রিজার্ভ চুরি নিয়ে সংসদে বিবৃতি দেবেন অর্থমন্ত্রী

রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাজেট অধিবেশন চলাকালে জুন মাসের মাঝামাঝি জাতীয় সংসদে বিবৃতি দেবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2016, 06:00 PM
Updated : 2 June 2016, 06:00 PM

বৃহস্পতিবার ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, “এই বিষয়ে সংসদ অধিবেশন চলাকালে জুনের মাঝামাঝি আমি ৩০০ বিধিতে একটি বিবৃতি প্রদান করব।”

গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়।

এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। 

শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

গৃহীতার নাম ভুল হওয়ায় শ্রীলংকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ যেতে পারেনি উল্লেখ করে মুহিত বলেন, “কারণ, সেই নামটি বানানে ভুল ছিল।”

“জনশ্রুতি প্রকাশ ফিলিপাইন সরকার আরো ৮/১০ মিলিয়ন ডলার উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এই টাকাটি আমাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

মুহিত বলেন, “নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এই বড় ধরনের পেমেন্ট অর্ডারে খানিকটা সন্দিহান হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগের প্রচেষ্টা নেয়। বিভিন্ন সাপ্তাহিক ছুটি এবং ম্যানিলার একটি ছুটি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় এই বিষয়টি যথাসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। এই বিলম্বের ফলে প্রায় ৮০ কোটি মার্কিন ডলার ম্যানিলায় সন্দেহভাজন গৃহীতার কাছে পাচার হয়ে যায়।”

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপিন্সের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে। বিষয়টি চেপে রাখায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে বড় ধরনের রদবদল আনা হয়।    

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “তদানীন্তন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিষয়টি গোপনীয়ভাবে নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নেওয়ার ফলে সরকার যথাসময়ে এই বিষয়টি অবহিত হতে পারেনি। সরকার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু করে।”

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে। কমিটি ইতোমধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছে।

ফরাসউদ্দিন কমিটির প্রতিবেদন অনুসরণ করে ফিলিপিন্স এবং নিউ ইয়র্কের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও অর্থমন্ত্রী জানান।