বিদেশনির্ভরতা কমাতে চান মসিউর

দ্রুত দেশের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করতে চাইলে বৈদেশিক সহায়তার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2016, 05:30 PM
Updated : 24 April 2016, 05:32 PM

রোববার ‘দ্যা বাংলাদেশ জার্নি’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি দ্রুত সময়ে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হলে বৈদেশিক সহায়তা গ্রহণ নীতিতে কিছু সংশোধন করা উচিত।”

বৈদেশিক ঋণ সহায়তা পরিহার করা উচিৎ মন্তব্য করে মসিউর রহমান বলেন, “এই ঋণ সস্তা হলেও সঠিক সময়ে যথা সময়ে ঋণ পাওয়া যায় না। প্রথমে ঋণের জন্য নেগোসিয়েশন করতেই অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়।

“পরবর্তীতে তাদের নানা রকম শর্ত নিয়ে আলাপ-আলোচনায় অনেক সময়ক্ষেপণ হয়। তাতে তাদের শর্ত মানা গেলে ঋণ পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সমাধান হয় না।”

অনুষ্ঠানে ‘সৃজনশীল অর্থায়নের’ মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নের একটি প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যবহারকারীদের মূল্য পরিশোধের ভিত্তিতে হতে পারে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন। প্রয়োজনে সরকার সেসব প্রকল্পে ভর্তুকি দিতে পারে।”

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত এই সেমিনার সঞ্চালনা করেন সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

সরকার প্রতি সপ্তাহে প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) চাপ সৃষ্টি করছে বলে অনুষ্ঠানে অভিমত দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “সরকার যে বিপুল সংখ্যক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সেগুলোতে ঠিকমতো অর্থায়ন করতে পারছে না। তার উপর নতুন করে আরও প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে।

“এর ফলে এতো বেশি চাহিদার সৃষ্টি হয়, পরে সেই চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। পরে বাধ্য হয়ে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হয়; যার হাত ধরে বাড়ে প্রকল্পের ব্যয়।”

চলমান প্রকল্পগুলো ঠিকমতো শেষ করতে ১০০ বছর লাগবে বলেও মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ অতিথি বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জনের প্রশংসার পাশাপাশি শিক্ষার মানের সমালোচনা করেন।

“খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এক বিশাল সফলতা। এখন খাদ্য আমদানি করতে হয় না। কিন্তু শিক্ষার মানের দিক দিয়ে আমরা এখনও যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছি।

“দেশে বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ বিদেশি লোক চাকরি করে, এরা সবাই উঁচু পদে চাকরি করেন। একেকজন বেসরকারি কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এদের কারণে বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে।”

বাংলাদেশের শিক্ষার মান পাকিস্তানের চেয়ে খারাপ বলেও মন্তব্য করেন সালমান এফ রহমান।