রিজার্ভ চুরি: ফরাসউদ্দিন কমিটির অন্তর্বর্তী রিপোর্ট

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ ‘খোয়া’ যাওয়ার ঘটনায় সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2016, 01:11 PM
Updated : 20 April 2016, 02:44 PM

বুধবার সন্ধ্যায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর দপ্তরে ফরাসউদ্দিনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা প্রবেশ করেন।

এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তারা অর্থমন্ত্রীর রুমে ছিলেন।

প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে বেশ কিছু সাংবাদিক সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন।

প্রতিবেদন দিয়ে বের হওয়ার পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ফরাসউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ফোনে বলেন, “এইমাত্র আমরা অর্থমন্ত্রীর হাতে রিপোর্ট জমা দিয়ে আসলাম। ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। আমরা তাই দিয়েছি।”

এর সার-সংক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সেটাতো বলা যাবে না। আমরা সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। সরকারই আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানাবে।”

সেখানে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ফরাসউদ্দিন বলেন, “আমরা ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট জমা দিয়েছি। টেকনিকেল রিপোর্ট ৭৫ দিন পর জমা দিব।”

প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সরকার যদি মনে করে জানানো উচিত, তাহলে সরকার জানাবে। সরকার যদি আমাদেরকে বলতে বলে, তাহলে আমরা বলব।”

রাত পৌনে ৮টার দিকে অর্থমন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও সাংবাদিকরা তার কাছে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু জানতে চান।

তিনি বলেন, “কমিটি তাদের রিপোর্ট আমার কাছে জমা দিয়েছে। এখনও পড়িনি। আগে পড়ে নেই; তারপর বলব।”

“এই রিপোর্ট তো তাদের অন্তর্বর্তী রিপোর্ট। আড়াই মাস পর তারা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবে। তখন বিস্তারিত বলা যাবে,” যোগ করেন মুহিত।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশের গচ্ছিত ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয়েছিল ভুয়া বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে।

শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ লাখ ডলার আটকানো হয়। তবে ফিলিপিন্সে যাওয়া কিছু অর্থ উদ্ধার হলেও বাকিটা এখনও অনিশ্চিত। 

রিজার্ভের অর্থ ‘খোয়া’র ঘটনায় গত ১৫ মার্চ ৩ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার।

কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব গকুল চাঁদ দাস।

কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পেমেন্ট ইন্সট্রাকশন কীভাবে ও কার বরাবর গেল, অবৈধ পরিশোধ ঠেকানোর লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপের পর্যাপ্ততা, গোপন রাখার যৌক্তিকতা ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবহেলা ছিল কি না এবং অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা, গৃহীত কার্যক্রমের পর্যাপ্ততা ও পুনরাবৃত্তি রোধে গৃহীত ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে।

এ কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন রিপোর্ট ও ৭৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেবে।