বেশি শ্রম দিলেও মজুরি কম নারীদের: ফরাসউদ্দিন

বেশি শ্রম দিলেও অনেকক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা মজুরির ক্ষেত্রে বঞ্চিত হন বলে বলে সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের পর্যবেক্ষণ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2017, 05:33 PM
Updated : 8 March 2017, 05:33 PM

বুধবার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে এক সেমিনারে ‘কনট্রাক্ট থিওরি’র নানা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “নারী দিবসে বলতে দ্বিধা নাই, আমাদের দেশে নির্মাণ শ্রমিক… আপনি দেখবেন রাস্তায় পুরুষ-নারী শ্রমিক আছেন। অনেকক্ষেত্রে নারীর শ্রমিকরা বেশি শ্রম দিচ্ছেন।

“কিন্তু মজুরির প্রশ্ন যখন আসে তখন কম। এটাও এক ধরনের কনট্রাক্টের প্রকার। গবেষণা করলে সেটা (বৈষম্যের বিষয়) হয়ত চলে আসবে।”

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি অর্থনীতি বিভাগ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির যৌথ আয়োজনে ওই সেমিনারে সভাপতির বক্তব্য দেন ট্রাস্টি বোর্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ফরাসউদ্দিন।

‘অর্থনৈতিক মূল্যায়ন গতিপথের ও কর্পোরেট সংস্কৃতির অবস্থানের উপর কনট্রাক্ট থিওরির কার্যকারিতা নির্ভর করে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন

“যেমন আমাদের দেশে সেদিনও প্রাইভেট কর্পোরেট এনটিটির মালিকেরা নিজেরা ছাড়া অন্যদের চেক দস্তখত করতে দিতেন না। অবিশ্বাস এবং মালিকানার কারণে।”

বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে অধিভুক্তিও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে মত দেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জন্য মার্জার কঠিন এবং ক্ষতিকর হতে পারে। কেন? মার্জারে কিন্তু মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মহা সুযোগ পেয়ে যায়।আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকদের অনেকে এ বিষয়ে খবরই রাখে না। কাজে মার্জারে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের একটি উন্নয়নশীল দেশের বড় ক্ষতি হতে পারে।”

কনট্রাক্ট থিওরির গবেষণায় দেশীয় অর্থনীতির বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গ্রামাঞ্চলে ফসল না থাকার সময়ে ধার নেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন ফরাসউদ্দিন।

“গ্রাম বাংলার কৃষাণ-কৃষাণী, যাদের অনটন আছে, তারা কিন্তু ধার নেয়। কোন সময় নেয়? এই যে অক্টোবর মাসে। ফসল নাই ঘরে, টাকা নাই, খরা থাকে; আগে মঙ্গা ছিল, এখন যদিও নেই। তখন যে লেনদেনটা হয় ডাবল। (কথা থাকে) তোমাকে এত টাকা দিব, তুমি আমাকে এত মণ ধান দিবে।এটা অত্যন্ত অসঙ্গতিপূর্ণ। আমার মনে হয় থিওরিতে এ বিষয়গুলোও অন্তর্ভূক্ত করা জরুরি।”

নজিবুর রহমান

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান কনট্রাক্ট থিওরিতে মেধাস্বত্ব রক্ষার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, “মেধাস্বত্ব আইন কার্যকর হলে হলে চুক্তিগুলো ঠিকমতো মানা হবে এবং কার্যকর হবে। তাহলে আমাদের বাজার বাড়বে, অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।”

চুক্তিগুলো যেন ‘বেশি কঠিন’ না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি বলেও মন্তব্য করেন নজিবুর রহমান।

সেমিনারে ‘কনট্রাক্ট থিওরি, প্রপার্টি রাইটস অ্যান্ড ইকোনমিক আউটকামস’ শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নারস্টোন রিসার্চের অ্যাসোসিয়েট রেজওয়ান হক।

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অডিটোরিয়ামে ওই সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমএম শহিদুল হাসান, অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ বক্তব্য দেন।