২০১৯ সালের মধ্যে ১ কোটি করদাতা চান অর্থমন্ত্রী

২০১৯ সালের মধ্যে দেশে এক কোটি করদাতা খুঁজে বের করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2017, 06:26 PM
Updated : 10 April 2017, 06:26 PM

সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সভার আলোচনার বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “কর অফিস উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবও এসেছে। এটা মাঝে মাঝেই আসে। বর্তমানে ৮১ উপজেলায় আছে। এটাকে দ্রুত গতিতে সব উপজেলায় নিয়ে যাওয়া।

“করদাতা এত কম কেন-এ প্রশ্নটা প্রত্যেক দিনেই উঠে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১৫-১৬ লাখ করদাতা ছিল। এটা এক কোটি হওয়া উচিত। যুবকদের মাঝে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আমাদের করদাতা তাই এখন বেড়ে ২৮ লাখ হয়েছে। যেটা ভাল। সুতরাং আমার মনে হয়, ২০১৯ সাল পর্যন্ত এটা এক কোটি টার্গেট হওয়া উচিত।”

বাংলাদেশে কত মানুষ কর দেওয়ার যোগ্য- এমন কোনো তথ্য আছে কি-না, প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, “না, সেটা নাই। বললে আন্দাজে বলতে হবে।”

এরপর তিনি বলেন, “আমি এবার যেটা ঠিক করেছি, সেটা হচ্ছে, ঢাকা... অন্য কিছু ভুলে যান, ঢাকাকে আমি কয়েকটি জোনে ভাগ করব। প্রত্যেক জোনে আমার ইনকাম ট্যাক্স টিম যাবে। সম্ভবত এখানে আমি শিক্ষার্থীদেরকেও নিয়োগ দিতে পারি। তারা যত পাকা বাড়ি ...ইত্যাদি ইত্যাদি, এদের সবাইকে করের নোটিশ দেব।” 

বৈঠকে সংসদ সদস্যরা পেঁয়াজ, রসুন, আলুসহ বিভিন্ন ফল, ফসলের জন্য কৃষি পণ্যের সংরক্ষণের ব্যবস্থার কথা বলেছেন বলে জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, “আমরা তথ্য পেলাম, ঢাকা চিড়িয়াখানার জন্য কোন জমানায় (বরাদ্দ) হয়েছিল, তারপর আর হয়নি। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয় ছিল, আমরা যে হালদা নদী যে পোনা ছাড়ি, তার জন্য বার্ষিক বরাদ্দ মাত্র ১ লাখ টাকা।”

এরপর মন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, ‍“আমি ভাবছি, আমি তাকে ৫ লাখ টাকা নিজে থেকে দিয়ে দেব।”

জ্বালানি ব্যবহারের দক্ষতা নিয়েও আলোচনায় বক্তব্য এসেছে বলে জানিয়ে মুহিত বলেন, “চট্টগ্রামে বিএসটিআইর যে দপ্তর আছে, সেটাকে শক্তিশালী করার জন্যও বক্তব্য এসেছে। অধিকাংশ পণ্যতো চট্টগ্রাম দিয়েই আসে। সেখানেই এটা করা উচিত।”

“কারিগরি শিক্ষাকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং তার কনটেন্ট যেন এমন হয়, হাতেখড়িতেই যেন কিছু প্রশিক্ষণ হয়। রাস্তাঘাটে পলিথিনের ব্যবহার চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা দেশ পলিথিনময় হয়ে যাবে। এ জন্য হাছান মাহমুদ ১ শতাংশ হারে ইকো ট্যাক্সের প্রস্তাব করেছেন।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “ভ্যাট সম্পর্কে বক্তব্য এসেছে যে, এটা দোকানদাররা সংগ্রহ করেন, কিন্তু এটা রাজকোষে জমা হয় না। এটার জন্য কিছু করা।

“সোলার প্যানেল দেশে এখন দেশে প্রচুর হয়। এটাতে শুল্ক বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন ও উন্নয়ন কাজকে আরও শক্তিশালী করা উচিত।”

প্রবাসীরা দেশে ফেরতের পর কর বিষয়ে যেন তাদের কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় সেবিষয়ে ‘ট্রান্সফার অব রেসিডেন্স’ সুবিধা পুনর্বহালের চেষ্টার কথা জানান মুহিত।

“অনেক লোক বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরে আসে। দেশে আসার পর শুল্ক কর্মকর্তাদের কাছে তাদের অনেক অসুবিধা হয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমাদের আগে একটা বিধান ছিল, ট্রান্সফার অব রেসিডেন্স হলে একটা বিশেষ সুবিধা পেত। একজন বললেন, এখন নাকি এই সুবিধা নাই। আমার চেষ্টা হবে, এটা পুনর্বহালের জন্য।”

এছাড়া স্কুল ফিডিং কার্যক্রমকে প্রসারিত করা এবং সংস্কৃতি খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়েও প্রস্তাব এসেছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

সভায় অন্যদের মধ্যে সাবের হোসেন চৌধুরী, হাছান মাহমুদ, মকবুল হোসেন, শওকত আলী, ফজলুল করিম চৌধুরী, তাজুল ইসলাম, সিমিন হোসেন রিমি উপস্থিত ছিলেন।