বিদেশি কোম্পানির ‘টাকা বন্ডে’ বিনিয়োগের সুযোগ সবার

এখন থেকে বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিদেশি কোম্পানির ‘টাকা বন্ডে’ বিনিয়োগ করতে পারবে।

ফারহান ফেরদৌস নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2017, 02:36 PM
Updated : 12 April 2017, 02:36 PM

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার জারি করে স্থানীয় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিদেশি বন্ডে বিনিয়োগের এ বাধা তুলে নেয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলারটি বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশেনের (বিএসইসি) অনুমতি নিয়ে বিদেশি কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান ‘টাকা বন্ড’ ইস্যু করতে পারে। বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি এই বিদেশি বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার ফলে বাংলাদেশে কার্যক্রম চালিয়ে আসা বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি স্থানীয় ব্যাংক ঋণের বাইরেও টাকা বন্ড ইস্যু করে অর্থ সংগ্রহের সুযোগ পেল।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একসময় নিয়ম ছিল বিদেশি কোনো কোম্পানিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যাংক ঋণ দিতে পারবে না। নব্বইয়ের দশকে বিদেশি কোম্পানিকে শর্টটার্ম ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোকে অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

“এরপর ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক শর্ত সাপেক্ষে ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেওয়ার অনুমতি দেয়। ২০১৪ সালে শর্ত শিথিল করা হয়। আগে নিয়ম ছিল বিদেশি কোম্পানি তার লোকাল মূলধনের বেশি ঋণ পাবে না। ২০১৪ সালে বলা হয়, যদি বিদেশি কোম্পানির বয়স ৩ বছরের বেশি হয় এবং তার ‘ডেবট ইকুয়িটি’ ঠিক থাকে, তবে ঋণ দেওয়া যাবে।

নতুন সার্কুলার প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা বলেন, “গ্রামীণফোন, ইউনিলিভার বা বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মতো বিদেশি যে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান বিএসইসির অনুমতি নিয়ে টাকা বন্ড ইস্যু করতে পারে। কিন্তু আইনে বাধা থাকার কারণে সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারত না। এখন থেকে যে কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানি বিদেশি কোম্পানির এসব বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারবে।”

বাংলাদেশে বিদেশি কোনো কোম্পানি এখনও ‘টাকা বন্ড’ ইস্যু করেনি জানিয়ে সম্প্রতি মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার অনুমতি চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি কোম্পানির সব বন্ড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার শর্ত দিলে বিনিয়োগকারীরা তাতে বিনিয়োগ করার সুযোগ পেত বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের সংগঠন ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন তো শুধু বড় বড় প্রতিষ্ঠান এসব বন্ডে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাবে। কারণ দেখা যাবে বিদেশি বড় কোম্পানিগুলো এগুলো প্রাইভেট প্লেসমেন্টে ছাড়বে।”

তবে বিদেশি কোম্পানির ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার ক্ষেত্রে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা।