঞ্চলভিক্তিক জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রে ঢাকা বিভাগ শীর্ষে আছে উল্লেখ করে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট গ্রাহকের ২৪ শতাংশ এ অঞ্চলের বাসিন্দা।

গ্রাহকের হিসাবে এরপরের অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা শতকরা ১৮ জন। আর সবচেয়ে কম জনপ্রিয় সিলেট বিভাগের এই গ্রাহকের সংখ্যা মাত্র ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৪ সালের জুনে ব্যাংকিং খাতে এজেন্ট ব্যাংকিং এর কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেয়। সর্বশেষ হিসেবে ১২টি ব্যাংক আড়াই হাজার এজেন্টের মাধ্যমে এ ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

গোলটেবিল বৈঠকের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, “বেশ কয়েকটি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং এর লাইসেন্স নিলেও হাতে গোনা দু-তিনটি পুরোদমে ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ সংখ্যা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ৮২ শতাংশ গ্রাহক প্রত্যন্ত অঞ্চলের, যা আর্থিক অর্ন্তভুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এজেন্ট ব্যাংকিংকে আরও প্রসারিত করতে হলে ব্যয় কমাতে হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, “এক ধরনের গোপনীয় এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু হয়েছে। যারা হুন্ডি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই তাদের সংখ্যা বাড়ছে। দেশের স্বার্থে যা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। এসব গোপন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, “মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং এবং স্কুল ব্যাংকিং সবই মূলত ব্যাংক জাল বাড়ানোর জন্য। এ কারণে এ ধরনের ব্যাংকিংয়ের জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালা জরুরি। আর্থিক শিক্ষা দিতে না পারলে এজেন্ট ব্যাংকিং টিকবে না।”

গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বর্তমানে বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো: শিরিন আলোচনায় অংশ নেন।