বেসরকারি খাতে পেনশন সরকারের এ মেয়াদেই

সরকারের এ মেয়াদেই বেসরকারি খাতে পেনশন চালু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2016, 01:56 PM
Updated : 3 June 2016, 01:56 PM

বাজেট ঘোষণার পরদিন শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বেসরকারি খাতে পেনশন সিস্টেম...  এই মুহূর্তে এটা সম্পর্কে খুব বেশি বলতে চাই না। সামাজিক নিরাপত্তা স্ট্রাটেজির মধ্যে... ইট শুড বি ইনকরপোরেটেড।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, অন্তত সংগঠিত খাতে, যেখানে শ্রমিক সংখ্যা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকে, সেখানে ‘কন্ট্রিবিউটিং পেনশন স্কিম’ চালু করা যায়।

“সেখানে যারা পেনশন পায়, তারা কিছুটা দিবে, আর কিছুটা দেবে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। সেই অনুসারে প্রত্যেকের জন্যই একটা পেনশন সৃষ্টি করা যায়।”

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চে উপস্থিত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ অন্যদের দিকে তাকিয়ে আশি পেরুনো মুহিত বলেন, “আমাদের সকলের বয়স সত্তর হয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের চিন্তা করার দরকার আছে। উই আর ওয়ার্কিং ইট আউট। একটু সময় লাগবে…।

“কিন্তু আমরা এইবার ক্ষমতায় থাকাকালীনই এই স্কিমটা শুরু করা যাব।”

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় বেসরকারি খাতকেও পেনশনের আওতায় নিয়ে আসার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

ভবিষ্যতে প্রবীণদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে নিরাপত্তাহীন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে  জানিয়ে পেনশন ব্যবস্থায় ‘আমূল পরিবর্তন’ আনারও ইঙ্গিত দেন তিনি।

তিনি বলেন, দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর মাত্র ৫ শতাংশ সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত, তারাই পেনশন সুবিধা পান। বাকি ৯৫ শতাংশের মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ গ্রাচ্যুইটি সুবিধা পেলেও অন্যদের জন্য সে সুবিধাও নেই।

মুহিত বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমার পাশাপাশি গড় আয়ু বাড়ার কারণে জনমিতিক কাঠামো বদলে যাচ্ছে। এতে প্রবীণদের সংখ্যা এবং মোট জনগোষ্ঠীতে তাদের অনুপাত ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

“অন্যদিকে নগরায়নের কারণে একক পরিবারের সংখ্যাও বাড়ছে। এর ফলে ভবিষ্যতে প্রবীণদের আর্থিক ও সামাজিকভাবে নিরাপত্তাহীন হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।”

সরকারের একার পক্ষে এই ঝুঁকি মোকাবেলা সম্ভব নয় মন্তব্য করে বাজেট বক্তৃতায় মুহিত বলেন, সকল শ্রমজীবী জনগোষ্ঠীসহ প্রবীণদের জন্য একটি সার্বজনীন ও টেকসই পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তন এখন ‘সময়ের দাবি’।

“এ লক্ষ্যে আমরা পেনশন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনার কথা ভাবছি। এতে ভবিষ্যতে যোগদানকারী সকল সরকারি চাকুরিজীবীর জন্য বিদ্যমান পেনশন পদ্ধতি পরিবর্তন করে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পেনশন পদ্ধতি চালু করব।”

মুহিত বলেন, “পর্যায়ক্রমে আধা-সরকারি ও ব্যক্তিখাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অনানুষ্ঠানিক বা স্ব-কর্মসংস্থানে নিযুক্ত কর্মজীবীসহ সকল স্তরের জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি সমন্বিত কাঠামোর আওতায় সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রণয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।”

তিনি বলেন, বেসরকারি খাতের ডিপিএস (ডায়নামিক পেনশন সার্ভিস) ব্যবস্থার আদলে সার্বজনীন একটি পেনশন ব্যবস্থা কীভাবে করা যায়, সেই পরিকল্পনা হচ্ছে।