এই অঙ্কের পরিমাণ ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি ডলার (১২০ কোটি টাকা)। গত ফেব্রুয়ারিতে নিউ ইয়র্ক ফেড থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে নেওয়া হয়েছিল।
এই অর্থের অধিকাংশ জুয়ার টেবিলে চলে গেলেও তার মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফিলিপিন্স উদ্ধার করেছে। ওই অর্থ বাংলাদেশকে ফেরত দিতে সোমবার আদালতের আদেশ হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
এই খবর আসার পর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে লোপাট হওয়া পুরো অর্থ পাওয়ার আশা প্রকাশ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোকাম্মেল হক বলেন, “ফিলিপাইনের রিজিওনাল ট্রায়াল কোর্ট আজ শুনানি শেষে ইতোপূর্বে বাজেয়াপ্ত ও ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত ৪. ৬৩ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ৪৮৮ দশমিক ২৮ মিলিয়ন পেসো (সব মিলিয়ে দেড় কোটি ডলার) বাংলাদেশের অনুকূলে অবমুক্ত করার আদেশ জারি করেছেন।”
গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভের অর্থ সরানো হয়েছিল ফিলিপিন্সের রিজল রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকে (আরসিবিসি)।
ওই ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড়ের মধ্যে ফিলিপিন্স সরকার তৎপর হলে দেড় কোটি ডলারের সন্ধান মেলার পর তা জব্দ করে। তা রাখা হয় ফিলিপিন্সের বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে।
এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই অর্থের মালিকানা দাবি করে ফিলিপিন্সের আদালতে আবেদন করা হয়।
ফিলিপিন্সের বিচার বিভাগের প্রধান কৌঁসুলি রিকার্দো পারাস রয়টার্সকে বলেছেন, বাংলাদেশ এই অর্থের প্রকৃত মালিক বলে আদালতের আদেশে বলা হয়েছে।
ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংকো সেন্ট্রাল ন পিলিপিনাস (বিএসপি)’ কে বলা হয়েছে, এই অর্থ বাংলাদেশকে হস্তান্তরের পদক্ষেপ নিতে। এই অর্থ এখন বিএসপির ভল্টে রয়েছে।
গত মে মাসে ফিলিপিন্সের সিনেট কমিটির তদন্তের সময় এক ‘ক্যাসিনো জাংকেট’ এই দেড় কোটি ডলার ফেরত দেন; যদিও তার জুয়ার আখড়ায় বাংলাদেশের রিজার্ভের সাড়ে ৩ কোটি ডলার গিয়েছিল বলে মনে করা হয়।
আট কোটি ১০ লাখ ডলারের বাকি অর্থ কোথায় গেছে, তার হদিস এখনও মেলেনি।
ফিলিপিন্স সরকার জুয়ার আখড়ার আরও আড়াই কোটি ডলার জব্দ করেছে, ওই অর্থের দাবি বাংলাদেশ করলেও তার সুরাহা এখনও হয়নি।
“অবশিষ্ট অর্থ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে’ জানিয়ে মোকাম্মেল হক বলেন, “আশা করা যায়, সম্পূর্ণ স্টোলেন অ্যাসেট অচিরেই বাংলাদেশ আদায় করতে সমর্থ হবে।”
ফিলিপিন্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ দূতাবাসকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মহাব্যবস্থাপক দেব প্রসাদ দেবনাথ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।