রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ১৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি

পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2015, 03:48 PM
Updated : 25 Dec 2015, 04:07 PM

রাশিয়ার এ প্রতিষ্ঠানটি ১২০০ করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করবে; যাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা)।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম এবং অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির সাভুসকিন এই চুক্তিতে সই করেন।

এর আগে গত বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এই চুক্তির অনুমোদন পায়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানও চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর চলতি বছর অগাস্ট মাসে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় কোম্পানি গঠন করতে সংসদে বিল পাস হয়।

আইন অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা থাকবে বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের হাতে। আর কেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবে ‘নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ’।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ‘লাইফ টাইম’ হচ্ছে ৫০ বছর। এর প্রথম ইউনিট ২০২১ সালের মধ্যে চালু করা সম্ভব হবে বলে সরকার আশা করছে।

১৯৬১ সালে পরামাণু কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ১৯৬৩ সালে প্রস্তাবিত ১২টি এলাকার মধ্য থেকে বেছে নেয়া হয় রূপপুরকে।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রায় ৫০ বছর আগের নেয়া সেই উদ্যোগ সক্রিয় করে তোলা হয়। দ্রুত পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ২০১০ সালে সংসদে প্রস্তাব পাস করে গঠন করা হয় একটি জাতীয় কমিটি।

ওই বছরই রাশিয়ার সঙ্গে একটি কাঠামো চুক্তি করে সরকার এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ দুই দেশ চুক্তি করে। প্রস্তাবিত এ কেন্দ্রের জন্য আগেই অধিগ্রহণ করা হয় ২৬২ একর জমি।

অ্যাটমস্ট্রয়ের নকশায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্বলিত ‘সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি’ দিয়ে রূপপুরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এর নিরাপত্তা নিয়ে ‘দুশ্চিন্তার কিছু’ থাকবে না। চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়াই ফেরত নিয়ে যাবে।