বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভ পাচারের অভিযোগে ফিলিপিন্সে ক্যাসিনোর ‘জাঙ্কেট অপারেটর’ ওয়েইকাংক হু ও ব্যবসায়ী কিম অংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দেশটির মুদ্রা পাচার কাউন্সিল (এএমএলসি)
Published : 23 Mar 2016, 12:58 AM
মঙ্গলবার দেশটির বিচার বিভাগে তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছে ফিলিপিনো পত্রিকা ডেইলি ইনকোয়ারার, যারা সংবাদ প্রকাশের পর রিজার্ভ চুরির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে।
ফেব্রুয়ারির শুরুতে ‘ভুয়া নির্দেশনা’ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) মাকাতি সিটির জুপিটার স্ট্রিট শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে ফিলিপিন্সে যাওয়া ওই অর্থের মধ্যে ৪৬ মিলিয়ন ডলার দেশটির দুটি ক্যাসিনোর মাধ্যমে দেশটির অর্থব্যবস্থায় ঢুকে যায় বলে জানায় ফিলিপিন্সের ক্যাসিনোগুলোতে আর্থিক লেনদেনের নজরদারি করা সংস্থা প্যাগকর।
প্যাগকরের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ১১ মার্চ ইনকোয়ারার জানায়, ক্যাগায়ান প্রদেশের সোলায়ার রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনোর মাধ্যমে ২৬ মিলিয়ন ডলার এবং ইস্টার হাওয়াই ক্যাসিনো অ্যান্ড রিসোর্টের মাধ্যমে ২০ মিলিয়ন ডলার ফিলিপন্সের আর্থিক ব্যবস্থায় মিশে যায়।
এর মধ্যে সোলায়ার রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনোতে ‘জাঙ্কেট অপারেটর’ ওয়েইকাঙ্ক হু মাধ্যমে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার হাতবদল হয় বলে এ ঘটনায় ফিলিপিন্স সিনেটের ব্লু রিবন কমিটির গঠিত তদন্ত দলসহ কয়েকটি সংস্থার তদন্তে উঠে আসার কথা জানায় ইনকোয়ারার।
‘জাঙ্কেট অপারেটর’ হলো সেই ব্যক্তি যিনি ক্যাসিনোগুলোতে ভিআইপি বাজিকরদের শর্তসাপেক্ষে জুয়ার অর্থ ধার দিয়ে থাকে। চীনা নাগরিক বলে চিহ্ণিত ওয়েইকাংক হু সোলায়ার ক্যাসিনোতে ‘জাঙ্কেট অপারেটর’র দায়িত্ব ছিলেন।
আর রিজল ব্যাংকের যে চার অ্যাকাউন্টে প্রথম অর্থ টান্সফার হয় তার একটি ব্যবসায়ী কাম সিং অং বা কিম অংয়ের নামে। তবে চারটি অ্যাকাউন্টই কিমের তদবিরে খোলা হয় বলে সিনেট কমিটির বিশেষ শুনানিতে রিজল ব্যাংকের বরখাস্ত শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো জানিয়েছেন বলে ফিলিপিনো গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে।
মুদ্রা পাচারের ঘটনা প্রকাশ হলে কিম অং হংকংয়ের একটি ফ্লাইটে করে ফিলিপিন্স ছাড়েন বলে জানিয়েছিল ইনকোয়ারার। তবে ১৫ মার্চ সিনেট কমিটির শুনানিতে ম্যানিলার এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী চিকিৎসার কাজে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন বলে জানায় তার আইনজীবী।
তবে কিম অং আগামী রোববার ফিলিপিন্সে পৌঁছাবেন বলে তার আইনজীবী ভিক্টর ফার্নান্দেজের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার জানিয়েছে ইনকোয়ারার।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অং সিনেটের তদন্ত কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতেও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।