১০ টাকার চালে উপকারভোগীদের ‘ভাগে ১১ কেজি কম’

‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচির আওতায় দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে যে চাল বিতরণ করা হয়েছে, তাতে উপকারভোগীরা গড়ে ১১ কেজি করে কম পেয়েছে বলে সিপিডির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2017, 05:57 PM
Updated : 7 Jan 2017, 05:57 PM

শনিবার ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা-২০১৭’র ষান্মাসিক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়।

খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে আনা সরকারি তথ্য ব্যবহার করেই এই চিত্র পাওয়া গেছে বলে জানান ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা-২০১৭’র সমন্বয়ক তৌফিকুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, সরকারি তথ্যে ৪৯ লাখ ১১ হাজার ৮০৬ জন উপকারভোগীর ভেতরে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৫ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে।

“তাহলে সাধারণ গণিতে দেখা যাচ্ছে, একজন উপকারভোগী ৭৯ কেজি চাল পেয়েছে, যেখানে তিন মাসে ৯০ কেজি পাওয়ার কথা ছিল। ১১ কেজি ঘাটতি।”

এই চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বদরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তিন মাসে ৯০ কেজি করেই চাল বরাদ্দ করেছি। সে অনুসারে চাল দেওয়া হয়েছে। ৭৯ কেজির হিসাবটা আমি জানি না। এ বিষয়ে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে পারব না।”

মাঠ পর্যায়ে চাল বিতরণ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “নরসিংদীতে গিয়েছি, ৬৩ হাজার ৪৯ জন উপকারভোগীর ভেতরে ৫ হাজার ২১৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। সেখানে গড়ে একজন ৮২ কেজি করে চাল পেয়েছে। কোনো কোনো উপকারভোগী গড়ে ১০০ কেজির উপরেও চাল পেয়েছেন। কোনো কোনো উপজেলায় ৭০-৮০ কেজি করে পেয়েছে।”

মার্চ ও এপ্রিলে দ্বিতীয় পর্যায়ের বিতরণে এটা ঠিক করার দাবি জানান তিনি।

এই কর্মসূচিতে আরও সমস‌্যা রয়েছে দাবি করে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, “হত দরিদ্রদের জন্য এই কর্মসূচি বলা হলেও এর কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি বা নাই। লোক নির্ধারণে এটা একটা সমস্যা সৃষ্টি করছে। অনেক ক্ষেত্রে এখানে ‘ডুপ্লিকেশন’ হচ্ছে। অন্যান্য সরকারি সেফটি নেটে যারা নেই, তাদের এখানে আনতে হবে বলা হয়েছে। এই জায়গায়ও সমস্যা হয়েছে। কিছু সংখ্যক উপকারভোগী ও ডিলারকে বাদ দিতে হয়েছে।

“গড়পড়তায় ১১ কেজি চাল সুবিধাভোগীরা কম পেয়েছেন। ফলে সেই বিষয়টা গুরুত্বের জায়গা।”

এই প্রকল্প চালুতে সরকারি খাদ্যের মজুদ কমে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, “এটা চালিয়ে নিতে হলে মজুদ বাড়াতে হবে।”

প্রকল্পকে আরও কার্যকর করতে কয়েকটি সুপারিশ করেন সিপিডির এই কর্মকর্তা।

“প্রথম যারা সুবিধাভোগী থাকবেন, তাদের যথাযথভাবে চিহ্নিত করতে হবে। দরিদ্রপ্রবণ এলাকায় বেশি আকারে বরাদ্দ দেওয়া, মনিটরিং ও পরিকল্পনাকে শক্তিশালী করতে হবে।”