তেলের দাম পর্যালোচনার তাগিদ সংসদীয় কমিটির 

আন্তর্জাতিক বাজারের জ্বালানি তেলের অব্যাহত দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও দাম কমানো যায় কি না, তা পর্যালোচনা করতে সরকারকে তাগিদ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 02:49 PM
Updated : 9 Feb 2016, 02:49 PM

ব্যবসায়ীসহ সব মহলের দাবির মধ্যে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এই তাগিদ দিয়েছে।

দুই বছরেও ১২২ ডলার থেকে তেলের দর ৩০ ডলারে নেমে এলেও বাংলাদেশে দাম না কমানোর পক্ষপাতি সরকার।

তেলের দাম না কমালে সারের ও বিদ্যুতের দাম কমিয়ে জনগণকে সুবিধা দেওয়া যায় কি না, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সেই আলোচনাও এসেছে বলে কমিটির সদস্য আতিউর রহমান আতিক জানিয়েছেন।

সংসদের এই হুইপ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জ্বালানি তেলের দাম কমালে ভোক্তা পর্যায়ে প্রভাব পড়বে কি না, সেটা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তেলের দাম কমানো যায় কি না, তা মন্ত্রণালয়কে পর্যালোচনার করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

“জ্বালানি তেলের দাম কমালে গাড়ি ভাড়া কমবে কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমন আলোচনাও এসেছে, তেলের দাম না কমিয়ে সারের এবং আবাসিক এলাকায় বিদ্যুতের দাম কমালে সাধারণ মানুষ সরাসরি সুবিধা পাবে।”

বৈঠক নিয়ে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “কমিটি আর্ন্তজাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার পর অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম কমানো যায় কি না, এ বিষয়ে পর্যালোচনা করার তাগিদ দেয়।”

২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দর বেড়ে ১২২ ডলারে ওঠার পর বাংলাদেশেও দাম বাড়ানো হয়। সেই হারে বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এরপর গত দুই বছর ধরে জ্বালানি তেলের দাম পড়তে পড়তে ৪০ ডলারের নিচে নামলেও দাম সমন্বয় করেনি সরকার।

দেশে ব্যবসায়ীসহ সব মহলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও তেলের দাম সমন্বয় করতে আহ্বান জানিয়ে এলেও তাতে সরকার সাড়া দিচ্ছে না। 

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে দাবিটি তুললে তিনি বলেন, “আপনারা তো এই দামে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। কারও তো অসুবিধা হওয়ার কথা না।”

তেলের দাম না কমানোর পক্ষে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) এতদিনের লোকসান তুলে আনার যুক্তি সরকারের মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে দেখানো হচ্ছে।

সংসদীয় কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ মাসে ১১ হাজার ৭৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আয় করেছে বিপিসি। এই আয় থেকে ৭ হাজার ১০৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা দেনা শোধ ও ইস্টার্ন রিফাইনারির দুই নম্বর ইউনিটের জমির জন্য খরচ করেছে বিপিসি।

এসব টাকা শোধের পরও সরকারের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া ২৬ হাজার ৩৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার দায় এখনও বিপিসির রয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিতে জানানো হয়।  

সভাপতি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আতিউর রহমান আতিক, আবু জাহির, এম এ লতিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও নাসিমা ফেরদৌসী অংশ নেন।