মন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রধান প্রতিবন্ধক এখন মনে হয় অনিশ্চিত স্থানীয় শাসন ব্যবস্থা।”
বৃহস্পতিবার বাজেট প্রস্তাবের পর সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরও উঁচুতে না ধরার যে আক্ষেপ করেছেন, মন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় কার্যত তার জবাব মিলেছে।
আর ৩৫ শতাংশ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে মুহিতের প্রত্যাশায় ভরসা পাচ্ছেন না সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
আজিজের সমালোচনার জবাবের জন্য বাজেট বক্তৃতার বাইরে অর্থমন্ত্রীর শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনের অপেক্ষায় থাকবেন অনেকে।
চলতি বছরের লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ এনবিআরের ওপর ভর করে মন্ত্রীর বিপুল রাজস্ব আদায় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অনেকে। ফরাসউদ্দিনের ভাষায়,এনবিআরকে এবার বেশ মেহনত করতে হবে।
প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাজেটকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে মন্তব্য করেছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ নিজেদের বাজেটের প্রশংসায় বরাবরের মতো উচ্চকণ্ঠ।
বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রীকে দৃশ্যত সতর্ক মনে হয়েছে। নতুন করে করারোপ করেননি তিনি। এমনকি আলোচিত ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন থেকে হঠাৎ পিছিয়ে এসেছেন।
মোট তিন লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনা পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। উচ্চাভিলাষী মুহিতের বড় ব্যয়ের বাজেটে আয়-ব্যয়ের হিসেব মেলাতে ঘাটতি অর্থায়ন ধরতে হয়েছে প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় প্রথা মেনে সংসদ ভবনে মন্ত্রিপরিষদের সংক্ষিপ্ত বৈঠকে অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে হাস্যোজ্জ্বল অর্থমন্ত্রী অধিবেশন কক্ষে ঢোকেন বিকাল পৌনে ৪টায়; যথারীতি কালো স্যুটকেসে ছিল বাজেট দলিল, যার শিরোনাম- ‘প্রবৃদ্ধি উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রযাত্রা’।
এরপর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমতি নিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের ফর্দ উত্থাপন শুরু করেন মুহিত, যা তিনি গত সাত বছর ধরে করে আসছেন।
বাজেট বক্তৃতায় আগামী বছর থেকে বাজেট কাঠামোই বদলে ফেলার ইঙ্গিত দেন অর্থমন্ত্রী। একইসঙ্গে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সত্যিকার অর্থে স্থানীয় সরকারকে কার্যকর করার তাগিদ দেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিটি জেলা জনসংখ্যায় ও আয়তনে বিশ্বের প্রায় ৫০/৬০টি দেশের চেয়ে বড়। এ ঘনবসতির স্বল্প আয়তনের দেশে ক্ষমতার প্রতিসংক্রম ছাড়া কোনো উপায়েই উন্নয়ন উদ্যোগে এমন গতিশীলতা পাওয়া যাবে না যাতে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
“তাই স্থানীয় শাসন ব্যবস্থার গুণগত সংস্কার অত্যন্ত জরুরি।”
এক সময়ের দুঁদে আমলা মুহিত জোর দিয়েছেন সুশাসনের উপর, “…..সমৃদ্ধি অর্জনের অভিযাত্রায় অনেকটা পথ এগুলেও আমাদের যেতে হবে আরও অনেক দূর।
“……..সর্বোপরি, সমাজের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করতে হবে সুশাসন।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের গ্রাফ ও সারণি থেকে জেনে নিন এ বাজেটের সংক্ষিপ্ত চিত্র।